চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অতিরিক্ত গরমে আবারো বাঁকা হয়ে গেছে রেললাইন। আজ ২৯ এপ্রিল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার পর আবারো সদর উপজেলার দাড়িয়াপুর এলাকায় ফের রেল লাইন বাঁকা হয়ে যাওয়ার খবর পায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রেলওয়ে স্টেশন মাষ্টার মোঃ রফিকুল ইসলাম। এর পর পরই চট্টগ্রাম ও সিলেটের সাথে ঢাকা অভিমুখী (আপ লাইনে) ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এর আগে শনিবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে এই লাইন দিয়ে উপক‚ল এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকায় যায়।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের মাষ্টার মোঃ রফিকুল ইসলাম বিকেল পৌনে ৬টার দিকে বলেন, অতিরিক্ত গরমে দাড়িয়াপুর এলাকায় রেললাইন আবারো বাঁকা হয়ে গেছে। পরে রেল লাইনটি ঠান্ডা হওয়ার সাথে সাথে এর মেরামত কাজ শুরু হয়। তিনি বলেন, বিষয়টি জানার পর পরই চট্টগ্রাম ও সিলেটের সাথে ঢাকা অভিমুখী (আপ লাইনে) ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেট অভিমুখী (ডাউন লাইনে) ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তিনি বলেন, ডাউন লাইনের অবস্থাও ভালো নেই। গরমে বেঁকে যেতে পারে। রেল মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে ট্রেনের সর্বোচ্চ ৩০/৪০ কিলোমিটর গতিসীমায় চলাচল করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে আখাউড়া রেলওয়ে জংশনের সহকারী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান জানান, ইতিমধ্যেই বেঁকে যাওয়া রেল লাইনের মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। প্রচন্ড গরম থাকায় লাইনটি ঠান্ডা করতে পানি ঢালা হয়েছে এবং কচুরিপানাও দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, অতিরিক্ত গরমের কারণে গত বৃহস্পতিবার দুপুর গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার দারিয়াপুর এলাকায় কনটেইনার ট্রেনের ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনার ২৭ ঘন্টা পর শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে লাইনচ্যুত হওয়া ৭টি বগি উদ্ধার করা হয়। পরে ঘটনার ৩০ ঘন্টা পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ক্ষতিগ্রস্থ লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
এঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় কর্মকর্তা খাইরুল কবিরকে প্রধান করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীর প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম, ঢাকা বিভাগীয় সংকেত প্রকৌশলী মোঃ সৌমাক শাওন, বিভাগীয় প্রকৌশলী ঢাকা- ২ সিরাজ জিন্নাত ও বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী মোঃ রাসেল।
দুলাল মিয়া :
অষ্টগ্রাম সিরাজুল উলূম ইসলামিয়া মাদ্রাসার উদ্যোগে ৫০ তম বার্ষিক সভা ও হাফেজ ছাত্রদের পাগড়ী প্রদান উপলক্ষে ২৫ ডিসেম্বর বুধবার বাদ আছর হতে মাদ্রাসা ময়দানে ইসলামী মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া এর প্রিন্সিপাল উত্তাজুল আসাতিজা, পীরে কামেল আল্লামা মুফতী মুবারকুল্লাহ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলাম এর কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা শায়খ সাজিদুর রহমান।
বিশেষ অতিথি থাকবেন হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর সভাপতি আল্লামা জুনায়েদ আল-হাবিব।
প্রধান বক্তা থাকবেন মাওলানা তাফহীমুল হক্ব, হবিগঞ্জ।
বিশেষ বক্তা থাকবেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া সিরাজিরা দারুল উলুম জাদুঘর এর সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা কামাল উদ্দীন কাসেমী, মাওলানা কামাল উদ্দীন দায়েমী, নারায়ণগঞ্জ, চান্দিয়ারা দারুল উলুম ইসলামিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা সাইফুল্লাহ্ সাদী।
আমন্ত্রিত উলামায়ে কেরাম থাকবেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া দারুল আরকাম আল-ইসলামিয়ার নায়েবে মুহতামিম মাওলানা আলী আজম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া তাহাফ্ফুজে খতমে নবুওয়াত এর সিনিয়র মুহাদ্দিস হাফেজ মাও: শফিকুল ইসলাম, অষ্টগ্রাম সিরাজুল ইসলাম মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম মাওলানা মুফতী হাবিবুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া দারুল আরকাম আল ইসলামিয়া এর সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল হান্নান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া সিরাজিয়া দারুল উলূম ভাদুঘর এর মুদাররিস হাফেজ মাও: ইসহাক্ব সিরাজী, অষ্টগ্রাম সিরাজুল ইসলাম মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা হাফিজুল ইসলাম।
