চলারপথে ডেস্ক :
ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বাড়িতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অভিযান পরিচালনাকালে মুন্না হাসান (৩৫) ও নুর মোহাম্মদ (৩৪) নামে দুই জন ভুয়া ডিবি পুলিশকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা।
আজ ২৪ মে বুধবার দুপুরে উপজেলার হোসেনগাঁও ইউনিয়নের ডায়বেটিকস মোড় সংলগ্ন সুন্দরপুর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী আমিন মার্ডির বাড়িতে ডিবির পরিচয়ে অভিযান পরিচালনা করার সময় তাদের আটক করে স্থানীয়রা। পরে পুলিশকে খবর দিলে আটককৃতদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) গুলফামুল ইসলাম।
আটক মুন্না হাসান দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী থানার ইউসুফ খলিফার ছেলে ও নুর মোহাম্মদ একই এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে।
পুলিশ জানায়,সুন্দরপুর গ্রামের আমিন মার্ডির বাড়িতে ভুয়া ডিবি পরিচয়ে ওই ২জন অভিযান চালায় এ সময়ে তারা আমিন মার্ডির পরিবারের লোকজনকে অবৈধ বাংলা মদের মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন এবং মামলা থেকে বাঁচতে হলে টাকা দিতে হবে বলে হুমকি দিয়ে ১৮ হাজার টাকা গ্রহণ নেন। এসময় কথাবার্তায় সন্দেহ হলে তাদের আটকে রেখে থানা পুলিশকে অবগত করেন স্থানীয়রা।
রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) গুলফামুল ইসলাম জানান, ভুয়া ডিবিকে আটক করে থানা হাজতে রাখা হয়েছে। তারা পুলিশের কোন সদস্য না হয়েও পুলিশের পরিচয় দিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।
চলারপথে ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ ও সেখানকার শরণার্থীরা বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সংকট থেকে মনোযোগ সরিয়ে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ (ইউক্রেনে) পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে। পুরো ফোকাস (দৃষ্টি) এখন যুদ্ধ এবং ইউক্রেন থেকে আসা শরণার্থীদের দিকে।’
কাতারের দোহায় স্বল্পোন্নত দেশসমূহের পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনের (এলডিসি ৫) ফাঁকে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিস্থিতি এবং সেখানে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎসহ বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আজ ৮ মার্চ বুধবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সম্মেলনে যোগ দিতে গত ৪ মার্চ কাতারে পৌঁছান শেখ হাসিনা এবং আজ বিকেলে তিনি ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। সূত্র : বাসস
প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাৎকারে বলেন, ঢাকা সমস্যা সমাধানে আলোচনায় নিয়োজিত থাকলেও মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের দেশে ফেরানোর ব্যাপারে ইতিবাচক নয়।
আল জাজিরার সাংবাদিক নিক ক্লার্ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেন। সাক্ষাৎকারের একটি সংক্ষিপ্ত অংশ ইতোমধ্যেই সম্প্রচার করা হয়েছে এবং পূর্ণাঙ্গ অংশটি আল জাজিরাতে আগামী ১১ মার্চ শনিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে সম্প্রচার করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে মিয়ানমারে নিপীড়ন, হত্যা ও ধর্ষণের শিকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড এবং পরিস্থিতির উন্নতির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারে যখন রোহিঙ্গা নিপীড়ন শুরু হয়, রোহিঙ্গারা নির্যাতন, হত্যা ও ধর্ষণের শিকার হয় তখন আমরা তাদের জন্য দুঃখ অনুভব করেছি। এরপর আমরা সীমান্ত খুলে দিয়েছি, আমরা তাদের আসতে দিয়েছি। এছাড়াও, আমরা মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের সকলের জন্য আশ্রয় ও চিকিৎসা দেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাশাপাশি আমরা মিয়ানমারের সঙ্গেও কথা বলতে শুরু করি। আমরা তাদের বলি, আপনারা তাদেরকে (রোহিঙ্গা) ফিরিয়ে নিন। দুর্ভাগ্যক্রমে তারা ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে না। রোহিঙ্গাদের নিজেদের দেশে ফিরে যেতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। কিন্তু এটা সত্যিই খুব কঠিন। আমরা তাদের জন্য আলাদা জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করেছি। ভাসান চর একটি ভালো জায়গা, থাকার জন্য ভালো জায়গা… আমরা সেখানে শিশুদের জন্য ভালো থাকার ব্যবস্থা এবং চমৎকার সুবিধার ব্যবস্থা করেছি।’
রোহিঙ্গা শিবিরে জীবনযাত্রার পরিস্থিতি এবং আগুনে ১২ হাজারের বেশি রোহিঙ্গার আশ্রয় হারানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আসলে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তারা (রোহিঙ্গারা) একে অপরের সাথে লড়াইরত। তারা মাদক, অস্ত্র ও মানব পাচারসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মে জড়িত। তারা নিজেদের মধ্যে সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে।’
অনলাইন ডেস্ক :
