চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবক। পুলিশ মরদেহ উদ্ধারের পর জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠায়। পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় মরদেহ দাফনের জন্য বেওয়ারিশ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
প্রস্তুতি চলছিল সকালে বেওয়ারিশ হিসেবে মরদেহ দাফনের। পরানো হয় দাফনের জন্যে কাফনের কাপড়ও। কিন্তু রাতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ফিঙ্গার প্রিন্টে শনাক্ত হয় পরিচয়।
মারা যাওয়া যুবকের নাম আনোয়ার হোসেন (৩৫)। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াইসিধা ইউনিয়নের খতিব বাড়ি এলাকার মো. শাহ আলমের ছেলে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমিনুল ইসলাম বলেন, রোববার সকালে চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতি ট্রেনে আশুগঞ্জ রেলওয়ে এলাকায় এক যুবক কাটা পড়ে। পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় বেওয়ারিশ হিসেবে মরদেহটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পাশাপাশি পিবিআইয়ের মাধ্যমে মরদেহের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছিল। রাতে ওই যুবকের ফিঙ্গার প্রিন্ট নির্বাচন কমিশনে থাকা সার্ভারের ফিঙ্গার প্রিন্টের সঙ্গে মিলে যায়। পরে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আজহার উদ্দিন বলেন, রেলে কাটা পড়ে নিহত এক যুবকের মরদেহের পরিচয় শনাক্ত হচ্ছিল না। মরদেহটি বেওয়ারিশ হিসেবে দাফনের জন্য আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আমরা মরদেহটিকে কাফনের কাপড় পরিয়ে সকালে কবর দিতে প্রস্তুত রেখেছিলাম। রাতে খবর পেলাম পরিচয় মিলেছে। তার পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ ও কুফল বিষয়ে সচেতনতা
স্টাফ রিপোর্টার:
আশুগঞ্জে বাল্যবিয়ের কারণ, কুফল ও বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের করণীয় বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ বেতারের ‘তারুণ্যের কণ্ঠের’ আয়োজনে ও উপজেলা প্রশাসনের সহয়োগিতায় গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদ সম্মেলনকক্ষে এ কর্মসুচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অর্ধ শতাধিক ছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক, সাংবাদিক ও উপজেলার কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরবিন্দ বিশ^াস।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে ও তারুণ্যের কন্ঠের কর্মকর্তা সজীব দত্তের উপস্থপানায় বাল্য বিয়ের কারণ, কুফল ও প্রতিকার বিষয়ে মতবিনিময় করে শিক্ষার্থী, অভিভাবকগণ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাল্য বলেন, বিয়ে প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হয়ে মিলিতভাবে প্রতিরোধ করার আহবান জানান।
উল্লেখ্য, মতবিনিময় বিষয়ক এ অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ বেতারে প্রচার করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ভেজালের সঙ্গে কোনো প্রকার আপস করা হবে না উল্লেখ করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেছেন, খাদ্য, বস্ত্র কিংবা প্রসাধনী যাই হোক বাজারে কোনোভাবেই ভেজাল পণ্য বিক্রি করতে দেওয়া হবে না। বাজারে ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনাসহ অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি তিনি ভোক্তা সাধারণকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আমরা চাই সবাই আইন মেনে ব্যবসা করুক। ভোক্তারা যেন ন্যায্যমূল্যে পণ্য পান। ব্যবসায়ীরা মূল্য ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ভোক্তাদের স্বস্তি দেবেন এ আশাবাদ করি।
গতকাল ৩ জুন শনিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উজান ভাটি হোটেলে আলোকিত নারী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ভোক্তা অধিকার ও নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূল সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
আলোকিত নারী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মেহেরুন নিছা মেহেরিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পীরজাদা শহিদুল হারুন।
অন্যদের মাঝে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার পুলিশ সুপার কবি নুরুল ইসলাম বিপিএম, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদ, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহেনা মকবুল, আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা মুজিবুর রহমান, উপজেলা বিএনপি নেতা নাছির উদ্দিন, কামাল আহমেদ জয় ও উপজেলা যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান সরকার প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তবে্য ভোক্তা অধিকারের ডিজি সফিকুজ্জামান আরো বলেন, নকল ও ভেজালে ভরে গেছে বাজার। এখন অধিকাংশ আমদানি করা পণ্যে আমদানিকারকের তথ্য থাকে না। থাকে না মেয়াদও। অথচ সেটি উল্লেখ থাকা বাধ্যতামূলক। এ ধরনের সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি ভোক্তাদেরকে নকল ও ভেজাল পণ্যের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
