চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দরের সাবেক ট্রাফিক পরিদর্শক আব্দুল কাদের জিলানীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ১৪ মে রবিবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এই মামলা দায়ের করেন।
ট্রাফিক পরিদর্শক আব্দুল কাদের জিলানী বর্তমানে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে কর্মরত রয়েছেন। তিনি কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি থানার আমড়াতলী গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাসুম আলী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আব্দুল কাদের জিলানী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর বন্দরে ট্রাফিক পরিদর্শক ছিলেন। আখাউড়া স্থলবন্দরে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১ তারিখ থেকে ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রবেশ করে ২২ হাজার ৮৯০টি গাড়ি। কিন্তু অভিযুক্ত আব্দুল কাদের জিলানী ১১ হাজার ৯৮৩টি গাড়ির হিসাব রেজিস্ট্রারে এন্ট্রি করেছেন। বাকি ১০হাজার ৯০৭টি গাড়ি প্রবেশের তথ্য এন্ট্রি করেননি। গাড়িগুলো রেজিস্ট্রারে এন্ট্রি না করে এর ফি ১২ লাখ ৬২ হাজার ৯০২টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না করে আত্মসাৎ করেন।
এ ঘটনায় রবিবার দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০ ধারা সহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় দুদক স্থলবন্দর ট্রাফিক পরিদর্শক আব্দুল কাদের জিলানীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় মুরাদ হোসেন নামে এক প্রার্থীকে দলীয়ভাবে সমর্থন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ আয়োজিত সভায় বিধি লংঘন করে বানানো ব্যানারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা, আইনমন্ত্রী অ্যাড: আনিসুল হক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলের ছবি ব্যবহার করা হয়।
নির্বাচনী বিধিতে উল্লেখ আছে, নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী নিজ ছবি ও প্রতিক ব্যতীত অন্য কারো নাম, ছবি বা প্রতীক ব্যবহার করতে পারবেন না।
তবে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী কোনো রাজনৈতিক দলের মনোনীত হলে সেই ক্ষেত্রে তিনি কেবল তাহার দলের বর্তমান দলীয় প্রধানের ছবি পোস্টার ও লিফলেটে ছাপাইতে পারিবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় পৌর কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় পরিচিতি সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী। সাধারন সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফার সঞ্চালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ভূঁইয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহবায়ক জয়নাল আবেদীনসহ তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।
সভার শুরুতেই তাকজিল খলিফা ঘোষণা দেন যে, মুরাদ হোসেনকে সমর্থন দেওয়ার জন্যই এ সভা। দলের সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে মুরাদ হোসেনকে আনারস প্রতিকে জয়যুক্ত করতে কাজ করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় ভোট কেন্দ্রের নাম ও খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত খসড়া তালিকাটি উপজেলা নির্বাচন অফিস, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদের নোটিশ বোর্ডে প্রকাশ করা হয়েছে। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত ভোটার স্থানান্তর ও হালনাগাদ কার্যক্রম চলবে।
প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী আখাউড়ায় ১ টি পৌরসভা ও ৫ টি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪৪ টি এবং ভোট কক্ষ ২৬৫ টি। মোট ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ২৫ হাজার ১৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৩ হাজার ৮৭১ এবং মহিলা ভোটার ৬১ হাজার ১৪৫ জন। পূর্বের ৫টি কেন্দ্রের স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, খসড়া ভোট কেন্দ্রের উপর যদি কারো কোন দাবি, আপত্তি বা সুপারিশ থাকে তাহলে ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অথবা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত আবেদন করতে হবে। এরপর আর কোন আপত্তি গ্রহন করা হবে না। ১১ সেপ্টেম্বর আপত্তি নিষ্পত্তির শেষ তারিখ।
আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর খসড়া ভোট কেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত হবে। স্থান পরিবর্তিত ৫ টি কেন্দ্র হলো জাহানারা বেগম নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আখাউড়া টেকনিক্যাল আলীম মাদরাসা, রহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নুরপুর রুটি আব্দুল হক ভূইয়া উচ্চ বিদ্যালয় এবং ঘোলখার রানিখার উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র। স্থান সংকুলান না হওয়ায় বাদ দেওয়া হয়েছে টানপাড়া হাফেজিয়া মাদরাসা, পীর শাহ সুলতান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেবগ্রাম, নুরপুর ক্যাপ্টেন মাহবুব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ঘোলখার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার সুফিয়া সুলতানা বলেন, গত নির্বাচনে ৪৪ টি কেন্দ্র ছিল। এবছরও তাই আছে। স্থান সংকুলান না