চলারপথে ডেস্ক :
গাজীপুুর মহানগরের পুবাইল থানার তেলের লড়ির চাপায় বাবা ও ছেলে নিহত। এ ঘটনায় চালকসহ তেলের লড়ি আটক করেছে পুলিশ।
আজ ২৬ মে শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টায় মিরের বাজার-উলুখোলা সড়কের টিয়া পূর্বপাড়া এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনায় নিহত বাবা মো. জলিল হোসেন (৬৪) শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী থানার জালকাটা গ্রামের উজির আলী ফকিরের ছেলে ও জলিলের ছেলে মো. শহীদ (১৪)। তারা দুজনে গাজীপুরের পুবাইল এলাকার আইয়ুব আলী পাঠানের বাড়িতে ভাড়া থেকে ভিক্ষাবৃত্তি করতো। এ ঘটনায় আটক লড়ির চালক শ্রী সুজন মাল্লা (৩৫) জামালপুর ঝেলার মাদারগঞ্জ থানার বীর ভাটিয়ানী থানার চাম্পা মাল্লার ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে গাজীপুর মহানগরের বাসন থানা নাওজোর এলাকার নজরুল ইসলামের বাড়ির ভাড়াটিয়া।
প্রত্যক্ষদর্র্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছেন, প্রতিবন্ধী ছেলে শহীদকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে ভিক্ষা করতো বাবা মো. জলিল হোসেন। শুক্রবার (২৬ মে) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে পুবাইলের মিরের বাজার-উলুখোলা সড়কের টিয়া পূর্বপাড়া এলাকা ভিক্ষা করছিল তারা। এসময় নারায়নগঞ্জ থেকে গাজীপুরের উদ্দেশ্যে আসা একটি তেলের লড়ি (যশোর-ট-১১-২৯০২) হুইল চেয়ারে করে ভিক্ষা করার সময় প্রতিবন্ধী শহীদ ও জলিলকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।
এবিষয়ে পুবাইল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিল্টন কুমার কুন্ড বলেন, এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
অনলাইন ডেস্ক :
বর্তমানে ব্যবসায়ীরা পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধির চাপে আছেন। এই সময় উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার কারণে পণ্য ও সেবা বিক্রি কমে যাওয়ায় বিপরীতমুখী চাপে আছেন তাঁরা। এ পরিস্থিতিতে তাঁদের নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ নেই। বরং এখন কঠিন বাস্তবতার মুখে রুগ্ণ ও সংকটে থাকা ব্যবসা গুটিয়ে নিতে সরকারের কাছে নীতিমালা চান ব্যবসায়ীরা।
স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও বিনিয়োগবান্ধব হতে পারেনি দেশ। এখনো একজন বিনিয়োগকারীকে দেশে বিনিয়োগ করতে হলে ২৯টি প্রতিষ্ঠান থেকে ১৪১টি ছাড়পত্র নিতে হয়। এই জটিলতার পরও সরকারের দেওয়া সেবার মূল্য ও কর বৃদ্ধি অব্যাহত। গত তিন বছরে গ্যাসের দাম ২৫০ শতাংশ থেকে প্রায় ৪৫০ শতাংশ বেড়েছে।
যদিও আবার দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা চলছে। এসবের সঙ্গে আছে উচ্চ সুদের হার, ঋণপত্রে জটিলতা, বেতন-বোনাস, উচ্চ উৎপাদন ব্যয় ও ডলার দর বৃদ্ধিতে এখন নাজেহাল অবস্থা।
রবিবার বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি সংগঠনের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠক করে এমন দবি করেছে। এ বৈঠকেই তারা এখন বিনিয়োগ করতে আগ্রহ পাচ্ছে না বলে জানিয়েছে।
একই সঙ্গে তারা সামনে আর যাতে লোকসানে না পড়তে হয়, সে জন্য কিছু কিছু ব্যবসাও গুটিয়ে নিতে চায়।
জানা যায়, ২০২১ সালের পর থেকেই দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসায় ভাটা পড়েছে। এমনকি সরকার পরিবর্তনের পরও বিনিয়োগে ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালে এক হাজার ৮৩টি ব্যবসা প্রকল্পের জন্য এক হাজার ৩৩৪ কোটি ৫১ লাখ ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব নিবন্ধন হয়েছে। পরের বছর এক হাজার ৮১টি ব্যবসা প্রকল্প নিবন্ধনের মাধ্যমে এক হাজার ২৮৮ কোটি ৩৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল।