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানো নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠকে বসেছে ঢাকায় সফররত কমনওয়েলথের চার সদস্যের প্রাক নির্বাচনী প্রতিনিধি দল।
আজ ১৯ নভেম্বর রবিবার নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উপস্থিতিতে বৈঠক শুরু হয়।
বৈঠকে কমনওয়েলথের রাজনৈতিক বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা জিপ্পি ওজাগো, রাজনৈতিক উপদেষ্টা লিন্ডিউই মালেলেখা, সহ-গবেষণা বিষয়ক কর্মকর্তা সারর্থাক রয় ও রাজনৈতিক উপদেষ্টা এবং প্রধান লিনফর্ড অ্যানড্রিউস উপস্থিত আছেন।
এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও অন্য নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন।
কমনওয়েলথের প্রতিনিধি দলটি ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করবেন। সফরকালে তারা পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন মহলের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
এর আগেও বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে ভোট পর্যবেক্ষণ নিয়ে বৈঠক করেছে ইসি।
উল্লেখ্য, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী, ২০২৪ সালের সাত জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়া মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর এবং নির্বাচনী প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির ৫ তারিখ পর্যন্ত চলবে বলে জানায় ইসি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় তালাক দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে সাবেক স্ত্রী সুমা আক্তারকে (২৫) কুপিয়ে হত্যা মামলায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী রাসেল মিয়া (৩২)কে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গত মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এবং র্যাব-৯-এর সদস্যরা রাত ঢাকার পল্লবী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী রাসেল মিয়াকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত রাসেল মিয়া কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে।
গতকাল বুধবার বিকেলে র্যাব-৯-এর কার্যালয়ে থেকে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তি এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়। নিহত সুমা আক্তার কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের কুদ্দুস মিয়া মেয়ে।
র্যাবের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালে মোঃ রাসেল মিয়ার সাথে সুমা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় সুমা আক্তারের পরিবারের পক্ষ থেকে ১ টি অটোরিক্সাসহ প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মালামাল ও ১ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার দেয়া হয়।
বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় সুমা আক্তারকে তার বাবার বাড়ি থেকে টাকা-পয়সা এনে দেয়ার জন্য চাপ দিতো রাসেল মিয়া। এনিয়ে মাঝে মধ্যে সুমা আক্তারকে বেদম মারধোর করতো রাসেল মিয়া। ঘটনার ৭/৮ মাস আগে রাসেল মিয়া ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য সুমা আক্তারকে মারধোর করলে সুমা তার বাবার বাড়িতে চলে যায়।
গত ২০১৫ সালের ৩১ মে সুমা আক্তার তার স্বামী রাসেল মিয়াকে ডিভোর্স দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাসেল মিয়া সুযোগ খুজতে থাকে।
২০১৫ সালের ৪ অক্টোবর সন্ধ্যার পর সুমা আক্তার তার বাবার বাড়ির একঘর থেকে অন্যঘরে যাওয়ার সময় পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা রাসেল মিয়া এলোপাথারী সুমাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়।
পরে তার পরিবারের লোকজন সুমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমাকে মৃত ঘোষনা করেন। তবে মারা যাওয়ার আগে সুমা আক্তার হামলাকারী রাসেলের নাম বলে যায়।
এ ঘটনায় পরদিন নিহতের বাবা কুদ্দুস মিয়া বাদী হয়ে কসবা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বেলাল হোসেন তদন্ত শেষে ডিসেম্বর মাসে রাসেলকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, সুমা তালাক দেয়া ক্ষুব্দ রাসেল মিয়া তাকে হত্যা করেন।
এদিকে সকল সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে রাসেলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় গত ৬ আগষ্ট দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার আসামী রাসেলকে ২০ হাজার টাকা জরিমানাসহ মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রদান করেন। আসামী পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে জেল ওয়ারেন্ট ইস্যুর আদেশ দেন ।
চলারপথে রিপোর্ট :
টাঙ্গাইলের সখীপুরে একসঙ্গে চলতি এসএসসি পরীক্ষায় বসেছে তিন সহোদর বোন। একসঙ্গে তিন বোনের পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের বিষয়টি সবার নজর কেড়েছে। তারা হলো সখীপুর পৌর শহরের ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের তিন কন্যা সুমাইয়া ইসলাম, সাদিয়া ইসলাম ও রাবিয়া ইসলাম।
