অনলাইন ডেস্ক :
গত ১৪ মে তুরস্কের আলোচিত নির্বাচনে কোন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ৫০% এর বেশি ভোট পাননি। তাই আগামীকাল রবিবার আবারও অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। তুরস্কের ইতিহাসে তো বটে বিশ্বের চোখ থাকবে কালকের নির্বাচনের দিকে। তবে প্রথম দফার চেয়ে দ্বিতীয় দফায় এগিয়ে আছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তবে কালকের নির্বাচনে ৫০% পেতে হবে এমন কোনো শর্ত নেই। যে প্রার্থী বেশি ভোট পাবেন তিনিই নির্বাচিত হবেন।
এদিকে তুরস্ককে দীর্ঘ সময় ধরে শাসন করছেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। এরপরও দেশটির বেশিরভাগ মানুষ তাকে ভালোবাসেন। প্রায় প্রতিটি নির্বাচনে তারা তাকে ভোট দেন। কিন্তু, তারা কেন এমনটা করেন। কারণ, দু’দশক সময় ধরে ক্ষমতায় থাকার পর এবং এক ডজনেরও বেশি নির্বাচনের পর এরদোয়ান জানেন কীভাবে সবকিছু সামাল দিতে হয়। ইস্তাম্বুলে ট্যাক্সি ড্রাইভারদের এক সম্মেলনে তাকে কাছে পেয়েও মানুষের যেন আশ মিটছিল না।
এরদোয়ান মূলত তার প্রজাবৎসল নীতি, নৈতিকতা, কঠোর ব্যক্তিত্ব ও ধর্মীয় মতবাদের মাধ্যমে তুরস্কের জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করেন। তার ইশারা মতো ট্যাক্সি ড্রাইভাররা উল্লাস করছিলেন, হাততালি দিচ্ছিলেন – এবং তার নির্দেশ মতোই তারা বিরোধীদের প্রতি দুয়ো দিচ্ছিলেন। তবে বিরোধীরাও কম যান না। তারাও চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছেন। কাল কি হবে সেটা শুধুমাত্র ভোটাররাই বলতে পারেন।
সম্মেলনের স্থানটি ছিল বসফরাসের উপকূলে ইস্তাম্বুলের একটি কনভেনশন সেন্টার, যেটি নির্মিত হয়েছিল এরদোয়ান ওই শহরের মেয়র থাকাকালীন সময়ে।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট যখন তার ভাষণ শেষ করেন, সমাবেশের উত্তেজনা তখন তুঙ্গে: “এক জাতি, এক পতাকা, এক মাতৃভূমি, এক দেশ।” ততক্ষণে অনেক বয়স্ক ড্রাইভার উত্তেজনায় উঠে দাঁড়িয়েছিলেন। তারা মুষ্টিবদ্ধ হাত তুলছিলেন ওপরের দিকে, কিংবা হাত তুলে প্রেসিডেন্টকে স্যালুট করছিলেন।
মাথায় স্কার্ফ আর রক্ষণশীল পোশাক পরে আয়েশে ওজদোয়ান ওই সমাবেশে গিয়েছিলেন তার ট্যাক্সি ড্রাইভার স্বামীর সঙ্গে।
এরদোয়ানের সমর্থকরা বলছেন, তার কারণে তাদের জীবন উন্নত হয়েছে
তার নেতার ভাষণের প্রতিটি শব্দ যাতে তিনি শুনতে পান সে জন্য বেশ আগেই মিটিংয়ে হাজির হয়েছিলেন। সিটের পাশে ছিল একটি ক্র্যাচ। তার হাঁটতে কষ্ট হয়, কিন্তু তারপরও তিনি ওই সমাবেশে না গিয়ে থাকতে পারেননি।