২০২৩ সালে আরো কমে ব্যবসার ৯৯৮টি প্রকল্পে ৮৯৭ কোটি ৮৫ লাখ ডলার হয়। আর চলতি বছরে ব্যবসার ৭৪২টি প্রকল্পে এক হাজার ১৬৩ কোটি ডলার বিনিয়োগ নিবন্ধন হলেও এপ্রিল-জুন প্রান্তিকেই ২৫৪টি প্রকল্পে ৬৬৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার হয়। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সরকার পরিবর্তনকালীন জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে তা কমে ১৮৬টি প্রকল্পে মাত্র ১৮৬ কোটি ৭১ লাখ ডলার হয়েছে।
রিজার্ভের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে বিদেশি বিনিয়োগ। রিজার্ভ যেমন কমছে, বিদেশি বিনিয়োগও কমছে। আগের বছরের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে নিট বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৮.৮ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে নিট বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে ১৪৭ কোটি ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে যা ছিল ১৬১ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ১৪ কোটি ২০ লাখ ডলার।
স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পাঁচ মাস পার হতে চললেও দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বাভাবিক পরিবেশ এখনো ফেরেনি। বরং আইন-শৃঙ্খলার অবনতি এবং সংস্কার ও নির্বাচনসহ নানা ইস্যুতে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতায় নানা ধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এতে ব্যবসায়ী-শিল্পপতি ও উদ্যোক্তারা নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন। অর্থনৈতিক মন্দায় ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা।
গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) বলেন, ‘দেশে বর্তমানে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে সব প্রতিষ্ঠানের বিক্রি কমেছে, ঋণের উচ্চ সুদহার, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি—সব কিছু মিলিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান তার পূর্ণ সক্ষমতায় চলতে পারছে না। উৎপাদন ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। চাহিদা মতো ঋণপত্র (এলসি) খোলা যাচ্ছে না, বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ৭.৬৬ শতাংশ। নতুন গ্যাস সংযোগে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আবার আইএমএফের সুপারিশে বিভিন্ন পণ্যের ওপর কর-মূসক বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহের টিকে থাকাই এখন চ্যালেঞ্জ। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা মনে করি, আমাদের বর্তমান শিল্পগুলো টিকিয়ে রাখতে হবে। আর শিল্প টিকে থাকলে বৈদেশিক মুদ্রার কোনো সমস্যা হবে না।’
বিসিআই সভাপতি বলেন, ‘আমাদের কোনো এক্সিট বা ব্যবসা গোটানোর পলিসি নেই। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের এক্সিট পলিসি থাকা দরকার। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানিয়েছেন, আমরাও মনে করি এক্সিট পলিসি থাকা দরকার। আর এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা আশা করছি এটা দ্রুত সময়ের মধ্যে করা সম্ভব হবে।’
আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির দায় অন্য ব্যবসায়ীদের না। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্য ব্যাংকগুলোরও এই দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। ক্যাশ ইনসেনটিভ না পেলে ইন্ডাস্ট্রিগুলো মরে যাবে।
বিসিআই সভাপতি বলেন, ‘রপ্তানিমুখী শিল্পের নগদ সহায়তা পেতে আবেদনের পর ৯ মাস থেকে এক বছর সময় লাগছে। যার ফলে শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহের সময় মতো তাদের অপারেশন কস্ট মেটানো, তাদের কর্মীদের বেতনাদি পরিশোধ করতে পারছে না। আমরা মনে করি, নগদ সহায়তা প্রদানের সময়সীমা দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে নামিয়ে আনা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের সিঙ্গেল বরোয়ার এক্সপোজার লিমিট ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। আমার মনে হয়, এটা আগের মতো ৩৫ শতাংশে উন্নীত করা উচিত। আমরা ঋণখেলাপির ক্ষেত্রে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়ার প্রস্তাব করেছি। কারণ মার্চ থেকে কোনো গ্রাহক তিন মাস কিস্তি না দিলে খেলাপি হয়ে যাবে। তাই এটাকে তিন মাসে না এনে ছয় মাস রাখার প্রস্তাব করেছি।’
