চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাংলা পঞ্জিকার নিয়ম অনুযায়ী পহেলা বৈশাখ ঐতিহ্যবাহি শুঁটকি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মেলার বড় বৈশিষ্ট হচ্ছে “বিনিময় প্রথা”। অর্থাৎ পণ্যের বিনিময়ে পণ্য।
উপজেলা সদরের কুলিকুন্ডা গ্রামের উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যলয় মাঠে বসে এই মেলা। মেলা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শুঁটকি ব্যবসায়ীরা শুঁটকি নিয়ে আসেন মেলায়। জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ আশপাশ জেলা থেকে ভোজন রসিকরা আসেন এই মেলায় শুঁটকি কিনতে। পছন্দের শুঁটকি কিনে ক্রেতারা তৃপ্ত হন। শুঁটকি মেলায় প্রায় দুই শতাধিক জাতের শুঁটকির পসরা নিয়ে বসেন দোকানিরা। এসব শুঁটকির মধ্যে ছিলো বোয়াল, গজার, শোল, বাইম, ছুড়ি, লইট্টা, পুটি ও টেংরাসহ নানা জাতের দেশীয় মাছের শুঁটকি। এছাড়াও মেলায় ভারত থেকে আমদানি করা বিভিন্ন প্রজাতির শুঁটকিও উঠে।
মেলায় জেলার বিভিন্ন এলাকার শুঁটকি ব্যবসায়ীরা ছাড়াও চট্টগ্রাম, সিলেট ও সুনামগঞ্জ থেকে শুঁটকি নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা। মেলায় সামুদ্রিক অনেক বিরল জাতের মাছের শুঁটকি ছাড়াও ইলিশ ও কার্প জাতীয় মাছের ডিমের শুটকি উঠে।
স্থানীয়রা জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাংলা পঞ্জিকার নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে উপজেলার কুলিকুন্ডা গ্রামে এই শুঁটকি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। তারা বলেন, প্রায় দুইশ বছরেরও অধিক সময় ধরে পহেলা বৈশাখে এখানে শুটকি মেলা বসে। প্রতি বছরই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা তাদের শুঁটকি নিয়ে আসেন মেলায়। এই শুঁটকি মেলার বড় বৈশিষ্ট হচ্ছে “বিনিময় প্রথা”। অর্থাৎ পণ্যের বিনিময়ে পণ্য। ভোরে মেলা বসার পর সকাল ১০টা পর্যন্ত বিনিময়ের মাধ্যমে চলে বেচা কেনা। এ কারণেই ধারণা করা হয় এই মেলার ইতিহাস অনেক পুরনো।
মেলায় শুঁটকি কিনতে আসা উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রুবেল মিয়া ও উপজেলার নুরপুর গ্রামের মতি মিয়া বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন বাপ-দাদার সাথে এই মেলা এসেছি। এবারো শুঁটকি কেনার জন্য মেলায় আসছি।
উপজেলার কুলিকুন্ডা গ্রামের বাসিন্দা মজিবুর রহমান সর্দার বলেন, এখানে শত বছরের বেশী সময় ধরে নিয়মিত ভাবে এই মেলা বসছে। এই মেলায় এখনো বিনিময় প্রথা চালু থাকায় আমরা ধারণা করছি, এ মেলা আদিম কালের। এই মেলা আমাদের কুলিকুন্ডা গ্রামের ঐতিহ্য বহন করে।
মেলায় শুঁটকি কিনতে আসা উপজেলার কুলিকুন্ডা গ্রামের মহব্বত আলী বলেন, প্রাচীনকালে যখন কাগজের মুদ্রা প্রচলন হয়নি তখন থেকেই কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের বিনিময়ে এখান থেকে শুঁটকি কিনতেন। কালের বির্বতনে এই মেলার জৌলুস অনেকটা কমেছে। হ্রাস পেয়েছে বিনিময় প্রথাও। তিনি বলেন, ঐতিহ্য হিসেবে এই মেলায় শুঁটকি কেনার জন্যে এসেছি। ছোট বেলায় বাবার সাথে এই মেলায় আসতাম।
মেলায় শুঁটকি নিয়ে আসা ব্যবসায়ী কৃষ্ণদাস বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারনে হ্রাস পেয়েছে ঐতিহ্যবাহী পণ্য বিনিময় প্রথা। এখন নামে মাত্র এই প্রথা চালু আছে। তিনি বলেন, আমি প্রতি বছরই শুঁটকি নিয়ে মেলায় আসি।
স্থানীয়রা জানান, একদিনের মেলায় লাখ লাখ টাকার শুঁটকি বিক্রি হয়। ব্যবসায়ীরা শুঁটকি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা নিয়ে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরে যায়। এছাড়াও মেলায় গৃহস্থালী পণ্যসহ বিভিন্ন ধরনের খেলনা বিক্রি হয়। তবে এবার শুঁটকির আমদানি বেশী হলেও দাম ছিল চড়া।
মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ওহাব আলী জানান, বিনিময় প্রথার ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্যে আজো অল্প পরিসরে সূর্যোদয়ের সাথে-সাথে কিছুক্ষনের জন্যে পণ্য বিনিময়ের মাধ্যমে শুঁটকি বেচা-কেনা শুরু হয়। পরে চলে টাকা দিয়ে বেচা-কেনা।
তিনি জানান, “বাংলা পুঞ্জিকা অনুযায়ী বছরের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে উপজেলার কুলিকুন্ডা গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ সহ আশপাশের জমিতে বসে ঐহিত্যবাহী শুটকি মেলা। তিনি বলেন, পূর্ব পুরুষদের কাছ থেকে শুনেছি, মোগল আমল থেকেই এখানে শুঁটকি মেলা হয়ে আসছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ফান্দাউক দরবার শরীফের পীরে কামেলে মোকাম্মল হযরত শাহসূফী আলহাজ্ব সৈয়দ আবদুস ছাত্তার নকশে বন্দী(রঃ) ও পীরে কামেলে মোকাম্মেল হযরত শাহসূফী সৈয়দ নাছিরুল হক (মাসুম) নকশে বন্দী মোজাদ্দেদী ফান্দাউকী (রঃ) দ্বয়ের বার্ষিক ইছালে ছওয়াব উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী ফান্দাউকের সভা আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।
আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার বাদ ফজর নামাজের পর আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন ফান্দাউক দরবার শরীফের গদ্দীনিশীন মাওলানা সৈয়দ ছালেহ আহ্মাদ (মামুন)। আখেরী মোনাজাতে লাখো মুসল্লির অংশগ্রহনে মুখরিত প্রায় ৩২ মিনিট মোনাজাতে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ইমান-ইসলাম রক্ষায় এবং মুসলিম উম্মার ঐক্য কামনাসহ ফিলিস্তিনের জন্য রহমত কামনার করে আল্লাহর দরবারে দোয়া করা হয়।
গত শুক্রবার বাদ জুমা পবিত্র ফাতেহা শরীফ পাঠ করার মাধ্যমে মাহফিলের কার্যক্রম শুরু হয়।
মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন ফান্দাউক দরবার শরীফের গদ্দীনিশীন মাওলানা মুফতি সৈয়দ ছালেহ আহ্মাদ মামুন আল হোসাইনী।
দুই দিনব্যাপী মাহফিলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন দরবার শরীফের পীরজাদা মাওলানা মুফতি সৈয়দ মঈনুদ্দিন আহমাদ আল-হোসাইনী, পীরজাদা মাওলানা সৈয়দ আবুবক্কর সিদ্দিকী আল-হোসাইনী, পীরজাদা মাওলানা সৈয়দ বাকের মোস্তুফা আল-হোসাইনী।
মাওলানা সৈয়দ আশরাফ শামীম আল-হোসাইনীর সঞ্চালনায় দুইদিন ব্যাপী মাহফিলে মহান রাব্বুল আলামিনের গুণগান, কুরআন ও হাদিস থেকে শান্তির ধর্ম ইসলাম সর্ম্পকে গুরুত্বপূর্ণ এবং সঠিক জীবন বিধান নিয়ে মূল্যবান আলোচনা পেশ করেন ড. মাওলানা সাইফুল আজম বাবর আল-আজহারী, মৌকারা দরবার শরীফের পীর মাওলানা নেছার উদ্দিন ওয়ালী উল্লাহ, মাওলানা উসমান গণি ছালেহী, মাওলানা নেছার আহমেদ চাঁদপুরী, আল্লামা ড. কাফিল উদ্দিন সরকার, আল্লামা আবি আবদুল্লাহ আইনুল হুদা, হাফেজ মাওলানা নেছার উদ্দিন ফেনী, পীরজাদা মাওলানা মীর হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদী, মাওলানা আনোয়ার হোসাইন সাইফী, মাওলানা মুফতি আলাউদ্দিন জিহাদী, মাওলানা মুফতি মোতালেব হোসাইন ছালেহী, মাওলানা হাফিজ আবু হানিফ আনোয়ারীসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম ও ওলামাগণ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রত্যন্ত জনপথ নাসিরনগরের ফান্দাউক। এ গ্রামে দ্ইু দিনব্যাপী মাহফিলের কাজ আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয় শুক্রবার জু‘মার নামাজ বাদ। মাহফিল উপলক্ষে প্রায় ১৫ দিন ধরে সামিয়ানা টানানো হয়। বিশাল প্যান্ডেল টানানো হয় আশেকানদের জন্য। বন(খড়)বিছিয়ে হাজার হাজার ভক্ত মুরিদান বসে বয়ান শুনেন। তাদের সুবিধার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, আশুগঞ্জ, নাসিরনগরসহ বিভিন্ন স্থ্ান থেকে লাখো মানুষের সমাগম ঘটেছে। ৫ হাজার লোক