চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নাসিরনগর উপজেলার লঙ্গণ নদীতে একটির ধাক্কায় তীরে বাধাঁ অবস্থায় আরেকটি নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় একই মায়ের দুই সন্তানের একজন মারা গেছে, অন্যজনকে সংকটাপন অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহত ওই শিশু গোয়ালনগর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের রুহুল আমিনের ছেলে জুমেল (৪)।
আজ ৭ জুন বুধবার বিকাল ৫টায় নাসিরনগর বাজার গুডাউন ঘাটে গোয়ালনগরের উদ্যেশে যাওয়ার জন্য অবস্থানকালে অন্য একটি নৌকার ধাক্কায় যাত্রীবাহী এ নৌকা ডুবে যায়।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বুধবার বিকালে নাসিরনগর নৌকা ঘাটে গোয়ালনগরে যাওয়ার জন্য যাত্রী ও মালামাল নিয়ে নৌকাটি অপেক্ষা করছিল। এমন অবস্থায় চাতলপাড় থেকে ছেড়ে আসা অন্য একটি নৌকা ঘাটে থাকা ওই নৌকাটিকে ধাক্কা দেয়। পরে বাধাঁ থাকা নৌকাটি ঘাটেই ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া অবস্থায় নৌকাটিতে শতাধিক যাত্রী ও মালামাল বোঝাই ছিল।
নৌকায় থাকা নাজমুল হাসান জানান, আমরা ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এমন সময় অন্য একটি নৌকা ধাক্কা দিলে আমাদের নৌকাটি ডুবে যায়। আমার সাথে অনেক মালামাল ছিল সব ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন জানান,আরেকটি নৌকার ধাক্কার কারণে নৌকাটি ডুবে গেছে। আমরা খবর পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনা স্থলে যাই। দুটি শিশুকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। নৌকাটিও উপরে তোলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম জানান, নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। নৌকাটি উদ্ধার করা হয়েছে। অন্য শিশুটির খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল্লা সরকার বলেন, ঘটনাটি মর্মান্তিক। এ ঘটনায় আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
অনলাইন ডেস্ক :
আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে ব্রাহ্মণ ও পুরোহিতগণের সাথে উপজেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা ব্রাহ্মণ কল্যাণ সমিতির সভাপতি সুজিত কুমার চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.মোনাববর হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লতিফ হোসেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহাগ রানা, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনাথবন্ধু দাস, সাধারণ সম্পাদক নির্মল চন্দ্র চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বরুণ কান্তি সরকার, সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, থানা কমিউনিটি পুলিশের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অরুণজ্যোতি ভট্টাচার্য, সদর ইউপি চেয়ারম্যান পুতুল রানী দাস ও উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণ ও পুরোহিতগণসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
সভায় বক্তারা আসন্ন দুর্গাপূজা অবাধ, সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে করার জন্য উপজেলার প্রত্যেক পূজা মন্দিরে ডিজে গান বন্ধ ও মদ্য পান বর্জনসহ পূজার সময় শান্তি বিঘ্নিত হয় এসব কার্যাবলী থেকে বিরত থাকার আহ্বান করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
হাওর বেষ্টিত ইউনিয়ন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড়। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন উপজেলার এই ইউনিয়নে বঙ্গবন্ধুর কোন ম্যুরাল না থাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ম্যুরাল চেয়ে চিঠি দিয়েছেন দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আরমান হোসেন।
আজ ১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার আরমান হোসেন কয়েকজন সহপাঠীকে সাথে নিয়ে নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আবেদন পত্রটি জমা দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা আবেদন পত্রে উল্লেখ করেছেন, ‘চাতলপাড় হাওর এলাকায় অবস্থিত একটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন। বিভিন্ন দিবসে সেখানকার ছাত্র-ছাত্রীরা কাগজের তৈরি মুড়ালে শ্রদ্ধা জানায়।
এ বিষয়ে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ও চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজ ছাত্রকল্যাণ সংগঠনের সভাপতি আরমান হোসেন জানান, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু একই সূত্রে গাঁথা। অথচ বাংলাদেশ সৃষ্টির এতো বছর পরও আমাদের কাগজের তৈরি মুড়ালে শ্রদ্ধা জানাতে হয়। তাই আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি ম্যুরাল চেয়েছি।
দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সেবা দাস জানান, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি দৃষ্টিনন্দন ম্যুরালের আবেদন করেছি। আমাদের বিশ্বাস মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আবেদনটি বিবেচনায় নিয়ে চাতলপাড়ে একটি ম্যুরাল স্থাপন করে দিবেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরানুল হক ভূঁইয়া জানান, চাতলপাড়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদনের একটি পত্র পেয়েছি। যথাযথ প্রক্রিয়ায় পত্রটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হবে।
মুরাদ মৃধা, নাসিরনগর :
আজ ১৪ জানুয়ারি যথাযোগ্য উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে নাসিরনগরে হিন্দু ধর্মাবলম্বী জনগণ তাদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব মকর সংক্রান্তি উদযাপন করেছে ।
এ এলাকার শত বছরের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী পৌষের শেষ রাতে কিশোর ও যুবকরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে খোলা যায়গায় তৈরি করে ছোট ছোট কুড়ে ঘর, সেখানে ভালো খাবার খেয়ে নেচে গেয়ে আনন্দ করে সারা রাত। মাঘের ১ম ভোরে স্নান করে এই ঘর আগুনে পুড়ে এর তাপ দিয়ে আগুন পোহানোর মাধ্যমে সুচনা করে নতুন মাসের। রীতি অনুযায়ী প্রতিটি বাড়িতে সকালে তৈরি করা হয় নানান জাতের পিঠা, এরপর পর শুরু হয় দান/ লোট উৎসব। গ্রামের বিভিন্ন সমাজের লোকজন নিজ নিজ এলাকায় ঢোল, করতাল, হারমোনিয়াম ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র নিয়ে দল বেধে ধর্মীয় সংগীত পরিবেশন করতে করতে বাড়ি বাড়ি যায় আর সবাই বিভিন্ন ধরনের ফল, বাতাসা তিল্লাই ইত্যাদি সামগ্রী দান/লোট দিলে শিশু, কিশোর ও যুব সমাজের মাঝে ব্যাপক আবেগ-আনন্দের সৃষ্টি হয়। এখানকার কোন কোন এলাকায় হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলমান জনগনও ভাগাভাগি করে এই আনন্দ।
হিন্দু ধর্মালম্বীরা বিশ্বাস করে মকর সংক্রান্তিতে স্নান ও দান অত্যন্ত শুভ ও ফলদায়ক। দেশের বিভিন্ন স্থানে অঞ্চল ভেদে পৌষ সংক্রান্তি, পোঙ্গল, উত্তরায়ন ইত্যাদি আলাদা আলাদা নামে উদযাপিত হয় এই অনুষ্ঠানটি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে উপজেলা কৃষকলীগের উদ্যোগে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ১১৭টি ওয়ার্ডে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের উন্নয়ন” শীর্ষক উঠান বৈঠক সমাপ্ত হয়েছে।
গতকাল রবিবার রাতে উপজেলা ফান্দাউক ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে এই উঠান বৈঠক শেষ হয়।
ফালান মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উঠান বৈঠকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষকলীগ সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ।
উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম নুরে আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ নাজির মিয়া।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রুমা আক্তার, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আবদুল আহাদ, উপজেলা কৃষকলীগ সভাপতি মোঃ অলি মিয়া, দপ্তর সম্পাদক মোঃ নিজাম খাঁ, জসিম উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জি.এম আরমান নুর।
চলারপথে রিপোর্ট :
তীব্র গরম আর লোডশেডিং এর কারণে ক্লাসে যখন বসাই যায় না তখন শিক্ষার্থীদের নিয়মিত গাছতলায় ক্লাস নিচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজের একজন প্রভাষক। পৌরনীতি ও সুশাসন বিষয়ের ওই শিক্ষকের নাম মো. মানিরুল হোসাইন। একাডেমিক ভবনের সামনে গাছতলায় সোমবার বেলা ১টায় দেখা যায় ক্লাস নিচ্ছেন তিনি।
জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কি.মি. দূরে অবস্থিত চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজ হাওরের উচ্চ শিক্ষার একমাত্র প্রতিষ্ঠান। বর্তমান সময়ে লোডশেডিং আর তীব্র গরমে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে যেতে চায় না। উপজেলা সদরের তুলনায় আশেপাশের ইউনিয়ন গুলোতে লোডশেডিং এর মাত্রাও ব্যাপক। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত গাছতলায় ক্লাস নিবেন ওই শিক্ষক।
২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থী মান্নান মিয়া জানান, সকালে কিছুটা তাপমাত্রা কম থাকলেও বেলা ১১টার পর আর ক্লাসে বসা যায় না। কারেন্ট তো থাকেই না। দুপুর বেলায় তো ক্লাস করার কথা ভাবাই যায় না। স্যার গাছ তলায় ক্লাস নেওয়ায় আমাদের গরম কম লাগে আর ক্লাসও মিস হয় না।
আরেক শিক্ষার্থী জোনাকী বেগম জানান, আমরা গরমের কারণে ক্লাসে বসতে পারি না। বিদ্যুৎ তো থাকেই না। অনেকে গরম সহ্য করতে না পেরে কলেজে আসে না আবার আসলেও চলে যায়। গাছ তলায় ক্লাস করলে এতটা গরম লাগে না।
শিক্ষক মো. মানিরুল হোসাইন বলেন, গরমের কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাসে বসতে পারে না। অনেকে আবার কলেজে আসতেও চায় না। সামনে এইচএসসি পরীক্ষা হাতে সময় তেমন নেই। তাই গাছতলাই পড়াই, তবু পড়ুক।
চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওমর আলী বলেন, তীব্র গরমে আমার ওই শিক্ষক গাছ তলায় ক্লাস নেয়। আমি তার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।