বিসিআই সভাপতি বলেন, ‘বিদ্যমান বড় শিল্প খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো এখন রুগ্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে এক বছরের মনিটরিয়াম সুবিধাসহ আগামী ১২ বছরে পরিশোধের সুবিধা চেয়েছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে রুগ্ণ প্রতিষ্ঠানের এক্সিট পলিসির ক্ষেত্রে বিদ্যমান ব্যাংক দায়ের ১ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট, ১ বছরের মনিটরিয়ামসহ ১৫ বছর মেয়াদে পরিশোধের সুবিধা চেয়েছি।’
একটি প্রতিষ্ঠান এক্সিট সুবিধা নিয়ে পরে কিভাবে ব্যাংকের দায় পরিশোধ করবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ার-উল আলম সাংবাদিকদের বলেন, একজন ব্যক্তির একাধিক প্রতিষ্ঠান থাকে। সব প্রতিষ্ঠানই একসঙ্গে খারাপ হয়ে যায় না। যে প্রতিষ্ঠান রুগ্ণ হয়েছে তার দায় পরিশোধের জন্য তাঁর অন্য ভালো প্রতিষ্ঠানের আয়ের মাধ্যমে ব্যাংকের দায় পরিশোধ করবেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পশ্চাৎ সংযোগ শিল্প খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএপিএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ শাহরিয়ার। তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর নতুন সূর্য সবার গায়ে লেগেছে। আমরা চাই সবাই দেশের জন্য কাজ করব। কিন্তু বর্তমান সরকারের সময় আমরা যেটা দেখছি তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করে ৭৫ টাকা করা হবে। অথচ আমরা অনেক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা তৈরির কথা বলছি। কিন্তু ঢাল-তলোয়ার ছাড়া নিধিরাম সর্দারের মতো কিভাবে দেশের জন্য করবে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিশ্ববাজারে টিকতে পারব না।’
গভর্নরকে অবহিত করেছেন এমন তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের পশ্চাৎ সংযোগ শিল্প খাতের প্রণোদনা কেটে দেবেন। অথচ হোগলা পাতা রপ্তানি করলেও তারা প্রণোদনা পায়। দেশের শিল্প এখন ১৪ থেকে ১৬ শতাংশ ঋণের সুদ দেয়। এর পরও শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি। অথচ শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নেই। ডলারের সংকট চলছে। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরা নতুন বিনিয়োগে যাবেন না। পরীক্ষিত ব্যবসায়ীরা এখন ঝুঁকি নেবেন না।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্যাকেজের শর্ত অনুযায়ী ঋণ শ্রেণিকরণে নতুন নিয়ম চালু করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নিয়ম অনুসারে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে তিন মাস মেয়াদোত্তীর্ণ থাকার পর সব ধরনের ঋণকে খেলাপি ঋণ হিসেবে শ্রেণিকরণ করা হবে। বর্তমানে এ সময়সীমা ছয় মাস।
বর্তমান পরিস্থিতিতে সিএমএসই খাত সব থেকে ক্ষতির মুখে পড়েছে। আমাদের সিএমএসই খাতকে টিকিয়ে রাখতে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা মনে করি, সিএমএসই খাতের বিশেষ তহবিল এবং নিম্ন সুদের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এ খাতে একটি জেলা বা একটি ক্লাস্টারকে পাইলট ধরে ডিজিটাল প্ল্যাটফরম ব্যবহার করে অর্থায়ন করা যেতে পারে।
ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, এপ্রিলে খেলাপি ঋণের নতুন নিয়ম চালু হলে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। তার ওপর নতুন করে ভ্যাট আরোপ, শ্রমিকের বেতন-ভাতা বৃদ্ধিকে ব্যবসার অন্তরায় হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
বিজিএমইএ প্রশাসক আনোয়ার হোসেন বলেন, এলসি জটিলতা দূর করতে হবে। পাশাপাশি কমাতে হবে সুদের হারও।