এক সাথে বসে খিচুরী খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বিশাল এলাকা জুড়ে প্যান্ডেল নির্মান করা হয়। আর এর পুরোটাই করা হয় স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে। সভাকে ঘিরে অস্থায়ী ভিত্তিতে ছোট বড় কয়েক‘শ দোকান-পাট গড়ে উঠে। দূরের আশেকানদের থাকার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়। এ সভাকে ঘিরে এলাকার লোকজনের মধ্যে উৎসবের আমেজ দেখা দেয়। প্রতিবারের ন্যায় এবারও লাখো মুসল্লির অংশগ্রহনে মূখরিত ফান্দাউক দরবার শরীফ।
উল্লেখ্য, মাহফিলে দরবার শরীফের আওতায় পরিচালিত প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ফান্দাউক মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসার ৭ জন ছাত্রকে পাগড়ি প্রদান করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওরবেষ্টিত উপজেলা নাসিরনগর থেকে এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দিতে মোট ২ হাজার ৫১ জন শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করেছিল। এর মধ্যে এসএসসির জন্য ১ হাজার ৬৯৯ জন, ৩২১ জন দাখিল ও ৩১০ জন ভোকেশনাল পরীক্ষা দিতে ফরম পূরণ করে। এই শিক্ষার্থীদের ৭০৬ জন ছেলে ও ১ হাজার ৩৪৫ জন মেয়ে। কিন্তু গত ৩০ এপ্রিল শুরু হওয়া এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ৯ জন ছেলে ও ৪২ জন মেয়ে অংশগ্রহণ করেনি। কেন এই শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি, তা অনুসন্ধান করতে গিয়ে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যেসব মেয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়নি, তাদের অধিকাংশই বাল্যবিয়ের শিকার। যাদের বেশিরভাগের বয়স ১৪ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে।
প্রতিষ্ঠান প্রধান ও পরীক্ষা-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী মেয়েদের ১৮ বছরের কম বয়সে বিয়ে দেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু বাল্যবিয়ে দিতে অনেক অভিভাবকই ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করেন। এরপর কাজিকে ম্যানেজ করে কর্তৃপক্ষের চোখ এড়িয়ে কৌশলে অল্প বয়সেই মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেন।
জানা গেছে, এ বছর সবচেয়ে বেশি নারী পরীক্ষার্থী অনুপস্থিতির সংখ্যা উপজেলার চাপরতলা ইউনিয়নের সৈয়দ কামরুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়ে। এই স্কুল থেকে ১৫ জন মেয়ে শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়নি, যাদের সবাই বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। স্কুলটির প্রধান শিক্ষক সানাউল আমিন ভূঁইয়া বলেন, আমাদের না জানিয়ে এসএসসির ১৫ জন মেয়ে পরীক্ষার্থীকে বিয়ে দিয়েছেন তাদের অভিভাবকরা। এ ছাড়াও ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে পড়া ১০ থেকে ১৫ জন মেয়েকেও এ বছরই বিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন বাধা দিলেও ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় কাজিকে ম্যানেজ করে ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করে এসব বিয়ে হচ্ছে। আমরা প্রতিষ্ঠান থেকে বাধা দিলেও তাঁরা উপেক্ষা করেন।
ধরমন্ডল ইউনিয়নের ধরমন্ডল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক বলেন, পরীক্ষা শুরুর আগের দিন পর্যন্ত আমাদের দু’জন মেয়ে পরীক্ষার্থী অ্যাডমিট কার্ড নেয়নি। তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারি মেয়েগুলোর বিয়ে হয়ে গেছে। এর মধ্যে একজন শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়েছে পরীক্ষার আগের রাতে।
