চলারপথে রিপোর্ট :
চোখের জলে ও হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে চির বিদায় নিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার ১নং মনিয়ন্দ ইউনিয়নের পরিষদের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, ১নং ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, মনিয়ন্দ গ্রামে কৃতিসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস মিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১২ টায় জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ৭ ছেলে, ৪ মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
আজ ২ জুন শুক্রবার বাদ আসর মনিয়ন্দ বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মাঠ প্রাঙ্গণেই জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।
আখাউড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহকারী ভূমি কমিশনার প্রশান্ত চক্রবর্তী পুষ্প অপর্ণ করেন। এরপর পুলিশের একটি চৌকস দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন।
এসময় আখউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুব আলম দীপক, সাবেক চেয়ারম্যান কামাল ভুঁইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাহার মালদার, আখউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সেলিম ভুঁইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলি নেওয়াজ খান, ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিক মিয়া,ওয়ার্ড মেম্বার তাজুল ইসলাম, ১ং মনিয়ন্দ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর ভূঁইয়াসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেণীর পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় অত্যাধুনিক দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদের উদ্বোধন হয়েছে। গত ১৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আখাউড়া উপজেলা মডেল মসজিদসহ সারা দেশে ৫০টি মসজিদের উদ্বোধন করেন।
তিন তলা ভীত বিশিষ্ট এ মসজিদটিতে প্রায় ১০০০ হাজার মুসল্লী নামাজ আদায় করতে পারবে। নামাজ ছাড়াও থাকছে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা। আখাউড়া-আগরতলা সড়কের উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের পূর্বে পাশে সড়কের দিক মুখ করে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে।
তবে উদ্বোধন হলেও ইমাম-মুয়াজ্জিন নিয়োগ চূড়ান্ত না হওয়ায় এবং কিছু কাজ বাকী থাকায় নামাজসহ অন্যান্য কার্যক্রম এখনও শুরু হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রমজানের ঈদের পরে নামাজসহ অন্যান্য কার্যক্রম শুরু হবে।
জানা যায়, মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় দৃষ্টিনন্দন ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছে সরকার। ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগ বাস্তবায়িত করেছে সরকারের গণপূর্ত অধিদপ্তর। নির্মিত অত্যাধুনিক এই মডেল মসজিদে একসঙ্গে প্রায় ১০০০ মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা।
নারীদের আলাদা ওজু ও নামাজ পড়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। নারী ও পুরুষের নামাজ আদায় ছাড়াও থাকছে ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, লাইব্রেরি, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, হেফজখানা, শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম, নারী ও হজ যাত্রীদের নিবন্ধন, প্রশিক্ষণ প্রভৃতি।
এরই ধারাবাহিকতায় ১২ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয়ে আখাউড়া উপজেলা মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। উপজেলা পরিষদ ভবনের সামান্য পূর্বে আখাউড়া-আগরতলা সড়কের দক্ষিণ পাশে আধুনিক নির্মাণশৈলী ও নান্দনিক ডিজাইনে তিনতলা বিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোস্তাফা কামাল এন্ড মেসার্স নির্মাণ বিল্ডার্স আধুনিক এই মসজিদটি নির্মাণ করছে। ২০১৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমপি মসজিদের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত তথ্যে জানা যায়, তিন তলা ভবনের নীচ তলা ১০ হাজার ৬০০ বর্গফুট, ২য় তলা ১০ হাজার ৬৭০ বর্গফুট এবং ৩য় তলা ৭ হাজার ৪১৫ বর্গফুট আয়তন রয়েছে। এছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসহ কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা এবং গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা রাখা হয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সাদা রংয়ের তিন তলা ভবনটি নির্মাণ শৈলীর গুণে খুবই সুন্দর লাগছে। ভেতরে আলোকসজ্জাসহ কাঠের নকশার ডিজাইন খুবই আকর্ষণীয়। শ্রমিকরা সাইড ওয়ালের পাইলিংয়ের কাজে ব্যস্ত। মিনারের শেষ মুহুর্তের রংয়ের ফিনিংসের কাজ চলছে।
