চলারপথে রিপোর্ট :
‘শবে কদর’ কথাটি ফারসি। শব মানে রাত বা রজনী আর কদর মানে সম্মান, মর্যাদা, গুণ, সম্ভাবনা, ভাগ্য ইত্যাদি। শবে কদর অর্থ হলো মর্যাদার রাত বা ভাগ্যরজনী। শবে কদরের আরবি হলো লাইলাতুল কদর তথা সম্মানিত রাত। আজ লাইলাতুল কদর। এটি একটি সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আমি কোরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে।’ ‘লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’ ‘এ রাতে ফেরেশতারা ও জিবরাইল তাদের প্রভুর অনুমতিক্রমে সব সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করেন। শান্তিময় এ রাত ফজরের সূচনা পর্যন্ত’। (সুরা কদর)।
এ রাত কোরআন নাজিলের রাত। মহত্ব ও গুরুত্বসহকারে মহান আল্লাহর ইবাদতের রাত। এ রাত হলো হাজার মাস তথা তিরাশি বছর চার মাসের চেয়ে উত্তম। ওই ব্যক্তির চেয়েও ভাগ্যবান আর কে হতে পারে, যে এ রাতে নির্ঘুম থেকে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার সুযোগ পেয়েছে। এ পবিত্র রাতে ফেরেশতারা পৃথিবীতে আসে মানবজাতির জন্য বরকত, রহমত ও কল্যাণ নিয়ে।
সূর্যাস্তের পরপরই এ রাতে মহান আল্লাহ তার আরশ থেকে প্রথম আকাশে নেমে আসেন। মায়া আর দয়া নিয়ে, প্রেম ও ভালোবাসা দিয়ে মানবজাতিকে ডাকেন আর বলেন, ‘কে আছ পাপী! তুমি ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। কে আছ দুঃখী! আমি তোমার দুঃখ মোচন করব। কে আছ রোগী! আমি তোমাকে সুস্থ করে দেব। কে আছ দায়গ্রস্ত! আমি তোমাকে দায়মুক্ত করে দেব। তোমাদের কার রিজিকের প্রয়োজন! আমার কাছে চাও, আমি তার রিজিক বৃদ্ধি করব।’ মহান আল্লাহ এভাবে ফজর পর্যন্ত ডাকতে থাকেন। যারা তার ডাকে সাড়া দিয়ে প্রার্থনায় লিপ্ত হয়, তারা কল্যাণকামী হয়। সৌভাগ্যবান হয়।
শবে কদরের রাতে কুরআন নাজিল সম্পর্কে আল্লাহতাআলা বলেন, ‘রমজান মাস! যে মাসে কুরআন নাজিল হয়েছে মানবের দিশারি রূপে ও হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শন। (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৫)। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আরও বলেন, ‘উজ্জ্বল কিতাবের শপথ! নিশ্চয় আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয় আমি ছিলাম সতর্ককারী, যাতে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয় আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি। এ হলো আপনার প্রভুর দয়া, নিশ্চয় তিনি সব শোনেন ও সব জানেন। তিনি নভোমণ্ডল-ভূমণ্ডল ও এ উভয়ের মাঝে যা আছে সে সবের রব। যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাস করো; তিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, তিনি জীবন ও মৃত্যু দেন, তিনিই তোমাদের পরওয়ারদিগার আর তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও। তবু তারা সংশয়ে রঙ্গ করে। তবে অপেক্ষা করো সে দিনের, যেদিন আকাশ সুস্পষ্টভাবে ধূম্রাচ্ছন্ন হবে। (সুরা-৪৪ দুখান, আয়াত: ১-১০)।
শবে কদর ও কোরআন অবতরণ এবং এই রাতের ফজিলত সম্পর্কে দয়াময় আল্লাহ কোরআনে ‘সুরা কদর’ নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা নাজিল করেছেন। তাতে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি মর্যাদাপূর্ণ কদর রজনীতে। আপনি কি জানেন, মহিমাময় কদর রজনী কী? মহিমান্বিত কদর রজনী হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ হজরত জিবরাইল (আ.) সমভিব্যাহারে অবতরণ করেন; তাঁদের প্রভু মহান আল্লাহর নির্দেশ ও অনুমতিক্রমে, সকল বিষয়ে শান্তির বার্তা নিয়ে। এই শান্তির ধারা চলতে থাকে ঊষার উদয় পর্যন্ত। (সুরা-৯৭ কদর, আয়াত: ১-৫)।