“এরদোয়ান আমার কাছে সবকিছু,” বিস্তৃত হাসি দিয়ে বলছিলেন তিনি। “আমরা আগে হাসপাতালে যেতে পারতাম না, কিন্তু এখন আমরা সহজেই সেবা পাই। আমাদের এখন পরিবহন ব্যবস্থা আছে। তিনি রাস্তাঘাট উন্নত করেছেন। মসজিদ নির্মাণ করেছেন। দ্রুত গতির ট্রেন আর পাতাল রেল দিয়ে তিনি দেশকে উন্নত করেছেন।”
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের ভাষণে জাতীয়তাবাদী বক্তব্য ছিল ওই সমাবেশের অনেকের কাছেই বেশ আকর্ষণীয়। এদেরই একজন হলেন ৫৮-বছর বয়সী কাদির কাভলিওলু, যিনি গত ৪০ বছর ধরে মিনিবাস চালাচ্ছেন। “যেহেতু আমরা আমাদের মাতৃভূমি ও জাতিকে ভালবাসি, তাই আমরা দৃঢ়ভাবেই প্রেসিডেন্টের পেছনে রয়েছি।”
“আলু-পেঁয়াজের দাম বাড়ুক কিংবা কমুক,” তিনি বলছেন, “প্রতিটি পদক্ষেপে আমরা তার সঙ্গে আছি। আমার প্রিয় প্রেসিডেন্টই আমাদের আশা-ভরসা।”
তুর্কি প্রেসিডেন্টের ওপর তার সমর্থকদরে অনেক আশা-ভরসা
এ মাসের শুরুতে তুর্কি ভোটাররা যখন নির্বাচনে ভোট দিতে গিয়েছিলেন, সে সময় তারা তাদের মানিব্যাগের অবস্থার কথা বিবেচনা করে ভোট দেননি। তুরস্কে খাবারের দাম এখন আকাশ ছোঁয়া। ৪৩% মুদ্রাস্ফীতির কারণে অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে অসহনীয়। তবে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটকেও অনেকে দায়ী করছেন ওই মুদ্রাস্ফীতির জন্য।
এই অবস্থার পরও প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ৪৯.৫ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন।
এই ঘটনায় বিশ্লেষকরা বেকুব বনে গেছেন, এবং গুরুত্বপূর্ণ এক শিক্ষা লাভ করেছেন : ‘জনমত জরিপের ফলাফল থেকে সাবধান।’
বিভক্ত এক দেশ
এরদোয়ানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী, ধর্মনিরপেক্ষ বিরোধীদলীয় নেতা কামাল কুলুচদারোলু নির্বাচনে পেয়েছেন মোট ৪৪.৯ শতাংশ ভোট।
সুতরাং, বিভক্ত এই দেশে ভোটাররাও ছিলেন বিভক্ত – বিরোধী দু’পক্ষের মধ্যে ব্যবধান ছিল মাত্র ৪ শতাংশ ভোটের।
একজন উগ্র-জাতীয়তাবাদী প্রার্থী সিনান ওগান ওই নির্বাচনে অপ্রত্যাশিতভাবে ৫.২ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন, যে কারণে নির্বাচনটি এই রোববার (২৮শে মে) দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটে যেতে বাধ্য হয়। ওগান এরপর প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রতি তার সমর্থন জানান।
তাহলে প্রশ্ন হলো, তুরস্কের অর্থনীতিতে এক বড় সঙ্কট থাকার পরও কেন বেশিরভাগ ভোটার এরদোয়ানকেই বেছে নিলেন?
এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কুলুচদারুলু (মাঝে) এবং তার জোট সঙ্গীরা
গত ফেব্রুয়ারিতে দেশজুড়ে বিপর্যয়কর জোড়া ভূমিকম্প, যাতে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, এরপরও ভোটাররা কেন তাকে প্রত্যাখ্যান করলেন না?
“আমি মনে করি তিনি একজন চূড়ান্ত ‘টেফলন রাজনীতিবিদ’ [কোন অভিযোগ যার গায়ে বসতে পারে না],” বলছেন অধ্যাপক সোলি ওজেল, যিনি ইস্তাম্বুলের কাদির হ্যাস ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক।
“তার যে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করার ক্ষমতা রয়েছে, এটা আপনি অস্বীকার করতে পারবেন না। তার শরীর থেকে ক্ষমতার আভা বের হয়। এটা এমন এক জিনিস যা কুলুচদারোলুর নেই।”
কিন্তু প্রথম রাউন্ডের হতাশাজনক ফলাফল দেখে তিনি নিজে এখন ডান দিকে মোচড় দিয়েছেন। তিনি এখন অনেক বেশি কট্টরপন্থী জাতীয়তাবাদী। এটা দেখে একজন তুর্কি সাংবাদিক মন্তব্য করেছে, “এটা হচ্ছে পতনের রাস্তায় দৌড়।”
ক্ষমতাসীন একে পার্টির একটি জনসভা
তুরস্কের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট যিনিই হোন না কেন, এই নির্বাচনে আসলে বিজয়ী হয়েছে জাতীয়তাবাদ।
ভোটাররা এযাবতকালের সবচেয়ে জাতীয়তাবাদী ও রক্ষণশীল এক সংসদকে নির্বাচিত করেছে, যেখানে এরদোয়ানের ক্ষমতাসীন একে (জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) পার্টি জোটের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে।
তুরস্কের কিছু তরুণ ভোটার মনে করছেন, ফলাফল নির্ধারিত হয়ে গেছে। রঙধনু রঙের এক পতাকার নীচে একটি লাল সোফায় বসে ২১-বছর বয়সী জেইনেপ এবং ২৩-বছর বয়সী মের্ট গরম গরম তুর্কি চা পরিবেশন করছিলেন এবং নিজেদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে দুশ্চিন্তা করছিলেন।
তারা দু’জনেই বোগাজিচি বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়ছেন। এটি একটি সর্বজনশ্রদ্ধেয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যার রয়েছে ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস। জেইনেপ এবং মের্ট-এর পরিচয় হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এলজিবিটিকিউ ক্লাবে – যেটি এখন বন্ধ হয়ে গেছে। ২০১৫ থেকে ওই ক্যাম্পাসে সমকামীদের শোভাযাত্রা করাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান তুরস্কের সমকামী সম্প্রদায়কে টার্গেট করে বক্তব্য দিয়েছেন। ইজমির শহরে এক বিশাল সমাবেশে তিনি বলেছেন, “এই জাতি থেকে কোনো এলজিবিটি মানুষ বের হবে না।”
“আমাদের পারিবারিক কাঠামোকে আমরা কলঙ্কিত করি না। এখানে সন্তানরা মানুষের মতো সোজা হয়ে দাঁড়ায় – আমাদের পরিবারগুলো এমনই।”
কাঁধ পর্যন্ত কালো চুল এবং কানে দুল পরা মের্টের মনে হচ্ছে, তুরস্কের এলজিবিটি সম্প্রদায় এখন ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
“এরদোয়ান নিজে, প্রতিটি বক্তৃতায়, প্রতিটি অনুষ্ঠানে, আমাদের লক্ষ্যবস্তু হিসাবে তুলে ধরছেন,” বলছিলেন তিনি, “দিনের পর দিন রাষ্ট্র আমাদের শত্রু বানাচ্ছে।“
নতুন এক তুর্কি শতাব্দী
রোববার তুর্কি ভোটাররা তাদের দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় ভোট দিতে যাবেন, যেটি হবে তুরস্কের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়।
মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের নেতৃত্বে তুরস্ক একটি ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর পার হয়েছে প্রায় ১০০ বছর।
রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান আবার নির্বাচিত হলে একটি নতুন “তুর্কি শতকের” প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তার সমর্থকরা বলছেন, তিনি আরও উন্নয়ন, আরও শক্তিশালী এক তুরস্ক উপহার দেবেন। সূত্র : বিবিসি
অনলাইন ডেস্ক :
আজ বিশ্ব হিজাব দিবস। হিজাবভীতির বিরুদ্ধে সংহতি জানাতে ও হিজাবের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ তৈরি করতে দিবসটি পালিত হয়। প্রতিবছরের মতো এবারও বিশ্বের ১৫০টির বেশি দেশে তা উদযাপিত হচ্ছে। বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায়ের নারীরা দিবসটি উদযাপনে অংশ নেন।
