চলারপথে রিপোর্ট :
অনলাইনে জুয়ার সাইট ও অ্যাপে ক্যাসিনো খেলার আসোর বসাতো চক্রটি। এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ চক্রের সদস্যরা। মঙ্গলবার রাজশাহী বোয়ালিয়া থানা উপ-শহর এলাকা থেকে চক্রের হোতা রকিবুল হাসান মিলন ও সিরাজদৌলা বাবুকে গ্রেফতার করে এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই চক্রের আরো ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজ ২৪ মে বুধবার বিকেলে এটিইউয়ের মিডিয়া কর্মকর্তা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসলাম খান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সুমন, ডলার, আশরাফুল, শহিদুল ইসলাম, সুমন ও জ্যোতি কুমার দেব। তাদের কাছ থেকে নয়টি মোবাইল ফোন ও নগদ ১০ হাজার ৮০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
এসপি আসলাম খান জানান, পাঁচটি অনলাইন জুয়া খেলার সাইড থেকে সাধারণ মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলত চক্রটি। তারা ই-ট্রানজেকশন এবং নগদ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা অবৈধ ভাবে হাতিয়ে নিয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমানে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলছে, যাতে প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার যাত্রী যাতয়াত করছে। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য মেট্রোরেল একটা নিরাপদ যান হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। এই মেট্রোরেল চালু হবার পরে ঢাকার যানজট অনেকাংশে কমে গেছে।
তিনি বলেন, রাজধানীর যানজট সহনশীল করার জন্য আমরা ঢাকা মাস ট্রানজিট তৈরি করেছি, এর মাধ্যমে ৬টা রুটে মেট্রোরেল নির্মাণ করা হচ্ছে, একটা তো হয়েই গেছে। ইতোমধ্যে আমরা চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের জন্য সার্ভে করছি। আমি থাকতে থাকতে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে আমি মেট্রোরেল করে দিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ, যাতে দেশের মানুষ দ্রুততম সময় যানজট মুক্ত হয়ে চলাচল করতে পারে।
আজ ২৯ জুন শনিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২৪-২০২৫ অর্থ-বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই বাজেটকে উচ্চাভিলাসী বলে মন্তব্য করেছেন। আমি মোটেই তা মনে করি না। বাজেট শতভাগ কখনো পূরণ হয় না। তারপরও সুনির্দিষ্ট একটা লক্ষ্য থাকে। সেই লক্ষ্যে আমরা যেতে পেরেছি। কোথায় ৬২ হাজার কোটি টাকার বাজেট, আর কোথায় ৭ লাখ কোটি টাকার বাজেট! আমরা তো এই জায়গায় আসতে পেরেছি। চ্যালেঞ্জ নিয়েছি বলেই না সম্ভব হয়েছে। আমাদের ইচ্ছাটা কি? দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন। সেজন্যই তো উন্নয়নটা হয়। আমাদের উন্নয়নের ধারা যেন অব্যাহত থাকে সে লক্ষ্যেই আমরা এই বাজেট প্রণয়ন করেছি এবং উন্নয়ন বাজেট দিয়েছি। এখানে কমানোর কিছু নেই।
তিনি বলেন, এই বাজেটের মধ্যে আগামী দিনে আমরা যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল সেটি বাস্তবায়নে সক্ষম হবো। সেই ধারাবাহিকতা আমাদের আছে। আমরা একটা রাজনৈতিক দল করি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আমাদের কিন্ত নিজেদের ঘোষণাপত্র আছে, আমরা কিন্তু নির্বাচনের আগে ইশতেহার ঘোষণা করি। এই ইশতেহার আমরা কখনো ভুলে যাই না। জাতির কাছে যে ওয়াদা দিয়ে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমরা ক্ষমতায় এসেছি তা পালন করি। এই বাজেট প্রণয়নকালীন সময়েও আমাদের যে নির্বাচনী ইশতেহার, সেটির অগ্রাধিকার এবং মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের যে দিক-নির্দেশনা সেটাও বাজেটে উঠে এসেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস সর্ববৃহৎ বাজেট আমরা দিয়েছি। বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। আমাদের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থ-বছরের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬.৭৫ শতাংশ। বাজেটের উপর এ পর্যন্ত বিরোধীদলীয় নেতাসহ ২৩৪ জন সংসদ সদস্য বক্তব্য রেখে বাজেটের উপর আলোকপাত করেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন। এর বাইরে অনেকেই বাজেট নিয়ে আলোচনা করেছেন। বাজেট নিয়ে আলোচনা সমালোচনা যে যাই করুক সকলকেই আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কেউ কেউ বাজেটকে উচ্চাভিলাসী বলেছেন, কেউ বলেছে ঘাটতি বাজেট। কিছুক্ষণ আগে বিরোধীদলীয় নেতা বললেন- এই বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, আমাদের প্রবৃদ্ধির হার কমাতে হবে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি কমাতে হবে ইত্যাদি। এবং এই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মতো সক্ষমতা আছে কিনা। চ্যালেঞ্জ নেওয়াটাই তো আমাদের কাজ। চ্যালেঞ্জ নিয়েই তো আমরা চলতে চাই, চ্যালেঞ্জ নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
বিরোধী দলীয় নেতা জি এম কাদেরের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন হাত পাতার জায়গায় নেই। আমরা ঋণ নেই, ঋণ শোধ করি। এরশাদ সাহেবের সময় রংপুরে মঙ্গা লেগেই থাকতো। এখন মঙ্গা নেই। আজকের সাফল্যে কৃতজ্ঞতা দেশের জনগণের প্রতি। তারা বার বার আমাদের সমর্থন দিয়েছে। তাই আমরা কাজ করতে পেরেছি। কোভিড অতিমারীর সময় অনেক উন্নত দেশ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারেনি। আমাদের প্রবৃদ্ধি ছিল ধণাত্মক। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের সবচেয়ে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অজনকারী দেশগুলোর তালিকায় সামনের সারিতে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে মর্যাদার আসনে আসীন হয়েছে। আমরা উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়ে তা বাস্তবায়ন করি এবং মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করি। যারা পরিবর্তনগুলো দেখেন না, তাদের বলবো গ্রামে যান। গ্রামের মানুষের যে ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে, সেটা গেলেই দেখবেন। এরশাদ সাহেবের উত্তরবঙ্গে যে মঙ্গা নেই, সেটাও দেখবেন। কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর, গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন এলকায় দুর্ভিক্ষ লেগেই থাকতো। সেখানে ছুটে গেছি, মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। গ্রামের পর গ্রামে গিয়েছি, মানুষের শরীরে মাংস ছিল না চামড়া আর হাড় ছাড়া। এখন মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, আমাদের চলার পথ মোটেই মসৃণ ছিল না। বার বার বাধা এসেছে। দেশের ভেতর থেকে যেমন বাধা এসেছে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ের নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়েও চলতে হয়েছে। আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ, স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশন- নানা বাধা এসেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ লাগলে সব কিছুর দাম বেড়ে গেল। ওই অবস্থার মধ্যেও বিরাট চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে যেতে হয়েছে। কোভিডের সময় উন্নত দেশ বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দেয়নি। আমরা দিয়েছি। বিনা পয়সায় টেস্ট করেছি।
স্টাফ রিপোর্টার:
আজ মহান বিজয় দিবস, বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখন্ডের নাম জানান দেয়ার দিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৫ মার্চে গণহত্যা শুরু হলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদ ও দু’লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক সেনাদের আত্ম সমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। সেই হিসাবে বিজয়ের ৫১ বছর পূর্তির দিন কাল। জাতীয় পর্যায়ে এদিন ঢাকায় প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তববক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিতিতে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বাংলাদেশে অবস্থনরত বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, মুক্তিযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণকারী আমন্ত্রিত ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যগণ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
