চলারপথে রিপোর্ট :
লক্ষ্মী রানী দাস। তিনি ভারত থেকে স্বামী ও সন্তান নিয়ে আগরতলা স্থলবন্দর দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে আসেন।
যাত্রাকালে আগরতলা ইমিগ্রেশনে সুষ্ঠু ও স্বাচ্ছন্দ্যে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে এলেও আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশনে এসে রীতিমত অবাক হক তিনি। বসারও সুব্যবস্থা নেই এখানে।
ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করতে গাদাগাদি করে লাইনে দাঁড়ালেও ছোট কক্ষটিতে নেই কোনো ফ্যান। হঠাৎ ১২ বছর বয়সী ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়লে সেবা করার জন্য কোনো স্থান না পেয়ে ইমিগ্রেশন ভবনের এক কোনায় বসে তার সেবা যত্ন করেন। আশেপাশে ছিল না কোনো টিউবওয়েল। যাও বা ট্যাংকের পানি জুটেছে, তাও তীব্র তাপদাহে তপ্ত। তা দিয়েই ছেলেকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যান।
লক্ষ্মী রানী দাসের বলেন, আগরতলা ইমিগ্রেশনে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে ও সুন্দর পরিবেশে আরামে সব কাজ করে এসেছি। বন্দর থেকে গাড়িতে আমাদের ফ্রি চেকপোস্ট পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। অথচ আখাউড়া স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনে এসে নাজেহাল হতে হলো। এখানে কোনো কিছুরই সুব্যবস্থা নেই। একতলা পুরোনো ভবনের ছোট্ট কক্ষে শত শত লোক ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে। এখানকার ইমিগ্রেশনের অব্যবস্থাপনা দেখে খুবই খারাপ লেগেছে। এখানে যাত্রীদের জন্য পরিষেবা বাড়ানো উচিত। আশা করব, বাংলাদেশ সরকার দুই দেশের যাত্রীদের কথা বিবেচনায় এনে ইমিগ্রেশন উন্নত করবে।
আগরতলা থেকে আসা আরেক যাত্রী খোকন মিয়া বলেন, আমি গত ছয় বছর ধরে এ চেকপোস্ট দিয়ে যাতায়াত করছি। ইমিগ্রেশনটি যে হালতে দেখেছিলাম, সে হালতেই আছে। একজন রোগী এলে যে বসবে, সে উপায় নেই। এখানে যে পরিমাণ জায়গা দরকার, সে তুলনায় খুবই কম আছে।
বন্দরটি ঘুরে দেখা গেছে, মূলফটক পার হলেই একতলা বিশিষ্ট তিন রুমের একটি ভবন। এর মধ্যে দুটি ছোট রুম ও একটি মাঝারি রুম। একটিতে ইমিগ্রেশন ইনচার্জ বসেন, আরেকটি হচ্ছে ব্যারাক। মাঝারি কক্ষটিতে চলে অফিসের কার্যক্রম। পুরোনো ভবনটির বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরে গেছে। প্রতিদিন যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে, তাই গাদাগাদি করেই চলে কার্যক্রম। যাত্রীদের মালপত্র বারান্দায় রেখে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বসার জন্য ইমিগ্রেশন কক্ষে কোনো জায়গা নেই। আর বাইরে টিনের একটি ছাউনি আছে, যেখানে ১৫/২০টি চেয়ার থাকলেও কোনো টেবিল নেই। অথচ ফরম পূরণ করতে টেবিল প্রয়োজন। ফরম পূরনের জন্য দেখা গেছে কেউ বারান্দার মেঝেতে বসে, আবার কেউ কেউ বিদ্যুৎতের জেনারেটরের ওপরে ফরম রেখে পূরণ করছেন। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বিশ্রামের জন্যও জায়গা নেই। কক্ষটিতে এসির ব্যবস্থা থাকলেও ভিড় থাকায় যাত্রীদের লাইন কক্ষের বাইরে বারান্দায় চলে যায়। ফলে এসিগুলো চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তীব্র গরমে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পাশাপাশি বৈদ্যুতিক ফ্যানের ব্যবস্থা না থাকায় গরমে কষ্ট সহ্য করে ইমিগেশনের কাজ শেষ করতে হয়।
তবে বিড়ম্বনা এখানেই শেষ নয়। কাস্টমসের কাজ করতে পাড়ি দিতে হচ্ছে অন্তত দুইশ গজ দূরবর্তী অন্য আরেকটি ভবনে। মূলত এক ভবন ও এক ছাদের নিচে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের কাজ করতে না পারায় তাদের দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে চালু হয় আখাউড়া স্থলবন্দরের কার্যক্রম। সুবিধাজনক ভৌগলিক অবস্থান হওয়ায় এ বন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট থেকে অনেকেই আখাউড়া ইমিগ্রেশন ব্যবহার কররে ভারতে যাতায়াত করছেন।
কাস্টমস সূত্র জানায়, এ ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে প্রতিদিন অত্যন্ত এক হাজার যাত্রী দুই দেশে যাতায়াত করছেন। এর মধ্যে পাঁচ শতাধিক যাত্রী ভারতে যান। যা থেকে প্রতি মাসে ৭৫ লাখ টাকা আয় হয়ে থাকে সরকারের। বিগত ছয় মাসে চার কোটি ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।
এদিকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে আখাউড়া চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন আধুনিক ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হলেও ২০১৭ ও ২০১৯ সালে সীমান্ত আইনের অজুহাতে বিএসএফ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়।
মৌলভীবাজার জেলা থেকে ভারতগামী বাংলাদেশি যাত্রী সুমন আহমেদ বলেন, আমি ইমিগ্রেশনের পরিবেশ দেখে হতবাক হয়ে গেছি। এখানে লাইনের কোনো শৃঙ্খলা নেই। কোনো ধরনের আধুনিকায়ন নেই। অথচ আগরতলা ইমিগ্রেশনের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ফারহানা মিলি নামে এক নারী চিকিৎসক তার বাবার চিকিৎসা জন্য ভারতে যাওয়া সময় আক্ষেপ করে বলেন, আগরতলা ইমিগ্রেশন ও আখাউড়া ইমিগ্রেশনের মধ্যে অনেক পার্থক্য। আমাদের এখানে ভালো ব্যবস্থা নেই। মালপত্র রাখার জায়গা পাই না। আরেকজনের কাছে পাহারা দিয়ে রাখতে হয়। বছরের কয়েকবার যেতে হয়। তবে এর উন্নতি দেখছি না। এখানে দ্রুত উন্নয়নের ছোঁয়া লাগুক সেই কামনা করি।
মুক্তি খান নামে এক যাত্রী বলেন, বর্তমানে আখাউড়া ইমিগ্রেশন ভবন নামেমাত্র টিকে আছে। জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার করে কোনোমতে ঝুঁকি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা হচ্ছে। স্থায়ী ভবন তৈরির পর এক ছাদের নিচে সব পরিষেবা পাওয়া গেলে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি বিদেশিদের আসা যাওয়া আরও বেড়ে যাবে। যাত্রীদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগও লাঘব হবে।
জেলা পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ইমিগ্রেশন দিয়ে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে। প্রতিদিন এক হাজারেরও বেশি যাত্রী পারাপার হচ্ছেন। তবে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালানোর জন্য যে ধরনের সুযোগ সুবিধা আছে, তা খুবই অপ্রতুল। নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে সেবার মান বাড়বে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, এ ইমিগ্রেশন দিয়ে দুই দেশের বিপুল সংখ্যক যাত্রী যাতায়াত করলেও ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের পর্যাপ্ত সুবিধার কমতি রয়েছে। আমাদের নতুন একটি ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণ কাজ চলছিল, তা বিএসএফের বাধায় বন্ধ রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কথা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি পেলে আমরা ভবনটির কাজ আবার শুরু করতে পারব। এছাড়া বলে রাখি, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখানে একটি আধুনিক বন্দর নিমার্ণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ৩.৫৭ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ হাতে নিয়েছি। এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। তখন স্থলবন্দর, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসসহ বন্দর সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম আরও বেগবান হবে। যাত্রীসেবার মানও উন্নত হবে।
তিনি আরো বলেন, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত চারলেন সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ হলে এবং আধুনিক স্থলবন্দরটি তৈরি হলে আখাউড়াই হবে বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য স্থলবন্দর।
চলারপথে রিপোর্ট :
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও যানবাহনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ে আখাউড়া থানা পুলিশের উদ্যোগে বিশেষ অভিযান চলছে। আজ ১ এপ্রিল শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আখাউড়া-সুলতানপুর সড়কের খড়মপুর এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মাদক চোরাচালান, মোটর সাইকেলের বৈধ কাগজপত্র না থাকাসহ বিভিন্ন অপরাধ মুলক কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণে এ অভিযান চলছে।
আখাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম জানান, বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ ড্রাইভিং লাইসেন্স , হেলমেট না থাকা এবং মোটর সাইকেলে দুইয়ের অধিক আরোহী থাকার কারনে ২২টি মামলায় মোট ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এবিষয়ে আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো.আসাদুল ইসলাম জানান, মাদককারবারী ও মাদকসেবীরা এ সড়ক ব্যবহার করে জেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আখাউড়া সীমান্তে এসে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করছে। এসব নিয়ন্ত্রণে সড়কে চেকপোষ্ট বসিয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। আখাউড়াকে মাদকমুক্ত করার জন্য এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি। অভিযানে অন্যান্যের মধ্যে টিএসআই আশরাফুল ইসলাম, সেকেন্ড অফিসার মাহমুদ মুহিন, এসআই মোবারক, আলমগীর, আবু ছালেক, কামরুজ্জামান, এরশাদ প্রমুখ পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় আগুন পুড়িয়ে হত্যা করার নারীর খণ্ডিত মাথা উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি ওই নারীর পরিচয় জানা গেছে।
আজ ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের গাজির বাজার এলাকার একটি পুকুর থেকে মরদেহের মাথাটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত নারীর নাম হরলুজা (৫০)। তিনি স্থানীয় নুরুল ইসলাম ব্যাপারীর স্ত্রী। তিনি ওই এলাকায় একটি কলোনিতে বসবাস করতেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আখাউড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছমিউদ্দিন জানান, এ ঘটনায় ফারহান রনি নামের এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রনি আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ ভূইয়ার ছেলে। তিনি একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার স্বীকারোক্তিতে মরদেহের খণ্ডিত মাথা একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকালে উপজেলার গাজীর বাজার এলাকার এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে রাজহাঁস চুরি হয়। সকাল ৭টার দিকে হাঁস খুঁজতে এসে শাহনেওয়াজ ভূঁইয়ার জায়গায় পরিত্যক্ত টিনের ভাঙা ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন। সেখানে থাকা ফারহান রনি জানান, তিনি পাতা পোড়াচ্ছেন। এ কথায় বিশ্বাস না হলে হাঁসের মালিক দুই ভাই এনামুল ও রোমান এবং তাদের চাচাতো ভাই উবায়দুল ঘরের ভেতরে কী আছে দেখতে চান। এতে ফারহান ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের মারার হুমকি দেন। এতে আরো সন্দেহ তৈরি হয়। পরে গ্রামের লোকজনসহ ওই ঘরে ঢুকে গর্তে মরদেহ পুড়তে দেখা যায়।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় মোহন মিয়া (২৬) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ ৬ নভেম্বর বুধবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া পৌরশহরের তারাগন এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত মোহন মিয়া ওই এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি মোহন মিয়ার স্ত্রী প্রবাসে যান। প্রতিদিনই তাদের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে কথা হতো। গত রাতে খাবার খেয়ে নিজ ঘরে ঘুমাতে যান মোহন মিয়া। সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হওয়ায় পরিবারের লোকজন তাকে ডাকাডাকি করে। কিন্তু ভেতর থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে জানালা দিয়ে দেখে টিনের ঘরের তীরের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় মোহন মিয়া ঝুলে আছেন। স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দিলে দ্রুত এসে সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগে মোহনের স্ত্রী সৌদি আরব গেছে। সন্ধ্যার দিকে তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে শুনেছি। তাদের মধ্যে কোনো ঝামেলা ছিল কিনা বলতে পারছি না। তার একটা সন্তান রয়েছে। এভাবে সে মরে যাবে, তা কল্পনাও করতে পারছি না।
আখাউড়া থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল হাসিম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহ থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭০ জন।
আজ ১২ মে রবিবার সারাদেশের ন্যায় আখাউড়ায় এসএসসি সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়। পাশের হারের দিক থেকে সবচেয়ে ভালো করেছে ছয়গড়িয়া আলহাজ¦ শাহ আলম উচ্চস বিদ্যালয়। ২৯ জন পরীক্ষা দিয়ে ৯৬.৫৫ গড়ে ২৮ জন পাশ করেছে। তুলাই শিমুল উচ্চ বিদ্যালয়ের শতকরা পাশের হার ৯২.৫২।
আখাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১ হাজার ৬২৮ জন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এরমধ্যে পাশ করেছে ১ হাজার ১৯৫ জন। অকৃতকার্য হয়েছে ৪৩৩ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৪ জন। শতকরা পাশের হার ৭৩.৪০।
ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আখাউড়া নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তুলাই শিমুল উচ্চ বিদ্যালয়। এ প্রতিষ্ঠেোনর ৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। ৭ জন জিপিএ-৫ পেয়ে ৩য় স্থানে আখাউড়া রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়।
এদিকে দাখিল পরীক্ষায় উপজেলার ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ৩০০ জন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে ২৬৯ জন। অকৃতকার্য হয়েছে ৩১ জন। শতকরা পাশের হার ৮৯.৬৭। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২১জন। এরমধ্যে আখাউড়া টেকনিক্যাল ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা সবচেয়ে বেশি ১২টি জিপিএ-৫ পেয়েছে। শতকরা শতভাগ পাশসহ মাদরাসাতু ছালেহা খাতুন দাখিল মাদরাসার ৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
কারগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ৭০ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে পাশ করেছে ৬৪জন। অকৃতকার্য হয়েছে ৬ জন। শতকরা পাশের হার ৯১.৪৩। এরমধ্যে সরকারী ভোকেশনাল টেক্সটাইল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩জন এবং নুরপুর রুটি আব্দুল হক ভূঞা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন।
এদিকে, উপজেলার দুটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবছর তুলনামূলক খারাপ ফল করেছে। ২০৩ জন পরীক্ষা দিয়ে ১২৭ জন পাশ করেছে। শতকরা পাশের হার ৬২.৬৫। অপরদিকে দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১০৩ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৭৪ জন পাশ করেছে। শতকরা পাশের হার ৭১.৮৪। এছাড়াও হীরাপুর শহীদ নোয়াব মেমোরিয়্যালয় উচ্চ বিদ্যালয়, মনিয়ন্দ উচ্চ বিদ্যালয় ও শাহপীর কল্লা শহীদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শতকরা পাশের হার ৫০ এর কিছু বেশি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় গরুর মাংসে পোকা সাদৃশ মাছির ডিম থাকার কারণে এক ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় ফার্মেসিতে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ এবং হোটেলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার পরিবেশনের কারণেও জরিমানা করা হয়। আজ ২৭ মে শনিবার দুপুরে আখাউড়া পৌর শহরের সড়ক বাজারস্থ মাংসের বাজার সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযান পরিচালনার সময় মাংস বিক্রেতা মাইনুদ্দিনকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ অনুযায়ী ১০ হাজার টাকা জরিমানা করার পর মহেশপুর ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার কারণে ২ হাজার টাকা জরিমানা এবং ঢাকা হোটেল স্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার পরিবেশনের কারণে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মাংস ক্রেতা মনির হোসেন জানান, শনিবার সকালে সড়ক বাজারের হানিফ মিয়ার দোকান থেকে আমি মাংস ক্রয় করে বাড়িতে নিয়ে যাই। বাড়িতে গেলে আমার স্ত্রী বাজারের ব্যাগ থেকে মাংস খুলে দেখে মাংসের মধ্যে পোকা দেখা যায়। পরে এই বিষয়টি আমি আখাউড়া সহকারী কমিশনার ভূমি প্রশান্ত চক্রবর্তীকে অবহিত করি। তিনি ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে মাংস ব্যবসায়ীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এ বিষয়ে আখাউড়া সহকারী কমিশনার ভূমি ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, আমরা কিছুক্ষণ আগে খবর পেয়েছিলাম একজন ক্রেতা গরুর মাংস কিনেছে, মাংসের মধ্যে ছোট ছোট পোকা রয়েছে। পরে জানা গেল, এটা আসলে মাছির ডিম। আমরা দোকানে গিয়ে দেখলাম প্রচুর পরিমাণে বড় বড় মাছি মাংসের উপর বসছে। সেখানেও মাছির ডিম ছিলো। মূলত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য পণ্য বিক্রি এবং টাকার বিনিময়ে প্রতিশ্রুত পণ্য না দেওয়ার কারণে ভোক্তা অধিকার আইনের অধীনে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পরে মহেশপুর ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার কারণে ২ হাজার টাকা এবং ঢাকা হোটেলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরির কারণে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।