উক্ত ইসলামী মহা সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে দ্বীন আখেরাতের অশেষ নেকী হাসিল এবং সকল মুর্দেগানের মাগফিরাত কামনায় মাদরাসা পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে বিশেষ ভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধা কণ্ঠ শিল্পী, তিতাস ললিতকলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ, বেতার এবং টেলিভিশন শিল্পী সেহেলি মাসুদ এর মৃত্যুতে শোকাহত শিল্পী বৃন্দের উদ্যোগে শোক সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ৪ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেলে শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ভাষা চত্বরে এ দোয়া মাহফিলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিল্পী সংসদের সভাপতি আল আমীন শাহীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ পারুল, সাংগঠনিক সম্পাদক শিল্পী শাহাদাৎ হোসেন সোহেলের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশ টেলিভিশনের সঙ্গীত পরিচালক আলী মোসাদ্দেক মাসুদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত প্রশিক্ষক পিযুষ কান্তি আচার্য্য, গীতিকার কবি দেওয়ান মারুফ, গীতিকার ইব্রাহিম খান সাদাত, সাগর মিউজিক প্লাস এর প্রতিষ্ঠাতা ফরিদ আহমেদ সাগর বৈশাখী শিল্পিী গোষ্ঠীর সভাপতি রঙ্গধনু স্টুডিওর সত্বাধিকারী শিল্পী দেবাশীষ দেবু, শ্যামা কাউসার, কণ্ঠ শিল্পী সেলিম রেজা,শিল্পী আলমগীর পলাশ, জেসমিন জাহান, গীতিকার নুসরাত জাহান জেরিন, পরিবারের পক্ষ থেকে শিল্পী এমিল মোরসালিন, অ্যাড. দিলশাদ আরা, সঙ্গীত প্রশিক্ষক মণিকা আচার্য্য, বায়োজিদ বোস্তামি, সাথী ইসলাম, উর্মিলা প্রিয়া, সৈয়দ মারুফ, তাহজীব আহমেদ চৌধুরী, অমিত সহ পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও শোকাহত শিল্পী বৃন্দ।
সভায় বক্তারা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা কণ্ঠ শিল্পী সেহেলি মাসুদ মহান মুক্তিযুদ্ধ সহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অনন্য ভূমিকা রেখে গেছেন উনার অবদান স্মরনীয় হয়ে থাকবে। তিনি মাতৃসুলভ আচরণে সুপ্ত প্রতিভার বিকাশে কাজ করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলমান পরিস্থিতিতে শান্তি বজায় রাখতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা বিএনপির নেতৃববৃন্দরা আহবান জানিয়েছেন। আজ ৬ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে এ আহবান জানান।
জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সাবেক সহসভাপতি এ.বি.এম. মমিনুল হক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম, ভিপি শামীম বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, আজকে ছাত্র সমাজ জাতিকে স্বেরাচারের হাত থেকে মুক্ত করে দিয়েছে। জাতির বাক স্বাধীনতা প্রকাশ করার সুযোগ করে দিয়েছে। এ দেশ যতদিন থাকবে ততদিন কোট সংস্কার আন্দোলন বাংলাদেশের জন্য একটি অধ্যায় হয়ে থাকবে।
কোটা আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের মাগফেরাত করেন।
বক্তারা আরো বলেন, কেউ যাতে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য প্রত্যেক ওয়ার্ডে দলের সকল নেতাকর্মী সজাগ থাকার আহবান জানান। এছাড়া জনসচেতনা বৃদ্ধির জন্য শহরে মাইকিং এর ব্যবস্থা করেছেন বলে জানান। এছাড়া প্রেসক্লাবে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও জেলায় কর্মরত বিভিন্ন সাংবাদিকের উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা ও মারধরের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন।
এসময় জেলা বিএনপি ও অংগ সংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ফুলে ফুলে সিক্ত হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ বিল্লাল মিয়া। নবাগত চেয়ারম্যান বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ এবং মানবতার মাতা বিশ্বনেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে যাবো। তিনি বলেন গ্রামকে শহরে পরিণতের মিশন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সকলে একযোগে কাজ করতে হবে।