এছাড়া সকাল সাড়ে ১০টায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রীও এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। এ উপলক্ষ্যে ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি পরাধীনতার শেকল ভেঙ্গে প্রথম স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করে। ২৪ বছরের নাগপাশ ছিন্ন করে জাতির ভাগ্যাকাশে দেখা দেয় এক নতুন সূর্যোদয়। প্রভাত সূর্যের রক্তাভা ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। সমস্বরে একটি ধ্বনি যেন নতুন বার্তা ছড়িয়ে দেয় ‘জয়বাংলা’ বাংলার জয়, পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল। মহামুক্তির আনন্দ ঘোর এই দিনে এক নতুন উল্লাস জাতিকে প্রাণ সঞ্চার করে সজিবতা এনে দেয়। যুগ যুগ ধরে শোষিত বঞ্চিত বাঙালি চোখে আনন্দ অশ্রু আর ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় সামনে। বিন্দু বিন্দু স্বপ্নের অবশেষে মিলিত হয় জীবনের মোহনায়। বিশ্ব কবির সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, জীবনানন্দের রূপসী বাংলা, রূপের তাহার নেইকো শেষ, বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ। বাঙালি যেন খুঁজে পায় তার আপন সত্তাকে।
আদি বাঙালির সাংস্কৃতিক ও আর্থ-সামাজিক জীবন এবং ক্রমবিকাশের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে বাঙালির শৌর্য-বীর্য যেন আর একবার ধপ করে জ্বলে উঠে। প্রথম আগুন জ্বলে ’৫২-র একুশে ফেব্রুয়ারি। ফাগুণের আগুনে ভাষা আন্দোলনের দাবি আর উন্মাতাল গণমানুষের মুষ্টিবদ্ধ হাত একাকার হয়ে যায় সেদিন। ভাষার জন্য প্রথম বলীদান বিশ্ববাসী অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করে। সেই থেকে শুরু হয়ে যায় বাঙালির শেকল ভাঙার লড়াই। পাকিস্তানিদের সাথে হিসেব-নিকেশের হালখাতার শুরুতেই রক্তের আঁচড় দিয়ে বাঙালি শুরু করে তার অস্তিত্বের লড়াই। পলাশীর আম্রকাননে হারিয়ে যাওয়া সেই সিরাজদ্দৌলা আবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রূপে এ লড়াইয়ে সেনাপতি হিসেবে আবির্ভূত হন। ’৫২ সালে যে আগুন জ্বলেছিল রাজধানী ঢাকা শহরে সে আগুন যেন ক্রমান্বয়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকে দেশের আনাচে-কানাচে সবখানে। যে আগুন জ্বলেছিল মোর প্রাণে, সে আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে সবখানে সবখানে। বাঙালির বুকের ভেতর জ্বলে উঠা আগুন যেন সহস্র বাঙালির মধ্যে প্রবাহিত হতে থাকে।
বাষট্টি, ঊনসত্তর এবং সত্তর শেষ করে একাত্তরে বাঙালি জাতি হিসাব করতে বসে। হিসেব-নিকেশ আর দেনা-পাওনায় পাকিস্তানিরাও বসে নেই। তারাও অংক কষতে থাকে কিভাবে বাঙালি জাতিকে যুগ যুগ ধরে পরাধীনতার শেকল পরিয়ে রাখা যায়। তাদের কাছে এই অলংকারই বাঙালির শ্রেষ্ঠ প্রাপ্য। ঘড়ির কাঁটার টিক টিক শব্দ জানিয়ে যায় সময় আসছে হিসেব নিকেশ চুকিয়ে দেয়ার পালা। অবশেষে গভীর কালো নিকষ আঁধার থেকে জেগে উঠে হিরন্ময় হাতিয়ার। ৭ মার্চ একাত্তরের বিশাল জনসমুদ্র থেকে যুগের কবি, মহাকাব্যের প্রণেতা বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠ ঘোষণা দেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তি সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। রক্ত যখন দিয়েছি তখন আরো দেব, তবুও এদেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। এই একটি মাত্র উচ্চারণে যেন বাঙালি সত্যিকার দিক-নির্দেশনা পেয়ে যায়। চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে থাকে বাঙালি। বাঙালি বুঝে যায় শেষ কামড় দেয়ার সময় আসন্ন। পাকিস্তানিরাও আর বসে নেই। পুরো জাতিকে স্তব্ধ করার লক্ষ্যে মারাত্মক মারণাস্ত্র নিয়ে ২৫ মার্চ একাত্তর ঘুমন্ত জাতির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু হয় বাঙালি নিধন যজ্ঞ। বাতাসে লাশের গন্ধ, বারুদে বারুদে আর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন আকাশ। এ যেন এক প্রেতপুরী। আকাশে শকুনের উদ্যত থাবা, নিচে বিপন্ন মানুষের বিলাপ। হায় বাংলাদেশ। একি বাংলাদেশ। এ যেন এক জ্বলন্ত শ্মশান। কিন্তু ঠিকই হাড়ের আর খুলির স্তুপ একদিন পাললিক হয়।
মুক্তি পাগল বাংলার দামাল ছেলেরা স্বাধীনতার রক্ত সূর্যকে ছিনিয়ে আনবে বলে একদিন অস্ত্র কাঁধে তুলে নেয়। ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার সবাই শরিক হয়ে থাকে এ লড়াইয়ে। যতই দিন অতিবাহিত হতে থাকে আরো শাণিত হয় প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার অস্ত্র। লক্ষ্য স্থির রেখে শত্রু হননে দৃঢ়তায় এগিয়ে যায় বীর বাঙালি। ইতোমধ্যেই বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন স্পষ্ট হয়ে উঠে। প্রতিবেশী ভারতও জড়িয়ে পড়ে বাঙালির ভাগ্য যুদ্ধে। ডিসেম্বর শেষ পর্যায়ে এসে চূড়ান্ত রূপ নেয় এই যুদ্ধের।
