চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় প্রায় দেড় যুগ পর পৌর ও ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আজ ৩০ এপ্রিল রবিবার সকালে উপজেলা যুবলীগের সভাশেষে ১টি পৌর এবং ৫টি ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এর আগে শনিবার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি করার নির্দেশ দেন। এ নির্দেশের পরপরই আজ দীর্ঘদিনের পুরাতন কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন এবং পুরাতনের সমন্বয়ে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটি অনুমোদন করে স্বাক্ষর করেছেন উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক তাকজিল খলিফা কাজল, যুগ্ম আহবায়ক মোঃ আতাউর রহমান নাজিম, যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মমিন বাবুল। এ কমিটি ৯০ দিনের মধ্যে সকল ওয়ার্ডের সম্মেলন সমাপ্ত করে পৌর/ইউনিয়ন সম্মেলন সমাপ্ত করতে হবে। আহবায়ক কমিটি গঠনের ফলে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হবে এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৪৩ সদস্য বিশিষ্ট পৌর যুবলীগের আহবায়ক কমিটির আহবায়ক হলো মুখলেছুর রহমান আনিছ। এছাড়া ৫ জন যুগ্ম আহবায়ক ও ৩৭ জনকে সদস্য করা রয়েছে। আখাউড়া উত্তর, দক্ষিণ, মনিয়ন্দ এবং ধরখার ইউনিয়নে ৩৭ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক করা কমিটি করা হয়েছে।
মোগড়া ইউনিয়নে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়। উত্তর ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক হলো মোঃ আতিক ভূইয়া। এছাড়া ৫ জন যুগ্ম আহবায়ক এবং ৩১ জন সদস্য। আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক হলো শফিকুল ইসলাম শফিক।
এছাড়া ৫ জন যুগ্ম আহবায়ক এবং ৩১ জন সদস্য। মনিয়ন্দ ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক করা হয় শফিকুল ইসলাম সুমনকে। এছাড়া ৫ জন যুগ্ম আহবায়ক ও ৩১ জন। ধরখার ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক হলো নুরুল হুদা খান নয়ন। এছাড়া ৫ জনকে যুগ্ম আহবায়ক ও ৩১ জনকে সদস্য করা রয়েছে। মোগড়া ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক হলো মোঃ হানিফ মিয়া। এছাড়া ৫ জনকে যুগ্ম আহবায়ক ও ৩৫ জনকে সদস্য করা রয়েছে।
জানতে চাইলে নব গঠিত পৌর যুবলীগের আহবায়ক মোঃ মুখলেছুর রহমান আনিছ বলেন, আমাকে আহবায়ক করায় মাননীয় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মহোদয় এবং উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করছি। আমি সততা ও নিষ্ঠার সাথে আমার দায়িত্ব পালন করব। সুন্দরভাবে পৌরযুবলীগ সাজাবো। আগামী নির্বাচনে আওয়ামীলীগকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে পৌর যুবলীগ সর্বাত্মক ভূমিকা পালন করবে।
জানতে চাইলে নব গঠিত দক্ষিণ ইউনিয়ণ যুবলীগের আহবায়ক শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, আমাকে আহবায়ক নির্বাচিত করায় মাননীয় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মহোদয় এবং উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করছি। আমি দক্ষিণ ইউনিয়নে যুবলীগকে আরও শক্তিশালী করে স্মার্ট যুবলীগ সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাবো। আগামী নির্বাচনে এ ইউনিয়নে যুবলীগ বিশ^স্ততার সাথে দায়িত্ব পালন করবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, নতুন পুরাতনের সমন্বয়ে পৌর ও ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে করে নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাঞ্চল্য ফিরে আসবে। তৃণমূলে সাংগঠনিক কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে। আহবায়ক কমিটি ৯০ দিনের মধ্যে ওয়ার্ড কমিটি গঠন করে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ পৌর/ইউনিয়ন কমিটি গঠন করে উপজেলা কমিটির নিকট দাখিল করতে হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় রেললাইন পার হতে গিয়ে চলন্ত ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে মনির মিয়া (৩২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