মোবাইল ফোনে কথা হয় পরীক্ষা শুরুর আগের রাতে বিয়ে হওয়া শিক্ষার্থীর বাবা আনু মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ভালো আলিম (মাওলানা) জামাই পাইছি; বিয়া দিছি। এত পড়ালেখা কইরা কী করব? পড়ালেখা কইরা সেই জামাইর ভাতই রান্ধা লাগব।’
নাসিরনগর মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ১৩টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব আছে। এসব ক্লাবের মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সচেতন করা হচ্ছে। ১৮ বছরের নিচে যেন কেউ বিয়েতে রাজি না হয়, সে বিষয়ে কিশোর-কিশোরীদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। অভিভাবকদের সচেতন করতে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে ইউপি চেয়ারম্যানসহ সবাইকে।
নাসিরনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজহারুল হক বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের কয়েকজনের বিয়ের বিষয়ে জানতে পেরেছি।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম বলেন, জানতে পেরেছি এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিত বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি অভিভাবকদের সচেতন করতে। পরীক্ষার আগে বেশ কয়েকটি বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছি। কিন্তু আমরা চলে আসার পর আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে অনেক অভিভাবক কাবিন ছাড়া বিয়ে দিচ্ছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ফিলিস্তিনে মুসলিমদের উপর ইসরাইলের আগ্রাসন এবং নির্বিচারে নিরপরাধ নারী ও শিশুসহ মুসলিমদের হত্যার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে।
আজ ১৭ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে নাসিরনগর উপজেলা উলামা পরিষদ এবং তৌহিদী জনতার ব্যানারে নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণ থেকে মিছিলটি বের হয়। উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্থানীয় কলেজ মোড় প্রাঙ্গনে সমাবেশ ও দোয়ার মাধ্যমে মিছিলটি শেষ হয়।
নাসিরনগর উপজেলা উলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা শামসুদ্দিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুস সাত্তার, উপজেলা কমপ্লেক্স মসজিদের খতিব মুফতি মুখলেছুর রহমান, মাওলানা তামজিদুল হক এনামী, হাফেজ ইকবাল, হাফেজ হোসাইন আহমেদ, মাওলানা আব্দুল কাদির, মাওলানা নাসির উদ্দিন, মুফতি সাইদুর রহমান, এস এম শহীদুল্লাহ, মাওলানা ইসলাম উদ্দিন ফারুকী, মাওলানা মুজাহিদুল ইসলাম, মাওলানা আশরাফ আলী, মাওলানা মোবারক উল্লাহ, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা আব্দুল করিম, মুফতি মুজিবুর রহমান, হাফেজ কামরুল ইসলাম, মাওলানা নুর আহমদ, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মুফতি সুলাইমান, মুফতি ফিরোজ আহমদ, মাওলানা খলিলুর রহমান, মাওলানা ইসমাইল, মাওলানা আশরাফুল ইসলাম, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মাওলানা নুরুল হক, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন, মাওলানা মঞ্জুরুল হক, মাওলানা হুজাইফা, মাওলানা শরিফ উদ্দিন, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন, মোঃ গিয়াস উদ্দিন, মাওলানা নুরুল আমিন, মাওলানা ইউসুফ বিন ইকবাল, মোঃ ইমরানুর রশীদ, মাওলানা জয়নাল আবদিন, মাওলানা ইসহাক, মাওলানা সফিউল্লাহ, মাওলানা জুবায়ের আহমদ প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, ইসরাইল একটি অবৈধ রাষ্ট্র। তারা ফিলিস্তিনে মুসলমানদের ওপর হামলা, নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। মুসলমানদের অন্যায়ভাবে হত্যা করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে জাতিসংঘ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। প্রত্যেক মুসলমানদের ঈমানি দায়িত্ব অসহায় নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানো।