শবে কদরের রাতের ফজিলত সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ রাত গুনাহ মাফের রাত। হাদিসে এসেছে- ‘যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরে ঈমান সহকারে ও আল্লাহর কাছ থেকে বড় শুভফল লাভের আশায় ইবাদতের জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে, তার পেছনের সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে’ (বুখারি ও মুসলিম)। এ রাতের কল্যাণ থেকে একমাত্র হতভাগ্য লোক ছাড়া আর কেউ বঞ্চিত হয় না (ইবনে মাজাহ ও মিশকাত)।
কিয়ামুল লাইল: ‘কিয়ামুল লাইল’ অর্থ হলো রাত্রি জাগরণ। মহান আল্লাহর জন্য আরামের ঘুম স্বেচ্ছায় হারাম করে রাত জেগে ইবাদত করা আল্লাহর প্রিয় বান্দাহদের একটি গুণ। মহান আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাহদের পরিচয় দিয়েছেন এভাবে- ‘তারা রাত্রি যাপন করে রবের উদ্দেশে সিজদাবনত হয়েও দাঁড়িয়ে থেকে’ (সুরা ফুরকান : ৬৪)।
‘তাদের পার্শ্বদেশ বিছানা থেকে পৃথক থাকে (অর্থাৎ তারা শয্যা গ্রহণ করে না; বরং এবাদতে মশগুল থাকে)। তারা গজবের ভয়ে এবং রহমতের আশায় তাদের রবকে ডাকতে থাকে এবং আমি যা দিয়েছি তা থেকে দান করে থাকে। কেউ জানে না। তাদের আমালের পুরস্কারস্বরূপ (আখিরাতে) তাদের জন্য কী জিনিস গোপনে রাখা হয়েছে’ (সুরা সিজদা : ১৬-১৭)। নবীজি (সা.) একদিন সাহাবায়ে কেরামদের (রা.) সামনে বনি ইসরাইলের এক উপাসকের কথা বলছিলেন। সে ব্যক্তি এক হাজার মাস ধরে আল্লাহর ধ্যান ও সাধনায় লিপ্ত ছিল। এ কথা শুনে সাহাবায়ে কেরাম (রা.) আফসোস করতে লাগলেন আর বললেন, আমরা এত বছর ইবাদত করব কীভাবে? তাছাড়া আমাদের অনেকে তো এত বছর বেঁচেও থাকি না। ঠিক তখনই জিবরাইল (আ.) এ রাতের সুসংবাদসহ সুরা কদর নিয়ে নবীজির (সা.) কাছে হাজির হলেন এবং এ উম্মতকে শ্রেষ্ঠ উম্মত হিসেবে প্রমাণ করে দিলেন। (তাফসিরে মাজহারি)।
নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমরা মাহে রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদর তালাশ করো।’ (বুখারি)। এ রাত হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার রাত। হজরত আয়েশা (রা.) একবার রাসুল (সা.)কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি যদি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে আমি ওই রাতে কী দোয়া করব? তখন নবীজি (সা.) বললেন, তুমি এ দোয়াটি করবে- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফউন; তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি’ অর্থাৎ হে আল্লাহ! তুমি তো ক্ষমাশীল! ক্ষমাকে তুমি ভালোবাস। অতএব, আমাকে তুমি ক্ষমা কর।
নবীজির (সা.) সময় অনেক সাহাবী (রা.) রমজানের ২৭ তারিখকে লাইলাতুল কদর হিসেবে স্বপ্ন দেখেছেন। সাহাবীরা (রা.) নবীজিকে (সা.) স্বপ্নের কথা জানালে নবীজি (সা.) বলেন, আমিও এমনটা স্বপ্নে দেখেছি। হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, ‘মহান আল্লাহর শপথ করে বলছি-নবীজি (সা.) ২৭ রমজানের রাতকে লাইলাতুল কদরের রাত বলেছেন।’ অন্য হাদিসে রয়েছে, নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি দুর্বল অথবা কোনো কারণে অক্ষম হয়ে থাকে, সে যেন রমজানের ২৭ তারিখ রাতে ইবাদত করে।’ (মুসলিম)। আরেক হাদিসে এসেছে-নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদর পেতে চায়, সে যেন তা রমজানের সাতাশতম রাতে অনুসন্ধান করে। (মুসনাদে আহমদ)।
অনলাইন ডেস্ক :
জাতিসংঘকে নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির চিঠির প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি তো এখন দিকদ্বিক জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। তারা ভেবেছিল দেশে নির্বাচন হবে না এবং নির্বাচন হলেও জনগণের অংশগ্রহণ থাকবে না। এখন তারা বুঝতে পেরেছে, জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে যেখানে বিএনপির সমর্থকরাও যোগ দিয়েছে।
