চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবৈধভাবে রেলওয়ের জলাশয় বালু ফেলে ভরাটের দায়ে জব্দ করা ১৫ হাজার ঘনফুট বালু উম্মুক্ত নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। নিলামে ৮১ হাজার টাকায় এই বালু বিক্রি করা হয়।
গতকাল বুধবার বিকেলে সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মোশারফ হোসেনের উপস্থিতিতে এই উম্মুক্ত নিলাম অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে রেলওয়ের জলাশয় অবৈধভাবে বালু ফেলে ভরাটের প্রতিবাদে গত রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার বড় হরণ লেবেল ক্রসিং এলাকায় মানববন্ধন করে এলাকার সর্বস্তরের জনগণ।
সদর উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় লোকজন ও নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, বড়হরণ এলাকায় রেলের জলাশয় বালু ফেলে ভরাট করে ফেলে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। বিষয়টি জানতে পেরে গত সোমবার দুপুরে সেখানে ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মোশারফ হোসেন।
এ সময় বালু ভরাটের কাছে ব্যবহৃত একটি ভেকু ও জলাশয়ে ফেলা সকল বালু জব্দ করা হয় এবং চার কার্যদিবসের মধ্যে জব্দ করা বালু নিলাম ডেকে বিক্রি করে জলাশয়কে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আনতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলমকে নির্দেশ দেন তিনি।
এসিল্যান্ডের নির্দেশে বুধবার বিকেলে নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে উম্মুক্ত নিলাম আহবান করেন ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম। সেসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মোশারফ হোসেন। নিলামে নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের পয়াগ নরসিংসার গ্রামের খলিলুর রহমান নামে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ মূল্য ৮১ হাজার টাকা ডাক তোলেন।
এ ব্যাপারে নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলম বলেন, ৮১হাজার টাকায় সর্বোচ্চ মূল্য উঠে উম্মুক্ত নিলামে। আগামী শনিবার থেকে ওই ব্যক্তির কাছে বালু বুঝিয়ে দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মোশারফ হোসেন বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ এর আলোকে সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের বড়হরণ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।
রেলওয়ের মালিকানাধীন একটি জলাশয় বালু ফেলে ভরাট করার অপরাধে একটি ভেকু ও ভরাট করা বালু জব্দ করা হয়। তিনি বলেন, এর আগেও গত ১৯ ফেব্রিয়ারি বালু ফেলে জলাশয় ভরাটের দায়ে বড় হরণে অভিযান চালিয়ে খননযন্ত্র জব্দসহ এক লাখ টাকা করিমানা করা হয়। তিনি বলেন, পরিবেশ আইনে জলাশয় কোনোভাবেই ভরাট করার সুযোগ নেই।
চলারপথে রিপোর্ট :
কার্ডিওলজিক্যাল সোসাইটি অব ইন্ডিয়া (সিএসআই) আয়োজিত ‘৭৫তম প্লাটিনাম জুবিলী বার্ষিক কার্ডিওলজিক্যাল কনফারেন্স-২০২৩’-এ যোগ দিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও কার্ডিয়াক কনসালটেন্ট ডা. মুহাম্মদ আব্দুল মতিন (সেলিম) ভারত গেছেন।
ইউরোপীয়ান সোসাইটি অব কার্ডিওলজিক্যাল এর মেম্বার ডা. মতিনকে বার্ষিক এই কনফারেন্সে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে কার্ডিওলজিক্যাল সোসাইটি অব ইন্ডিয়া (সিএসআই)।
৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে ভারতের কলকাতার আইটিসি রয়্যালে শুরু হওয়া এ বার্ষিক কনফারেন্স শেষ হবে ১০ ডিসেম্বর। কনফারেন্সে যোগ দিতে আজ ৬ ডিসেম্বর বুধবার কলকাতার উদ্দেশ্যে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন। ২০২২ সালে ভারতের চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত বার্ষিক কার্ডিওলজিক্যাল কনফারেন্সেও অংশগ্রহণ করেছিলেন ডা. মতিন।