এছাড়াও দেশের সকলের প্রতি ইসরাইলি সমস্ত পণ্য বয়কট করা সহ ফিলিস্তিনিদের উপর নির্যাতনের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে সকল মুসলমানদের এক হয়ে ইসরাইলদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান বক্তারা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে ৯০টি অসহায় পরিবারের মাঝে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের মানবিক সহায়তা হিসেবে ঢেউটিন ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।
আজ ২ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ চত্বরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম এমপি এসব ঢেউটিন ও নগদ অর্থ বিতরণ করেন।
নাসিরনগর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রাফিউদ্দিন আহমেদ, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুবিনা আক্তার, থানার অফিসার ইনর্চাজ মো. সোহাগ রানা, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অসিম কুমার পাল, সাধারণ সম্পাদক মো. লতিফ হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ লিয়াকত আব্বাস টিপুর, প্রেসক্লাব সভাপতি সুজিত কুমার চক্রবর্তী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি নির্মল চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ৯০টি পরিবারের মধ্যে নগদ ৬ লাখ টাকা ও ২০০ বান্ডিল ঢেউটিন বিতরণ করা হয়। এসময় সরকারি কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগের দলীয় নেতৃবৃন্দসহ এলাকার গণ্যমান ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে নিরাপত্তাসহ ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করছেন পুলিশ সদস্যরা। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে নাসিরনগর থানা প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেন পুলিশ সদস্যরা।
থানা ভবনের সামনে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নুরে আলম ও চাতলপাড় তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ রঞ্জন কুমার ঘোষের উপস্থিতিতে পুলিশের এসআই, এএআই ও কনস্টেবলরা কর্মবিরতিতে অংশ নেন। সেখানে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়া এবং আত্মগোপনে থাকা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে পুলিশ সদস্যরা।
পুলিশ সদস্যরা জানান, তারা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে। তারা কোন সরকারের পক্ষ হয়ে কাজ করবে না। পুলিশ জনগণের শত্রু না, বন্ধু। এসময় বিভিন্ন শ্লোগান দিতে দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের।
এ সময় তারা এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পুলিশ সদস্য হত্যার বিচার, যেসব পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়াসহ বিচার, পুলিশের ইউনিফর্ম পরিবর্তন, কনষ্টেবল থেকে আইজি পর্যন্ত একেই ড্রেসকোড, পুলিশকে রাজনীতিমুক্ত রেখে নিরপেক্ষতার সাথে কাজ করার সুযোগ নিশ্চিত করা, ৮ ঘন্টার বেশি ডিউটি না করা, পদোন্নতির ক্ষেত্রে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেভাবে দ্রুত পদোন্নতি পায়, ঠিক সেইভাবে নিম্ন পদে যারা আছেন তাদেরকেও পদোন্নতির ব্যবস্থা করা, ২০ দিনের ছুটি বৃদ্ধি করে ৬০ দিন করা, অফিসারদের মত কনস্টেবলদেরকেও সোর্স মানি দেয়া, প্রত্যেক মাসের ১০ তারিখের মধ্যে টিএ-ডিএ বিল নিশ্চিত করা, পুলিশের ঝুঁকিভাতা বৃদ্ধি করা, প্রত্যেক পুলিশ সদস্যদেরকে নিজ রেঞ্জে বদলি করাসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন।
এ সময় কনস্টেবল লুৎফর রহমান মীর, মোঃ রিয়াজ উদ্দিন, সাদ্দাম হোসেনসহ অন্য পুলিশ সদস্য বক্তব্য রাখেন।