আজ ১ জানুয়ারি সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ’র (পিআইবি) গবেষক পপি দেবী থাপা গ্রন্থিত ‘শরণার্থীর জবানবন্দি ১৯৭১’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তারা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই পেট্রোলবোমা, সন্ত্রাস, অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে মানুষ হত্যা করে, মা ও শিশুকে এক সাথে হত্যা করে, ট্রেন লাইন কেটে, ট্রেনের ওপর পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে, গাড়িতে, বাসে মানুষের ওপর পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে নির্বাচন ভণ্ডল করতে চেয়েছে, পারেনি। না পেরে তারা এখন তাদের সেই পুরনো কায়দা বিদেশিদের কাছে চিঠি লেখা শুরু করেছে।’
যারা পেট্রোলবোমা সন্ত্রাস চালিয়েছে তাদের অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছে, ট্রেন লাইন যারা কেটে ফেলেছিল তারা ধরা পড়েছে, স্বীকার করেছে কে টাকা দিয়েছে, কার নির্দেশে এগুলো করেছে, এগুলো দিবালোকের মতো স্পষ্ট জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি এই কাজগুলো ২০১৩-১৪-১৫ সালে করেছে, এখন আবার করছে। এখন আত্মরক্ষার্থে চিঠিপত্র লিখছে।
যাদের কাছে চিঠি লিখছে, তারাও এই নির্বাচনকে গ্রহণ করেছে, পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছে এবং তারা বলছে যে, নির্বাচন যেন সহিংসতামুক্ত হয়। দেশের বিরুদ্ধে বহু চিঠি বিএনপি লিখেছে, এই চিঠিতে কোনো লাভ হবে না।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো নির্বাচনী এলাকায় কোনো প্রার্থী মারা গেলে সেই আসনে নির্বাচনটা বন্ধ হয়ে যায়। সে কারণে তারা এই পরিকল্পনা করেছে।
তবে সন্ত্রাসী দলের মতো এ সব ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হবে না।’
‘শরণার্থীর জবানবন্দি ১৯৭১’ গ্রন্থ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ যে কত বেদনার, কত সংগ্রামের, সেটি যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি তাদের পক্ষে অনুধাবন করা কঠিন। আমরা ১ কোটি শরণার্থীর কথা বলি, কিন্তু দেশের অভ্যন্তরেও ১ কোটি মানুষ শরণার্থী হয়েছিলো, যাদের ঘরবাড়ি হানাদারেরা জ্বালিয়ে দিয়েছিল, অপরের ঘর-বাড়িতে থাকত।’
বাল্যস্মৃতিচারণ করে হাছান বলেন, ‘চট্টগ্রামের প্রান্তে রাঙ্গুনিয়ায় আমাদের গ্রামটা ছিল শরণার্থী যাওয়া আসার রোড। সেই পথ ধরে মিজোরাম যেতে হলে উঁচু পাহাড় পাড়ি দিতে হতো।
অনেক বাচ্চা ও বয়স্ক যারা পাহাড়ে উঠতে পারত না, তাদের ফেলে অন্যরা চলে যেত -এ রকম বহু ঘটনা ঘটেছে।’
গ্রন্থকার, পিআইবির সহ-সম্পাদক আকিল উজ-জামান, গবেষক মোহাম্মদ এনায়েত হোসেন বইমোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল উমারপুর ইউনিয়ননের হাপানিয়া গ্রামের বাসিন্দা হামিদ মোল্লা (৮৬) ও তার স্ত্রী ফজিলা খাতুন (৭৭) দম্পতি। সংসারে ৫ ছেলে ও ২ মেয়ের রয়েছে তাদের। যমুনা নদীর ভাঙনে বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। আর ছেলেরা যার যার মত সুবিধা মত জায়গায় চলে গেছেন। কিন্ত ৫ ছেলের সংসারে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের ঠাঁই হয়নি। কয়েকদিন আগে তাদের উপজেলার সম্ভুদিয়া জান্নাতুল বাকি কবরস্থান এলাকায় নির্জন স্থানে ফেলে রেখে গেছেন স্বজনরা। এ ঘটনার পর তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন। চলছে মামলার প্রস্তুতি।
জানা যায়, প্রায় ২ মাস আগে সেজ ছেলের মানিকগঞ্জের বাড়ি থেকে বৃদ্ধ দম্পতিকে চৌহালী উপজেলার উমারপুর ইউনিয়নের হাঁপানিয়া চরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে বৃদ্ধের ভাগ্নের বাড়িতে আশ্রয় হয়েছিল তাদের। সেখানেও অবহেলার শিকার হন তারা। এ অবস্থায় কয়েকদিন আগে পাশের বাঘুটিয়া ইউনিয়নে এ দম্পতির বড় মেয়ের বাড়ি সংলগ্ন সম্ভুদিয়া কবরস্থানের পাশে কাউকে না জানিয়ে ফেলে রেখে যায় স্বজনরা। সংবাদ পেয়ে এ দম্পতির বড় মেয়ে মনোয়ারা খাতুন বাবা-মাকে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে মেয়ে মনোয়ারা খাতুন বলেন, আমি নিজেই স্বামী হারা। দরিদ্র সন্তানদের সংসারে থাকি। আমার পাঁচ ভাইয়ের কেউ বাবা মাকে ভরনপোষণ করে না। এই বৃদ্ধ বয়সে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। কয়েক দিন আগে আমাকে না জানিয়ে আমার বাড়ির পাশে বাবা- মাকে ফেলে রেখে চলে গেছে। অভাব অনটনের সংসারে অসুস্থ বৃদ্ধ বাবা মাকে ভরণপোষণ আমার জন্য কষ্টসাধ্য। বিষয়টি জানতে পেরে অসহায় বাবা-মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হোসেন জানান, শুক্রবার সকালে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ও বাগুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম মোল্লা এবং চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি টিমকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অসহায় দম্পতিকে নগদ ১০ হাজার টাকা ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সহায়তা করা হয়েছে। ওই দম্পতিকে সাময়িকভাবে তাদের মেয়ের বাড়িতেই থাকতে বলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।
ইউএনও মাহবুব হোসেন আরো বলেন, এই অসহায়তা দম্পতিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি ঘর তুলে দেওয়ার সিদ্বান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, বৃদ্ধ বাবা-মাকে ভরনপোষণ না করার অপরাধে ছেলেদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার জন্য থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
‘আপনার নাগালেই পরিচ্ছন্ন হাত’ স্লোগান নিয়ে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসে বরিশালে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১৪ অক্টোবর রবিবার সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসনে ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে এ উপলক্ষে সাবান বিতরণ ও হাত ধোয়ার কৌশল শেখানো হয়।
দিবসটি উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের হলরুমে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইমরান তরফদারের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক গৌতম বাড়ৈ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সোহেল মারুফ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শাহ্ মো. রফিকুল ইসলাম ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মনদীপ ঘরাই।
সভায় ইউনিসেফের বরিশাল প্রতিনিধি, বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, সুধীজন এবং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। এর আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে বেলুন ফেস্টুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম। পরে একটি র্যালি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে শিক্ষার্থীদের হাত ধোয়ার কৌশল শেখানো হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবসহ বিএনপি নেতারা তরুণদের দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ধ্বংসের শিক্ষা দিচ্ছেন, অগ্নিসন্ত্রাসের শিক্ষা দিচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘বুধবার চট্টগ্রামের জামালখান এলাকার রাস্তায় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রামে অমর ভূমিকা রাখা মাস্টারদা সূর্যসেন, মাওলানা মনিরুজ্জামান থেকে শুরু করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন এবং স্বযত্নে রক্ষিত ম্যুরালগুলো বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশে যাওয়ার পথে তারা ভাঙচুর করেছে। এর অর্থ বিএনপি আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি কোনটাই মানে না এবং ধ্বংস করতে চায়। আমার প্রশ্ন তারা তরুণদের কি শিক্ষা দিচ্ছে? এই ভাঙচুর, অগ্নিসন্ত্রাসের শিক্ষা দিচ্ছে!’