এবারের কনফারেন্সে ইউরোপীয়ান কার্ডিওলজিক্যাল সোসাইটি, আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন, ইন্ডিয়ান কার্ডিওলজিক্যাল সোসাইটির সদস্যসহ বাংলাদেশসহ বিশ্বের সাড়ে ৫ হাজার কার্ডিলওজিস্ট অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়া ইন্ডিয়ান কার্ডিওলজিক্যাল সোসাইটির আমন্ত্রণে বাংলাদেশের খ্যাতনামা কার্ডিওলজিস্টগণও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করবেন।
বার্ষিক কনফারেন্সে হৃদরোগ চিকিৎসায় আধুনিকবিজ্ঞানের নবতম সংযোজন, সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিবিদ্যার ব্যবহার, হৃদরোগের জটিল বিষয় নিয়ে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করাসহ হৃদরোগের সমসাময়িক চিকিৎসা বিজ্ঞানের নানা দিক নিয়ে পর্যালোচনা করেন বিশ্বের খ্যাতনামা কার্ডিওলজিস্টগণ। কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করা চিকিৎসকগণ লব্ধ জ্ঞানের মাধ্যমে হৃদরোগীদেরকে বিশ্বমানের সেবাদানে সক্ষমতা অর্জন করেন এবং এতে রোগীরাও আগের তুলনায় আরও বেশি উপকৃত হন। কনফারেন্স উপলক্ষে চিকিৎসকদের আগমণ ও অবস্থান প্রতিবছর কার্ডিওলজিস্টদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ জাঙ্গাল গ্রামের কৃতি সন্তান ডা. মোহাম্মদ আব্দুল মতিন (সেলিম)। আশুগঞ্জ পূর্ব বাজার দারুল উলুম হাফেজিয়া কোরআনিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক হাফেজ মো. আব্দুর রহিমের ৫ সন্তানের সর্বকনিষ্ঠ মোহাম্মদ আবদুল মতিন (সেলিম) নিজের দক্ষতায় রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত ফিফা বিশ্বকাপ-২০১৮ এর ডোপিং কন্ট্রোল টিমে একমাত্র বাংলাদেশি ‘ডোপিং কন্ট্রোল চ্যাপেরন’ হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন। এর আগে ২০০৪ সালে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে একজন সৌভাগ্যবান হিসেবে বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় গিয়েছিলেন ডাক্তারি পড়তে। তিনি রাশিয়ার রুস্তভ স্টেইট ইউনিভার্সিটি থেকে এমডি ও ক্লিনিক্যাল অরডিনাটুরা কোর্স সম্পন্ন করেন সেইন্ট পিটার্সবার্গ শহরেরই ঐতিহ্যবাহী নর্থ ওয়েস্টার্ন স্টেট মেডিকেল ইউনিভার্সিটি’তে। একই শহরের পাত্রোভ্সকায়া এলাকার সিটি হসপিটালে কার্ডিওলজি ডিপার্টমেন্টের হার্ট স্পেশালিস্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন প্রায় দুই বছর। এরপর একের পর এক সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে পৌঁছে গেছেন নিজের কাঙ্ক্ষিত সীমানায়। সেই সঙ্গে রাশিয়ার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ইভেন্টে দেশের পতাকাকে তুলে ধরেছেন নানাভাবে। রাশিয়া বিশ্বকাপ-২০১৮ এর ফিফা ও অর্গানাইজেশন কমিটির বিভিন্ন অডিশনে অংশ নেন এবং রাশিয়া ফুটবল বিশ্বকাপে ‘ডোপিং কন্ট্রোল’ টিমের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ডা. মোহাম্মদ আব্দুল মতিন (সেলিম) বলেন, ২০২২ সনে চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত বার্ষিক কনফারেন্সে বিশ্বের নামি-দামি কার্ডিওলজিস্টদের সঙ্গে আমিও অংশগ্রহণ করেছিলাম। এবারও আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আশা করি, কনফারেন্স থেকে লব্ধ জ্ঞানের মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ সারা দেশের হৃদরোগীদেরকে আরও সহজভাবে মানসম্মত চিকিৎসা দিতে সক্ষম হব।