আজ ৩০ এপ্রিল রবিবার থেকে শুরু হওয়া পরীক্ষায় তারা উপজেলার সখীপুর পিএম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। তারা উপজেলার সখীপুর পিএম পাইলট মডেল সরকারি স্কুল এন্ড কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে।
সখীপুর পিএম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাইয়ুম হোসাইন বলেন, ওই তিন বোন মেধাবী শিক্ষার্থী। এর আগে তারা প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে। এবারের পরীক্ষায়ও তারা কৃতিত্বের ধারাবাহিকতার স্বাক্ষর রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তিন বোনের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, মেয়েদের সন্তোষজনক ফলাফল এবং একই সঙ্গে আমার তিন কন্যার পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত আনন্দের। মেয়েদের তিনি উচ্চ শিক্ষা লাভে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা শেষে সাদিয়া ইসলাম বলেন, তিন বোন একসঙ্গে পরীক্ষা দেওয়ার মজাই আলাদা। আমাদের তিনজনের পরীক্ষা ভালো হয়েছে। ভালো ফলাফলের জন্য সবার দোয়া চেয়েছেন সাদিয়া ইসলাম।
চলারপথে রিপোর্ট :
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ডের ‘বাংলাদেশ নবজাতক হাসপাতালে’ বেশি বিল হওয়ায় তা পরিশোধ করতে না পেরে এক মাস বয়সী মেয়ে হাসপাতালে ফেলে উধাও হয়ে যান মা-বাবা। পরবর্তীতে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে ওই শিশুকে মা-বাবার কোলে ফিরিয়ে দেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ।
আজ ২২ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিকট এ বিল পরিশোধ করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা।
এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হক, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হাবিবুর রহমানসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা। এর আগে ১২ আগস্ট শনিবার এমন ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে শিশুটির মা-বাবার কোনো খোঁজ খবর না পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দেয়।
জানা যায়, শিশুটি নরদিংদী মনােহরপুরের রজত চন্দ্র এবং সুজাতা দম্পতি মেয়ে।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মােস্তফা জানান, এক মাস পূর্বে শিশুটি তাদের গ্রামের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। এরপর থেকে শিশুটি হার্টের ছিদ্র সমস্যাটি নিয়ে ভুগছিলেন। কোনো উপায় না দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে তার মা বাবা ঢাকায় নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, মাতুয়াইল মা ও শিশু ইনস্টিটিউটে এনআইসিইউ না পেয়ে সাইনবোর্ডের নবজাতক হাসপাতালে ভর্তি করান।
হাসপাতালে এনআইসিইউ থাকা অবস্থায় শিশুটি সুস্থ হতে থাকেন। এমন প্রেক্ষিতে সবমিলিয়ে হাসপাতালের বিল দুই লাখ টাকার বেশি হলে শিশুটির মা-বাবা টাকা ম্যানেজ করে নিয়ে আসবে বলে উধাও হয়ে যান। এভাবে ৬-৭ দিন চলে যাওয়ার পর শিশুটি মা-বাবা ফেরত না আসলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমাদের জানায়। পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেলের নির্দেশে মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা হাসপাতালের বিল পরিশোধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। অতঃপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আমাদের সাধ্যমতো বিল পরিশোধ করে শিশুটিকে মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেই। বর্তমানে শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে। এমন মানবিক কাজ করতে পেরে আমরা খুব খুশি এবং ভবিষ্যতেও পেশাগত কাজের পাশাপাশি আমরা এসব মানবিক কাজ অব্যাহত রাখবো।
এদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শিশুটির মা-বাবা জানান, আমাদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ হওয়ায় আমরা কোনোভাবেই বিল পরিশোধ করতে পারছিলাম না। এর মধ্যে দু’দিন আগে শিশুটার নানী মারা যান। কোনো উপায় না পেয়ে আমরা এ কাজ করি। পরবর্তীতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আমাদের ফোনে আশ্বস্ত করে আজ আমাদের শিশুটিকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেন। হাসপাতালের বিল পরিশোধ করার পাশাপাশি তারা বাচ্চাটিকে লালন-পালন করার জন্য আরও কিছু টাকা দেয়। তারা আমাদের যে উপকার করলো সেজন্য পুলিশের প্রতি আমরা চিরকৃতজ্ঞ।
বাংলাদেশ নবজাতক হাসপাতালের ম্যানেজার মোশাররফ হােসেন জানান, গত ২৯ জুলাই ওই শিশুটি আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হোন। গত ২৪ দিন ধরে সে ডা. মজিবুর রহমানের তত্ত্বাবধায়নে এনআইসিইউতে ভর্তি ছিল। পরবর্তীতে বাচ্চাটি সুস্থ হয়ে গেলে আমরা তাদের বিল পরিশোধ করে বাচ্চাটিকে নিয়ে যেতে বলি। কিন্তু এরপর তারা উধাও হয়ে গেলে আমরা পুলিশের শরণাপন্ন হোই। আজ বিষয়টি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের মাধ্যমে সমাধান হয়েছে। পুলিশের এই মানবিক কাজের সঙ্গে আমরাও তাদের অংশীদার হয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ধন্য মনে করছে।