আজ ১৫ জুন বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের (বিএসপি) নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের কোথাও রাস্তার পাশে এতো সুন্দরভাবে ইতিহাস, ঐতিহ্যের প্রদর্শনী নেই, যেটি চট্টগ্রামের জামালখান এলাকায় করা হয়েছে। প্রায় শতাধিক বিভিন্ন চিত্রকর্ম সেখানে স্থান পেয়েছে। এই দৃষ্টিনন্দন দেয়ালে আমাদের পুরো ইতিহাস তুলে আনা হয়েছে এবং সেগুলো তারা ভাংচুর করেছে। এ অপরাধের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে মামলা হয়েছে এবং এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাগ্রহণ করতে সরকার বদ্ধপরিকর।’
বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব যখন বক্তৃতা করে তখন মনে হয় ভেতরে ভেতরে উনি ‘এফআরসিএস’ পাস করেছেন, উনি এখন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারও বটে। কারণ বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলছেন তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, আর মির্জা ফখরুল সাহেব গলা ফাটিয়ে বলেন উনি জীবন-মরণ সন্ধিক্ষণে। এখন ডাক্তারদের কথা ঠিক না ফখরুল সাহেবের কথা ঠিক, এটাই হচ্ছে প্রশ্ন।’
‘বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য একজন মানুষের স্বাস্থ্যকে রাজনীতিকরণ করার উদাহরণ’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তারা বেগম জিয়াকে রাজনীতির পণ্য বানিয়েছে। এটা তার জন্য প্রচণ্ড অবমাননাকর। বেগম জিয়ার প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা এবং সম্মান রেখে আমি তাদের অনুরোধ জানাবো, দয়া করে বেগম জিয়াকে বা বেগম জিয়ার স্বাস্থ্যকে রাজনৈতিক পণ্য বানাবেন না।’
সাংবাদিকরা এ সময় প্রশ্ন করেন- ছয় জন মার্কিন কংগ্রেসম্যান বাংলাদেশে নির্বাচন বিষয়ে সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর চিঠি দেওয়ার খবর, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী প্রায় দুইশত বাংলাদেশির প্রতিবাদ লিপি দেওয়া এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর কংগ্রেসম্যানদের চিঠি না পাওয়ার খবর বেরিয়েছে, এ বিষয়ে আপনার মত কি? এর জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি তো ইতিপূর্বে কংগ্রেসম্যানদের নামে ভুয়া চিঠিও প্রকাশ করেছিল। যেখানে স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলছে তারা চিঠি পায়নি, সেখানে কংগ্রেসম্যানদের চিঠির যথার্থতা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দেয়। তবে কংগ্রেসম্যানরা এ রকম চিঠি দিতেই পারে। শতশত কংগ্রেসম্যানের মধ্যে ৬ জন কংগ্রেসম্যান চিঠি দিয়েছে -এগুলো বাংলাদেশেই খবর হয়, অন্য কোনো দেশে খবর হয় না।’
এর আগে বিএসপি সভাপতি এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু এবং বিএসপির সাধারণ সম্পাদক জি এম কিবরিয়া তাদের বক্তৃতায় সংবাদপত্র পরিষদের পক্ষে নিউজপ্রিন্টের দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি থেকে পরিত্রাণের ব্যবস্থা, বিগত অর্থ বছরগুলোর ক্রোড়পত্রের বকেয়া বিল পরিশোধ, তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কমিটিতে বিএসপি সদস্য অন্তর্ভুক্তি, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রদান ব্যবস্থা কেন্দ্রীকরণসহ কয়েক দফা দাবি তুলে ধরেন।
তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আর আপনারা জেনে খুশি হবেন, আমাদের মন্ত্রণালয়ের অব্যয়িত কয়েক কোটি টাকা আমরা চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরকে দেওয়ার প্রস্তাব করেছি, যাতে বকেয়া বিল পরিশোধ করতে পারে। আর দেশে যখন এক-দেড়শ’ পত্রিকা ছিলো তখন বিজ্ঞাপন কেন্দ্রীয়ভাবে ছিল। এখন সাড়ে ১২শ’ পত্রিকা আর বিজ্ঞাপন এতো বেশি যে বাস্তবতার নিরিখে এগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবস্থাপনা সম্ভব নয়।’