জানতে চাইলে নির্মাণ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আমজাদ হোসেন দুলাল বলেন, মূল ভবনের কাজ প্রায় শেষ। রংয়ের ফিনিংসের কাজ চলছে। একটি সাইড ওয়াল এবং কালভার্ট নির্মাণ কাজ বাকী আছে। তবে কর্তৃপক্ষ চাইলে যে কোন সময় মূল ভবন বুঝিয়ে দিতে পারব।
আখাউড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সুপার ভাইজার আব্দুল মতিন মোল্লা বলেন, মডেল মসজিদের জন্য ইমাম, মোয়াজ্জিন এবং খাদেম নিয়োগ পক্রিয়াধীন আছে। আগ্রহী প্রার্থীদের আবেদনপত্র যাচাই বাছাই চলছে। রোজার ঈদের পরে লিখিত এবং ভাইবা পরীক্ষার পর নিয়োগ দেওয়া হবে। তারপরই নামাজ আদায় শুরু হবে। ইমামের জন্য যোগ্যতা কামেল বা দাউরা হাদিস পাস এবং বয়স্ক অনুর্ধ ৪৫ বছর বলে তিনি জানান।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা বলেন, সরকার প্রতিটি জেলা এবং উপজেলায় একটি করে দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। তারই ধারাবাহিকতায় আখাউড়া মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ প্রায় ৯৫ ভাগ শেষ হয়েছে। সামান্য কাজ বাকী আছে। আশা করছি রমজানের ঈদের পরপরই মসজিদে নামাজ আদায় শুরু করতে পারব।
চলারপথে রিপোর্ট :
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, আপনারা যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন এই আপনারা যে কাজটি করেছে এই কাজটি এই বাংলাদেশে আমরা বা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের পক্ষে করা সম্ভব হবে না। এই কারণে আপনারা হলেন শ্রেষ্ঠ সন্তান।
আজ ৩ মার্চ শুক্রবার বিকেলে আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের ধলেশ্বর গ্রামে রাবিয়া খাতুন স্মৃতি পাঠাগার চত্বরে রাবিয়া খাতুন স্মৃতি পাঠাগার ও আকছির চৌধুরী চ্যারিটি ট্রাস্ট স্কুলের আয়োজনে বীরমুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। রাবিয়া খাতুন স্মৃতি পাঠাগার ও আকছির চৌধুরী চ্যারিটি ট্রাস্ট স্কুলের সভাপতি আকছির এম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় আরও বক্তৃতা করেন সুপ্রিম রেজিস্ট্রার জেনারেল গোলাম রব্বানী, আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার সাইফুর রহমান, হাইকোর্ট রেজিস্ট্রার মুন্সী মো. মশিউর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার প্রমুখ।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন আমি যখন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ছিলাম চেয়ারম্যান হিসেবে তখন আমার মনে পড়ত আমার সামনে মুক্তিযোদ্ধারা সাক্ষী দিচ্ছে। আমার কোর্টে বিচার হয়েছে আলী আহসান মোজাহিদ, মীর কাশেম আলী, এইচ এম কামরুজ্জামান, মাওলানা ইউসুফ। ওই সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের একটা জিনিস আমি লক্ষ করেছি তারা কখনো সাক্ষী দিতে গিয়ে বাড়িয়ে কথা বলতে না। তারা বলেছে আমি এইটুকু করেছি।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আরও বলেন আমরা ৫ম সংশোধনী মামলায় বলেছি জিয়াউর রহমান, রাষ্ট্রপতি সায়েম সাহেব, খন্দকার মোশতাক তারা যে কাজটি করেছিল এই কাজটি ছিল বেআইনী কাজ ছিল। ৫ম সংশোধনী মামলা তখন বিচারপতিরা বলেছেন অবৈধ। এবং বলেছেন ৫ম সংশোধনী মামলায় যতগুলো কাজ হয়েছে সেগুলোও ছিল অবৈধ। তারা আরও বলেছেন সায়েম সাহেবের ক্ষমতা দখল ও আহরণ ছিল বেআইনী। জিয়াউর রহমান ও খন্দকার মোশতাকের ক্ষমতা দখল বেআইনী ছিল। এই বেআইনী কাজটি তারা জাজম্যান দিয়ে বলেছেন বেআইনী। একটা গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতন করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনীর সাহায্যে করেছে এইটাও ছিল বেআইনী। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পরে আবেগের তারনায় হোক বা বঙ্গবন্ধুর মায়ার কারণেই হোক যারা অস্ত্র হাতে নিয়ে এই বেআইনী কাজের প্রতিবাদ করেছে ও একটি গণতান্ত্রিক সরকারকে অস্ত্র দিয়ে ছড়িয়ে দিয়ে একটি অগণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে জারি করেছিল। তাদের বিরোধে যারা অস্ত্র ধরে ছিল, তাদের সেই দিনের এ্যাকশন আর আমাদের ৫ম সংশোধনী মামলায় সুপ্রিমকোর্ট যে কথা বলেছেন। কাজ তো একটায়। আমরা কলমে করেছি। আর তারা অস্ত্র হাতে নিয়ে চেষ্টা করেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের বিরুদ্ধে এক শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। আজ ২৯ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার তানভীর আহমেদ আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরে গেছেন। এ সময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে ফারুক আহমেদ ও গনেস চন্দ্র দাস নামে আরো দুজন শিক্ষক হামলার শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই বছর এসএসসি পরীক্ষায় আখাউড়া উপজেলার বিদ্যালয়গুলোর ফলাফল খারাপ হয়। এর মধ্যে দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৩২ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৭২ জন পাস করে। পাসের হার ৫৪.