চলারপথে ডেস্ক :
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কওমি মাদ্রাসা জামেয়া ক্বাসিমুল উলুম দরগাহের মুহতামিম, বাংলাদেশ ওলামা পরিষদের সভাপতি, আযাদ দ্বীনী এদারায়ে তালীম বাংলাদেশ শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, বরেণ্য আলেম শায়খুল হাদিস আল্লামা মুহিব্বুল হক (গাছবাড়ি) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আজ ১৭ মে বুধবার মাগরিবের নামাজের পর তিনি দরগাহ মাদ্রাসায় তার নিজ বিশ্রামকক্ষে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে মুফতি মুহিব্বুল হকের বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান।
তিনি বলেন, বুধবার কোম্পানীগঞ্জে কয়েকটি মাহফিলে হুজুর অংশগ্রহণ করেন। আসরের নামাজ এসে আদায় করেন দরগাহ মাদ্রাসায়। আসরের পরে হুজুর তার বিশ্রামকক্ষে ছিলেন। মাগরিবের সময় হুজুরের শারীরিক অবস্থা হঠাৎ খারাপ হয়। মাগরিবের নামাজ শেষে হুজুরকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকরা বলেছেন, হুজুর স্ট্রোক করেছেন। বর্তমানে হুজুরের লাশ দরগাহ মাদ্রাসায় রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার সময় সিলেট সরকারী আলিয়া মাদরাসা মাঠে মরহুমের জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ এই আলেম সম্মিলিত কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড আল হাইয়াতুল উলয়ার সদস্য ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটির সদস্য, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিলেট জেলার সভাপতি, সিলেটের প্রাচীন শিক্ষাবোর্ড আযাদ দ্বীনী এদারার সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, খাদিমুল কুরআন পরিষদের সভাপতি, সিলেট জেলা উলামা কমিটির চেয়ারম্যান, সিলেট জেলা ফতোয়া বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ৪ মেয়েসহ ছাত্র-শিক্ষক, ভক্ত ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মাওলানা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ি ১৯৬৯ সালে সুনামগঞ্জ দরগাহপুর মাদ্রাসায় শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবনের সূচনা করেন।
এরপর ১৯৭৩ সালে জামেয়া কাসিমুল উলুম দরগার শিক্ষক হিসেবে মনোনীত হন। তখন থেকে আমৃত্যু প্রায় ৫১ বছর ধরে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, আল হাইয়াতুল উলয়ার চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসান, আযাদ দ্বীনি এদারার সভাপতি মাওলানা জিয়া উদ্দিন, চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম, খেলাফত মজলিস বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত আমির মাওলানা আব্দুল বাসিত আজাদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা ইসমাঈল নূরপুরী, জামেয়া তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গার মুহতামিম মাওলানা মুহিউল ইসলাম বুরহানসহ বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের (বেফাক) নেতারা।
এদিকে শায়খুল হাদিস মাওলানা মুফতি মুহিব্বুল হকের ইন্তেকালের খবরে সিলেটের আলেম সমাজসহ ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাকে একনজর দেখার জন্য দরগাহ মাদ্রাসায় ছুটে যাচ্ছেন মানুষ। মুহিব্বুল হক (গাছবাড়ি) সিলেটের সর্বস্তরের মানুষের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত চার দফা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে সরকার। যার ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছেন। আজ ১৬ মে শুক্রবার সন্ধ্যায় ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজের উপস্থিতিতে এ ঘোষণা দেন জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম।
জবি উপাচার্য বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালন বাজেট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ বৃদ্ধি করে শিক্ষার্থীদের প্রথম দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আবাসন সংকট নিরসনে দ্রুত অস্থায়ীভাবে নির্মাণকাজ শুরু করা হবে। এছাড়া দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। পরে অনশনরত শিক্ষার্থীদের পানি পান করানো হয়।
ইউজিসির চেয়ারম্যান বলেছেন, আমরা সারা দিন এটা নিয়ে কাজ করেছি। ইউজিসি একটি পরিবার হিসেবে সবাই মিলে সমাধান করতে পারব। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি একসঙ্গে বসে সব সমাধান করব। আপনাদের সব দাবি বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি।
জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছউদ্দীন বলেন, আমাদের চতুর্থ দাবি ছিল আমাদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। হামলার ঘটনায় পুলিশ দুঃখ প্রকাশ করেছে। এছাড়া সাত দিনের মধ্যে হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া সরকার আমাদের সব দাবি মেনে নিয়েছে।
জানা যায়, শিক্ষার্থীদের আগের তিন দফা দাবির সাথে পরবর্তীতে নতুন আরও এক দাবি যুক্ত হয়। সেটি হলো ১৪ মে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের অতর্কিত হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
এর আগে শিক্ষার্থীদের দেওয়া তিন দফা দাবি হলো-বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি চালু করা, জবির প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ একনেক সভায় পাস ও বাস্তবায়ন।
চলারপথে ডেস্ক :
দেশের তিন ফসলি জমিতে কোনো ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে আজ ৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনার কথা জানান।
মাহবুব হোসেন বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কাছ থেকে তিন ফসলি জমিতে উন্নয়ন ও স্থাপনা তৈরির কাজের জন্য আবেদন পাওয়া যাচ্ছে। সোলার প্যানেল থেকে শুরু করে ভবন তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্টভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন যে, কোনো তিন ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না এবং প্রকল্প নেওয়া যাবে না। এগুলো সংরক্ষণ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনার কথা মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত হিসেবে চিঠি দিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে জানিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
মাহবুব হোসেন বলেন, বিভিন্ন অপরাধে ২০ হাজার টাকা জরিমানা থেকে শুরু করে যাবজ্জীবন পর্যন্ত সাজার বিধান রেখে ওষুধ ও কসমেটিক আইন-২০২৩ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
তিনি আরো বলেন, প্রস্তাবিত এ আইন অনুযায়ী অসৎ উদ্দেশে ওষুধের কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে, কোনো নকল ওষুধ উৎপাদন ও জ্ঞাতসারে বিক্রি, মজুত, বিতরণ বা বিক্রির উদ্দেশ্যে প্রদর্শন, ভেজাল ওষুধ উৎপাদন, বিক্রি ও মজুতের মতো অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন পর্যন্ত সাজা পেতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রস্তাবিত আইনটি প্রথমে শুধু ওষুধ আইন থাকলেও শেষে তাতে কসমেটিকের বিষয়টি যুক্ত করে ওষুধ ও কসমেটিক আইন করার সিদ্ধান্ত হয়। এর ফলে এখন থেকে কসমেটিক উৎপাদনের জন্যও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে লাইসেন্স নিতে হবে।
প্রস্তাবিত আইনে অন্যান্য সাজার বিষয়ে তিনি বলেন, লাইসেন্স ছাড়া বা লাইসেন্সের শর্তের বাইরে গিয়ে ওষুধ উৎপাদন, নিবন্ধন ছাড়া ওষধু উৎপাদন, আমদানি-রপ্তানি, মজুত বা প্রদর্শন এবং সরকারি ওষুধ বিক্রি বা মজুত বা প্রদর্শন করলে ১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড কিংবা ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