আজ ৮ এপ্রিল সোমবার দুপুরে দায়িত্ব গ্রহণ এবং ৮ম মাসিক সভায় সভাপতির বক্তব্যে দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, জনগনের সেবক হিসেবে কাজ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদকে একটি জবাবদিহি জেলা পরিষদ হিসেবে উপহার দিতে চাই। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ‘আমার গ্রাম, ‘আমার শহর।’ অর্থাৎ গ্রামের মানুষ সকল নাগরিক সুবিধা পাবে। এসময় তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। বক্তব্যে রাখেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম.এম মাহমুদুর রহমান। উম্মোক্ত বক্তব্যে রাখেন নাসিরনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডাঃ রাফি উদ্দিন, নবীনগর পৌরসভার মেয়র এডঃ শিব শংকর দেবনাথ, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সেলিম শেখ, সংরক্ষিত সদস্য বিউটি কানিজ, রুমানুল ফেরদৌস, সনি আক্তার সূচী, সদস্য যথাক্রমে মোঃ নাছির উদ্দিন, পায়েল হোসেন মৃধা, মোঃ আবুল কালাম আজাদ, মোঃ সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ, সামুছল কিবরিয়া রেজা প্রমুখ। নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূইয়া, সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেজবাউল আলম ভূইয়া, আখাউড়া নির্বাহী অফিসার রাবেয়া আক্তার, আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্যামল চন্দ্র বসাকসহ আমন্ত্রীত অতিথিবৃন্দ এবং জেলা পরিষদের কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভা পূর্বে জেলা পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান যোদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা জননেতা আল মামুন সরকারের রুহের মাগাফেরাত কামনা করে দাড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করেন। এর পুর্বে জেলা পরিষদ বঙ্গবন্ধুর ম্যুারালে চেয়ারম্যান, প্রধান নির্বাহী কর্মর্তা এবং পরিষদ সকল সদস্যগন পু®পস্তবক অর্পন করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গ্যাস ফিল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাব আলীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে।
১৪ মে শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে নিহতের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- অধ্যক্ষ মোস্তাব আলীর স্ত্রী নাটোর উপজেলা সদরের পাইকপাড়ার বাসিন্দা মোছাম্মদ বিলকিস খাতুন (৫০), অধ্যক্ষের ছেলে আহমেদ ওয়াজিহ ওয়াসিক (২৭) ও নাটোরের পাইপাকপাড়ার পাওনাদার অধ্যক্ষের চাচাতো ভাই রায়েজুল ইসলাম ওরফে রাজু (৫৫)। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, দেড় থেকে দুই বছর আগে রায়েজুলের কাছ থেকে সুদের উপর ছয় লাখ টাকা ঋণ করেন অধ্যক্ষ মোস্তাব আলী। সুদের কিস্তির টাকা নেওয়ার জন্য রায়েজুল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অধ্যক্ষের কাছে আসা-যাওয়া করতেন। সুদের কিস্তি দিতে দেরি হলে তিনি অধ্যক্ষকে মানসিকভাবে অপমান-অপদস্থ করতেন। অপরদিকে সাংসারিক বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে অধক্ষের পারিবারিক কলহ হতো। তারা বিভিন্নভাবে মানসিক চাপ দিয়ে নাজেহাল করাসহ আত্মহত্যা করার জন্য অধ্যক্ষকে উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলতো। স্ত্রী-সন্তানের অপমানজনক কথাবার্তায় তিনি প্রায় সময় বাসায় সকালের নাস্তা ও অনেক সময় দুপুরের খাবার খেতেন না। অধ্যক্ষ ঋণগ্রস্থ হওয়া সত্ত্বেও তার স্ত্রী-সন্তান বিলাসিতার জীবনযাপন করত। অধ্যক্ষের ছেলে নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করত। টাকার জন্য প্রায় অধ্যক্ষকে চাপ সৃষ্টি করত ছেলে। প্রতিবাদ করলেই স্ত্রী-সন্তানের লাঞ্ছনার শিকার হতেন তিনি। তারা প্রায়ই অধ্যক্ষকে বিষ খেয়ে বা ফাঁসি দিয়ে মরে যেতে বলতেন। গত ১০ মে সকালে অধ্যক্ষের কর্মস্থলে পৌঁছে মুঠোফোনে সুদের টাকা চান রায়েজুল। এতে মানসিকভাবে উদ্ধিগ্ন হয়ে পড়েন অধ্যক্ষ। সেসময় স্ত্রী-সন্তানের অপমানজনক ও অশোভন আচরণে এবং সুদের টাকাকে কেন্দ্র করে পাওনাদারের কটুক্তিসহ অপমানজনক কথাবার্তায় লজ্জা ও ঘৃণায় অধ্যক্ষ শৌচাগারের ঝর্ণার পাইপের সঙ্গে গলায় পায়জামার রশি (নিয়ার) পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।
অধ্যক্ষের ভাতিজা আসিফ বিন আলী বলেন, চাচা কলেজের অধ্যক্ষ থাকলেও পারিবারিকভাবে ভালো ছিলেন না। ঋণে জর্জরিত ছিলেন। কলেজের বেতনের সবটা দিয়ে প্রতি মাসে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতেন।
মামলার বাদী অধ্যক্ষের ভাই মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার ভাই আত্মহত্যা করার মতো মানুষ ছিলেন না। তার মৃত্যুর পেছনের কারণ উদ্ঘাটন করার জন্য পুলিশের কাছে অনুরোধ রইল। স্ত্রী-সন্তান তাকে (মোস্তাব আলী) মানসিক নির্যাতন করতেন। স্ত্রী-সন্তান ও পাওনাদার তার ভাইকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দিয়েছেন।
রবিবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, অধ্যক্ষের মৃত্যুর বিষয়ে তার বড় ভাই মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি তদন্তাধীন আছে।
জানা গেছে, গত ১০ মে সকাল ৯টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ঘাটুরার ২ নম্বর লোকেশনের আবাসিক এলাকায় থেকে অধ্যক্ষ মোস্তাব আলীর মরদে উদ্ধার করে পুলিশ। শৌচাগারের ভেতরে গলায় রশি প্যাঁচানো অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। তার বাড়ি নাটোর জেলায়।