ব্যাংক রিফর্ম কমিটিতে ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্তি এবং অ্যাগ্রো প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিকে গুরুত্ব দিয়ে সরবরাহব্যবস্থা ঠিক করার দাবিও জানান ব্যবসায়ী নেতারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বিসিআইয়ের প্রতিনিধিদলের বক্তব্য শোনেন এবং বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল লক্ষ্য এখন মুদ্রাস্ফীতি কমানো। আমরা আশা করি আগামী জুন নাগাদ মুদ্রাস্ফীতি ৭-৮-এর মধ্যে নেমে আসবে। আমাদের বেসরকারি খাতে অর্থ প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি। আমরা সরকারি ব্যয় কমানোর জন্য সুপারিশ করছি। যাতে বেসরকারি খাতে অর্থ প্রবাহ বাড়াতে পারি। কিন্তু ডিপোজিট বাড়ছে না। ডিপোজিট গ্রোথ ৭ শতাংশ। অর্থ প্রবাহ বাড়াতে হলে ডিপোজিট বাড়াতে হবে। বর্তমানে ডলারের ক্রাইসিস নেই। অর্থনীতি স্বাভাবিক হচ্ছে, কিন্তু একটু সময় লাগবে। আগামী রমজানে যাতে নিত্যপণ্যের সরবরাহব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত না হয় সেদিকে আমাদের লক্ষ আছে এবং আমরা সে লক্ষে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমি মনে করি, দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য বন্ড মার্কেটে যেতে হবে। আমাদের করপোরেট বন্ডের জন্য কাজ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করবে।’
সভায় উপস্থিত থেকে নিজ নিজ সেক্টরের সমস্যাসমূহ তুলে ধরে বক্তব্য দেন সিনিয়র সহসভাপতি, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সিনিয়র সহসভাপতি নাজমুল হাসান সোহেল, সিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাসান, উত্তরা মোটর করপোরেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, বারভিডা সভাপতি আব্দুল হক, পরিচালক বিসিআই ও চেয়ারম্যান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ আহসান খান চৌধুরী, কোকা-কোলা বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাদাব আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিসিএমইএ ও ভাইস চেয়ারম্যান মন্নু গ্রুপ মঈনুল ইসলাম স্বপন, বিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি প্রীতি চক্রবর্তী, বিসিআই সহসভাপতি মোহাম্মদ ইউনুস, সিটি গ্রুপের উপদেষ্টা অমিতাভ চক্রবর্তী। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন
চলারপথে রিপোর্ট :
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) কর্তৃক উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল পাট ও কেনাফের বীজ ও আঁশ উৎপাদন প্রযুক্তি জনপ্রিয়করণ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কৃষক প্রশিক্ষণ শেষে বীজ বিতরণ করা হয়েছে।
আজ ২ জুন শুক্রবার বিকালে বিজেআরআই কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক কেন্দ্রের আয়োজনে রামচন্দ্রকুড়া ও মন্ডলিয়াপাড়া ইউনিয়নের কালাকুমা গ্রামে এ কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
কৃষিবিদ ড. আব্দুল আওয়াল ডিজি হওয়ায় অনুষ্ঠানের শুরুতে উপজেলা প্রেস ক্লাবের পক্ষ হতে সভাপতি মো.সাইফুল ইসলাম, কার্যকরী সভাপতি লাল মোহাম্মদ শাহজাহান ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার মহাপরিচালককে ফুলের তোরা দিয়ে অভিনন্দন জানান।
বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক কৃষিবিদ ড. আব্দুল আওয়ালের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোকছেদুর রহমান লেবু।
প্রশিক্ষণ শেষে উপস্থিত ৫০ জন কৃষকের মাঝে দেশি, তোষা ও কেনাফ জাতের মোট ৭৫ কেজি বীজ বিতরণ করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিজেআরআই কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম, নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মওদুদ হোসেন, সরকারি নাজমুল স্মৃতি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মকিম উদ্দিন, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ রঞ্জন চন্দ্র দাস, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নাজমুল আহসান, সরকারি নাজমুল স্মৃতি কলেজের সাবেক জিএস আসাদুজ্জামান সোহেল, কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি শওকত নবাব প্রমুখ।