এই বছর দিবসটির ১২তম বার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য #VeiledInStrength অর্থাৎ শক্তিতে আবৃত।
দিবসটি উদযাপনকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ড হিজাব ডে জানিয়েছে, ‘হিজাব দিবসের লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে, পারষ্পরিক বোঝাপড়া, সহনশীলতা ও সংহতি বৃদ্ধির মাধ্যমে মুসলিম নারীদের ধর্মীয় অনুশীলন সম্পর্কে ধারণা তৈরি করা। পোশাক ও অভিব্যক্তি সম্পর্কিত ব্যক্তিগত পছন্দের বৈচিত্র্য সম্পর্কে ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করা ও সচেতনতা প্রচার করতে দিবসটি একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে।
২০১৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘বিশ্ব হিজাব দিবস’ পালনের উদ্যোগ নেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা নাজমা খান। ১১ বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। বর্তমানে তিনি নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্কসে বসবাস করছেন। সেখানে গিয়ে হিজাব পরা শুরু করেন তিনি।
কিন্তু হিজাব পরার পর থেকে নানা ধরনের অসহিষ্ণু আচরণের মুখোমুখি হন তিনি। তখন থেকে হিজাবের প্রতি ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে দিবসটি উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। দ্য ওয়ার্ল্ড হিজাব ডে (ডাব্লিওএইচডি)-এর উদ্যোগে দিবসটির কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
আরবি ভাষায় হিজাবের শাব্দিক অর্থ, বিভাজন বা পর্দা। ইসলামী শরিয়ত অনুসারে মুসলিম নারীদের জন্য নির্দিষ্ট অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঢেকে রাখার বাধ্য-বাধ্যকতা রয়েছে।
বিশ্বের অনেক দেশে নারীদের হিজাব পরা নিয়ে বাধা-বিপত্তি থাকলেও তা অনেক নারীর জন্য আশা ও অগ্রগতির প্রতীক।
চলারপথে রিপোর্ট :
পূর্ব আফ্রিকার দেশ মালাউইতে সাইক্লোন ফ্রেডির আঘাতে কমপক্ষে ৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৩ মার্চ সোমবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে এই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। ঘূর্ণিঝড় ফ্রেডির আঘাতে ৯৯ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মালাউইর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কমিশনার চার্লস কালেম্বা।
কালেম্বার মতে, মালাউইয়ের বাণিজ্যিক রাজধানী ব্লানটায়ারে বেশিরভাগ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আজ ১৪ মার্চ মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
কালেম্বা সোমবার সন্ধ্যায় সিএনএনকে বলেছেন, ‘আমরা প্রায় সাতটি কাউন্সিলে ৯৯ জনের মৃত্যুর তথ্য রেকর্ড করেছি। এর মধ্যে ব্লানটায়ার শহরে সবচেয়ে বেশি ৮৫ জন মারা গেছেন এবং এই এক শহরেই প্রায় ১৩৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।’
এছাড়া নিহত ও আহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
সিএনএন বলছে, মালাউইয়ের সরকার দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ‘দুর্যোগময় অবস্থা’ ঘোষণা করেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট লাজারাস চাকভেরা ‘ঘূর্ণিঝড় ফ্রেডি মালাউইয়ের দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ জেলায় যে ধ্বংসলীলা সৃষ্টি করেছে তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ’ জানিয়েছেন বলে সরকারি একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
ওই বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সরকার ইতোমধ্যেই জরুরি পরিস্থিতিতে সাড়া দিচ্ছে, সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত জেলায় জরুরি সহায়তা প্রদান করছে এবং দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত সকল পরিবারের জন্য স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়ে আবেদন জানিয়েছে।’
অনলাইন ডেস্ক :
মহাকাশ স্টেশনকে আগামী বছর তিন থেকে ছয়টি মডিউলে প্রসারিত করার পরিকল্পনা করছে চীন। নাসার নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের (আইএসএস) মেয়াদও প্রায় শেষের দিকে। ২০৩০ সালের পরে আইএসএস বিলুপ্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিয়াংগং বা সেলেস্টিয়াল প্যালেস নামে পরিচিত চীনের স্ব-নির্মিত মহাকাশ স্টেশনকে আইএসএস’র বিকল্প হিসাবে গড়ে তুলতে চাইছে দেশটি। এ বিষয়ে চীনের প্রধান মহাকাশ ঠিকাদারের একটি দল চায়না একাডেমি অব স্পেস টেকনোলজি (সিএএসটি) জানিয়েছে, চীনা মহাকাশ স্টেশনের কর্মক্ষম জীবনকাল হবে ১৫ বছরেরও বেশি। বুধবার আজারবাইজানের বাকুতে ৭৪তম আন্তর্জাতিক মহাকাশচারী কংগ্রেসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তিয়াংগং ২০২২ সালের শেষের দিক থেকে সম্পূর্ণরূপে চালু হয়েছে। ৪৫০ কিলোমিটার (২৮০ মাইল) পর্যন্ত কক্ষপথের উচ্চতায় সর্বাধিক তিনজন মহাকাশচারীকে ধারণ করতে পারে। ছয়টি মডিউলে সম্প্রসারণের পর এর ভর হবে পরে ১৮০ টন। যদিও তিয়াংগং এখনো নাসার ভরের মাত্র ৪০ শতাংশ।
অনলাইন ডেস্ক :
মিয়ানমারে সাজা ভোগের পর দেশে ফিরেছেন ২৯ বাংলাদেশি। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর প্রচেষ্টায় এসব বাংলাদেশিকে আজ ৩ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুর ২ টার দিকে দেশে ফেরত আনা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ ২-বিজিবি’ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ।
মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশি নাগরিকরা হলেন মহেশখালী উপজেলার শাকের উল্লাহ (২৮), এখলাছ মিয়া (২৬), শফি আলম (২৫), পারভেজ (২৪), মিজানুর রহমান (১৮), মোবারক মিয়া (২৪), মো. মহিউদ্দীন (২২), ছালামত উল্লাহ (১৭), মং থিন (৪২), গিয়াস উদ্দিন (২২), রাকিবুল হাসান রাকিব (২২), জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) ও মোবারক উদ্দিন (১৮)।
উখিয়া উপজেলার মো. শাহেদ(১৮), মো. তারেক (১৮) ও মো. সাবের। বান্দরবান সদরের সিন থোয়ে মং মারমা (৩২), থুইচিং প্রু (২৩), লামা উপজেলার থার তুন হ্লা (৩৬)। রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার ইয়ং ছা থুই মারমা(২৬), থান হ্লা সিন/সোয়ে সিন ওরফে ইউসিচিং মারমা (৩০), বেতবুনিয়া উপজেলার ইউ তান ওয়ারা ওরফে স্যার থুই ইউ (৩৪), টেকনাফ উপজেলার মো. ইরফান (২২), মো. ইলিয়াছ(১৯), মো. জহির আহমেদ (৩১), মো. আবদুল আজিজ (২১), মো. তৈয়ব (৩২), আব্দুর সিদ্দিক (২৭) ও রুবেল(২০)।
মঙ্গলবার টেকনাফ জেটিঘাটে এক সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমে টেকনাফ ২-বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ (বিজিবিএমএস) জানান, বিজিবি-বিজিপি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠক এবং ২৯ জন বাংলাদেশি নাগরিকের দেশে ফেরত পাঠানো নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২ পর্যন্ত মিয়ানমারের অভ্যন্তরে Maungdaw POE (Point of Entrz/Exit) নামক স্থানে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এবং ১ নম্বর বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্রাঞ্চ, পিইন ফিউ এর অধিনায়ক মায়ানমার এর মধ্যে ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক পর্যার্যে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ-মায়ানমার এর সীমান্ত ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। এছাড়াও উভয় দেশের পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, উত্তরোত্তর উন্নতি এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য উভয় দেশের প্রতিনিধি দল মতামত ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন সময় আটককৃত ২৯ জন বাংলাদেশি নাগরিক মিয়ানমারের কারাগারে আটক ছিল। কারাভোগ শেষে সেই ২৯ জনকে কূটনৈতিক যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বাংলাদেশ ফেরত নিয়ে আসা হয়েছে। এ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার লক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি এবং বাংলাদেশ কনস্যুলেট এর দীর্ঘদিন প্রচেষ্টার ফলে মায়ানমার কারাগার থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত ২৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরো জানান, মিয়ানমার থেকে ফেরত আনা ২৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে পুলিশের নিকট পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হন্তান্তর করা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার একদিনের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও চলছে গণনা। এরইমধ্যে ২৫১ আসনের ফলাফল অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ হয়েছে।
ভোট গণনায় বাংলাদেশ সময় ৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এগিয়ে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এন। তৃতীয় অবস্থানে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পিপিপি।
পাকিস্তানের গণমাধ্যম জিও টিভির অনলাইন সংস্করণ বলছে, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত বেসরকারি ফল অনুযায়ী, ২৬৫ আসনের মধ্যে ইমরান খান সমর্থিত স্বতন্ত্ররা জয় পেয়েছেন ১০৬টি আসনে, নওয়াজের পিএমএল-এন জিতেছে ৬৭টি এবং বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি আসন পেয়েছে ৫১টি। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয় পেয়েছেন ১১ জন।
এর বাইরে এমকিউএম ৯টি, জেইউআই (এফ) ৩টি, আইপিপি দুটি এবং বিএনপি একটি জয় পেয়েছে।
অবশ্য ১৫০ আসনে জিতেছেন বলে দাবি করেছেন পিটিআই প্রধান গোহর খান। সেজন্য এককভাবে সরকার গঠন করতে কোনো দলের সঙ্গে জোট গড়বেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, নওয়াজকন্যা পিএমএল-এন-এর প্রধান সংগঠক মরিয়ম নওয়াজ জানিয়েছেন তার বাবা বিজয় ভাষণ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজ লিখেছেন, কিছু ফল এখনও ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু পিএমএল-এন একক বৃহত্তম দল হতে চলেছে। চূড়ান্ত ফল ঘোষণার পরপরই নওয়াজ শফির দলের প্রধান কার্যালয়ে যাবেন বিজয় ভাষণ দেওয়ার জন্য। সঙ্গে থাকুন।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে এককভাবে সরকার গঠন করতে চাইলে অন্তত ১৩৪ আসনে জয়লাভ করতে হবে।
পাকিস্তানে ভোটার সংখ্যা ১২৮ মিলিয়ন।
এ নির্বাচনে স্বতন্ত্র ও দল মিলিয়ে ১৭ হাজার ৮১৬ প্রার্থী জাতীয় পরিষদের ২৬৫টি, পাঞ্জাব পরিষদের ২৯৬টি, সিন্ধ পরিষদের ১৩০টি, খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের ১১৩টি ও বেলুচিস্তানের ৫১টিসহ মোট ৮৫৫ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে পাকিস্তানের বহুল প্রতীক্ষিত সাধারণ নির্বাচনে।
এদিন সারা দেশে মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিক্ষিপ্ত কিছু রাজনৈতিক সহিংসতার খবরও পাওয়া যায়। এদিন খাইবার পাখতুনখোয়াতে ভয়াবহ হামলার ঘটনাও ঘটে।