অনলাইন ডেস্ক :
আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১৪ জুন থেকে। রেলপথ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ঈদের মতো এবারও সব আসনের টিকিট শুধু অনলাইনে বিক্রি করা হবে।
চারটি কাউন্টারে বিক্রি হবে শুধু দাঁড়িয়ে যাওয়ার টিকিট। ঈদ যাত্রায় কেনা অগ্রিম টিকিট ফেরত দেওয়া যাবে না।
২৪ জুন থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত সব আন্তনগর ট্রেনের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হচ্ছে।
গত ঈদের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, দিনের শুরু থেকেই রেলের পশ্চিমাঞ্চলের টিকিটের চাহিদা তুলনামূলক অনেক বেশি থাকে। কিন্তু পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীরা আশানুরূপ টিকিট পায় না। আর পূর্বাঞ্চলের টিকিট অবিক্রীত থেকে যায়। আবার সার্ভারেও অনেক বেশি চাপ তৈরি হয়। তাই এবার পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের টিকিট আলাদা বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পশ্চিমাঞ্চলে চলাচলরত সব আন্ত নগর ট্রেনের টিকিট সকাল ৮টা থেকে বিক্রি শুরু হবে। আর পূর্বাঞ্চলে চলাচলরত সব আন্ত নগর ট্রেনের টিকিট দুপুর ১২টা থেকে বিক্রি শুরু হবে।
২৪ মে বুধবার রেল ভবনে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের উপস্থিতিতে ঈদকেন্দ্রিক ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রিসংক্রান্ত বৈঠক হয়। এতে রেলের কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়। আগামী ২৯ বা ৩০ জুন ঈদ ধরে পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। আগামী ৩০ মে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তা তুলে ধরার কথা রয়েছে।
১৪ জুন পাওয়া যাবে ২৪ জুনের টিকিট। একইভাবে ১৫ জুন দেওয়া হবে ২৫ জুনের, ১৬ জুন ২৬ জুনের, ১৭ জুন ২৭ জুনের ও ১৮ জুন দেওয়া হবে ২৮ জুনের অগ্রিম টিকিট।
ঈদ যাত্রার ট্রেনের ফিরতি অগ্রিম টিকিট দেওয়া শুরু হবে ২২ জুন। সেই হিসেবে ২২ জুন দেওয়া হতে পারে ২ জুলাইয়ের টিকিট। যথাক্রমে ২৩ জুন ৩ জুলাইয়ের, ২৪ জুন ৪ জুলাইয়ের, ২৫ জুন ৫ জুলাইয়ের ও ২৬ জুন ৬ জুলাইয়ের টিকিট দেওয়া হবে।
আট জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানোর প্রস্তাব: রেলের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, ২৬ জুন থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এবং ঈদের পরদিন থেকে পাঁচদিন চাঁদপুর-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ পথে তিন জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানো হবে। এক জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানো হবে ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম পথে।
ভৈরব ও ময়মনসিংহ থেকে দুই জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানো হবে শুধু ঈদের দিন শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে যাওয়ার জন্য। এছাড়া আরও দুই জোড়া বিশেষ ট্রেন ঈদের আগে ও পরে ছয়দিন চালানো হবে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে পঞ্চগড় ও লালমনিরহাটের উদ্দেশে।
এই ঈদকে কেন্দ্র করে এক জোড়া নতুন ট্রেনের যাত্রা শুরু হবে ঢাকা-চিলাহাটি-ঢাকা পথে।
শুধু চার কাউন্টারে স্ট্যান্ডিং টিকিট: ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে প্রতিদিন ৩২ হাজার আসনে যাত্রী পরিবহন করা হবে। মোট আসনের ২৫ শতাংশ টিকিট দাঁড়িয়ে (স্ট্যান্ডিং টিকিট) যাওয়া যাত্রীদের কাছে বিক্রি করা হবে। স্ট্যান্ডিং টিকিট পাওয়া যাবে শুধু ঢাকার কমলাপুর, ক্যান্টনমেন্ট ও বিমানবন্দর এবং গাজীপুরের জয়দেবপুর স্টেশন থেকে। মাঝপথে বিরতি নেয় এমন কোনো স্টেশনের স্ট্যান্ডিং টিকিট পাওয়া যাবে না।
যুক্ত হবে অতিরিক্ত বগি ইঞ্জিন: রেলের অবহিতকরণ সভায় অতিরিক্ত ইঞ্জিন ও বগি যুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হচ্ছে, ঈদ যাত্রায় ৬৫টি অতিরিক্ত বগি যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ থেকে ৪০টি মিটার গেজ ও সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ থেকে ২৫টি ব্রড গেজ বগি আনা হবে।
এছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে পূর্বাঞ্চলে ১১৬টি ও পশ্চিমাঞ্চলে ১০২টি মিলিয়ে মোট ২১৮টি অতিরিক্ত ইঞ্জিন যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