রেজিস্টার্ড চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি ও ব্যবহার বন্ধেরও বিধান রয়েছে প্রস্তাবিত এই আইনে। এই বিধান লঙ্ঘন করলে সেটি অপরাধ হবে এবং সেজন্য শাস্তি পেতে হবে। প্রস্তাবিত এই আইনে ৩০টি অপরাধের জন্য বিভিন্ন ধরনের শাস্তির বিধান রয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
এ ছাড়া মন্ত্রিসভার বৈঠকে কপিরাইট আইনের খসড়াও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এতে সংজ্ঞায় কিছু সংযোজন-বিয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া পাইরেসি প্রতিরোধেও শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। ডিজিটাল বা কম্পিউটার ভিত্তিক কর্মকাণ্ডকে প্রস্তাবিত আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, অপরাধের ধরন অনুযায়ী প্রস্তাবিত আইনে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
সূত্র : বাসস
চলারপথে রিপোর্ট :
‘শবে কদর’ কথাটি ফারসি। শব মানে রাত বা রজনী আর কদর মানে সম্মান, মর্যাদা, গুণ, সম্ভাবনা, ভাগ্য ইত্যাদি। শবে কদর অর্থ হলো মর্যাদার রাত বা ভাগ্যরজনী। শবে কদরের আরবি হলো লাইলাতুল কদর তথা সম্মানিত রাত। আজ লাইলাতুল কদর। এটি একটি সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আমি কোরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে।’ ‘লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’ ‘এ রাতে ফেরেশতারা ও জিবরাইল তাদের প্রভুর অনুমতিক্রমে সব সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করেন। শান্তিময় এ রাত ফজরের সূচনা পর্যন্ত’। (সুরা কদর)।
এ রাত কোরআন নাজিলের রাত। মহত্ব ও গুরুত্বসহকারে মহান আল্লাহর ইবাদতের রাত। এ রাত হলো হাজার মাস তথা তিরাশি বছর চার মাসের চেয়ে উত্তম। ওই ব্যক্তির চেয়েও ভাগ্যবান আর কে হতে পারে, যে এ রাতে নির্ঘুম থেকে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার সুযোগ পেয়েছে। এ পবিত্র রাতে ফেরেশতারা পৃথিবীতে আসে মানবজাতির জন্য বরকত, রহমত ও কল্যাণ নিয়ে।
সূর্যাস্তের পরপরই এ রাতে মহান আল্লাহ তার আরশ থেকে প্রথম আকাশে নেমে আসেন। মায়া আর দয়া নিয়ে, প্রেম ও ভালোবাসা দিয়ে মানবজাতিকে ডাকেন আর বলেন, ‘কে আছ পাপী! তুমি ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। কে আছ দুঃখী! আমি তোমার দুঃখ মোচন করব। কে আছ রোগী! আমি তোমাকে সুস্থ করে দেব। কে আছ দায়গ্রস্ত! আমি তোমাকে দায়মুক্ত করে দেব। তোমাদের কার রিজিকের প্রয়োজন! আমার কাছে চাও, আমি তার রিজিক বৃদ্ধি করব।’ মহান আল্লাহ এভাবে ফজর পর্যন্ত ডাকতে থাকেন। যারা তার ডাকে সাড়া দিয়ে প্রার্থনায় লিপ্ত হয়, তারা কল্যাণকামী হয়। সৌভাগ্যবান হয়।
শবে কদরের রাতে কুরআন নাজিল সম্পর্কে আল্লাহতাআলা বলেন, ‘রমজান মাস! যে মাসে কুরআন নাজিল হয়েছে মানবের দিশারি রূপে ও হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শন। (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৫)। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আরও বলেন, ‘উজ্জ্বল কিতাবের শপথ! নিশ্চয় আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয় আমি ছিলাম সতর্ককারী, যাতে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয় আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি। এ হলো আপনার প্রভুর দয়া, নিশ্চয় তিনি সব শোনেন ও সব জানেন। তিনি নভোমণ্ডল-ভূমণ্ডল ও এ উভয়ের মাঝে যা আছে সে সবের রব। যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাস করো; তিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, তিনি জীবন ও মৃত্যু দেন, তিনিই তোমাদের পরওয়ারদিগার আর তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও। তবু তারা সংশয়ে রঙ্গ করে। তবে অপেক্ষা করো সে দিনের, যেদিন আকাশ সুস্পষ্টভাবে ধূম্রাচ্ছন্ন হবে। (সুরা-৪৪ দুখান, আয়াত: ১-১০)।
শবে কদর ও কোরআন অবতরণ এবং এই রাতের ফজিলত সম্পর্কে দয়াময় আল্লাহ কোরআনে ‘সুরা কদর’ নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা নাজিল করেছেন। তাতে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি মর্যাদাপূর্ণ কদর রজনীতে। আপনি কি জানেন, মহিমাময় কদর রজনী কী? মহিমান্বিত কদর রজনী হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ হজরত জিবরাইল (আ.) সমভিব্যাহারে অবতরণ করেন; তাঁদের প্রভু মহান আল্লাহর নির্দেশ ও অনুমতিক্রমে, সকল বিষয়ে শান্তির বার্তা নিয়ে। এই শান্তির ধারা চলতে থাকে ঊষার উদয় পর্যন্ত। (সুরা-৯৭ কদর, আয়াত: ১-৫)।
শবে কদরের রাতের ফজিলত সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ রাত গুনাহ মাফের রাত। হাদিসে এসেছে- ‘যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরে ঈমান সহকারে ও আল্লাহর কাছ থেকে বড় শুভফল লাভের আশায় ইবাদতের জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে, তার পেছনের সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে’ (বুখারি ও মুসলিম)। এ রাতের কল্যাণ থেকে একমাত্র হতভাগ্য লোক ছাড়া আর কেউ বঞ্চিত হয় না (ইবনে মাজাহ ও মিশকাত)।
কিয়ামুল লাইল: ‘কিয়ামুল লাইল’ অর্থ হলো রাত্রি জাগরণ। মহান আল্লাহর জন্য আরামের ঘুম স্বেচ্ছায় হারাম করে রাত জেগে ইবাদত করা আল্লাহর প্রিয় বান্দাহদের একটি গুণ। মহান আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাহদের পরিচয় দিয়েছেন এভাবে- ‘তারা রাত্রি যাপন করে রবের উদ্দেশে সিজদাবনত হয়েও দাঁড়িয়ে থেকে’ (সুরা ফুরকান : ৬৪)।
‘তাদের পার্শ্বদেশ বিছানা থেকে পৃথক থাকে (অর্থাৎ তারা শয্যা গ্রহণ করে না; বরং এবাদতে মশগুল থাকে)। তারা গজবের ভয়ে এবং রহমতের আশায় তাদের রবকে ডাকতে থাকে এবং আমি যা দিয়েছি তা থেকে দান করে থাকে। কেউ জানে না। তাদের আমালের পুরস্কারস্বরূপ (আখিরাতে) তাদের জন্য কী জিনিস গোপনে রাখা হয়েছে’ (সুরা সিজদা : ১৬-১৭)। নবীজি (সা.) একদিন সাহাবায়ে কেরামদের (রা.) সামনে বনি ইসরাইলের এক উপাসকের কথা বলছিলেন। সে ব্যক্তি এক হাজার মাস ধরে আল্লাহর ধ্যান ও সাধনায় লিপ্ত ছিল। এ কথা শুনে সাহাবায়ে কেরাম (রা.) আফসোস করতে লাগলেন আর বললেন, আমরা এত বছর ইবাদত করব কীভাবে? তাছাড়া আমাদের অনেকে তো এত বছর বেঁচেও থাকি না। ঠিক তখনই জিবরাইল (আ.) এ রাতের সুসংবাদসহ সুরা কদর নিয়ে নবীজির (সা.) কাছে হাজির হলেন এবং এ উম্মতকে শ্রেষ্ঠ উম্মত হিসেবে প্রমাণ করে দিলেন। (তাফসিরে মাজহারি)।
নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমরা মাহে রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদর তালাশ করো।’ (বুখারি)। এ রাত হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার রাত। হজরত আয়েশা (রা.) একবার রাসুল (সা.)কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি যদি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে আমি ওই রাতে কী দোয়া করব? তখন নবীজি (সা.) বললেন, তুমি এ দোয়াটি করবে- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফউন; তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি’ অর্থাৎ হে আল্লাহ! তুমি তো ক্ষমাশীল! ক্ষমাকে তুমি ভালোবাস। অতএব, আমাকে তুমি ক্ষমা কর।
নবীজির (সা.) সময় অনেক সাহাবী (রা.) রমজানের ২৭ তারিখকে লাইলাতুল কদর হিসেবে স্বপ্ন দেখেছেন। সাহাবীরা (রা.) নবীজিকে (সা.) স্বপ্নের কথা জানালে নবীজি (সা.) বলেন, আমিও এমনটা স্বপ্নে দেখেছি। হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, ‘মহান আল্লাহর শপথ করে বলছি-নবীজি (সা.) ২৭ রমজানের রাতকে লাইলাতুল কদরের রাত বলেছেন।’ অন্য হাদিসে রয়েছে, নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি দুর্বল অথবা কোনো কারণে অক্ষম হয়ে থাকে, সে যেন রমজানের ২৭ তারিখ রাতে ইবাদত করে।’ (মুসলিম)। আরেক হাদিসে এসেছে-নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদর পেতে চায়, সে যেন তা রমজানের সাতাশতম রাতে অনুসন্ধান করে। (মুসনাদে আহমদ)।
চলারপথে রিপোর্ট :
সিপিসি-১, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্প, র্যাব-৫, রাজশাহীর একটি আভিযানিক দল আজ ১২ সেপ্টেম্বর রাতে বিশেষ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানাধীন শ্যামপুর ইউনিয়নের বাজিতপুর পুরাতন গ্রামস্থ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ১। মোঃ তোজাম্মেল হক (৩৭) (মূলহোতা), পিতা- মোঃ ফয়েজ উদ্দিন, ২। মোঃ মাসুদ রানা (৪৫), পিতা- মৃত লায়েস উদ্দিন, উভয় সাং-বাজিতপুর (পুরাতন গ্রাম) , থানা- শিবগঞ্জ, জেলা- চাঁপাইনবাবগঞ্জদ্বয় কে ১০০(একশত) গ্রাম হেরোইন সহ গ্রেফতার করে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় উল্লেখিত আসামী মোঃ তোজাম্মেল হক মাদক বিক্রির উদ্দেশ্যে মাদক বহন করে অন্যত্র যাচ্ছে। এই সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব এর একটি চৌকস আভিযানিক দল শিবগঞ্জ থানার বাজিতপুর গ্রামে ফাঁকা রাস্তায় তাকে আটক করে।
আটকের পরে জিজ্ঞাসা বাদে সে জানায় যে, সে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে মাদক সংগ্রহ করে বিক্রির উদ্দেশ্যে মোঃ মাসুদ রানা এর বাড়ীতে হেফাজতে রাখে। আভিযানিক দলটি তাকে নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে উক্ত ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে নিরপেক্ষ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে তল্লাশি করে তার ঘর থেকে ১০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করে এবং তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে আরও জানা যায় যে মো: তোজাম্মেল হক প্রায়শঃই মাদক ক্রয় করে উক্ত ব্যক্তির কাছে হেফাজতে রেখে তার মাধ্যমে এলাকার বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করত।
উপরোক্ত ঘটনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। র্যাব-বিশেষ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তা জানানো হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
বন্যার্তদের সহায়তায় জন্য বিএনপি নগদ আড়াই কোটি টাকাসহ ১০ কোটি টাকার ত্রাণ দিয়েছে বলে জানিয়েছে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
আজ ৩০ আগস্ট শুক্রবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিচে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপির ত্রাণ তহবিলে দলের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ ব্যাপক সাড়া দিয়েছে। গত ৫ দিনে নগদ আড়াই কোটি টাকাসহ প্রায় ১০ কোটির ত্রাণ সংগ্রহ করে সরবরাহ করা হয়েছে বন্যাকবলিত এলাকায়।
তিনি আরো বলেন, বন্যার পানি ইতিমধ্যে কমতে শুরু করেছে। ফলে এসব এলাকায় রোগবালাই বেড়ে যাবে। সেজন্য আমাদের চিকিৎসকগণ এবং বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানিগুলো ওইসব এলাকায় ওষুধ বিতরণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বিএনপিএর স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বন্যায় উপদ্রুত মানুষদের সাহায্যার্থে শুকনো খাবার, শিশুদের কাপড়, মানুষের ব্যবহৃত কাপড়, মোমবাতি, দিয়াশালাই, বিশুদ্ধ পানি দেশের সর্বস্তরের জনগণ সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে। রিকশাচালক, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষ বিএনপির ত্রাণ তহবিলে সহায়তা দিচ্ছে।