চলারপথে রিপোর্ট :
নদীতে ভেসে উঠেছে পচাগলা মরদেহ৷ পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ময়নাতদন্তের পর মরদেহটি দাফনের জন্য খবর দেওয়া হয় ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’ সংগঠনকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পরিচয়বিহীন মরদেহ উদ্ধার হলেই দাফন কাফনের জন্য ডাক পড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের। সংগঠনটি গত দুই বছরে ১০১টি পরিচয়বিহীন মরদেহ দাফন করেছে। ১১ মে শহরের মেড্ডায় তিতাস নদীর পাড়ে কবরস্থানে ১০১তম পরিচয়বিহীন মরদেহটি সংগঠনের সদস্যরা দাফন করেন।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আজহার উদ্দিন জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর সংগঠনটি মূলত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল ব্লাড ডোনেশনের জন্য৷ এ পর্যন্ত প্রায় ৭০০০ ব্যাগ রক্ত দান করেছেন সংগঠনের সদস্যরা। কিন্তু মহামারি করোনার সময় প্রথম দিকে কেউ আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে মরদেহের কাছে আসতে অনেকেই ভয় পেতেন। সে সময় নিজ সন্তানও মা-বাবার মরদেহের কাছে আসেননি। এ অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা মরদেহ দাফনে অপারগতা জানালে আমরা করোনা আক্রান্ত মরদেহ দাফনের কাজ শুরু করি। ওই সময় ৮টি করোনা আক্রান্ত মরদেহ দাফন করেছি।
আজহার উদ্দিন জানান, একদিন কবরস্থানে দেখলাম অজ্ঞাত পরিচয়বিহীন মরদেহ কোনো প্রকার কাফন এবং জানাজা ছাড়া মাটি খুঁড়ে চাপা দেওয়া হচ্ছে। একটা মরদেহ সম্মানের সঙ্গে দাফন না করায় খারাপ লেগেছিল। এরপর বন্ধু-বান্ধব সহকর্মীদের নিয়ে ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হলো অজ্ঞাত পরিচয়ের মরদেহ গোসল, কাফন ও ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী দাফনের। কাফন ও দাফনের আনুষঙ্গিক ব্যয় আমাদের সদস্যদের ব্যক্তিগত চাঁদায় হয়ে থাকে।
এছাড়া মাঝে মাঝে বাইরে থেকেও স্বেচ্ছায় কেউ দিয়ে থাকেন। এখন জেলার কোনো জায়গায় অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার হলেই হাসপাতাল মর্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের ডাক পড়ে। ধীরে ধীরে সেই অজ্ঞাত মরদেহের দাফনের সংখ্যা শতাধিকে দাঁড়িয়েছে।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তত্ত্বাবধায়ক ডা. ওয়াহীদুজ্জামান বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’ যে কাজটি করছি তা খুবই মানবিক। তাদের কাজের অবশ্যই প্রশংসা করতে হয়। অজ্ঞাত মরদেহগুলো দাফনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের অভিনন্দন জানাই। সমাজের সবার উচিত তাদের এসব কাজে পাশে দাঁড়িয়ে উৎসাহ দেওয়া।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, আমার জানা মতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অজ্ঞাত মরদেহ দাফনের একমাত্র সামাজিক সংগঠন ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’। পুলিশ যখনই অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করে, তাদের খবর দেওয়া হয় দাফন কাফন করতে। তাদের উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করি। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি যেকোনো সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
চায়ের কাপ দিয়ে পুলিশের মাথায় ও মুখে আঘাত করে তাকে আহত করে পালিয়ে গেছেন এক আসামি। আহত পুলিশ সদস্যকে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন বৌ-বাজারে।
আহত পুলিশ সদস্যের নাম মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় এসআই পদে কর্মরত।
সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, জেলা শহরের উত্তর মৌড়াইল এলাকায় ডাকাতি প্রস্তুতি মামলার আসামি ইয়ামিন মিয়ার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। বুধবার সন্ধ্যার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পাই ইয়াছিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন বৌ বাজারে জসিম মিয়ার চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছে। এমন সংবাদে ইয়াছিনকে আটক করতে সদর মডেল থানার এসআই সাইফুল ইসলাম সেখানে যায়। সেখানে ইয়াছিনকে আটক করতে গেলে ইয়াছিনের হাতে থাকা চায়ের কাপ দিয়ে এসআই সাইফুলকে মাথায় ও মুখে আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ও স্থানীয়রা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে যায়।
তাকে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে ইয়াছিনকে ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে বলেও জানান ওসি।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্যা ইউ কে’র সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সন্তান অ্যাডভোকেট মেসবাহ উদ্দিন ইকো। তিনি যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর অন্যতম সদস্য। দু’বছর মেয়াদী এই কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মারুফ আহমেদ চৌধুরী। গত ১২ নভেম্বর লন্ডনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র-ছাত্রীদের অন্যতম এই সংগঠনের বার্ষিক সাধারণ সভা ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ।
ইকো ব্রাহ্মণবাডিয়ার বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট শামসুদ্দিন-এর পুত্র। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেডক্রিসেন্টের নির্বাচিত সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
পূর্ব লন্ডনের ক্রিস্টাল ব্যাংকুয়েটিং হলে আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত সংগঠনের ষষ্ঠ এ সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম। বিদায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ডাকসুর সাবেক সদস্য দেওয়ান গৌস সুলতান এতে সভাপতিত্ব করেন। সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেনের পরিচালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান, এমদাদ তালুকদার এম বি ই, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউ কের সভাপতি এ কে এম ইয়াহিয়া এবং বাংলাদেশ টিচার্স এসোসিয়েশন ইউ কের সভাপতি আবু হোসেন, প্রশান্ত পুরকায়স্থ, নিলুফা ইয়াসমীন হাসান, মেহেরুন আহমেদ মালা, মুস্তাফিজুর রহমান, ফয়জুল হক রিপন, ড. অজিত কুমার ঘোষ, কাজী কল্পনা, ব্যারিষ্টার আবুল কালাম, মতিন চৌধুরী প্রমুখ।
৩২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অন্যান্য পদে নির্বাচিতরা হচ্ছেন সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রশান্ত পুরকায়স্থ বিইএম, সহ-সভাপতি সহুল আহমেদ মকু, নিলুফা ইয়াসমীন হাসান ও সিরাজুল বাসিত চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক সলিসিটার সৈয়দ আবু আকবর আহমেদ ইকবাল, ব্যারিষ্টার মোহাম্মদ কামরুল হাসান ও ব্যারিস্টার মাহারুন আহম্মেদ মালা, সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মোহাম্মাদ কামরুল হাসান, ব্যারিস্টার কামরুল হাসান ও বেলাল রশীদ চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ জাফর, যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ ফাইজুল হক রিপন ও খোকন কান্তি ঘোষ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার মিজানুর রহমান, রীপা সুলতানা রাকীব সাংস্কৃতিক সম্পাদক, খালিদ ইয়াহইয়া প্রেস অ্যান্ড পাবলিসিটি সম্পাদক ও এ্যারিনা সিদ্দিকী সুপ্রভা শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
কার্যকরি কমিটির সদস্যরা হলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান গৌস সুলতান, ইসমাইল হোসেন, মাহফুজা রহমান, সৈয়দ সাইদুর রহমান ফারুক, সৈয়দ এনামুল ইসলাম, মির্জা আসাব বেগ, ফখরুল মোহাম্মদ ইসলাম, মোহাম্মদ রফিক আহমেদ, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আবুল কালাম, শারমিন চৌধুরী, সৈয়দ হামিদুল হক, মিসেস কল্পনা কাজী ও সৈয়দ ফারহানা সুবর্ণা। সভায় সংগঠনের জ্যেষ্ঠতম সদস্য ‘একুশের গান’ খ্যাত আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ও আরো তিনজন অ্যালামনাইর মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহন এবং পরলোকগত সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন সংগঠনের সদস্য মাওলানা মোবারক আলী।
এছাড়া সভায় ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্তিনবাসীদের উপর নৃশংস আক্রমনের প্রতিবাদে ও অনতিবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে একটি বিশেষ প্রস্তাব পাশ এবং এক মিনিট নীরবতা পালন ও দোয়া করা হয়।
সভায় ফিলিস্তিনের গাজায় হামলার শিকার অগণিত অসহায় মানুষের সাহায্যার্থে তহবিল সংগ্রহ করা হয় এবং র্যাফেল ড্র এর মাধ্যমে সংগৃহিত সমুদয় অর্থ গাজার দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের ত্রাণকাজে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বীরেন্দ্র চন্দ্র দাস স্মৃতি আবৃত্তি সম্মান গ্রহণ করলেন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বরেণ্য আবৃত্তিশিল্পী কাজি মাহতাব সুমন।
৮ জুলাই সোমবার রাতে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে এ সম্মান প্রদান করা হয়। তিতাসপাড়ের কৃতিসন্তান ও ত্রিপুরা রাজ্যের গণমানুষের কবি দিলীপ দাসের জন্মদিন উপলক্ষে এ সম্মান প্রদান করা হয়। এসময় ফুলেল শুভেচ্ছা, উত্তরীয়, সম্মাননা ক্রেস্ট ও নগদ ৫ হাজার টাকা কাজি মাহতাব সুমন এর হাতে তুলে দিয়ে সম্মানিত করা হয়।
তিতাস আবৃত্তি সংগঠন পরিচালক মো মনির হোসেনের সভাপতিত্বে ও সহকারী পরিচালক সুজন সরকার, আবৃত্তিশিল্পী ফাহিমা সুলতানার সঞ্চালনায় এসময় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কবি ও প্রাবন্ধিক শাহ মোহাম্মদ সানাউল হক। আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী উদয়শঙ্কর ভট্টাচার্য, কাকলি গঙ্গোপাধ্যায় ও কবি কৃত্তিবাস চক্রবর্তী।
শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সাহিত্য একাডেমী সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন, সুরসম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন সহসভাপতি কবি আব্দুল মান্নান সরকার, রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ সভাপতি মানবর্দ্ধন পাল, বিটিভি সঙ্গীত পরিচালক আলী মোসাদ্দেক মাসুদ, চেতনায় স্বদেশ গণগ্রন্থাগার সভাপতি কবি আমির হোসেন ও কবি ও গল্পকার আবদুর রহিম।
অনুষ্ঠানে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করেন কবি মানিক রতন শর্মা, শৌমিক ছাত্তার, সৈম আকবর, হেলাল উদ্দিন হৃদয় ও রুদ্র মোহাম্মদ ইদ্রিস।
অনুষ্ঠানে সংগঠনের সহকারী পরিচালক উত্তম কুমার দাসের সমন্বয়ে কবি দিলীপ দাসের কবিতা থেকে ৪ টি দলীয় আবৃত্তি পরিবেশনা করেন তিতাস আবৃত্তি সংগঠণের ছোট,মধ্যম,বড় ও অভিভাবক দল।
ইতিপূর্বে বরেণ্য আবৃত্তিজন হাসান আরিফ, মীর বরকত ও আশীষ সাহা (ত্রিপুরা) এ সম্মান গ্রহণ করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নন্দনপুর বিসিক শিল্পনগরীর ডেকো ফুডস্ কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরীর পরিত্যক্ত পণ্য ক্রয় নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়ন ও বুধল ইউনিয়নের দুই নেতা ও তাদের অনুসারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে।
৩১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দফায়-দফায় এই সংর্ঘষ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রনে আনতে ৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, নন্দনপুর বিসিক শিল্প নগরীতে অবস্থিত ডেকো ফুডস্ কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরী থেকে দুই থেকে তিন মাস পর পর কারখানার পরিত্যক্ত পণ্য নিলামে বিক্রি করা হয়। এসব পরিত্যক্ত পণ্য মাছের খাদ্য হিসেবে বিক্রি হয়। গত ১দশক ধরে এসব পণ্য কিনতেন সুহিলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নাসির উদ্দিনের পক্ষের ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন এবং কৃষকদল নেতা মোরশেদ হাজারী।