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে ছিটকে পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন অপর একজন। ১১ আগস্ট শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টির দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কলেজপাড়ার লেভেল ক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম মাইন উদ্দিন (৪০)। তিনি কুমিল্লার হোমনা উপজেলার ঘনিয়ারচর গ্রামের মৃত রোককু মিয়ার ছেলে। ছিটকে পড়ে আহত অপর ব্যক্তি হলেন জগত মিয়া (৫০)। তিনি নরসিংদীর বেলাব উপজেলার বাড়িচা গ্রামের আবদুর রেজ্জাক মিয়ার ছেলে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হাতেম আলী ভূঁইয়া বলেন, আখাউড়ার খড়মপুর মাজারে বার্ষিক ওরসে যাওয়ার জন্য অনেকে ট্রেনের ছাদে ওঠেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আখাউড়াগামী তিতাস কমিউটার ট্রেনটি শহরের কলেজপাড়ার লেভেল ক্রসিং এলাকা অতিক্রম করার সময় ওই দুই ব্যক্তি হঠাৎ ট্রেনের ছাদ থেকে নিচে পড়ে যান। এ সময় ট্রেনের চাকায় মাইন উদ্দিনের বাঁ পা কাটা পড়ে। আর জগত মিয়া রেললাইনের পাশে ছিটকে পড়েন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে যান। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাইন উদ্দিন মারা যান। আহত জগত মিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহত ব্যক্তির লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরকারের নতুন মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুই এমপি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী (গৃহায়ণ ও গণপূর্ত) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (আখাউড়া-কসবা) আসনের আনিসুল হক তৃতীয়বারের মতো (আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়) এর মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। জেলায় দুই জন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী পেয়ে উচ্ছ্বসিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ। সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা, এ দুই মন্ত্রীর হাত ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা উন্নয়নে এগিয়ে যাবে।
১৯৮৪ সালে মহকুমা থেকে জেলায় রূপান্তরিত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া। প্রায় ৩৫ লাখ জনসংখ্যার এ জেলায় অন্যান্য জেলার তুলনায় উন্নয়ন তেমন হয়নি। এবার দু’জন মন্ত্রী পাওয়ায় জেলাবাসীর প্রত্যাশা অনেক বেড়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নাগরিক ফোরামের সভাপতি পীযূষ কান্তি আচার্য বলেন, দুই মন্ত্রী পেয়ে আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত। আশা করি আমাদের জেলা তাদের হাত ধরে স্মার্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া হিসেবে গড়ে উঠবে।
প্রত্যাশার কথা জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক নিহার রঞ্জন সরকার বলেন, আমাদের প্রত্যাশা দীর্ঘদিনের। প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির যে ফারাক ছিল তা এবার পূরণ হবে বলে আশা করি।
সামাজিক সংগঠন তরী বাংলাদেশের আহ্বায়ক শামীম আহমেদ বলেন, একজন পরিবেশকর্মী হিসেবে আমার অনুরোধ থাকবে, নদী-প্রকৃতি সুরক্ষা করেই যেন সব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
লাগেজ থেকে মাথা ও দুই পা বিচ্ছিন্ন অজ্ঞাতপরিচয় এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ ৩১ জানুয়ারি বুধবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের সেন্দা গ্রামের একটি পুকুর পাড় থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, পুকুর পাড়ে একটি লাগেজ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পরে সেটি খুললে এক তরুণীর মাথা এবং দুই পা কেটে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করা মরদেহ পাওয়া যায়।
তিনি আরো জানান, স্থানীয়রা জানিয়েছেন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এক যুবক লাল লাগেজটি নিয়ে গ্রামের সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। তরুণীর নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। বয়স আনুমানিক ২৫ বা ২৬ বছর হবে। পরিচয় শনাক্ত করতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কাজ করছে।