চলারপথে ডেস্ক :
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, যুদ্ধাপরাধী রাজনৈতিক দল হিসাবে জামায়াতের বিচারের জন্য আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চলমান। আজ ৬ মে শনিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বিচার বিভাগের কাছে একটি চাওয়া, বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষ যেন দ্রুত ন্যায়বিচার পায়। তারা যেন মামলার দীর্ঘসূত্রতার অবস্থান থেকে পরিত্রাণ পায়।
ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সিনিয়র সহকারী জজ এবং সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত ১৪৮তম রিফ্রেসার কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বক্তব্য দেন।
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জুডিশিয়াল ডিসিশন (সর্বোচ্চ আদালতের রায়, সিদ্ধান্ত) মেনে মামলাজট নিরসনে ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রশিক্ষণার্থী বিচারকদের জুডিশিয়াল ডিসিপ্লিন মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, সুপ্রতিষ্ঠিত জুডিশিয়াল ডিসিশনগুলো মেনে না চললে জুডিশিয়াল অ্যানার্কি (বিশৃঙ্খলা) তৈরি হতে পারে। নিশ্চয়ই আমরা কেউই এটা চাই না।
বিচারকদের দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এখন বিচারকদের দায়িত্ব মানুষ যেন দ্রুত বিচার পায়, সেটা নিশ্চিত করা। দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত মামলাজট কমানোর দায়িত্ব আমাদের কাঁধে নিতে হবে এবং জনগণ যাতে ত্বরিত সুষ্ঠু বিচার পায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগের জন্য অন্য যে কোনো সরকারের চেয়ে এখন বাজেট বাড়ানো হয়েছে।
প্রশিক্ষণার্থী বিচারকদের উদ্দেশে আইনমন্ত্রী বলেন, অন্য সব সরকারের আমলে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের কী অবস্থা ছিল, তার ইতিহাস অনেকেরই জানা। এক কথায় বলা যায়, বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য পৃথক কোনো প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটই ছিল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রথমবার সরকার গঠন করার পর বিচারকদের জন্য প্রথম প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। তার সরকারের সদিচ্ছার কারণেই দেশে আরেকটি বিশ্বমানের ন্যাশনাল জুডিশিয়াল একাডেমি প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলছে। যেখানে বিচারকরা বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারবেন।
বিচারকদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, তাদের প্রশিক্ষণের এ ধারা অব্যাহত থাকবে। শুধু তাই নয়, দেশিও প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি বিদেশি প্রশিক্ষণ প্রদান কার্যক্রমও চলমান থাকবে। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) শেখ আশফাকুর রহমান বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠান শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। জামায়াতের বিচারে সরকারের আন্তরিকতার ঘাটতি আছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকর করেছে। তাই জামায়াতের বিচারে সরকারের আন্তরিকতা নেই, এমন প্রশ্ন করা আমাদের জন্য দুঃখের। জামায়াতের বিচারের জন্য আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চলমান। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল নিয়ে মামলা আপিল বিভাগে বিচারাধীন। তাই এ বিষয়ে কোনো কথা বলব না।
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইসির নির্দেশ পেয়ে দুই জেলায় জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহের ডিসি মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে উপসচিব হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সুনামগঞ্জের ডিসি দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীকে ময়মনসিংহের নতুন ডিসি করা হয়েছে। আর জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে সংযুক্ত উপসচিব মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরীকে সুনামগঞ্জের ডিসি করা হয়েছে।
আজ ২ ডিসেম্বর শনিবার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
ইসির ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচন হবে। তফসিল অনুযায়ী, সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর।
চলারপথে ডেস্ক :
রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে হেরোইনের চালান নৌপথে ভারত থেকে আসে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ফাঁকি দিতে এসব মাদক বহনের জন্য ব্যবহার করা হয় নারীদের। এই চক্রে ১০-১২ নারী আছেন। তাঁরা প্রতি মাসে চার-পাঁচ কেজি হেরোইন নিয়ে আসেন। পরে তাঁরা বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম করে এই মাদক পাঠিয়ে দেন। প্রতিটি চালানের জন্য তাঁরা পান ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা।