অবশেষে ন’মাসের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটিয়ে বাঙালি জাতির জীবনে এলো নতুন প্রভাত। ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সূচিত হল মুক্তিযুদ্ধের অনিবার্য বিজয়। এর মধ্য দিয়ে এলো হাজার বছরের কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা। বাঙালি জাতি এদিন অর্জন করে তার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর ২ লাখ ধর্ষিতা মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীনতা ধরা দেয় বাঙালির জীবনে।
চলারপথে ডেস্ক :
সরকার যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন নিশ্চিত করার জন্য দ্রুতগতিতে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, আইন সংশোধন একটি জটিল প্রক্রিয়া। বিশেষ করে শ্রম আইন, যা ত্রিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যম ঘটে থাকে। তাই এই আইনটি সংশোধনে যুক্তিসঙ্গত সময়ের প্রয়োজন।
আজ ১৬ মে মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে শ্রম আইন সংশোধন বিষয়ক টেকনিক্যাল নোট ও গ্লোবাল গুড প্রাকটিস নিয়ে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা সভার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শ্রম বিষয়ক আইনি কাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা সংশোধন করা হয়েছে এবং ইপিজেড শ্রম বিধিমালা জারি করা হয়েছে। শ্রম বিধিমালা সংশোধনের প্রথম রাউন্ডে বিশেষজ্ঞ কমিটির বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। আগামীতেও তাদের পর্যবেক্ষণ বিবেচনায় নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যেক শ্রমিকের কাজের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান এবং মৌলিক নীতি ও অধিকার অনুযায়ী শ্রম খাতকে উন্নত করার জন্য সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা নিয়ে কোনো অস্পষ্টতা নেই।
অনুষ্ঠানে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, শ্রম সচিব মো. এহছানে এলাহী, আইএলও-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর তোমো পুটিআইনেন, বাংলাদেশ এমপ্লোয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি আরদাশির কবির, এনসিসিডব্লিউই-এর সভাপতি আনোয়ার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত লাইসেন্সধারী ব্যক্তিদের সব আগ্নেয়াস্ত্র বহন ও প্রদর্শন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আজ ২২ ডিসেম্বর শুক্রবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ইসরাত জাহানের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ঘোষিত তপশিল অনুসরণে আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সধারীগণের আগ্নেয়াস্ত্র বহন ও প্রদর্শন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে।
প্রজ্ঞাপনে আরো উল্লেখ করা হয়, এ আদেশ লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ‘দ্য আর্মস অ্যাক্ট ১৮৭৮’এর সংশ্লিষ্ট ধারার বিধান মোতাবেক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
অস্ত্রোপচারের সময় রোগীকে অচেতন করার জন্য ব্যবহৃত নিষিদ্ধ হ্যালোথেন গ্রুপের ওষুধ হ্যালোসিন যেখানে পাওয়া যাবে সঙ্গে সঙ্গে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
আজ ১৫ জুন শনিবার বিকালে রাজধানীর মহাখালীতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অভিযানবিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ওষুধটি সরকার ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, যা ব্যবহার করার অধিকার কারো নেই। এটি বিক্রির দায়ে রাজধানী থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চেতনানাশক এ ওষুধের উৎপাদন, বিপণন ও বিক্রি বন্ধে অধিদপ্তরের অভিযান চলমান থাকবে।
এটি বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করার সঙ্গে মানুষের জীবন নিয়ে খেলতে দেওয়া হবে না বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
তিনি আরো বলেন, এ নিষিদ্ধ চেতনানাশক ব্যবহার করা হলে ক্লিনিকগুলোর লাইসেন্স বাতিল করা হবে। পরিপত্র জারি করে এ ওষুধ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এটা যেখানেই পাবো সেখানেই আইনগত ব্যবস্থা নেবো। আসল নকল পরের কথা ব্যানড মানে ব্যানড।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির।