ভারতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ৫০

আন্তর্জাতিক, 2 June 2023, 1174 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ভারতের উড়িষ্যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে কলকাতার হাওড়া-চেন্নাইগামী ট্রেন করমণ্ডল এক্সপ্রেস। এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এছাড়া ১৭৯ জনকে বালেশ্বরের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বলে দেশটির রেল সূত্র জানিয়েছে। খবর এনডিটিভি ও দ্য হিন্দুর।

banner

আজ ২ জুন শুক্রবার সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত লাগোয়া উড়িষ্যার বালেশ্বর জেলায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস ও একটি মালগাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষের ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

ট্রেনটিতে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপশি বহু বাংলাদেশি নাগরিক দেশটির দক্ষিণে ভেলোরে চিকিৎসা নিতে নিয়মিত যাতায়াত করেন। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে অনেক বাংলাদেশি এই দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন।

জানা যায়, সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে বালেশ্বর স্টেশন থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে বাহানাগা স্টেশনের কাছে ট্রেনটির সঙ্গে একটি মালগাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ট্রেনটির প্রায় ১৮টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। ট্রেনের গতি বেশি থাকায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনটি মালগাড়ির ওপর উঠে যায়।

এই দুর্ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, করমণ্ডল দুর্ঘটনায় বাংলার অনেকে জখম হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে উদ্ধার কাজ চালাতে সেখানে একটি দল পাঠানো হচ্ছে।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা আদিত্য চৌধুরি বলেন, বালেশ্বরের কাছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে কিছু একটা হয়েছে। আমরা কোনও ভাবে এখনও কিছু জানতে পারিনি। জানার চেষ্টা করছি। জানামাত্রই জানানো হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, করমণ্ডল এক্সপ্রেস ধাক্কা মারে একটি মালগাড়িতে। এর ফলে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের প্রথম তিনটি কামরা বাদে সবকটি কামরাই লাইন থেকে ছিটকে পড়ে।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেনি দেশটির রেল কর্তৃপক্ষ।

করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পর যাত্রীদের বর্তমান অবস্থাসহ বিভিন্ন তথ্য জানতে হেল্পলাইন সার্ভিস চালু করেছে দেশটির রেল কর্তৃপক্ষ। হেল্পলাইনের নম্বর গুলো হলো- হাওড়া স্টেশনের জন্য হেল্পলাইন নম্বর ০৩৩-২৬৩৮২২১৭। খড়গপুর স্টেশন ৮৯৭২০৭৩৯২৫, ৯৩৩২৩৯২৩৩৯। বালেশ্বর স্টেশন ৮২৪৯৫৯১৫৫৯ এবং ৭৯৭৮৪১৮৩২২। শালিমার স্টেশনের জন্য হেল্পলাইন নম্বর ৯৯০৩৩৭০৭৪৬।

এই দুর্ঘটনার পর ৫টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করেছে দেশটির দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। যাত্রা বাতিল হওয়া ট্রেনগুলো হলো- পুরী এক্সপ্রেস, যশবন্তপুর এক্সপ্রেস, সাঁতরাগাছি পুরী স্পেশাল, শালিমার সম্বলপুর, চেন্নাই মেইল।

Leave a Reply

আখাউড়ায় স্ত্রীর অভিযোগে মাদকাসক্ত স্বামীর কারাদণ্ড

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় স্ত্রীর দেওয়া অভিযোগে মাদকাসক্ত Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অতিরিক্ত দামে ওষুধ বিক্রির দায়ে…

চলারপথে রিপোর্ট : মাত্র সাড়ে ৭ টাকার ইনজেকশন প্রায় ৫০ Read more

এশিয়ান কাপের মূলপর্বে বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক : মিয়ানমারকে হারিয়ে চমক দেখানোর পর বাংলাদেশ নারী Read more

কোটি টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ

চলারপথে রিপোর্ট : ফেনীর পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলার সীমান্ত এলাকা Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বীজ, সার ও গাছের চারা…

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে সরাইল Read more

ইখলাস মানুষের হৃদয়ে সৃষ্টি হয়

আল্লামা মাহ্‌মূদুল হাসান : ইখলাস মানুষের দিলে সৃষ্টি হয়। আর Read more

প্রাথমিক তদন্তেই ভুয়া মামলার আসামিরা রেহাই…

অনলাইন ডেস্ক : উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ফৌজদারি কার্যবিধির একটি সংশোধন Read more

গাজীপুরে শফিক, তারিক, পাপনের ১০ তলা…

জায়েদুল কবির ভাঙ্গি, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর : গাজীপুর সদরের চান্দনা Read more

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা পরিষদ…

অনলাইন ডেস্ক : বরগুনার পাথরঘাটায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা Read more

ইসরাইলি হামলায় একদিনে আরো ৮১ ফিলিস্তিনি…

অনলাইন ডেস্ক : গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৮১জন ফিলিস্তিনি Read more

কৃষি বীজ সংরক্ষণাগার ভেঙে দোকান নির্মাণের…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের দেলি Read more

মিথ্যা মামলা করলে কী কী শাস্তি?

অনলাইন ডেস্ক : দেশের অন্যতম আলোচিত বিষয় হলো মিথ্যা মামলা। Read more

নতুন সিরিয়ায় নারীরা মুখ্য ভূমিকায় থাকবেন : নারী মন্ত্রী আয়শা

আন্তর্জাতিক, 23 December 2024, 411 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের একজন হলেন আয়শা আল-ডিবস। নারীবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি।

banner

আয়শা আল-ডিবস জানিয়েছেন, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধ জর্জরিত দেশটি পুনর্গঠনে তাঁর প্রশাসন নারীদের অবদান রাখতে দিতে সক্ষম হবে।

২২ ডিসেম্বর রবিবার কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আয়শা আল-ডিবস একথাগুলো বলেন।

সাক্ষাৎকারে আয়শা আল-ডিবস জানান, সিরীয় নারীদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় সম্পৃক্ত করতে এবং স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা খাতে যোগ্যতাসম্পন্ন নারীদের নিয়োগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

সিরিয়ার সব প্রদেশ ও সম্প্রদায়ের নারীদের আসন্ন জাতীয় সম্মেলনে অংশ নিতে উৎসাহ দেন দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের এই মন্ত্রী। সম্মেলনে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা।

আসাদ সরকারের কারাগার থেকে নারী বন্দীদের মুক্তি ও তাঁদের কল্যাণের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে বলে জানান আয়শা আল-ডিবস। সেই সাথে তিনি জানান, কারাগারগুলোয় বন্দী নির্যাতনের জড়িত কারা কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।

তিনি বলেন, সাবেক বন্দী নারীদের পুনর্বাসনের জন্য তাঁদের মনস্তাত্ত্বিক সহায়তার প্রয়োজন। তাঁদের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও আইনি সুরক্ষার প্রয়োজন, যাতে তাঁরা কারা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিতে পারেন।

বিদ্রোহী যোদ্ধাদের দামেস্ক দখলের মধ্য দিয়ে ৮ ডিসেম্বর পতন হয় স্বৈরাচার বাশার আল-আসাদ সরকারের। শুধু তা-ই নয়, বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় সিরিয়ায় পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ের পারিবারিক শাসনের অবসান হয়। সূত্র : আল-জাজিরা

পুলিশের অনুমতি নিয়েই বিয়ে করতে হবে

আন্তর্জাতিক, 4 July 2023, 1115 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বিয়ে একটি সামাজিক-পারিবারিক অনুষ্ঠান। এতে অংশ নিয়ে থাকেন বর-কনের আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশিরা। বিয়ের বিভিন্ন ধরণ আছে। সমাজের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থানের ওপর এসব নির্ভর করে। ধনীদের বিয়ে একরকম আবার গরীবের বিয়ে অন্যরকম। বিয়ে মানে আনন্দ-উৎসবের আমেজ। কিন্তু সেই বিয়েতে এবার সেই আমেজের কিছুটা হলেও বাটা পড়বে। কারণ বিয়ে অনুষ্ঠানের সব কিছু পুলিশকে জানিয়ে করতে হবে।

banner

এখন থেকে বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করলে পুলিশকে জানাতে হবে। শুধু তাই নয়, বাড়িতে লাইসেন্স করা কোনো অস্ত্র আছে কি না তাও জানাতে হবে পুলিশকে। পাশাপাশি পুলিশের কাছে জমা দিতে হবে অতিথিদের নামের লিস্ট।

সম্প্রতি ভারতের বিহারে পুলিশের পক্ষ থেকে এমন আদেশ জারি করা হয়েছে। এমন আদেশ জারি করায় সাধারণ মানুষ মনে করে এতে বিয়ের আনন্দে ভাটা পড়বে। পাশাপাশি তারা অনেকটা বিরক্তও।

তবে পুলিশ বলছে ভিন্ন কথা। এর পক্ষে যুক্তি দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি।

বিহার পুলিশের দাবি, রাজ্যের বহু বিয়েবাড়ির আনন্দ খুনখারাবিতে বদলে গেছে। এক মুহূর্তে বিয়ের আনন্দ মাটি। নিভে গেছে সব আলো। বিয়ে বাড়িতে এমন অস্থিরতা বন্ধ করতেই এই ব্যবস্থা।

পুলিশ আরো বলছে, বিয়েবাড়িতে আনন্দের মধ্যে গুলি চালিয়ে দেয় অনেকে। আকাশে গুলি ছুড়তে গিয়ে কখনো প্রাণ গেছে বরের তো কখনো বরযাত্রীর। কখনোবা অন্য কারো। এসব থামাতে হবে। তাই পুলিশের জানা উচিত কোথায় বিয়ে হচ্ছে।

রাজ্যের এডিজি সঞ্জয় সিং বলেন, আনন্দ করতে গিয়ে বিয়ে বাড়িতে অনেকের প্রাণ গেছে, অনেকে আহত হয়েছেন। কেননা আনন্দ করতে গিয়ে গুলি চালানো হচ্ছে। তাই বিয়েবাড়ি, ধর্মশালা বা ব্যাঙ্কোয়ট হল রয়েছে তাদের বলা হচ্ছে বিয়ের অনুষ্ঠান হলেই খবর দিতে হবে। পুলিশের গাইডলাইন অনুযায়ী, বিয়ে হল, লন, ব্যাঙ্কোয়েট হলে পর্যাপ্ত সংখ্যায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাতে হবে।

প্রসঙ্গত বিহার, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিয়েবাড়ি, জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আনন্দে মাত্রা ছাড়িয়েছে। মাতলামি তো রয়েছেই, গুলি চালিয়েও আনন্দ করতে দেখা গেছে। আর তাতে প্রাণ গেছে অনেকের। সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে বিহার সরকার।

রোহিঙ্গাদের সহায়তায় সাড়ে তিন মিলিয়ন ডলার সহায়তা জাপানের

আন্তর্জাতিক, জাতীয়, 28 April 2025, 241 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সহায়তায় জাপান সরকার আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাকে (আইওএম) ৩.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দিয়েছে। আজ ২৮ এপ্রিল সোমবার ঢাকার জাপান দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

banner

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাঈদা শিনিচি এবং আইওএম বাংলাদেশ মিশনের প্রধান ল্যান্স বোনো এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। কক্সবাজার জেলা এবং ভাসানচরে প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় সম্প্রদায় এই প্রকল্প থেকে সহায়তা পাবে।

এই প্রকল্পের আওতায় সুরক্ষা, আশ্রয়, খাদ্যবহির্ভূত পণ্য, এলপিজি বিতরণ, পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি, পাশাপাশি ভাসানচরে শরণার্থীদের জন্য জীবিকা নির্বাহ এবং কক্সবাজারে স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং সুরক্ষা পরিষেবা দেওয়া হবে।

ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা আশা প্রকাশ করেছেন, জাপান সরকারের সহায়তায় এ প্রকল্প রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় সম্প্রদায় উভয়ের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে। কক্সবাজার ক্যাম্পে আমার প্রথম সফরের ঠিক পরেই একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে পেরে আমি আনন্দিত। আমি আশা করি এই বিস্তৃত পরিকল্পনাটি কক্সবাজার এবং ভাসানচর উভয় স্থানে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে। রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় সম্প্রদায় উভয়ের সুরক্ষা, জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য অনেক মানুষের কাছে পৌঁছাবে। জাপান এই সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য কাজ চালিয়ে যাবে এবং আইওএম’র মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সহযোগিতা করবে।

অনুমতি ছাড়া হজ করলে জেল-জরিমানা

আন্তর্জাতিক, 24 February 2024, 778 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
আসন্ন হজ মৌসুমে অনুমতি ছাড়া হজ পালন থেকে বিরত থাকার জন্য পর্যটক এবং বাসিন্দাদের সতর্কতা দিয়েছে সৌদি আরব। আর যারা এ আইন ভঙ্গ করবেন তাদের ৫০ হাজার রিয়াল জরিমানা করা হবে। যা বাংলাদেশি অর্থে প্রায় ১৫ লাখ টাকার সমান।

banner

গতকাল শুক্রবার আমিরাত ভিত্তিক গণমাধ্যম গালফ নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নিরবচ্ছিন্ন ও সুন্দরভাবে হজ মৌসুম শেষ করতে এমন সব কঠোর শাস্তির বিধান রেখেছে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়। হাজিদের পরিবহন সেবা দানকারীদেরও সতর্ক করে দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

তারা বলেছে, যে বা যারা অনুমতিবিহীন ব্যক্তিদের মক্কায় পরিবহন করার সময় ধরা পড়বেন তাদেরকেও ৫০ হাজার রিয়াল জরিমানা করা হবে। প্রবাসীদের বেলায় শাস্তি আরও কঠোর করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যেসব প্রবাসী হজ মৌসুমের এই আইন ভঙ্গ করবেন, তাদের ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হবে। কারাভোগের পর নিজ দেশে তাদের ফেরত পাঠানো হবে এবং পরবর্তী ১০ বছরে সৌদিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে।

এছাড়া শাস্তির আওতায় আসা ব্যক্তিদের পরিচয় স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হবে। যাতে জনসাধারণ তাদের চিহ্নিত করে রাখতে পারে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এ বছর জুনের ১৪ তারিখে হজ শুরু হতে পারে।

৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশির চিঠি

আন্তর্জাতিক, 27 August 2023, 979 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে চিঠি লেখা মার্কিন কংগ্রেসের ছয় সদস্যকে পাল্টা চিঠি পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন ‘কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকান ইনকরপোরেশন’। সেখানে কংগ্রেসম্যানদের চিঠির তথ্যকে অসত্য বলে দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই চিঠির তথ্যের সত্যতাও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। কংগ্রেসের যে ছয় সদস্যকে চিঠি দেওয়া হয়েছে তারা হলেন ব্যারি মুর, টিম বার্চেট, ওয়ারেন ডেভিডসন, বব গুড, স্কট পেরি ও কিথ সেলফ।

banner

গত ২৬ আগস্ট ওই চিঠি পাঠানো হয়।

চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসরত ২৬৭ জন বাংলাদেশি-আমেরিকান স্বাক্ষর করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, মার্কিন সরকারি উচ্চপদে কর্মরত বাংলাদেশি এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত তরুণরা।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বাইডেন প্রশাসনের কাছে লেখা চিঠিতে নিজের জন্মভূমি সম্পর্কে মিথ্যা ও অসম্পূর্ণ তথ্য লেখা হয়েছে।

এতে গর্বিত বাংলাদেশি হিসেবে তাদের অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে।

চিঠিতে জানানো হয়, গত এক দশকে বাংলাদেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, নারী-পুরুষের সম-অধিকার, নারী উন্নয়ন প্রগতি, ধর্মীয় সহিষ্ণুতাকে বিবেচনা না করে খুবই সংকীর্ণ আর একচোখাভাবে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করা হয়েছে।

কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকান ইনকরপোরেশনের সদস্যরা চিঠিতে মনে করিয়ে দেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীসহ বাংলাদেশবিরোধী দলগুলো বিভিন্ন সময় টাকার বিনিময়ে লবিস্ট ফার্ম দিয়ে এসব অপপ্রচার চালিয়ে থাকে। চিঠিতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এবং বাংলাদেশি খ্রিস্টান কমিউনিটি প্রধানের বক্তব্য তুলে ধরা হয়।