অনলাইন ডেস্ক :
সকল সন্তানদের কাছে নির্ভরতার অন্যতম প্রতীক হচ্ছেন বাবা। সন্তানের কাছে শ্রদ্ধেয় এক গভীর অনুভূতির শব্দ এটি। নিখাদ ভালোবাসার সঙ্গে উচ্চারিত হয় ‘বাবা’ শব্দটি। বাবা শব্দের মাঝেই জড়িয়ে আছে ভালোবাসা, মায়া, নির্ভরতা। আর তাই প্রত্যেক বাবাকে শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার বিশ্বব্যাপী পালন করা হয় ‘বিশ্ব বাবা দিবস’। বাবার সঙ্গে সুন্দর সময় কাটানোসহ নানা উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয় দিনটি।
কিন্তু কোথা থেকে বা কবে থেকে বাবা দিবস পালনের সূচনা, তা আমাদের অনেকেরই অজানা।
বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিক থেকে বাবা দিবস পালনের প্রচলন হয়। মায়েদের পাশাপাশি বাবারাও তাদের সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল- এটা বোঝানোর জন্যই এই দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। পৃথিবীর সব বাবাদের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের ইচ্ছা থেকেই যার শুরু।
ভার্জিনিয়ার মোনোনগাহ্য় কয়লা খনিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারান ৩৬২ জন পুরুষ। ঘটনাটি ১৯০৭ সালের ডিসেম্বর মাসে। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন সন্তানের বাবা। এই ঘটনায় প্রায় এক হাজার শিশু পিতৃহারা হয়ে পড়ে। পরের বছর ১৯০৮ সালের ৫ জুলাই পশ্চিম ভার্জিনিয়ার এক গির্জায় একটি স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। নিহতদের সম্মান জানাতে সন্তানরা মিলে এই প্রার্থনাসভার আয়োজন করে। এটি ছিল বাবাকে সম্মান জানাতে ইতিহাসের প্রথম আয়োজন।
সনোরা স্মার্ট ডড নামে এক নারীর বড় ভূমিকা রয়েছে বাবা দিবসকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে। ১৯০৯ সালের আগে ওয়াশিংটনে বাবা দিবস বলে কোনও বিশেষ দিন ছিল না। সে সময় স্থানীয় গির্জায় ডড মা দিবস পালনের কথা শোনেন।
মা দিবস পালনের রীতি রয়েছে কিন্তু বাবা দিবস পালনের রীতি নেই জেনে ডড ভীষণ অবাক হন। তারপর তিনি বাবা দিবসের স্বীকৃতির জন্য সোচ্চার হয়ে ওঠেন। ডড তার বাবাকে অসম্ভব ভালোবাসতেন। মা ছিল না তার। মায়ের মৃত্যুর পর শত দুঃখ-কষ্টের মধ্যে থেকেও তাদের সাত ভাইবোনকে বড় করে তুলেছিলেন তাদের সিঙ্গেল বাবা। বাবার এই ত্যাগ দেখে ডডের মনে হলো, মা দিবসের এত আয়োজন হলে বাবা দিবস কেন বাদ থাকবে। বাবাকে সম্মান জানানোর জন্যও একটা দিন থাকা দরকার।
তারপর অনেক চেষ্টা করে দীর্ঘ এক বছরের সাধনায় স্থানীয় কমিউনিটিগুলোতে বাবা দিবস পালন করতে পারেন ডড। ১৯১০ সালের ১৯ জুন বিশ্বে প্রথমবারের মতো পালিত হয় বাবা দিবস।
ওয়াশিংটন থেকে শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে ছড়িয়ে পড়তে থাকে এ দিবস পালনের কথা। আস্তে আস্তে মা দিবসের পাশাপাশি বাবা দিবসের প্রতিও সচেতন হতে থাকেন সন্তানরা। এরপর ১৯২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলি বাবা দিবসে সম্মতি দেন। তারপর ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসন জুন মাসের তৃতীয় রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে বাবা দিবস উদযাপনের কথা ঘোষণা করেন। এবং সবশেষে ১৯৭২ সালে তখনকার আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নিক্সন একটি আইনে স্বাক্ষর করে বাবা দিবসকে জাতীয় মর্যাদা দেন। তারপর থেকে জুন মাসের তৃতীয় রবিবার সারা বিশ্বে বাবা দিবস পালন হয়ে আসছে।
হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছর আজ পড়েছে বাবা দিবস। বিশ্বের কয়েকটি দেশ ভিন্ন মাসের কয়েকটি ভিন্ন তারিখে বাবা দিবস পালন করলেও, একটি বিশাল অংশ যেমন- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, চিলি, কলাম্বিয়া, কোস্টারিকা, কিউবা, সাইপ্রাস, চেক প্রজাতন্ত্র, ফ্রান্স, গ্রিস, হংকং, ভারত, আয়ারল্যান্ড, জ্যামাইকা, জাপান, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, নেদারল্যান্ড, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলংকা, সুইজারল্যান্ড, বাংলাদেশ, ভেনিজুয়েলা ও জিম্বাবুয়েসহ আরও কিছু দেশে জুনের তৃতীয় রোববার এ বিশেষ দিনটি পালিত হয়।