১১ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকেলের দিকে উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের দরুইন গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মনির মিয়া দরুইন গ্রামের বশির মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় একজন পাওয়ারট্রলি চালক।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার পুলিশ পরিদর্শক জসিম উদ্দিন খন্দকার বলেন, দরুইন এলাকার বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল সমাধির গেইট সংলগ্ন সড়ক দিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন মনির। এ সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম ডাবল রেললাইন পার হওয়ার সময় দুই দিক থেকে ট্রেন চলে আসে। তিনি একটি রেললাইন পার হলেও অপর রেললাইনে উঠা মাত্র চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে কাটা পড়েন।
তিনি আরো বলেন, এতে তার হাত, পা ও মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় শাহপীর কল্লা শহীদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৯৩ ব্যাচের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সংগঠন ‘প্রিয়মুখ ৯৩’ ব্যাচের বন্ধু মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের আজমপুর সীমান্তবর্তী আর্মি বাগানে আজ ২ জুলাই রবিবার দিনব্যাপী আয়োজন আনন্দ উচ্ছাসে সম্পন্ন হয়।
গান, কৌতুক, কবিতা, স্মৃতি চারণ, খেলাধুলা এবং র্যাফেল ড্র এসবের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একটি আনন্দময় দিন কাটায় সহপাঠীরা।
দীর্ঘদিন পর হারিয়ে যাওয়া বন্ধু-বান্ধবীদেরকে কাছে পেয়ে উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেন সহপাঠীরা। অনুষ্ঠানে অনেকেই জীবনসঙ্গী ও ছেলে মেয়েদেরকে নিয়ে আসেন। পুরনো বন্ধুকে কাছে পেয়ে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আনন্দ উচ্ছাস প্রকাশ করেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানটি যেন হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের মিলন মেলায় পরিনত হয়। ছোট্ট ছোট্ট ছেলে মেয়েরা বাবা মায়ের সাথে এসে আনন্দ উপভোগ করে।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল পরিচিতি, গান, কৌতুক, স্মৃতিচারণ। দুপুরে নামাজের বিরতির পর প্রীতিভোজ। তারপর শুরু হয় মজার মজার সব খেলা। মিউজিক্যাল চেয়ার, সুইয়ের মুখে সুতা ঢুকানো, হাড়ি ভাঙ্গাসহ আরও কত কী।
পুরনো দিনের স্মৃতিচারণ করার সময় অনেকের কন্ঠের স্বর ভারি হয়ে আসে। চোখের কোণ গড়িয়ে নেমে আসে পানি। আবার অনেকে মজার কৌতুক বলে হাসিয়ে তুলেন সবাইকে। লাউড স্পিকারে করুন সুরে বেজে উঠে ‘পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায়। ও সেই চোখে দেখা, প্রাণের কথা, সে কি ভোলা যায়। আয় আর একটিবার আয় রে সখা, প্রাণের মাঝে আয়।’
অনুষ্ঠানের আয়োজনস্থলটি খুবই মনোমুগ্ধকর। সীমান্তঘেঁষা বিভিন্ন ফল ফলাদির বাগানটি খুবই সুন্দর। অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে বাগানটি ঘুরে দেখেন আগতরা। পূর্ব দিকে চোখ ফেরাতেই চোখে পড়ের কাঁটাতারের বেড়া। তারপরেই আগরতলার বিমানবন্দরের রানওয়ে। সব মিলিয়ে এলাকাটি ছিল খুবই চমৎকার।
পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন আজমপুরের কৃতি সন্তান, ঢাকা গুলশানের সাবেক সাব- রেজিস্ট্রার মোঃ রমজান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যাপক মোবারক খান, হংকং প্রবাসী বিশিষ্ট শিল্পপতি এ.এম.ডি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোঃ আজমল হোসেন খান, এ.এমডি ফাউন্ডেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নাজমুল হোসেন সুমন, প্রভাষক সায়েদুর রহমান, আক্তার হোসেন, সার্জেন্ট (অব.) মোঃ সফিউল আলম স্বপন, ইকরাম হোসেন, কামাল ভূইয়া প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মোহাম্মদ মুন্না।হাসি আনন্দ আর নিজেদের সুখ দু:খ ভাগাভাগি করে এক বুক ভালোবাসা নিয়ে যে যার নীড়ে ফিরে যান আবারও দেখা হবে সেই প্রত্যাশায়।
চলারপথে রিপোর্ট :