সেখানে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে সবাই সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের শন্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা এবং অর্জন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘের হয়ে শান্তিরক্ষা করতে গিয়ে বিদ্রোহীদের হাতে নিহতদের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে বিচ্ছিন্ন দু-একটি ঘটনার কারণে এত বিশাল অবদান আর আত্মত্যাগ কি অস্বীকার করবে জাতিসংঘ? জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশের উজ্জ্বল অংশগ্রহণকে নিষিদ্ধ করা কোনোভাবেই নীতি-নৈতিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্বমানবতা রক্ষায় ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশ প্রায় ১৪ লাখ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দেয়। এত বিশাল সংখ্যক উদ্বাস্তু পৃথিবীর আর কোনো দেশ একসঙ্গে আশ্রয় দেয়নি উল্লেখ করে মানবতা রক্ষায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ও প্রধানমন্ত্রীর অবদান তুলে ধরা হয়। শেখ হাসিনা নিজ দেশের স্বার্থের কথা না ভেবে এত বিশাল সংখ্যক অসহায় উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দিয়ে জাতিসংঘ থেকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ হিসেবে স্বীকৃত হন।

গণতন্ত্র নস্যাতের অভিযোগের জবাবে বাংলাদেশি আমেরিকানদের সংগঠন অতীতের গণতন্ত্র ধ্বংসকারী বিএনপি-জামায়েত-শিবিরের সন্ত্রাস ও একনায়কতান্ত্রিক শাসনের কথা উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, আমেরিকান হিসেবে তারা ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস পালন করছে, কিন্তু তার পরও আমেরিকা গণতন্ত্র ব্যবস্থা, মানবিক অধিকার, ধর্মীয় অধিকার নিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সে তুলনায় ৫২ বছর বয়সী বাংলাদেশের চেষ্টাটি প্রশংসার দাবি রাখে কি না, সেই প্রশ্ন রাখা হয়েছে চিঠিতে।

বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং মানবতা উন্নয়নের চারটি দিক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমত, টানা পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারই দুর্নীতি দমনে কার্যকর ও সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের নানা পর্যায়ে দুর্নীতি কমে আসছে ক্রমান্বয়ে। দীর্ঘ সময় অবৈধ সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের দল বিএনপি ও অন্যান্য স্বৈরশাসকের আমলে দুর্নীতির শিকড় এত গভীরে বিস্তার লাভ করেছিল যে রাতারাতি তা নির্মূল করা সম্ভব নয়।

দ্বিতীয়ত, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানসহ সামরিক শাসকদের দুঃশাসন ও ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত বাংলাদেশ ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রকৃত গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসে। ইতিহাস থেকে আমরা জানি, দীর্ঘদিন সামরিক শাসিত একটি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা কোনো সহজ কাজ নয়। তার পরও বর্তমান সরকার চেষ্টা করছে আন্তর্জাতিক মানের গণতান্ত্রিক ভাবধারায় বাংলাদেশকে উন্নীত করতে।

তৃতীয়ত, রাষ্ট্রীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী কর্তৃক বিরোধী মতকে দমন-নিপীড়ন ও হত্যার রাজনীতি শুরু হয়েছিল বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ও সামরিক শাসকদের আমল থেকে। সেখান থেকে বাংলাদেশকে আইনের শাসনে ফিরিয়ে এনে সন্ত্রাস-মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের প্রতি ‘জিরো টলারেন্স’ দেখিয়ে বাংলাদেশ সুশাসনের ধারায় ফিরছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।

চতুর্থত, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং একই সঙ্গে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের মার্কিন বন্ধুদের আঞ্চলিক নিরাপত্তা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভর করে। বাংলাদেশে আবার যদি বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সরকার গঠিত হয়, তাহলে এ অঞ্চলে মৌলবাদের বিস্তার লাভ করবে আগের মতো। যা প্রতিবেশী দেশ ভারতের জন্যও হুমকিস্বরূপ। ২০০১-০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত সরকারের ছত্রচ্ছায়াতেই এ অঞ্চলে ইসলামী জিহাদি আর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ ও সদর দপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা ছড়িয়ে পড়েছিল দক্ষিণ-পূর্ব ভারতের সাতটি রাজ্যে।