হেরোইনের কারবারে জড়িত একটি চক্রের প্রধান শাকিবুর রহমানসহ তিনজনকে গ্রেফতারের পর আজ ৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার এসব তথ্য জানায় র্যাব। গ্রেফতার অপর দু’জন হলেন- তাঁর স্ত্রী সেলিনা খাতুন ওরফে শিরিনা ও সহযোগী রাজিয়া খাতুন। বৃহস্পতিবার রাতে র্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১২ যৌথভাবে গাজীপুরের কালিয়াকৈর এবং নওগাঁয় এ অভিযান চালায়। এ সময় আনুমানিক সাড়ে ৫ কোটি টাকা মূল্যের ৫ কেজি ৪০০ গ্রাম হেরোইন জব্দ করা হয়।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে আজ রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সাধারণত চক্রের নারী সদস্যরাই হেরোইন বহন করে। তবে চালানের পরিমাণ বেশি হলে শাকিবুর নিজেও থাকতেন। এই চালানে তিন কেজির বেশি হেরোইন থাকায় তিনি বহনকারীদের সঙ্গে ছিলেন। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে শাকিবুর জানান, তাঁর নওগাঁর বাসায় আরও দুই কেজি হেরোইন আছে। এর পর সেখানে অভিযান চালিয়ে তার স্ত্রীর হেফাজতে থাকা দুই কেজি হেরোইন জব্দ করা হয়।
র্যাবের কমান্ডার জানান, গ্রেফতার শাকিব এর আগে চুরির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এলাকায় তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক চুরির অভিযোগ রয়েছে। দুই বছর ধরে তিনি মাদক কারবারে জড়িত। তিনি সীমান্ত থেকে সহযোগীদের মাধ্যমে হেরোইন সংগ্রহ করে প্রথমে নিজের বাড়িতে রাখতেন। পরে চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন সময় যাত্রীবাহী বাস, লঞ্চ এবং কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমেও দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদক কারবারিদের কাছে সরবরাহ করতেন। অর্থের লেনদেন হতো মোবাইল ব্যাংকিংয়ে।
র্যাবের এ মুখপাত্র জানান, সেলিনা খাতুন তাঁর স্বামীর মাদক কারবারের সহযোগী। হেরোইনের একটি অংশ তিনি বাড়িতে নিজের হেফাজতে রাখতেন। আস্থাভাজন মাদক কারবারিদের বাড়ি থেকেই হেরোইন সরবরাহ করা হতো। আর রাজিয়া শাকিবুরের অন্যতম সহযোগী। তিনি দেশের বিভিন্ন জেলায় হেরোইন সরবরাহ করতেন। তিনি অনেকবার শাকিবুরের সঙ্গে মোটরসাইকেলে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে হেরোইন সরবরাহ করেছেন। বৃহস্পতিবারও তাঁরা গাজীপুর ও সাভারের বিভিন্ন স্থানে হেরোইন সরবরাহের উদ্দেশ্যে নওগাঁ থেকে রওনা হন। পথে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে তাঁদের গ্রেফতার করে র্যাব।
স্টাফ রিপোর্টার:
বিদ্যুৎ খাতে দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং সর্বোপরি গ্রাহক সেবার মান উন্নয়নে এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং (ইআরপি) বাস্তবায়নে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার ২০২২’ অর্জন করেছে। সোমবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হাবিবুর রহমানের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াচ্ছি। ইআরপি বাস্তবায়নের ফলে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ব্যয় হ্রাস, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, পারফর্মেন্স পর্যালোচনা, তথ্যের অবাধ বিনিময়, তথ্যগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সরকারি পর্যায়ে বিদ্যুৎ বিভাগেই প্রথমবারের মতো সফলভাবে ইআরপি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। যা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও উৎসাহের সঞ্চার করবে। তিনি আরও বলেন, আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা চিহ্নিত করতে এই প্রযুক্তিটি কার্যকরি অবদান রাখবে। ইতোপূর্বে আমরা শতভাগ বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এবং মুজিববর্ষে শতভাগ বিদ্যুতায়ন সফলভাবে সম্পন্ন করায় ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২২’ অর্জন করেছি।
দক্ষতা উন্নয়ন, অটোমেশন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিতকরণ, বাজেট ও ব্যয় ব্যবস্থাপনায় গতিসঞ্চার করা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, জনগণের সাধ্যের মধ্যে নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করাসহ গ্রাহকের সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ বিভাগ এবং এর আওতাধীন ১৫টি সংস্থায় ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ইআরপি কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। প্রথমবারের মতো সরকারি পর্যায়ে এ উদ্যোগ গ্রহণ করায় প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিলেও সংশ্লিষ্ট সবার ঐকান্তিক প্রয়াসের ফলে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৪টি মডিউল বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়। এ ৪টি মডিউলের বিশেষ দিকগুলো হলো- হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড পে রোল, ফিক্সড অ্যাসেট, প্রকিউরমেন্ট এবং ফাইন্যান্স।
