চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহয়তায় কয়েক বছর ধরেই উন্নত মানের চিনাবাদাম চাষ হচ্ছে। চাহিদা থাকায় কৃষক পর্যায়ে প্রতি কেজি চিনাবাদাম বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকায়, এর চাষ লাভজনক হওয়ায় অনেকেই আগ্রহী হচ্ছে চাষে। বিশেষ করে নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়নে কৃষকরা চিনাবাদাম চাষ করে ইদানিং বেশি লাভের স্বপ্ন দেখছেন।
উপজেলার নবীপুর ব্লকের দড়ি লাপাং গ্রামের কৃষক ফজলুল হক জানান- কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগমের উৎসাহে প্রথম বার বাদাম চাষে আগ্রহী হয়েছি। কৃষি অফিসের প্রণোদনার আওতায় বিনা চিনাবাদাম- ৪ জাতের বীজ দেওয়া হয়। জমির ফলন দেখে অনেক কৃষক আগামীতে বীজ নেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বীরগাঁও ইউনিয়নের নজরদৌলত ব্লকের কৃষক ধন মিয়া, পৌরসভা ব্লকের সুহাতা গ্রামের রুকিয়া বেগম ও রাজস্ব প্রদর্শনী কার্যক্রমের আওতায় বিনা চিনাবাদাম- ৪ আবাদ করে লাভবান হয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন বলেন- বছরের যে কোন সময় এর চাষ করা যায়, তবে রবি মৌসুমে (অক্টোবর – ফেব্রুয়ারির) এবং খরিফ মৌসুমে (জুলাই – সেপ্টেম্বর) বীজ বপন করলে ফলন ভাল পাওয়া যায়। ফলন ভাল পেতে বিঘা প্রতি অন্যান্য সারের পাশাপাশি ৩০-৩৫ কেজি জিপসাম সারের প্রয়োগ করতে হবে। অতীতে নবীনগর উপজেলায় স্থানীয় বাদামের আবাদ করা হত বেশি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এই মূহুর্তে বারি চিনাবাদাম- ৬ এবং বিনা চিনাবাদাম-৪ আবাদ নিয়ে কৃষকদের মাঝে কাজ করছেন, এ বছর সন্তোষজনক ফলন এসেছে। বিঘা প্রতি ফলন ৮-১০ মন। চিনাবাদামে মনো- আনস্যাচুরেটেড এবং পলি- আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট নামের দুই ধরনের চর্বি জাতীয় পদার্থ রয়েছে, যা কোলেস্টেরল কমায়। খাদ্য হিসেবে প্রতিদিন অন্তত ১০ গ্রাম চিনাবাদাম গ্রহণ করতে হবে। চিনাবাদামের ফুল মাটির উপরে ফুটলেও গর্ভাশয়ের নীচের যে বৃন্তটি গুটি গঠন করে, সেটি মাটির নীচে চলে যায় এবং সেখানে পুষ্ট হয়ে বাদামে পরিণত হয়। এ কারণে হাল্কা, ঝুরঝুরে দোঁয়াশ মাটিতে বাদাম চাষ করা উচিত। খাদ্য হিসেবে চিনাবাদাম আমাদের দেহের ভারসাম্য রক্ষা করে- কলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে, ওজন কমায়, স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৭ ডিসেম্বর শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায় কৃষকদলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নবীনগর উপজেলার লাউর ফতেহপুর ইউনিয়ন কৃষকদলের উদ্যোগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বিকালে লাউর ফতেহপুর ঈদগাহ মাঠে হাজার হাজার কৃষক ও দলীয় নেতাকর্মীরা অংশ নেয়।
সমাবেশে ইউনিয়ন কৃষকদলের সভাপতি মো. বোরহান উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন বাবুল এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহ সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্লা বিভাগীয় কৃষকদলের উপকমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কে.এম.মামুনুর অর রশিদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সদস্য মো. সাইফুল হক, উপজেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক জহিরুল হক জরু, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মমিনুল ইসলাম পলাশ, যুগ্ম আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক, পৌর কৃষক দলের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন, শিবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হোসেন আহমেদ, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এমএ কাহার সরকার, ইউনিয়ন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. বানু মিয়াসহ বিএনপির অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী নবীনগর উপজেলার প্রতিটি গ্রামে কৃষি বিপ্লব ঘটিয়ে দেশকে সমৃদ্ধ করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান এবং কেন্দ্রীয় কৃষক নেতা কেএম মামুনুর রশীদকে সুন্দর উদ্যোগ সফল করতে অর্থ ও শ্রম দিয়ে সহায়তা করার জন্য ধন্যবাদ জানান। এসময় বিভিন্ন কৃষক বিগত সরকারের আমলে কৃষি পণ্য বিপণন ও বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
প্রতিবাদের সুরে মাদক থাকবে দূরে, এখনই সময় শপথ নেওয়ার, মাদক মুক্ত সমাজ গড়ার” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে নবীনগরে মাদকমুক্ত নবীনগর চাই সংগঠনের নাটঘর উচ্চ বিদ্যালয় শাখার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন আজ ১৩ মার্চ সোমবার বিদ্যালয়ের হল রুমে অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল্লাহ-র সভাপতিত্বে ও মাদক মুক্ত নবীনগর চাই নাটঘর ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক রুবেলের সঞ্চালণায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন-মাদকমুক্ত নবীনগর চাই কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবু কাউছার, অত্র বিদ্যালয়ের হেড মাওঃ দেলোয়ার হোসেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাদক মুক্ত নবীনগর চাই নাটঘর ইউনিয়ন শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নাইমুল ইসলাম।
এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন,জরু মিয়া সর্দার, হাজী জমির আলী সর্দার, ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. হুমায়ুন কবির, অত্র বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক বাবু কেশবচন্দ্র আচার্য্য, সিনিয়র শিক্ষিকা সাজেদা বেগম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আলোচনা সভা শেষে ঐশী রানী আচার্য্যকে সভাপতি ও পারভেজ আহমেদ কে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়।
আগামী এক মাসের মধ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পরামর্শে ক্রমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার নির্দেশ প্রদান করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. শফিকুল ইসলাম (৪৫) নামে এক বেকারি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে।
গতকাল ৭ মে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জরুরি বিভাগে মারা যান। শফিকুল ইসলাম উপজেলার বিটঘর ইউনিয়নের টিয়ারা গ্রামের মৃত ইদ্রিস মিয়ার ছেলে। সে ঢাকার টংগীতে বিস্কুট ও রুটির বেকারির ব্যবসা করতেন। হাসপাতাল ও নিহতে পরিবার সূত্রে জানা যায়, শফিউল গত চারদিন আগে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে নবীনগর আসেন। গত রাতে শোবার কক্ষে বিদ্যুতিক লাইট লাগাতে গিয়ে অজান্তে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মাটিতে পড়ে যায়।
রে পরিবারের সদস্যরা শফিকুলকে উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে নিহতের পরিবারের লোকেরা বিনা ময়নাতদন্তে লাশ বাড়িতে নিয়ে যান।
চলারপথে রিপোর্ট :
দীর্ঘ ৫৭ বছর ধরে কাকডাকা ভোরে, ঝড়-বৃষ্টি-তুফান উপেক্ষা করে যথা সময়ে নবীনগরের পাঠকদের হাতে সংবাদপত্র তুলে দেওয়া সেই লোকমান হেকিম চৌধুরী (৭২) জীবনের শেষ দিনও দুপুর পর্যন্ত পাঠকের হাতে পত্রিকা তুলে দিয়ে রাতেই চিরতরে পাঠকদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে পরপারে চলে গেলেন।
২৯ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে নবীনগর উপজেলার কনিকাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না … রাজিউন)।
জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকার নবীনগর উপজেলার একমাত্র সংবাদপত্র এজেন্ট ছিলেন তিনি। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকলেও মারা যাওয়ার দিনও বিক্রি করেছেন পত্রিকা। মুত্যুকালে স্ত্রী, চার মেয়ে ও এক ছেলে রেখে যান।
আজ শুক্রবার জুম্মা নামাজের পর কনিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাযা নামাজ শেষে চৌধুরী বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন তার পরিবার।
জানা যায়, লোকমান হেকিম চৌধুরী নবীনগর লঞ্চ ঘাটে বসে দীর্ঘ প্রায় ৫৭ বছর যাবৎ নবীনগরবাসীকে সংবাদপত্র পড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন, সংবাদপত্র ক্রয় করার জন্য লঞ্চ ঘাটে ছুটে আসতো নানা শ্রেনীর সংবাদ পাঠক। ঝড়-বৃষ্টি-তুফান উপেক্ষা করে যথা সময় মানুষের কাছে পত্রিকা পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। যাকে নবীনগর প্রশাসনেরসহ সর্বস্তরের মানুষ কাছে চৌধুরী নামে পরিচিত ছিলেন। উনার একমাত্র ছেলে খান জাহান আলী চৌধুরী উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সাংবাদিকতার পাশাপাশি বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করেন। মারা যাওয়ার দিনও পত্রিকা বিক্রি করেছেন লোকমান হেকিম চৌধুরী। বিকেলে ঘুরে ফিরে দেখেছেন নিজের জমি জমা। রাতে একমাত্র ছেলে খান জাহান আলীকে সাথে নিয়ে খাওয়া দাওয়া করে ঔষধ খেয়ে শুয়ে ঘুমিয়ে যায়। এর পর আর জেগে উঠেননি তিনি। নবীনগরের লঞ্চ ঘাটের সামনে উনার সংবাদপত্র এজেন্টের দোকানে সব সময় মানুষের একটা আড্ডা থাকতো। সদা রসিক এবং আড্ডা প্রিয় মানুষ ছিলন। তিনি পত্রিকার একজন সুনামধারী এজেন্ট হিসেবে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেন। উনার কাজের সন্তুষ্টির কারনে উপজেলা প্রশাসন, প্রেসক্লাব, বিভিন্ন সাংবাদিক এবং সামাজিক সংগঠন ভাল কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ প্রত্যেক বছরই নানারকম পুরস্কারে ভূষিত করেছেন।
লোকমান হেকিম চৌধুরীর মৃত্যু সংবাদে নবীনগরে শোকে ছায়া নেমে আসে। শোক প্রকাশ করেছেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল, উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম, নবীনগর থানার ওসি মাহবুব আলম, নবীনগর পৌরসভার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন আহমেদ, নবীনগর প্রেসক্লাবসহ স্থানীয় সংবাদকর্মী, সামাজিক সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।