৫৫। শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে বিদ্যালয়গুলোতে অভিভাবক সমাবেশ করছে শিক্ষা অফিস। আজ মঙ্গলবার দুপুরে দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অংগ্যজাই মারমা। বিশেষ অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন।
মারধরের শিকার ইংরেজির শিক্ষক তানভীর আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, সমাবেশে পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ায় শিক্ষকদেরকে দোষারোপ করে বক্তব্য দেন কয়েকজন অভিভাবক। এ সময় প্রধান শিক্ষক ছাড়া অন্য শিক্ষকদেরকে সমাবেশে বসার ও কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। সমাবেশ শেষে বিদ্যালয়ের দোতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে বিষয়টি নিয়ে সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলছিলাম। এ সময় দেবগ্রাম গ্রামের শেখ সোহেল ও জসিম উদ্দিন দেওয়ানসহ আরো একজন অভিভাবক এসে আমাকে কিল-ঘুষিসহ মারধর করে। এ সময় শিক্ষক ফারুক আহমেদ ও গনেস চন্দ্র দাস আমাকে রক্ষা করতে এলে তারাও হামলার শিকার হন।
তানভীর আহমেদ আরও বলেন, শেখ সোহেল হুমকি দিয়েছেন আমি বিদ্যালয়ে গেলে আমার হাত-পা ভেঙে ফেলবে। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এ ব্যাপারে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষক ফারুক আহমেদ বলেন, শিক্ষকদেরকে অপমান করার জন্য কিছু লোককে সাজিয়ে সমাবেশে আনা হয়। তানভীর এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলছিল। এ সময় তারা তার ওপর চড়াও হন।
তিনি আরো বলেন, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক কোনো ক্লাস নেন না। প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়া অনেক ছাত্রছাত্রীকে চূড়ান্ত পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এজন্যই ফলাফল খারাপ হয়েছে। সমাবেশে বিষয়গুলো আমাদেরকে বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শেখ সোহেল বলেন, আমি ওই শিক্ষককে মারধর করিনি। উল্টো তিনি আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। হুমকি দেওয়ার কথা সত্য নয়।
এ বিষয়ে দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ মাহফুজুর রহমান বলেন, ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। পরে শুনেছি। খোঁজখবর নিয়ে বিস্তারিত জানাব।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবুল হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। শিক্ষকের ওপর হামলা হয়ে থাকলে ঘটনাটি দুঃখজনক।
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ছয় দিন বন্ধ থাকার পর আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আবারও পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
আজ ৩ জুলাই সোমবার সকাল থেকে বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়। তবে ছুটির সময় বন্দর দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ঈদুল আজহা উপলক্ষে আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে গত ২৭ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত ছয় দিনের ছুটি ঘোষণা করে। ছুটি শেষে আজ ৩ জুলাই সোমবার থেকে যথারীতি পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম বৃহৎ ও রপ্তানিমুখী আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে দেড় লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের বিভিন্ন পণ্য উত্তর-পূর্ব ভারতে রপ্তানি হয়। রপ্তানি পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে হিমায়িত মাছ, প্লাস্টিক, রড, সিমেন্ট, ভোজ্য তেল, তুলা ও বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী ইত্যাদি।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলতি বছরের এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে আজ ২৮ জুলাই শুক্রবার। এবছর আখাউড়া উপজেলায় এসএসসি’র গড় পাশের হার ৫৬.০২%। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৯ জন। দাখিল পরীক্ষায় শতকরা পাসের হার ৭২.৮৭। জিপিএ- ৫ পেয়েছে ৩ জন। এছাড়া একটি ভোকেশনাল টেক্সটাইল স্কুলের পাসের হার ৮৭.৫০%। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ জন। এবার আখাউড়া উপজেলায় ব্যাপক ফল বিপর্যয় ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক-অভিভাবক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। ফলাফল খারাপ হওয়ার জন্য করোনা মহামারির প্রভাব এবং পরীক্ষা কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনকে কারণ হিসেবে দেখছেন শিক্ষা প্রতিষ্টান সংশ্লিষ্টরা।
আখাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এবছর আখাউড়া উপজেলার ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১ হাজার ৭১৭ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছে ৯৬৭জন। শতকরা গড় পাসের হার ৫৬.৩২। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৭ জন। ১০টি জিপিএ-৫ পেয়ে উপজেলায় শীর্ষে রয়েছে ছতুরা চান্দপুর স্কুল এন্ড কলেজ। তাদের পাসের হার ৫৪.৭৮। এরপরে রয়েছে আখাউড়া নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ১৬৪ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ১২৩ জন। শতকরা গড় ৭৫.০০। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯জন। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়া সত্বেও ৬টি জিপিএ-৫ পেয়ে ৩য় স্থানে রয়েছে তুলাই শিমুল উচ্চ বিদ্যালয়। তাদের শতকরা গড় পাসের হর ৬০.২৮।
এছাড়া আখাউড়া রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৬৩ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ১২২ জন। শতকরা গড় পাসের হার ৭৪. ০০। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ জন। সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় হয়েও ফলাফলে হতাশ করেছে দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয় থেকে ১৩২ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ৭২ জন। গড় পাসের হার ৫৪.৫৫। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ২ জন।
এছাড়া হীরাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পাসের হার ৫৬.৮২, জিপিএ-৫ পেয়েছে ১জন। শাহপীর কল্লা শহীদ উচ্চ বিদ্যালয়ের গড় পাসের হার ৪১.৯৪, আমোদাবাদ শাহ আলম উচ্চ বিদ্যালয় ৫৪.২৬%, জিপিএ-৫ পেয়েছে ২জন, মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয় ৬১.১১%, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪জন, কর্মমঠ উচ্চ বিদ্যালয় ৫১.৬৯%, জিপিএ-ফাইভ ১জন, মনিয়ন্দ উচ্চ বিদ্যালয় ২৭.২৭%, ছয়গড়িয়া শাহ আলম উচ্চ বিদ্যালয় ১৯.৫০%, নুরপুর রুটি উচ্চ বিদ্যালয় ৪০.০০% গোলখার উচ্চ বিদ্যালয় ৫৩.৭৬% এবং ভাটামাথা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতকরা গড় পাসের হার ২৮।
এদিকে উপজেলার ৭টি আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ২৫৮ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ১৮৮জন। শতকরা গড়ে ৭২.৮৭। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ জন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেবগ্রামের একজন অভিভাবক বলেন, দেবগ্রাম স্কুলে ঠিকমতো ক্লাশ হয় না। শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখার খোঁজ খবর নেয় না। শিক্ষকদের মধ্যে গ্রæপিং আছে। আন্তরিকভাবে পাঠদান করায় না। যার খেসারত দিচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। তুলাই শিমুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ সাজ্জাত হোসেন বলেন, এবছর প্রথম বারের মতো পরীক্ষা কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। পরীক্ষার্থীরা ক্যামেরায় অভ্যস্থ না হওয়ায় কিছুটা নার্ভাস হয়ে যায়। ফল খারাপের জন্য আমরা শিক্ষকরাও দায় স্বীকার করি। তবে ভবিষ্যতে যাতে ফল বিপর্যয় না ঘটে সেজন্য ইউএনও স্যার এবং শিক্ষা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশ মোতাবেক আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আবুল হোসেন বলেন, করোনা মহামারির জন্য ছেলে মেয়েরা ২ বছর স্কুলে ক্লাশ করতে পারেনি। ফলাফলে এর একটা প্রভাব রয়েছে। তারপরও আমরা শিক্ষকদের নিয়ে বসে ফলাফল পর্যালোচনা করে কিভাবে আরও ভালো করা যায় সে ব্যপারে চেষ্টা করবো।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা বলেন, নকলমুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা হয়েছে। পরীক্ষকরা খাতা কেটেছেন। ফলাফল খারাপ হওয়ার বিষয়ে তারাই ভালো বলতে পারবেন। তবে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেন ভালো ফলাফল করে শিক্ষকরা যাতে অধিকতর দায়িত্ব পালন করে সে বিষয়ে নির্দেশ দিব।