স্টাফ রিপোর্টার:
গৌরব ও অহংকারের ১৬ ডিসেম্বর বাঙ্গালী জাতির মহান বিজয় দিবস। বিজয় দিবসে জাতি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করবে স্বাধীনতার স্বপ্নপুরুষ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, জীবন উৎসর্গকারী ও যুদ্ধাহত বীর সন্তানদের, যাঁদের ত্যাগে অর্জিত হয়েছে আমাদের কাঙ্খিত বিজয়; জাতি অর্জন করেছে লাল সবুজ পতাকা এবং স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষে মহান বিজয় দিবস-২০২২ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। আজ প্রত্যুষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ফারুকী পার্কে ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে- ফারুকী পার্কস্থ স্মৃতিসৌধে সরকারি-বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত বিভাগ/সংস্থা সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনতা কর্তৃক স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পন, সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, বেসরকারি স্বায়ত্ব শাসিত এবং বেসরকারি ভবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবে জেলা প্রশাসন। এ সময় কুচকাওয়াজ ও অভিবাদন গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ১০টায় একই মাঠে মোরগ লড়াই ও বেলা ১১টায় কারাতে প্রতিযোগিতা, একই মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদেরকে সংবর্ধনা প্রদান এবং জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে বেলা ১১টায়। বেলা সাড়ে ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া মূক ও বধির নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সরকারি শিশু পরিবারের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর জেলার সকল মসজিদে বাদ জোহর জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা এবং মুক্তিযুদ্ধে শহিদ ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়সমূহে সুবিধাজনক সময়ে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি এদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সকল সরকারি হাসপাতাল, শিশু সদন, জেলখানা, এতিমখানা ও শিশু পরিবারে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। বিকেল আড়াটায় ব্রাহ্মণবড়িয়া নিয়াজ মুহাম্মদ স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন একাদশ বনাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ও মুক্তিযোদ্ধা একাদশ দলের মধ্যে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। বিকাল ৩টায় সরকারি মডেল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরষ্কার বিতরণ করা হবে। বিকেল সাড়ে ৫টায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হবে।
মহান এ দিবসের সকল অনুষ্ঠানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশপ্রেমি মানুষের স্ববান্ধব উপস্থিতি কামনা করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম।
অনুরূপ কর্মসূচি জেলার সকল উপজেলায় পালিত হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে চলতি আমন মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ ২ ডিসেম্বর শনিবার দুপুরে আশুগঞ্জ খাদ্য গোডাউনে চত্বরে এ কার্যাক্রমের উদ্বোধন করেন আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হানিফ মুন্সী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাক।
এসময় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক চিন্তামনি তালুকদার, উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সোলাইমান মিয়া, আশুগঞ্জ উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি জুবায়ের হায়দার বুলু, চাতালকল ব্যবসায়ী হাসান ইমরানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, চলতি বছর মিলারদের কাছ থেকে আশুগঞ্জ উপজেলা খাদ্যগুদামে ৪৪ টাকা কেজি দরে ১৫ হাজার ৫৭৮ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল, ৪৩ টাকা কেজি ধরে ১১ হাজার ২শ ৪৫ মেট্রিক টন আতপ চাল ও ৩০ টাকা কেজি ধরে ১৩৪ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চাল সংগ্রহ অভিযান চলবে।
উল্লেখ্য, দেশের পূবার্ঞ্চলীয় অন্যতম ধান ও চালের হাট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে। এ হাটে দেশের হাওরাঞ্চলের কিশোরগঞ্জ, সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ থেকে প্রতিদিনই আসা ধান আশুগঞ্জে ৩ শতাধিক রাইস মিলে প্রক্রিয়া করে চালের উৎপাদন করা হয়। উৎপাদিত এসব চাল দেশের বিভিন্ন স্থানের চাহিদা পূরন করে থাকে। আশুগঞ্জ থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমান চাল সংগ্রহ করে থাকে সরকার।