কিডিন ও পিত্তে পাথর, হার্টে সমস্যা, ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্ট রোগে ভুগছেন মনোয়ারা বেগম (৫৫)। চিকিৎসক বলেছেন অপারেশন করাতে। কিন্তু টাকার অভাবে অপারেশন করাতে পারছেন না তিনি। টাকার জন্য ঠিকমত ওষুধ সেবন করতেও পারেন না। দিন দিন তার শরীরের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। বাঁচার জন্য, চিকিৎসার জন্য সহৃদয় মানুষের সহযোগিতা চান স্বামী হারা অসহায় এই নারী। মনোয়ারা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া পৌরশহরের রাধানগর পশু হাসপাতাল সংলগ্ন আলমগীর মিয়ার বাড়িতে মেয়ের সাথে ভাড়া বাসায় থাকেন। দ্রুত তার কিডনি ও পিত্ত পাথরের অপারেশন করা দরকার।
জানা যায়, পৌরশহরের দেবগ্রামের ফুল মিয়ার মেয়ে মনোয়ারা বেগম। ১০ বছর আগে স্বামী মারা গেলে ১ টি ছেলে ও ২ টি মেয়ে নিয়ে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন। বহু কষ্ট করে মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকতো। সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে বড় আশা বুকে নিয়ে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু চাকরী না পেয়ে ছেলে দেশে ফিরে এসেছে। স্বামী নাই। ছেলে বেকার। সংসারে আয় রোজগার করার কেউ নাই। বিগত ৪ বছর ধরে মনোয়ারা বেগম বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। তার চিকিৎসার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা ও ঠিকমত ওষুধ সেবন করতে পারছেন না তিনি।
সরেজমিনে বাসায় গিয়ে দেখা যায়, টিন সেডের ছোট্ট একটি রুমে শুয়ে আছেন মনোয়ারা বেগম। শরীর অনেকটা শুকিয়ে গেছে। ঠিকমত কথা বলতে পারছিলেন না তিনি। কথা বলতে গিয়ে বার বার হাঁপিয়ে উঠছিলেন তিনি।
অসহায় এই নারী বলেন, বাবা গরীব। পরের বাড়িতে থাকি। আমার টাকা পয়সা নাই। আমার খুব কষ্ট। ওষুধপত্র সেবন করতে পারছি না। ডাক্তার বলছে কিডনি ও পিত্ত পাথরের অপারেশ করাতে কিন্তু টাকার জন্য পারতেছি না। আত্মীয় স্বজনের সহযোগিতায় কোন রকমে চলতেছি। মরলে বেচে যেতাম, মরিও না বাঁচিও না। মানুষের দয়ায় আল্লাহ যদি আমাকে মরন পথ থেকে বাঁচায়।
এ ব্যাপারে আখাউড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও দেবগ্রাম এলাকার পৌর কাউন্সিলর মোঃ বাবুল মিয়া বলেন, মনোয়ারা বেগমের অসুস্থতার বিষয়টি আমি অবগত আছি। যতটুকু পারি সহযোগিতা করবো।
আখাউড়া প্রতিনিধি :
একটি প্রভাবশালী মহল ফসলি জমির পাশে খাল দখলে নিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে জমির পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কৃষকরা।
লিখিত অভিযোগ ও ভুক্তভোগী কৃষক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের চরনারায়ণপুর মৌজায় বুড়িবিলের পাশে ৫ শতাধিক বিঘা কৃষি জমি রয়েছে। উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের দরুইন গ্রামের মৃত শরিয়ত উল্লার ছেলে মো. তাহের মিয়া ও একই গ্রামের হাজী আবুল কাশেমের ছেলে মো. রাসেল মিয়া বিগত কয়েক বছর পূর্বে চরনারায়ণপুর মৌজাতে কিছু জমি ক্রয় করে জমিগুলোর পশ্চিম পাশে উত্তর-দক্ষিণ করে একটি বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে। যার ফলে ওই এলাকার শত শত বিঘা কৃষি জমিতে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ও শুস্ক মৌসুমে পানির অভাব সৃষ্টির হয়ে জমিগুলো চাষে অযোগ্য হওয়ার উপক্রম। ভুক্তভোগী কৃষকরা এসব নিয়ে প্রতিবাদ করলে তাদের উপর চড়াও হয়ে ভয়ভীতি হুমকি ধমকি দেন তারা। এ চক্রটির দাপটে কেউ কথা বলার সাহস পায়না। নিরীহ কৃষকদের জমি দখলের চেষ্টায় লিপ্ত আছে বলে অভিযোগ কৃষকদের।
সম্প্রতি আবারও জমি কেটে পুকুর নির্মাণ শুরু করেছে তাহের মিয়া। কিন্তু পুকুরের পাড় নির্মাণের কারণে পুকুরের পেছনের প্রায় ৫০০ বিঘা জমি থেকে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যাবে। আবার বর্ষাকালে পানি সরাতে না পেরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। ফলে শত শত বিঘা জমির চাষাবাদ হুমকির মুখে পড়ছে।