অন্যদিকে দক্ষিণ আমেরিকায় দিবসটি পালিত হয় ১৯ মার্চ। আর অস্ট্রেলিয়া ও ফিজিতে পালন করা হয় সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম রোববার।
বাবা দিবস পালনের ক্ষেত্রে দেশ ভেদে বৈচিত্র্য দেখা যায়। এ দিবসটি বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে পালিত হয়। এ দিন ছেলেমেয়েরা তাদের বাবাকে উপহার দিয়ে ভালোবাসা প্রকাশ করে। আর বাবারাও ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে গিফট পেয়ে বেশ অভিভূত হয়ে যান। এ গিফট দেয়ার ক্ষেত্রেও দেশ ভেদে দেখা যায় ভিন্নতা। কোনো কোনো দেশে ছেলেমেয়েরা বাবাকে কার্ড বা ফুলের তোড়া উপহার দিয়ে বাবা দিবসের শুভেচ্ছা জানায়। আবার কোথাও কোথাও বাবাকে ছেলেমেয়েরা নেকটাই ও উপহার দেয়। অনেকে আবার বাবা দিবস উপলক্ষে কেক কাটার আয়োজনও করে।
একটি পরিবারে মায়ের চেয়ে বাবার গুরুত্বও কোনো অংশে কম নয়। পরিবারের প্রধানের ভূমিকায় বাবার অবদান অনস্বীকার্য। বাবার কঠোর শাসন অনেকের জীবনের গতিকে পরিবর্তন করে আলোর পথে এনেছে। তিনি যেন সন্তানের জন্য এক বটবৃক্ষ। পৃথিবীর সব বাবার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়ে তাই তো কবির ভাষায় বলতে হয়, ‘বাবা’ কখনো বলা হয়নি তোমায় ঠিক কতখানি ভালোবাসি।
অনলাইন ডেস্ক :
নরসিংদীতে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, বিরোধী দল কাকে বলে, তা বিএনপি জানেই না। সেই সক্ষমতাও তাদের নেই। সেই সাথে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির অস্তিত্ব থাকবে কিনা এখন সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শেখ হাসিনার কারিশমার কাছে সবাই হেরে গেছে।
এখন কাজ দেশকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। দেখেন নির্বাচনের পর বহির্বিশ্বের সুর পাল্টে গেছে।
আজ ১৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে নরসিংদী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা পর্যায়ের সকল সরকারি দপ্তর প্রধানগণের সঙ্গে মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলমের সভাপতিত্বে মতবিনিময়সভায় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
মতবিনিময়সভায় শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৫ বছরে জেলায় প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। এরমধ্যে ১৯১ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে এবং ১২৩টি প্রকল্প বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছে। এছাড়া জেলায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে উন্নয়ন হিসেবে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি মেডিক্যাল কলেজ নির্মানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ‘বেলাবতে একটি শিল্পপার্ক নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
’ পাশাপাশি মনোহরদীতে একটি বিসিক নির্মাণের আশাবাদ ব্যক্ত করেন শিল্পমন্ত্রী।
এরপর বিকেলে নরসিংদী জেলা আইনজীবী সমিতির এমএ মজিদ ভবন মিলনায়তনে আইনজীবীদের সঙ্গে এক মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন শিল্পমন্ত্রী। পরে সন্ধ্যায় মনোহরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
অনলাইন ডেস্ক :
ইহকালের শান্তি, পরকালের মাগফেরাত এবং বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ ও সমৃদ্ধি কামনায় গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত সম্পন্ন হয়েছে।
আজ ৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার সকালে মোনাজাত পরিচালনা করেন তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের শীর্ষ মুরব্বি, কাকরাইল জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা জুবায়ের আহমেদ।