হওয়ায় ৫টি কেন্দ্র স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে। এসব বিষয়ে কারো কোন আপত্তি থাকলে ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ লিখিত আবেদন করতে হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বহুল প্রতিক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মান কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। আগামী ২২ আগস্ট থেকেই আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে পরীক্ষামূলকভাবে পরিচালনা করা হবে ট্রেন। তবে চূড়ান্তভাবে ট্রেন চলাচলে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। প্রকল্প-সংশিষ্টদের কাছ থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন চলছে শেষ মুহুর্তের রেললাইনে খুটিনাটি চিহ্নিত করার কাজ। তবে চূড়ান্তভাবে ট্রেন চলাচলে আরো কিছুদিন সময় লাগবে।
এ অবস্থায় এই রেলপথকে ঘিরে বন্ধুত্বপূর্ণ দুই দেশের বাসিন্দাদের মধ্যে আগ্রহের শেষ নেই। সংশ্লিষ্টরা জানান, এই রেলপথটি চালু হলে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্যের পাশাপাশি সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে নব-দিগন্তের সূচনা হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, বহুল প্রতিক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মান কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে রেললাইনের স্লিপারের উপর ফেলা হচ্ছে পাথর। প্রাথমিকভাবে মিটারগেজ ইঞ্জিনবগি দিয়ে ৬ কিলোমিটার রেলপথ ট্রায়াল দেয়া হবে। এই লক্ষ্যেই রাত-দিন কাজ করছেন এই রেলপথ নির্মাণ কাজের সাথে যুক্ত প্রকৌশলীরা।
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের টেক্সমেকো রেল এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ঊর্ধ্বতন সহকারী প্রকৌশলী মোঃ রিপন শেখ বলেন, আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি চলছে। আগামী ২২ আগষ্ট আমরা মিটার গেজ রেলপথ ট্রায়াল দিব। আশা করি এর মধ্যে আমাদের সব কাজ হয়ে যাবে। প্রাথমিকভাবে মিটারগেজ ইঞ্জিনবগি দিয়ে ৬ কিলোমিটার রেলপথ ট্রায়াল দেয়া হবে। সেটি হবে গঙ্গাসাগার রেলস্টেশন থেকে শিবনগর পর্যন্ত। সেখানে আমাদের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
এ ব্যাপারে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের টেক্সমেকো রেল এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এম্বাকমেন্ট (বাঁধ) প্রকৌশলী মোঃ বেনজির আহমেদ বলেন, আমাদের সকল কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এখন আমাদের ট্যাক ট্রেকিংয়ের কাজ চলছে। ট্রায়ালকে কেন্দ্র করে যাবতীয় কার্যক্রম এখন চলমান রয়েছে।
বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বরত “উর্ধ্বতন সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন, এখন আমাদের প্রায় ১০ কিলোমিটার ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা হয়ে গেছে। আগামী ২২ আগষ্ট মঙ্গলবার থেকে পরীক্ষামূলকভাবে পাথরবাহী একটি লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) বগিসহ এই রেলপথের উপর দিয়ে চলানো হবে। সেটি চলে যাবে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের সীমান্তের শূণ্যরেখায়। এই লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের শিবনগর পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বাংলাদেশ অংশে এই রেলপথ নির্মানে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪০ কোটি টাকা।
এদিকে দুই দেশের স্বপ্নের এই রেলপথ নির্মানকে কেন্দ্র করে ভারত-বাংলাদেশের বাসিন্দাদের মধ্যে যেন আগ্রহের শেষ নেই।
আখাউড়া উপজেলার গঙ্গাসাগর এলাকার বাসিন্দা ফখরুল ইসলাম বলেন, এই রেললাইনটি নির্মিত হওয়ায় আমাদের ব্যবসায়ীদের অনেক উন্নয়ন হবে। আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। বাংলাদেশের সরকারের সাথে ভারতের ভাল সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের ব্যবসায়ীদের উন্নয়নের পাশাপাশি দুই দেশের মানুষের অনেক উন্নয়ন হবে।
এ ব্যাপারে ভারতীয় নাগরিক সুইটি দেব বলেন, এই রেল লাইন চালু হলে দু’দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি সম্পর্কটা আরো বেশি বাড়বে। আমাদের যাত্রী আসা যাওয়া ও ব্যবসা বানিজ্যের ক্ষেত্রেও অনেক ভাল হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
গ্রীষ্ম আসার আগেই এর প্রভাব পড়লো রেললাইনে। গরমের কারণে সিলেট-ঢাকা পথের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার আজমপুর স্টেশনের অনতিদূরে ৩ মার্চ রবিবার দুপুরে ১৫ ফুট রেল লাইন বাঁকা হয়ে যায়। সংশ্লিষ্টরা খবর পেয়ে সেটি মেরামত করে দেন। তবে ওই সময়ে কোনো ট্রেন না থাকায় চলাচালে কোনো ধরণের ব্যাঘাত ঘটেনি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র দাবি করেছে।
আখাউড়া রেলওয়ে জংশনের সহকারি নির্বাহী প্রকৌশলী (এইএন) মো. মেহেদী হাসান তারেক জানান, আজমপুর-মুকুন্দপুর সেকশনে ১৫ ফুটের মতো লাইন বাঁকা হয়ে যায়। রেলপথে দায়িত্বে থাকা লোকজন বেলা দুইটার দিকে বিষয়টি জানালে তাৎক্ষণিক ভাবে মেরামত করা হয়। তিনি বলেন, এখনো তেমন গরম পড়েনি। তবে কম গরমেও রেল লাইন বাঁকা হতে পারে। এখন গাড়ির গতি বাড়ানো হয়েছে। যেসব জায়গায় বাঁক আছে সেখানে কম গরমেও লাইন বাঁকা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।