দুর্বৃত্তদের হামলা ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত নরসিংদী জেলা কারাগার পরিদর্শনে আসেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো: সাবিরুল ইসলাম। ২৭ জুলাই শনিবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত কারাগার পরির্দশন করেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন অতিরিক্ত কারা মহা-পরিদর্শক কর্নেল শেখ সুজাউর রহমান, র্যাব-১১ এর সিও লে. কর্ণেল তানভীর বাশার, নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম, পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
পরিদর্শন শেষে বিভাগী কমিশিনার মো: সাবিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর থেকে সরকারের মাননীয় মন্ত্রীসহ সংশিষ্ট্ররা পরিদর্শন করেছেন। ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করতে কারাগারটি পরিদর্শন করলাম। দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে কারাগারটি ব্যবহার যোগ্য করতে সরকারকে পরামর্র্শের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এদিকে নরসিংদীতে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ সিথিল হওয়ায় জনমনে স্বস্তির পাশাপাশি স্বাভাবিক চলাফেরা শুরু হয়েছে। শনিবার ছুটির দিন হলেও সকাল থেকেই নরসিংদীর বিভিন্ন পয়েন্টে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রাণ চাঞ্চল্য এবং গণপরিবহনের চলাফেরা লক্ষ্য করা গেছে। শহরের প্রতিটি মোড়ে মোড়ে বিপুল সংখ্যক আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। কারাগারে বাড়তি নিরাপত্তায় স্থাপন করা হয়েছে বিজিবি ক্যাম্প।
অনলাইন ডেস্ক :
ঢাকার গুলশানে পুলিশ সদস্য ও চলাচলরত যানবাহনকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়ছেন আন্দোলনরত ব্যবসায়ীরা।
আজ ১৩ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশান-১ নম্বর গোল চত্বর থেকে পুলিশ আন্দোলনরত ব্যবসায়ীদের সরিয়ে সড়ক খুলে দিলে তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন।
ব্যবসায়ীদের ইটপাটকেল নিক্ষেপে কয়েকটি যানবাহনের গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। সড়কে চলাচলরত পথচারীদেরও দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে দেখা যায়।
জানা গেছে, দুপুরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে চিহ্নিত করে ঢাকা গুলশান শপিং সেন্টার সিলগালা করেন উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
এরপরই ব্যবসায়ীরা সড়কে অবস্থান নেন সিলগালার প্রতিবাদে গুলশান শপিং সেন্টারের সামনের সড়ক অবরোধ করে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। সড়ক অবরোধের কারণে গুলশান, বনানীসহ এর আশপাশের এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ বলেন, গুলশান-১ নম্বরে সিটি করপোরেশন একটি মার্কেট সিলগালা করার কারণে ব্যবসায়ীরা এখানে অবস্থান নিয়ে সড়ক দখল করে রাখেন। আমরা তাদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে নিজেদের দাবিদাওয়া জানানো এবং বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য বলেছি।
মো. শহিদুল্লাহ বলেন, আমরা তাদের সময় দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা এই সময়ের মধ্যে কথা বলেও বিষয়টি সমাধান করতে পারেননি। তারা দীর্ঘক্ষণ ধরে রাস্তায় অবস্থান করছিলেন। যেহেতু এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, তাই আমরা তাদের বেশিক্ষণ রাস্তা বন্ধ করে রাখতে না দিয়ে কিছুটা প্রেশার দিয়ে সরিয়ে দিয়েছি।
এ সময় আন্দোলনকারীদের ইট-পাটকেল নিক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। তবে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বেপরোয়া গতিতে আসা যাত্রীবাহী অটোরিক্সার চাপায় তমা নামে সাত বছর বয়সী এক শিশু নিহত হয়েছে। এসময় শিশুটিকে দ্রুত নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আজ ১৬ অক্টোবর সোমবার ভোর ৫টায় ফতুল্লার কাশিপুর ভোলাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তমা (৭) গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার হরিরাম ইউনিয়নের আমপুরা গ্রামের তছলিম মিয়ার মেয়ে। তারা স্বপরিবারে ফতুল্লার কাশিপুর ভোলাইল মিষ্টির দোকান এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ফতুল্লা মডেল থানার এসআই সজিব মাহমুদ জানান, তমা ঘুম থেকে উঠে বাসার সামনে গেইটের কাছে দাঁড়াতেই বেপরোয়া গতিতে আসা ইজিবাইক ( ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা) তাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। তখন আশপাশের লোকজন তমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশটি ময়না তদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। ঘাতক ইজিবাইক চালকের নাম পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। এঘটনায় মামলা হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
এইচএসসি পরীক্ষার শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের সময় বাড়ানো হয়েছে। আজ ২১ এপ্রিল রবিবার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এইচএসসি পরীক্ষার অনলাইনের ফরম পূরণের চলমান কার্যক্রমের সময় আগামী ৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হলো। ‘সোনালী সেবার’ মাধ্যমে ফি পরিশোধ করা যাবে ৬ মে পর্যন্ত। বিলম্ব ফিসহ ফরম পূরণের সময় ৭ মে থেকে শুরু হয়ে চলবে ১২ মে পর্যন্ত। ‘সোনালী সেবার’ মাধ্যমে ফি পরিশোধ করা যাবে ১৩ মে পর্যন্ত।
চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ৩০ জুন। এই পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হয়েছে ১৬ এপ্রিল থেকে। ফরম পূরণ চলার কথা ছিল ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত। এখন বর্ধিত সময় অনুযায়ী আগামী ৫ মে পর্যন্ত ফরম পূরণ করা যাবে। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, এবার পুনর্বিন্যাসকৃত (সংক্ষিপ্ত) পাঠ্যসূচিতে অনুষ্ঠিত হবে এইচএসসি পরীক্ষা।
কোনো বিভাগের জন্য কত ফি
পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি বাবদ পত্রপ্রতি ১১০ টাকা, ব্যবহারিকের ফি বাবদ পত্রপ্রতি ২৫ টাকা, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্টের ফি বাবদ পরীক্ষার্থীপ্রতি ৫০ টাকা, মূল সনদ বাবদ ১০০ টাকা, বয়েজ স্কাউট ও গার্লস গাইড ফি বাবদ ১৫ টাকা এবং জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ফি বাবদ পরীক্ষার্থীপ্রতি ৫ টাকা নেওয়া হবে।
অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীপ্রতি ১০০ টাকা অনিয়মিত ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। জিপিএ উন্নয়ন ও প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের জন্য ১০০ টাকা তালিকাভুক্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। রেজিস্ট্রেশন নবায়ন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫০ টাকা। বিলম্ব ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা।
কেন্দ্র ফি বাবদ প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে ৪৫০ টাকা ও ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি বাবদ পরীক্ষার্থীদের পত্রপ্রতি ২৫ টাকা দিতে হবে। আর ব্যবহারিক উত্তরপত্র মূল্যায়ন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ টাকা।
শিক্ষা বোর্ডগুলো বলছে, বিজ্ঞান শাখার পরীক্ষার্থীদের মোট ২ হাজার ৬৮০ টাকা এবং মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার জন্য ২ হাজার ১২০ টাকা করে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার কোনো পরীক্ষার্থীর চতুর্থ বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষা থাকলে এ ফির সঙ্গে অতিরিক্ত ১৪০ টাকা যুক্ত হবে। আর মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার কোনো শিক্ষার্থীর নৈর্বাচনিক বিষয়ে ব্যবহারিক থাকলে বিষয়প্রতি আরও ১৪০ টাকা যোগ হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ৩ মেয়াদে আওয়ামী লীগ লীগ সরকার গণতান্ত্রিক ধারা ও স্থিতিশীলতা বজায় রেখে জনকল্যাণমুখী ও সুসমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি সমতা ও ন্যায়ের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক দেশ বিনির্মাণের পথে জাতিকে অগ্রসরমান রেখেছে উল্লেখ করে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ওপর ভরসা রাখতে দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ ৪ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভাষণ দেন তিনি।
জাতির উদ্দেশে তিনি বলেন, গত ২৭ ডিসেম্বর আপনাদের সামনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে তুলে ধরেছি। বিশদভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছি কী অবস্থায় দেশকে পেয়েছিলাম, আর আপনাদের জীবনমান উন্নয়নে কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। দেশের যে উন্নয়নের ধারা সূচিত হয়েছে, তা টেকসই করে আরও উন্নত জীবন যাতে আপনারা পান- আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হতে পারলে আগামী ৫ বছরে আমরা কী কী কাজ করব সেই ব্যাখ্যা তুলে ধরেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাইতে হাজির হয়েছি। এই উন্নয়নকে টেকসই করা, আপনাদের জীবনমান উন্নত করা, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ চাই।
তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ৩ মেয়াদে আওয়ামী লীগ লীগ সরকার গণতান্ত্রিক ধারা ও স্থিতিশীলতা বজায় রেখে জনকল্যাণমুখী ও সুসমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি সমতা ও ন্যায়ের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক দেশ বিনির্মাণের পথে জাতিকে অগ্রসরমান রেখেছে। ইতোমধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের একটি টেকসই ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা শুরু হবে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার যে সুযোগ পাওয়া যাবে তা কার্যকর করা এবং যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে; তা একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই মোকাবিলা করতে পারবে। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। সম্ভাবনাময় বিশাল তরুণ সমাজ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের মূল কারিগর। তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি।
শেখ হাসিনা বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলো এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুরোধ, সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এমন কোন উদ্ভট ধারণাকে প্রশ্রয় দেবেন না এবং ইন্ধন জোগাবেন না।
তিনি বলেন, আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি। এই প্রথম বাংলাদেশে আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে আর্থিকভাবে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত করা হয়েছে। সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করছে। আমাদের সরকার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। গণমানুষের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে, দেশের মানুষের অর্থ-সামাজিক উন্নতি নিশ্চিত করে। জনগণের খাদ্য, নিরাপত্তা, চিকিৎসা, বাসস্থান, শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও ব্যাপক হারে অবকাঠামো উন্নয়ন হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রেখে যাওয়া দেশের পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি, সংঘাতে নয়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়, এই নীতিতেই আমরা বিশ্বাস করি। এই নীতি নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে আমরা বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার উপযোগী করে উন্নত করেছি।
দেশবাসীর উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এই দীর্ঘ চলার পথে যতটুকু অর্জন, তার সবটুকুই আপনাদের অবদান। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া এ অর্জন করা সম্ভব হতো না। চলার পথে যদি কোনো ভুল-ভ্রান্তি করে থাকি, তাহলে আপনারা ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখবেন- এটাই আমার আবেদন। আবার সরকার গঠন করতে পারলে, ভুলগুলো শোধরাবার সুযোগ পাব। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ‘নৌকা’ মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সংগ্রাম করেছেন এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য, দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার জন্য। আমি বাবা, মা, ভাই সব হারিয়ে দুঃখ-বেদনাকে সম্বল করে আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আপনাদের মাঝে খুঁজে পেয়েছি- আমার বাবার স্নেহ, মায়ের মমতা এবং ভাইয়ের মায়া। আপনারাই আমার পরিবার, আমার ওপর ভরসা রাখুন। আসুন, সবাই মিলে এই বাংলাদেশকে স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্ন পূরণ করি।
কবি সুকান্তের ভাষায় বলতে চাই-
‘আমাদের ডাক এসেছে
এবার পথে চলতে হবে।
ডাক এসেছে চলতে হবে আজ সকালে
বিশ্বপথে সবার সঙ্গে সমান তালে।
পিছন পানে তাকাস নি আজ, চল সম্মুখে
জয়ের বাণী নূতন প্রাতে বল ও-মুখে।’