সকাল ৯টা ১ মিনিটে আখেরি মোনাজাত শুরু হয়ে ৯টা ২৩ মিনিটে শেষ হয়। ২২ মিনিট পর্যন্ত চলেছে এবারের আখেরি মোনাজাত। এতে অংশ নেন লাখ লাখ মুসল্লি। এ সময় ধর্মপ্রাণ মুসল্লির ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে টঙ্গীর তুরাগ তীর।
মোনাজাতে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর হেদায়েত, ঐক্য, শান্তি, সমৃদ্ধি, ইহকাল ও পরকালের নাজাত এবং দ্বীনের দাওয়াত সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য দোয়া করা হয়। এছাড়া সব ধরনের গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়।
আখেরি মোনাজাতে নিজের আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করার জন্য দুই হাত তুলে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে সন্তুষ্টি অর্জনের আশায় উপস্থিত লাখ লাখ মুসল্লি প্রার্থনা করেন।
মোনাজাতের সময় পুরো টঙ্গী এলাকা ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। তারা সবাই ইহলোকের মঙ্গল ও পরলোকের ক্ষমা প্রার্থনা করে সুখ ও সমৃদ্ধি চেয়েছেন।
রাজধানীর অদূরে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে এই আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন কয়েক লাখ মুসল্লি। বাংলাদেশের তাবলিগের প্রধান মারকাজ কাকরাইলের মুরব্বি হাফেজ মাওলানা মো. জোবায়ের হাসান এ মোনাজাত পরিচালনা করেন। আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে টঙ্গী ময়দান ও আশপাশের এলাকায় স্থান না পেয়ে যে যেখানে পেরেছেন বসে পড়েন রাস্তায়, খোলা মাঠে বা বাসার ছাদে কিংবা যানবাহনেই। তবুও তাদের কোনো আক্ষেপ নেই। আখেরি মোনাজাতে যেকোনোভাবে অংশ নিতে পেরেই তারা খুশি।
আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে রবিবার ভোর থেকে দলে দলে যোগ দেন হাজার হাজার মানুষ। মধ্যরাত থেকে ইজতেমা ময়দান এলাকায় বাস চলাচল বন্ধ থাকায় হেঁটেই রওনা হন মুসল্লিরা। তবে ঢাকার দক্ষিণাঞ্চল থেকে মেট্রোরেলে করে ইজতেমা এলাকায় এসেছেন অনেকে। এতে অফিস সময়ে হাজার হাজার মানুষের ভিড় দেখা গেছে মেট্রোরেল স্টেশনগুলোতে।
মতিঝিল, প্রেসক্লাব, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মিরপুর-১০ এর মুসল্লিরা মেট্রোরেলে উঠে উত্তরা স্টেশনে আসেন। গতকাল মধ্য রাত থেকে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস, চান্দনা চৌরাস্তা, বোর্ড বাজার, কলেজ গেট, বিমানবন্দর, উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর, কামারপাড়া ও টঙ্গী রেলস্টেশন এলাকা হয়ে ঢাকা ও গাজীপুরের আশপাশের জেলার মুসল্লিরা দলে দলে ইজতেমা ময়দান এলাকায় এসেছেন।
আখেরি মোনাজাতে মুসল্লিরা দেশ, জাতি ও মানবতার জন্য দোয়া করছেন। বিশ্বশান্তি ও কল্যাণ চেয়ে মহান আল্লাহর দরবারে আকুতি জানাচ্ছেন। আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবারের ইজতেমায় সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব-আমিরাত, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, চাদ, ইথিওপিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত, পাকিস্থান, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ আফ্রিকা, স্পেন, সুইজারল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, মালয়েশিয়া, মরক্কো, নেপাল, কেনিয়া, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন, জর্দান ও দুবাইসহ বিশ্বের ৬১টি দেশের প্রায় এক হাজার ৯০০ জন বিদেশি মুসল্লি অংশ নিয়েছেন।
এর আগে রবিবার ফজরের নামাজের পর থেকেই শুরু হয় হেদায়েতি বয়ান। এই বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক। এরপর কিছু সময় নসিহতমূলক কথা বলেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা।
বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে দেশ বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি এসেছেন ইজতেমা ময়দানে। গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে তারা এখানে অবস্থান করে ইবাদত-বন্দেগি করেছেন।