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আজ ৪ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
৩ জানুয়ারি বুধবার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বুধবার দেশের পাঁচটি জেলা ও একটি উপজেলায় নির্বাচনী জনসভায় ভার্চুয়ালি অংশ নেন। বিকেল ৩টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে এসব জনসভায় যুক্ত হন তিনি।
শেখ হাসিনা পর্যায়ক্রমে রংপুরের গাইবান্ধা, রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী জেলা ও মহানগর, ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা জেলা ও উত্তর-দক্ষিণ মহানগর এবং চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য দেন।
অনলাইন ডেস্ক :
‘আমাদের কাছে পাবেন অরিজিনাল (এ জে এস কাগজের) গ্লেজিং প্রিন্টের সুতা জলছাপসহ নিখুঁত কাজের মাল। আমাদের কাছে ৫০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার জাল নোট আছে, যা ব্যাংকের মেশিন ছাড়া খালি চোখে বোঝা অসম্ভব।’ ফেসবুকের একটি গ্রুপে এমন বিজ্ঞাপন দিয়ে চলছিল জাল টাকার কারবার। এই চক্রটি জাল টাকা তৈরির টিকটক ভিডিও বানিয়ে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে প্রচারণা চালাত। তবে মূলত জাল টাকা সরবরাহের নামে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে আসছিল তারা।
সম্প্রতি এই চক্রের অন্যতম সদস্য সিফাত শেখকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে জাল টাকার কারবার ও এই চক্রের বিস্তারিত।
ডিবির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, সিফাত ও তার সহযোগীরা নিখুঁত জাল টাকা সরবরাহের বিজ্ঞাপন দিয়ে আগ্রহীদের আকৃষ্ট করত। এরপর অগ্রিম টাকা নিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দিত। ক্রেতাদের দেখানোর জন্য কিছু জাল নোট তারা নিজেদের কাছে রাখত। তবে সেগুলো কাউকে সরবরাহ করত না। এই চক্রে ১০ জনের বেশি সদস্য রয়েছে। তারা কেউ জাল নোট বানায়, কেউ ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেয়, কেউ ক্রেতার কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে।
উপকমিশনার জানান, চক্রের সদস্যরা সবাই সাধারণ পরিবার থেকে আসা তরুণ। তবে তারা ফ্যাশনেবল ও বিলাসী জীবনযাপনের চেষ্টা চালায়। মাঝেমধ্যেই তারা কক্সবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে যায়। জাল নোট বিক্রির নামে হাতিয়ে নেওয়া অর্থ তারা মূলত ‘ফূর্তি’র জন্য ব্যয় করে। সিফাতকে গত ২৯ এপ্রিল কক্সবাজার থেকে ফেরার পথেই গ্রেফতার করা হয়।
ডিবি সূত্র জানায়, কেরানীগঞ্জ উপজেলা চত্বরে ফুটপাতে ছয় হাজার টাকা বেতনে পোশাক বিক্রেতা হিসেবে কাজ করে সিফাত। সে ইউটিউবসহ অনলাইনে বিভিন্ন সাইট ঘেঁটে জাল টাকা তৈরি করা শিখেছে। পরে নিজেরা জাল টাকা বানানোর সময় তা ভিডিও করে অনলাইনে ছড়িয়ে দিয়েছে। মূলত সহজে অধিক অর্থ উপার্জন করতে চাওয়া লোভী ব্যক্তিরা তাদের টার্গেট। তারা এক হাজার টাকার ১০০টি জাল নোটের জন্য ১০ হাজার টাকা, ৫০০ টাকার ১০০টি নোটের জন্য ১২ হাজার টাকা, ১০০ ও ২০০ টাকার এক লাখ জাল নোটের জন্য ২০ হাজার টাকা দাম নিত। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা নেওয়ার পর তারা যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
এই চক্রের একটি ফেসবুক গ্রুপে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন সময়ে জাল টাকার বান্ডিলের ছবি-ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখানো হচ্ছে, জাল টাকায় আসল টাকার সব নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ফলে হঠাৎ করে কারও পক্ষে সেটাকে জাল হিসেবে ধরা সম্ভব নয়। গত মাসের একটি পোস্টে বলা হয়েছে, ঈদ উপলক্ষে এ-গ্রেডের নিখুঁত জাল নোট তৈরি করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশের যে কোনো এলাকায় হোম ডেলিভারি দেওয়া হবে। সেজন্য ৫০ ভাগ টাকা অগ্রিম দিতে হবে। কুরিয়ার সার্ভিস বা নিজস্ব প্রতিনিধির মাধ্যমে পাঠানো জাল টাকার চালান হাতে পাওয়ার পর বাকি টাকা দিতে হবে। যোগাযোগের জন্য একটি ফোন নম্বরও দেওয়া আছে।
একটি ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে, ‘মালের (জাল টাকা) স্যাম্পল নিজ হাতে চেক করে তারপর অর্ডার করবেন।’
চারদিন আগে লেখক আফসান চৌধুরী ফেসবুকে জাল টাকা বিক্রির বিজ্ঞাপনের একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেন। সেখানে তিনি লিখেছেন– ‘পুলিশ এত কিছু জানে, এটা জানে না? রেট এত ভালো। এক টাকার বদলে নকল আট টাকা।’ তাঁর শেয়ার করা স্ক্রিনশটে লেখা রয়েছে– ‘এক লাখ মালের দাম ১২ হাজার টাকা। সব রকমের নোট। সর্বনিম্ন অর্ডার ৫০ হাজার টাকা।’
এর আগে গত ২৪ এপ্রিল রাজধানীর দক্ষিণ গোড়ান থেকে ফেসবুকে প্রচার চালিয়ে জাল নোটের কারবারে জড়িত চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ।