ঈদের ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ১৪ জুন

জাতীয়, 30 May 2023, 1314 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
আগামী ২৯ জুনকে পবিত্র ঈদুল আজহার দিন ধরে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে। ১৪ জুন থে‌কে টি‌কিট বি‌ক্রি শুরু হ‌বে। এবারও শতভাগ টি‌কিট অনলাইনে বি‌ক্রি হ‌বে। ত‌বে চাপ কমা‌তে দুই শিফটে টি‌কিট দেওয়া হ‌বে। সকাল থে‌কে পশ্চিমাঞ্চলের এবং বেলা ১২টা থে‌কে পূর্বাঞ্চলের ট্রেনের টি‌কিট বি‌ক্রি হ‌বে।

banner

আজ ৩০ মে মঙ্গলবার রেল ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।

তিনি বলেন, ২৪ জুনের টিকিট ১৪ জুন, ২৫ জুনের টিকিট ১৫ জুন, ২৬ জুনের টিকিট ১৬ জুন, ২৭ জুনের টিকিট ১৭ জুন এবং ২৮ জুনের টিকিট ১৮ জুন বিক্রি করা হবে। এছাড়া ঈদের চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে ২৯, ৩০ জুন ও ১ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি করা হবে। এছাড়া যাত্রী সাধারণের অনুরোধে ২৫ শতাংশ টিকিট যাত্রা শুরুর আগে প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে পাওয়া যাবে।

মন্ত্রী আরো বলেন, এবার ঈদে ঢাকা থেকে বহির্গামী আন্তঃনগর ট্রেনে মোট আসন সংখ্যা হবে ২৯ হাজার। সব টিকিটি অনলাইনে বিক্রয় করা হবে। ঈ‌দের ট্রেনে ৬৫‌টি অতিরিক্ত বগি যোগ করা হ‌বে।

তিনি বলেন, একই সঙ্গে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ২২ জুন। ২২ জুন বিক্রি হবে ২ জুলাইয়ের ফিরতি টিকিট।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর, রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান প্রমুখ।

Leave a Reply

ইটালি প্রবাসী দিদারের মা আনোয়ারা বেগমের…

শফিকুল ইসলাম বাদল : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর Read more

কসবায় মায়ের অভিযোগে ছেলের কারাদণ্ড

চলারপথে রিপোর্ট : মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে Read more
ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : পুকুরের পানিতে ডুবে ইসরাত জাহান নোভা (৯) Read more

ইরান কখনও আপোস করবে না: আয়াতুল্লাহ…

অনলাইন ডেস্ক : জায়নবাদীদের সাথে ইরান কখনও আপোস করবে না Read more
ফাইল ছবি

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পাঁচ দিনের…

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর শাহবাগ ও পল্টন মডেল থানার পৃথক Read more
ফাইল ছবি

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে…

অনলাইন ডেস্ক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার এবং আহতদের কল্যাণ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক…

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর Read more

কারাগারে হাজতির মৃত্যু

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে জুনায়েদ মিয়া (৩২) নামে Read more

আখাউড়ায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

চলারপথে রিপোর্ট : কৃষকদের সেচ দক্ষতা বাড়াতে পানি ব্যবহারকারী গ্রুপের Read more

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ১১তম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য: রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের Read more

স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে…

অনলাইন ডেস্ক : স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে অনশন Read more

ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানালো ২১…

অনলাইন ডেস্ক : ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে মিশরসহ ২১টি Read more

প্রবাসীকে হত্যার দায়ে স্ত্রীসহ চারজনের ফাঁসি, মেয়ের যাবজ্জীবন

জাতীয়, 30 August 2023, 884 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
কুমিল্লার চান্দিনায় প্রবাসী শহীদ উল্যাকে হত্যার দায়ে স্ত্রীসহ চারজনকে মৃত্যুদণ্ড ও মেয়েকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে কুমিল্লার আদালত। আজ ৩০ আগস্ট বুধবার কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।

banner

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- চান্দিনা থানার কাশারীখোলা গ্রামের নিহত শহীদ উল্ল্যার স্ত্রী হাছনেয়ারা বেগম, একই গ্রামের মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে মো. শাহজাহান, মৃত মধু মিয়ার ছেলে মো. আমির হোসেন ও মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে মো. মোস্তফা (পলাতক)। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন শহীদ উল্যাহর মেয়ে মোছা. খাদিজা বেগম খোদেজা।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী এপিপি অ্যাডভোকেট মো. জাকির হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়- কাশারীখোলার ছায়েদ আলীর মেঝো ছেলে ভুক্তভোগী শহীদ উল্ল্যা শহীদ (৪৮) দীর্ঘদিন বিদেশে থাকার পর বাড়িতে আসেন। ২০০৯ সালে ২১ নভেম্বর রাত ৪টার দিকে লোকজনের চিৎকার শুনে ঘুম থেকে ওঠে বাদী জানতে পারেন, শহীদ উল্যাকে পাওয়া যাচ্ছে না। সকাল ৭টার দিকে গ্রামের ধান খেতের মধ্যে শহীদ উল্যার লাশ পাওয়া যায়।

২০০৯ সালের ২২ নভেম্বর নিহতের বড়ভাই ছায়েদ আলীর ছেলে মো. হাবিব উল্যা ওরফে আরব আলী (৬৫) বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে চান্দিনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তারেক মো. আবদুল হান্নান সন্দেহ হওয়ায় নিহতের স্ত্রী-কন্যাসহ অপর দুজনকে গ্রেফতার করে আদালতে উপস্থাপন করেন। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। তারা জানান, বিদেশ থেকে পাঠানো টাকার হিসাব নিয়ে স্ত্রী ও মেয়ের সাথে বিবাদের সৃষ্টি হয় শহীদ উল্যার। এই ঘটনায় রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী ও মেয়ে অন্যদের নিয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। হত্যার পর লাশ ধান খেতে ফেলে আসেন।

রমজানে অফিস সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা

জাতীয়, 28 February 2024, 672 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
পবিত্র রমজান মাসে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অফিস সময় সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।

banner

আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন জানান, জোহরের নামাজের জন্য দুপুর ১টা ১৫ মিনিট থেকে দেড়টা পর্যন্ত ১৫ মিনিটের বিরতি থাকবে।

তিনি বলেন, ‘রমজানকে সামনে রেখে ব্যাংক কম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিজস্ব অফিস টাইম নির্ধারণ করবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন চান ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব নেতা শাহজাদা

জাতীয়, সরাইল, 25 December 2022, 2675 Views,
স্টাফ রিপোর্টার:
সম্প্রতি বিএনপি’র সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূইয়া পদত্যাগ করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি শুন্য হয়। এ আসনে আগামী ১ ফেব্রুয়ারী উপ-নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে ইসি। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে জাতীয় পার্টি থেকে দলীয় মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য নজরুল ইসলাম শাহজাদা। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক। নজরুল ইসলাম শাহজাদা রোববার (২৫ ডিসেম্বর) জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয় থেকে দলীয় মনোনয়ন পত্র ক্রয় করে একই দিন বিকেলে জমা দেন।
নজরুল শাহজাদা জানান, আমি দীর্ঘদিন যাবত পল্লীবন্ধু হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদের হাতে গড়া সংগঠন জাতীয় পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত। দলের জন্যে কাজ করে যাচ্ছি। রোবার মনোনয়ন জমা দিয়েছি। সোমবার মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার অনুষ্ঠিত হবে। দল আমাকে যথাযথ মূল্যায়ন করে মনোনয়ন প্রদান করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু

জাতীয়, 17 July 2023, 1037 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ভাঙ্গায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আমজেদ শেখ (৪২) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আজ ১৭ জুলাই সেমাবার বেলা ১১টার দিকে ভাঙ্গার মানিকদহ্ ইউনিয়নের বিলভারা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। নিহত আমজেদ বিলভারা গ্রামের ইব্রাহীম শেখের ছেলে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি।

banner

জানা গেছে, আমজেদ শেখ বিলভারা গ্রামের সাত্তার মুন্সির বাড়িতে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতে যান। এ সময় বৈদ্যুতিক তারের উপর পরে থাকা বাঁশ কাটতে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পাশের সদরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশীদ বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না থাকায় ময়না তদন্ত ছাড়াই মৃতদেহটি পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

মজুদদারির বিরুদ্ধে ডিসিদের কঠোর হওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

জাতীয়, 3 March 2024, 635 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
আসন্ন রোজায় বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি মজুদদারি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি নতুন সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়ন এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ‘দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

banner

আজ ৩ মার্চ রবিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকার প্রধানের এসব নির্দেশনা আসে।

বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠ প্রশাসনকে উদ্যোগী হওয়ার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সব থেকে লক্ষ্য রাখতে হবে, আমাদের বাজার পরিস্থিতি কেমন। আর তাছাড়া সামনে রোজা আসছে, এই রমজান মাসে কিছু কিছু ব্যবসায়ী থাকে যারা মজুদদারি করে দাম বাড়িয়ে কিছু মুনাফা লুটতে চায়। সেই দিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।

“কারণ এটা আশু করণীয় একটা কাজ আমাদের। কোথাও যেন ভোক্তাদের কোনো হয়রানি হতে না হয়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। পরনির্ভরশীলতা আমাদের কমাতে হবে এবং এটা যে আমরা পারি, এটা আমরা অনেক ক্ষেত্রে প্রমাণ করেছি। কাজেই সেদিকে নজর রাখা দরকার।”

শেখ হাসিনা বলেন, “সরবরাহের ক্ষেত্রেও কখনো শোনা যায়, কখনও সেটা নিয়ে নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়, একটা কৃত্রিম সমস্যার সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়। মজুদদারি করে পচিয়ে ফেলবে, কিন্তু বাজারে দেবে না। এরকম একটা অবস্থার সৃষ্টি হয়। সেই দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি এবং কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।

“রমজান মাস সামনে রেখেই আমি বললাম, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেন সাধারণ মানুষের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছাতে পারে। সেই ব্যবস্থার দিকে সকলকে নজর দিতে হবে।”

খাদ্যে ভেজাল বন্ধে নজর রাখার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রোজা এলে এই সমস্যাগুলো বেশি দেখা যায়। খাদ্যে নানা রকম সমস্যা করে, এগুলোর ওপর নজর দিতে হবে।”

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিতে গিয়ে জেলা প্রশাসকদের সামনে ‘কিশোর গ্যাং’ নিয়েও কথা বলেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে কয়েকটি সমস্যা আমরা দেখতে পাচ্ছি। কিশোর গ্যাং, যখন ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাবে পড়াশোনা করবে, সেই সময়ে এই কিশের গ্যাং। যখন করোনাভাইরাসের অতিমারী সব থেকে বেশি, সে সময়ে এটা সামনে এসেছে। প্রত্যেকটা এলাকাভিত্তিক যে ছেলেমেয়েরা, যারা শিক্ষাগ্রহণ করবে? তারা কেন এই ধরনের গ্যাং হবে? তারা কেন এই ধরনের অসামাজিক কাজে বা ছিনতাই খুন ডাকাতিতে লিপ্ত হবে? সে সমস্ত বিষয় নজরদারি করা একান্তভাবে অপরিহার্য।

“আমাদের কমিশনারবৃন্দ এবং জেলা প্রশাসকবৃন্দ, একেবারে উপজেলা পর্যন্ত, ইউনিয়ন পর্যন্ত স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছেৃ সেখানে ছেলেমেয়েরা কী কী কাজ করছে, জঙ্গিবাদ, মাদক অথবা এই কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে যুক্ত হচ্ছে কি না, সেদিকে একটু নজরদারি বাড়াতে হবে। আমার মনে হয়, পরিবারকে একটু সচেতন করতে পারলে, এই জিনিসগুলো কমবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “শুধু গ্রেপ্তার করে, ধরে লাভ নেই। কারণ গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠালে জেলেৃ অপরাধীদের সঙ্গে মিশে এরা আরও খারাপ হয়ে যায়। সে কারণে গোড়া থেকে আমাদের ধরতে হবে। পরিবার থেকেই শুরু করতে হবে। বিশেষ করে স্কুল কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই শুরু করতে হবে। ছেলেমেয়েরা যেন এই পথে যেতে না পারে।”

পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা যেন কোনোভাবে অস্থির না হয়, সে দিকেও নজর রাখতে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের তাগিদ দেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, “আমরা পার্বত্য চট্রগ্রামে শান্তি চুক্তি করেছি। আমরা কিন্তু অন্য কোনো দেশের সাহায়তা নিইনি। কারণ তারা আমার দেশের নাগরিক। আমি ৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর থেকে এ ব্যপারে যথেষ্ট সচেতন ছিলাম। আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা একটা বিশেষ কমিটি করে দিয়েছিলাম। যার মাধ্যমে ওই অঞ্চলে কী সমস্যা, কেন এই অবস্থার সৃষ্টি হলে, কী কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল ১৯৭৬ সালের পর থেকেৃ সেগুলো জেনে আমরা দীর্ঘ দিন কাজ করেছি।

“যারা বিক্ষুব্ধ ছিল, তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং যখন ১৯৯৬ এ ক্ষমতায় এসেছি, তখন সংসদে কমিটি করেছি। পাশাপাশি আমি নিজেও এদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে আমরা একটা শান্তি চুক্তি করতে সক্ষম হয়েছি। শুধু শান্তি চুক্তি না, সেখানে যারা অস্ত্রধারী ছিল, ১৮০০ অস্ত্রধারী, প্রকাশ্যে আমার সামনে তারা অস্ত্র সারেন্ডার করেছে। পৃথিবীর বহু দেশে শান্তি চুক্তি হয়েছে, কিন্তু আমাদেরটা ছিল অনন্য ঘটনা।“

শেখ হাসিনা বলেন, “এ ধরনের ঘটনা কমই ঘটে যে অস্ত্র সারেন্ডার করে। পর্বত্য চট্টগ্রামে খুব উন্নয়নের কাজ চলছে। অর্থ সামাজিক উন্নয়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন সেগুলো আমরা করে যাচ্ছি। আমাদের এখানে বর্ডার লাইন ছিল না, সেখানে কোনো বর্ডার পোস্ট ছিলো না। আমরা নতুন করে সেখানে বর্ডার পোস্ট তৈরি করা শুরু করে দিয়েছি।

“পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনও কিছু কিছু দুর্ঘটনা ঘটে। এই বিষয়েও সকলকে নজর দিতে হবে। সেখানে কোনো রকম যেন অশান্ত পরিবেশ অবার ফিরে না আসে। সেখানে শান্তি সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থা যেন বিরাজমান হয়। এরা বিশেষ আইনে চলে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেও তাদের সার্বিক বিবেচনায় দৃষ্টি দিতে হবে।”

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে আসতে মানুষকে সচেতন করার জন্য ডিসিদের তাগিদ দেন সরকারপ্রধান। পাশাপাশি কৃষি উৎপাদন যেন বৃদ্ধি পায়, সে বিষয়ে নজর দিতে বলেন।

তিনি বলেন, “আমাদের এলাকাভিক্তিক কিছু উৎপাদিত পণ্য আছে। সেগুলোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে উৎপাদন বাড়ানো এবং কোয়ালিটিটা দেখা, সেই বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার।”

প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে মানুষের কতটুকু কাজে আসবে, সে বিষয়টি আগে বিবেচনায় নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধু প্রকল্প প্রণয়ন এবং প্রকল্প বাস্তবায়নই নয়, সাধারণ মানুষ কতটুকু উপকৃত হবে? আর্থিকভাবে দেশ কতটুকু স্বচ্ছল হবে? সে অঞ্চলের মানুষের কতটুকু আর্থসামাজিক উন্নতি হবে? সেসব বিবেচনা করেই প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। শুধুমাত্র বড়সড় একটা টাকার অংক আর একটা প্রকল্প, সেই প্রকল্প কিন্তু আমি গ্রহণ করি না।”

গ্রামীণ অর্থনীতিকে যত বেশি শক্তিশালী করা যায়, গ্রামের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা যেন বাড়ানো যায়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

শিশু-কিশোর ও যুবকদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করার তাগিদ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “একবার যখন জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস শুরু হল, আমাদের দেশে একটামাত্র ঘটনাই ঘটেছিল, সেটা খুব তাড়াতাড়ি সমাধান করতে পেরেছি। কিন্তু অনেকগুলো মানুষকে আমরা বাঁচাতে পারিনি।”

এরপর যে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত কমিটি করে অভিভাবকদের সচেতন করা শুরু হয়েছিল, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পাশাপাশি যুব সমাজকে ব্যস্ত রাখার জন্য বা শিশু কিশোরদের ব্যস্ত রাখার জন্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিভিন্ন কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত রাখতে হবে।”

উন্নয়নশীল দেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আগ থেকে প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাতির পিতা যেখানে স্বল্পোন্নত দেশ রেখে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে যাত্রা শুরু করব ২০২৬ সালে। এখন থেকে সেই প্রস্তুতিটা নিতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্য শেষে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। পরে বক্তব্য দেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা, বিভাগীয় কমিশনাররা, জেলা প্রশাসকরা উপস্থিত ছিলেন সম্মেলনে।

সম্মেলনের বিভিন্ন কার্য-অধিবেশন হবে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। সরকারের নীতি-নির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনাসামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতি বছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।