গত ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ার পর এই পণ্যগুলো ক্রয় করার জন্যে পাশের বুধল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদের সমর্থক আশরাফুল ইসলাম মাসুম পণ্য ক্রয়ের ব্যাপারে কারখানার কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে আসেন।
সকালে আগের ব্যক্তিদের কাছে পণ্য বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। এমন খবর পেয়ে সেখানে দলবল নিয়ে ছুটে যান আশরাফুল ইসলাম মাসুম। সেখানে গিয়ে তিনি নাসির উদ্দিনের পক্ষের লোকজনের সাথে বাক বিতন্ডায় লিপ্ত হন।
পরে নাসির উদ্দিন ও হারুনুর রশিদের পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংর্ঘষে লিপ্ত হন। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। এসময় ডেকো ফুডস্ ফ্যাক্টরীসহ বেশ কয়েকটি বাড়ী-ঘরে হামলা ও লুটপাট করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় খড়ের গাদা।
এ ব্যাপারে সুহিলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নাসির উদ্দিনের পক্ষের মোরশেদ হাজারী বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কারখানার রেইট অনুযায়ী কাজটি পায় মেসার্স মোরশেদ এন্ড নাসির খন্দকার নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজটি পাওয়ার পর বুধল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ ও তার সমর্থক আশরাফুল ইসলাম মাসুম তাদের কাছে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় মঙ্গলবার সকালে তারা ৪০/৫০ জন লোক নিয়ে এসে তাদের উপর আক্রমণ করেন। এতে তাদের পক্ষের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। এসময় বেশ কয়েটি বাড়ী-ঘর ভাংচুর করা হয়। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
এ ব্যাপারে বুধল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদের পক্ষের আশরাফুল ইসলাম মাসুম বলেন, আমি ইতিপূর্বে এক সময় ওই কারখানায় চাকরি করতাম। সেই সুবাদে কারখানার কর্তৃপক্ষের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে।
গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ার পর কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাকে ডেকে নিয়ে পরিত্যক্ত পণ্যগুলো ক্রয় করার অফার দেয়। আমিও তাদের কথামতো পণ্যগুলো ক্রয় করার জন্য কথা বলে আসি। মঙ্গলবার সকালে জানতে পারি এই পণ্যগুলো পূর্বে যারা ক্রয় করতেন, তাদের কাছেই কারখানা কর্তৃপক্ষ গোপনে বিক্রি করছেন।
এমন খবর পেয়ে আমার কয়েকজন বন্ধুকে সাখে নিয়ে সেখানে যাই। সেখানে যাওয়া মাত্রই সেখানে থাকা সুহিলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নাছির উদ্দিন ও তার পক্ষের মোর্শেদ হাজারি দলবল নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে আমি সহ আমার সাথে থাকা বেশ কয়েকজন আহত হয়। আমি এই ঘটনা তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এ ব্যাপারে সুহিলপুর ইউনিয়ন তাঁতী দলের সভাপতি মোঃ মফিজ মিয়া জানান, বিস্কুট ফ্যাক্টরির পরিত্যক্ত পণ্য নিয়ে দুই ইউনিয়ন বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় দলের জন্য বদনাম হয়েছে। তিনি বলেন, এদেরকে থামানো না গেলে দলের আরো বদনাম হবে।
এ ব্যাপারে বিসিক শিল্পনগরীর সহকারী মহাব্যবস্থাপক রোকন উদ্দিন ভূইয়া জানান, ঘটনার পর পরই তিনি পুলিশকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ ব্যাপারে একাধিকবার চেষ্টা করেও ডেকো ফুডস্ ফ্যাক্টরীর কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোজাফ্ফর হোসেন জানান, সংর্ঘষের খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্য ও র্যাব সদস্যরা ঘটনা স্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
সংর্ঘষে আহদের মধ্যে পাঁচজনকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় এখনো থানায় কোনো মামলা হয়নি।