খাল দখলের ফলে ভুক্তভোগী কৃষক লিয়াকত আলী অভিযোগ করে বলেন, আমার এখানে প্রায় ২৮ বিঘা জমি রয়েছে। চারদিকে ঘুরিয়ে যে বাঁধ দিচ্ছে এতে করে আমাদের জমিগুলোর পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ হয়ে পরেছে। এ বাঁধের ভেতরে শত শত বিঘা জমি জলাবদ্ধ হয়ে চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যাবে। চাষাবাদ না করতে পারলে আমরা না খেয়ে মরব।
স্থানীয় বাসিন্দা মিলন মিয়া বলেন, একটি প্রভাবশালী মহল খালে মাটি ফেলে বেড়িবাঁধ দিয়েছে। আমরা বাঁধা দিয়েছি কিন্তু তারা আমাদের বাঁধা মানে নাই। তারা বলেছিল ব্রীজ করে দিবে কিন্তু ব্রিজ করে দেয় নাই। এ জন্য জমির পানি নিষ্কাশন হয় না। আমরা অনেক কষ্টের মধ্যে আছি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত তাহের মিয়া বলেন, এখানে কোনো খাল নেই। নিজের জায়গায় বাঁধ দিয়েছি। এতে করে কৃষকদের কোনো ক্ষতি হবে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, চরনরায়ণপুরে ৫০০ বিঘা জমি রয়েছে। ২০১৯ সালে কৃষকরা ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিল। স্যারের নির্দেশে আমি তদন্ত করার জন্য সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানে উঁচু বাঁধের কারণে কৃষকদের জমিতে পানি আসা-যাওয়া বাঁধাগ্রস্ত হয়। এখানে যদি আবারও বড় বাঁধা তৈরি করা হয় তাহলে কৃষি জমির ক্ষতি হবে। সেচের অভাবে জমিগুলো খালি পড়ে থাকবে। এটা কৃষির জন্য হুমকি স্বরুপ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলেন, কৃষকদের যাতে ক্ষতি না হয় সে ব্যাপারে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা বলেন, কৃষকদের একটি দরখাস্ত পেয়েছি। স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বিষয়টি দেখার জন্য বলেছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেলিভারির পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে এক প্রসূতি মা নব জাতকের মৃত্যু হয়েছে। আজ ৫ মে শুক্রবার দুপুরে দুপুরে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত প্রসূতি সাহিদা আক্তার খুকি উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের ছয়গড়িয়া গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেনের মেয়ে এবং কসবা উপজেলার ধ্বজনগর গ্রামের কুয়েত প্রবাসী শাহীন মিয়ার স্ত্রী। স্বজনদের অভিযোগ, রক্তক্ষরণ বন্ধে এবং শিশুটির তাৎক্ষনিক সঠিক চিকিৎসা না দেওয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৮টার দিকে প্রসব ব্যথা উঠলে সাহিদাকে তার স্বজনরা হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালের মিড ওয়াইফ আমেনা আক্তার সুমনার তত্ত্বাবধানে বেলা সোয়া ১১টার দিকে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় সাহিদা আক্তার। সন্তান প্রসবের পর সাহিদার প্রচুর রক্ষক্ষরণ শুরু হয় এবং নবজাতকের শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ গোলাম মোস্তাফা এবং মিড ওয়াইফ আমেনা আক্তার তখন প্রসূতি সাহিদা আক্তার এবং নবজাতককে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। বেলা ১২টার পরে নিহতের স্বজনরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তখন সাহিদা ও নবজাতককে মৃত বলে ঘোষণা করে। পরে তাদেরকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেও তাদেরকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বেলা ৩টার দিকে স্বজনরা সাহিদার মরদেহ আখাউড়া হাসপাতালে নিয়ে আসে।
সাহিদার বড় বোন মাহমুদা বেগম অভিযোগ করেন, চিকিৎসার অভাবে সাহিদা ও তার শিশু সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ হিমেল খান বলেন, হাসপাতালে স্বাভাবিক ডেলিভারির পর রক্তক্ষরণ শুরু হলে চিকিৎসকরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছেন। শিশুটির শ্বাস কষ্ট হচ্ছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাপাতালে পাঠানো হয়। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখব। কোন চিকিৎসক এবং নার্সের কর্তব্যের অবহেলার জন্য যদি প্রসূতি ও তার সন্তানের মৃত্যু হয়ে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসাদুল ইসলাম ইসলাম বলেন এ ব্যপারে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।