চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে ইটবোঝাই ট্রাক্টর ও ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সার সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। আজ ৮ এপ্রিল শনিবার দুপুরে উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের যাদবপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- অটোরিক্সা চালক আল আমিন (১৪) ও যাত্রী আপন চন্দ্র দাস (১৪)।
আল আমিন উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের আলমগীর মিয়ার ছেলে ও আপন চন্দ্র দাস ধীতপুর গ্রামের ওমেলেশ চন্দ্র দাসের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে একটি ইটবোঝাই ট্রাক্টর ও ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সার মধ্যে সংঘর্ষ হলে সড়কে ছিটকে পড়ে চাকায় পিষ্ট হয়ে আল আমিন ঘটনাস্থলেই মারা যান। আপন চন্দ্র দাসকে আহত অবস্থায় সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সরাইল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ পর্যন্ত দুইজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ঈদুল আযহা উপলক্ষে সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ বাজারের সড়ক ও ফুটপাত দখল করে অবৈধ গরুর হাট বসিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে ওই অবৈধ হাটে গরু, ছাগল, মহিষও বেচাকেনা শুরু হয়েছে। আজ ১০ জুন সোমবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল-নাসিরনগর লাখাই আঞ্চলিক সড়কের দু’পাশ দখল করে বসেছে এ গরুর হাট।
সড়কের উপর অস্থায়ী বাঁশ, খুঁটি বসিয়ে গরু ও ছাগল বেঁধে রাখা হয়েছে। কালিকচ্ছ বাজারে কুরবানির পশুর হাটে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি কোন অনুমোদন।
সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের চানপুর, ধরন্তি থেকে আগত গরু বিক্রেতা কালাম ও সেলিমসহ একাধিক বিক্রেতা জানান, এলাকার নিকটবর্তী হওয়ায় তারা এ বাজারে গরু বিক্রি করতে আসছেন। তবে আরও কয়েকজন বলেন, বাজারটি ইজারা আছে। মজিদ নামে এক লোক চার লাখ টাকার বিনিময়ে ইউনিয়ন পরিষদের কাছ থেকে ডেকে এনেছেন।
এ বিষয়ে কালিকচ্ছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু ছায়েদ বলেন, বাজারটি অনুমোদন নেই। গ্রামের লোকরা এমনিতে গরু নিয়ে বসে।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মেজবাহ উল আলম ভূঁইয়া বলেন, বাজার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। আর রাস্তার উপরে হাট বসানোর সুযোগ নেই।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে ৯ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে অভিযুক্ত কানাই মিয়াকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
আজ ২০ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-২ এর বিচারক মোহাম্মদ রেজাউল করিম এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে কানাই মিয়াকে ১ লাখ টাকা জরিমানার ও আদেশ দেয়া হয়।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত কানাই মিয়া সরাইল উপজেলার পশ্চিম কুট্টাপাড়ার লিবু মিয়ার ছেলে।
আদালতের নথিপত্র থেকে জানা গেছে, আদালতের নথিপত্র থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর প্রতিবেশীর বাড়িতে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হয় পশ্চিম কুট্টাপাড়ার আবদুল হাফিজের ৯ বছর বয়সী মেয়ে ও কুট্টাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী জয়নব।
পরে আর তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরদিন ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বাড়ির কাছের একটি বাঁশঝাড় থেকে জয়নবের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে সরাইল থানায় ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন শিশুটির মা ফেরদৌসী বেগম। মামলার একদিন পর তদন্তে কানাই মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই শিশু ও কানাইয়ের বাড়ি কাছাকাছি।
গ্রেফতারের পর কানাই আদালতে ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করেন। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে কানাই জানায়, সে ৪টি বিয়ে করেছে। ভবঘুরে ও বখাটে স্বভাবের কারণে সব স্ত্রী তাকে ত্যাগ করেছে। দাম্পত্য জীবনে তার কোনো সন্তান নেই। ১৬ ডিসেম্বর নিখোঁজের দিন সন্ধ্যার পর শিশুটিকে সে চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে নিজ ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে এবং পরে শিশুটিকে হত্যা করে রাতেই লাশ বাঁশঝাড়ে ফেলে রাখে।
এ ঘটনায় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কানাই মিয়াকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ মেরাজুল ইসলাম জানান, কানাইয়ের জবানবন্দির প্রেক্ষিতে আদালত তাকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে। এতে আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। এ রায়ে বাদীপক্ষের লোকজন সন্তুষ্ট। এদিকে আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন প্রবীণ আইনজীবী আবু তাহের ।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের পরিদর্শক দিদারুল আলম জানান, শিশু ধর্ষণের ঘটনায় আদালত একজনকে ফাঁসির রায় দিয়েছেন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামীকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
জেলাপরিষদ চেয়ারম্যান, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার গতকাল রবিবার সরাইল উপজেলার প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহী অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন।
এ সময় বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সেলিনা আক্তার সহ শিক্ষক মন্ডলী তাঁকে স্বাগত জানান।
এ সময় শিক্ষকবৃন্দ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সঙ্কট সহ শিক্ষকদের স্টাফ বাথরুম নির্মাণের অপরিহার্যতা ও জাতির পিতার মুর্যাল স্থাপন সহ বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে তাঁকে অবহিত করেন যে, বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৭শত শিক্ষার্থীর বিপরীতে ১৭টি সহকারী শিক্ষকের পদ থাকা সত্তেও, মাত্র ৭জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। ফলে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
জেলার প্রাচীনতম বিদ্যালয়টির এই দূর্দশা শুনে জেলাপরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘‘শিক্ষা খাতকে’’ সর্বাধিক গুরুত্ব ও বাজেট বরাদ্দ দিয়ে আসছেন। তাই উপজেলা সদরের অন্যতম এই বিদ্যাপীঠের এই সঙ্কট থাকার কথা নয়। তিনি বিদ্যালয়ের শিক্ষক সঙ্কট দূরীকরণ সহ অন্যান্য সমস্যা দূরীকরণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। স্টাফদের বাথরুম নির্মাণ ও জাতির পিতার মুর্যাল স্থাপনে শীঘ্রই জেলাপরিষদ থেকে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে মর্মে তিনি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আশ^্যস্থ করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন ২১ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন ১১ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ দিন আজ ১৫ এপ্রিল সোমবার বিকালে সরাইল উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন বিএনপি নেতা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: আনোয়ার হোসেন মাস্টার, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুরুজ্জামান লস্কর তপু, সমাজসেবক মো: জামাল মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির সাবেক সদস্য এডভোকেট মোখলেছুর রহমান, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা মো. নাজিম উদ্দিন ভাসানী, সরাইল উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. শের আলম মিয়া, শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউপি যুবলীগের সাবেক সম্পাদক রাজিব আহমেদ রাজ্জি, মোহাম্মদ শাহেদ মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিক উদ্দিন ঠাকুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্য নির্বাহি কমিটির সদস্য ও উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মো: আবু হানিফ মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের যুগ্ম আহবায়ক ও সেলিম খন্দকার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মো. সেলিম খন্দকার।
এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন হানিফ আহমেদ, কাউছার মিয়া, মো: আলতাফ হোসেন, মো: হোসেন মিয়া ও মো: এনাম খান।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন শামীমা আক্তার, আবেদা বেগম, রোকেয়া বেগম ও মো: শিরিনা আকতার।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৮ মে সরাইল উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৫ এপ্রিল, প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২২ এপ্রিল এবং প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল।
নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই প্রার্থীরা গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। সরাইল উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম, মহল্লা ও পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে ভোটারদের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছেন প্রার্থীগণ। মতবিনিময় সভা করে প্রার্থীদের পক্ষে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। এদিকে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পাশাপাশি ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরাও বসে নেই। নিজ নিজ প্রার্থীতার সমর্থনে জনগণের দোয়া ও সহযোগিতা চেয়ে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন তারাও।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে ১০ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০জন আহত হয়েছেন।
১৭ জুলাই বুধবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা সদরের সিএনজি স্ট্যান্ড এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিপুল সংখ্যক রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপজেলা শহীদ মিনারে জড়ো হয়। সংখ্যা বেড়ে গেলে তারা অন্নদা স্কুল মোড় যায়। সেখানে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে। অপরদিকে উচালিয়াপাড়া মোড়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শরীফ উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ বাপ্পির নেতৃত্বে অবস্থান করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।
এসময় অতিরিক্ত পুলিশ উভয় পক্ষের মাঝে অবস্থান করছিল। এরই এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। দুইপক্ষ লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ঘন্টাব্যাপী চলা এই সংঘর্ষে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারগ্যাস এবং রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এই ঘটনায় সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমরানুল ইসলাম সহ ১০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এছাড়াও উভয় পক্ষের অন্তত ১০জন আহত হয়।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম জানান, আমিসহ পুলিশের ১০জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।