অনলাইন ডেস্ক :
লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের ঝুমুর হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে গরুর মাংস বলে ঘোড়ার মাংস বিক্রির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে হোটেল মালিক মো. সবুজ, হোটেলের পরিচালনাকারী মো. রিয়াজ ও মাংস সরবরাহকারী কসাই মো. চৌধুরী ওরফে শাহ আলমকে আসামি করা হয়। আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
আজ ১৫ জুন বৃহস্পতিবার দুপুরে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে নাজির ইয়াসিন আরাফাত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নাজির ইয়াসিন আরাফাত বলেন, খাবার হোটেলে গরুর মাংস বলে ঘোড়ার মাংস বিক্রি করে কর্তৃপক্ষ প্রতারণা করে আসছে বলে আবদুল কাদের নামে এক ব্যক্তি মামলা দায়ের করেছেন।
সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সদর আদালতে ৩ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়। আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক তারেক আজিজ আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সৌপর্দ করার জন্য সদর মডেল থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলার বাদী আবদুল কাদের (৪০) সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের সফি মিয়ার ছেলে।
আদালত সূত্র জানায়, বাদী আবদুল কাদের জীবিকার তাগিদে বিভিন্ন কাজে নিজ বাড়ি থেকে লক্ষ্মীপুরে আসা যাওয়া করেন। এতে অধিকাংশ সময় দুপুরের খাবার হোটেলে খেতে হয়। গত ১৭ মে তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এলাকার ঝুমুর হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে যান।
তখন হোটেল কর্মচারীরা উন্নত মানের গরুর মাংস রয়েছে। সরল বিশ্বাসে বাদী সুস্বাদু খাবার হিসেবে গরুর মাংসের অর্ডার দেন। এতে খাওয়ার সময় তার সন্দেহ হয়। এ ঘটনায় তিনি মামলার আসামি সবুজ ও রিয়াজের কাছে মাংসের বিষয়ে জানতে চান। কিন্তু তারা জানায়, ‘হোটেলে গরুর মাংসই বিক্রি হয়। সকালে কিনে এনে তাজা গরুর মাংস রান্না করা হয়’।
এদিকে দু’দিন পর একটি অনলাইন গণমাধ্যমে ঝুমুর হোটেলে ঘোড়ার মাংস বিক্রি করা হয় বলে সংবাদ পরিবেশন হয়। সংবাদটি আবদুল কাদেরের নজরে পড়ে। এতে জানতে পারেন, কসাই চৌধুরীর কাছ থেকে ঘোড়ার মাংস এনে ঝুমুর হোটেলে বিক্রি করা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ হোটেল মালিক সবুজ ও কসাই চৌধুরীকে আটক করে। এতে তদন্তক্রমে ঘটনাটি সত্য প্রমাণ হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন বাদী। এটি প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকা। হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে হোটেল কর্তৃপক্ষ প্রতারণা করে আসছে। এজন্য আবদুল কাদের বাদী হয়ে ১৪ জুন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সদর আদালতে ৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। গ্রেপ্তারি পরোয়ানার নির্দেশনা এখনো আমাদের হাতে আসেনি। নির্দেশনার চিঠি পেলেই আসামিদের গ্রেপ্তার করে যথাসময়ে আদালতে সৌপর্দ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
‘প্রবাসীর অধিকার, আমাদের অঙ্গীকার, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ, আমাদের সবার- এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গতকাল বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস এবং কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্যোগে আজ ১৮ ডিসেম্বর বুধবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া র্যালি ও আলোচনা সভা হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গন থেকে একটি র্যালি বের হয়ে প্রধান প্রদক্ষিণ শেষ করে। পরে জেলা প্রশাসকের হলরুমে জেলা প্রশাসক মোঃ দিদারুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাইফুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল মতিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মোঃ ইকরামুল হক নাহিদ, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক গনেশ চন্দ্র মন্ডলী, কারিগরি প্রশিক্ষন কেন্দ্রের অধ্যক্ষ মোঃ মাইনু উদ্দিন, জেলা ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সহকারী পরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার মাহমুদুল হাসান, ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তা মোঃ নূরুল্লাহ, ওকআপ কর্মকর্তা সনজিৎ কুমার নাথ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী কর্মীদের ১০ জন মেধাবী সন্তানের মাঝে ৩ লাখ ৫ হাজার টাকা মেধা বৃত্তি এবং ৫ প্রতিবন্ধী সন্তানকে ৬০ হাজার টাকা ভাতার চেক প্রদান করা হয়। এছাড়া সৌদি আরব ও বাহরাইন প্রবাসে গমনেচ্ছু ২ জনের মাঝে ঋনের ৫ লাখ টাকা, প্রবাসে এক প্রবাসীর মৃত্যুর পর তার পরিবারের নিকট প্রায় ১৭ লক্ষ টাকার বিতরণ করা হয়। তাছাড়া ৫ জন প্রবাসীর মাঝে বকেয়া বেতন ও আর্থিক অনুদান হিসেবে প্রায় ২৯ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ভাঙ্গায় যৌথ অভিযান চালিয়ে ব্যাংকের ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড প্রতারণা ও জালিয়াতি চক্রের পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ।
আজ ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকেল ৩টার দিকে ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকার এন্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) পুলিশ সুপার (এসপি) ফারহানা ইয়াসমিন বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
এরআগে, একইদিন ভোরে ফরিদপুরের ভাঙ্গার আজিমনগর এলাকায় ঢাকার এন্টি টেররিজম ইউনিট ও ফরিদপুর জেলা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন ভাঙ্গা উপজেলার পাতরাইল বাগবাড়ী দিঘীরপাড় এলাকার লিকু মাতুব্বরের ছেলে সাকিল মাতুব্বর ওরফে শাকিব (২৭), একই এলাকার মৃত আ. রশিদ মৃধার ছেলে শরিফুল মৃধা (৩৭), পাশের পাতরাইল দিঘিরপাড় এলাকার মৃত জয়নাল শেখের ছেলে শাওন শেখ (২০), একই উপজেলার মধ্য পাতরাইল কবিরাজ বাড়ি এলাকার বালাম কবিরাজের ছেলে রাকিব কবিরাজ (২৫) ও পাতরাইল উথলী তালুকদার বাড়ি এলাকার এসকেন তালুকদারের ছেলে জাকির হোসেন তালুকদার (৩৮)।
পুলিশ হেডকোয়ার্টারে এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ) ও ফরিদপুর জেলা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে এটিইউ পুলিশ সুপার (এসপি) ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, প্রতারণাকারী এ চক্রটি শুরুতে বিভিন্ন সরকারি ভাতা, অনুদান ও শিক্ষাবৃত্তি প্রাপ্ত ব্যক্তিদের তালিকা, মোবাইল নম্বরসহ প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন তথ্য অনলাইন থেকে সংগ্রহ করে। এরপর সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে তালিকার ব্যক্তিদের মোবাইল নম্বরে ফোন করে। এরপর ওই ব্যক্তিকে তার নাম, জন্ম তারিখ ইত্যাদি বিভিন্ন তথ্য দিয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে। প্রতারকরা তাদের জানায়, ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠালে সময় বেশি লাগবে। এক্ষেত্রে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড যদি থাকে তাহলে দ্রুত টাকা পাঠানো যাবে।
তিনি বলেন, ফলে ভুক্তভোগীরা ফাঁদে পড়ে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড নাম্বার এবং ওটিপিসহ (OTP) সব গোপন তথ্য প্রতারকদের দিয়ে দেয়। পরবর্তীতে প্রতারকরা খুব সহজেই মেটিবাফ্লেডিট কার্ড থেকে টাকা Qpay Bangladesh নামক মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে অন্য কোনো ব্যাংক একাউন্ট, বিকাশ বা নগদে নিয়ে নেয়। এভাবেই বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তারা দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা ও জালিয়াতি করে আসছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) শেখ মো. আব্দুল্লাহ বিন কালাম, এটিইউর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আখিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) তালাত মাহমুদ শাহানশাহ, কোতয়ালী থানার ওসি এম, এ জলিল, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (কোতয়ালী জোন) মো. রাকিবুল ইসলাম, গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ভাঙ্গা জোন) মোহাম্মদ মামুনুর রশীদসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অনলাইন ডেস্ক :
হাইকোর্টে আবারও জামিন আবেদন করেছেন বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি।
আজ ২১ এপ্রিল রবিবার বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুসের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এই আবেদন জমা দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিন্নির আইনজীবী মো. শাহীনুজ্জামান।
এর আগে গত বছরের ৮ মে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেছিলেন তিনি। পরে জামিন আবেদনটি কার্যতালিকায় এলে পরে আর শুনানি হয়নি।
গত বছরের ১১ জানুয়ারি মিন্নির জামিন আবেদন শুনতে অপারগতা প্রকাশ করেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন আবেদনটি শুনতে অপারগতা জানান।
২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান মিন্নিসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। রায়ে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি ৬ আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার দণ্ডে দণ্ডিত করেন। বাকি চারজনকে খালাস দেওয়া হয়।
পরে নিয়ম অনুসারে একই বছরের ৪ অক্টোবর ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পৌঁছে। পাশাপাশি ৬ অক্টোবর মিন্নিসহ অন্য আসামিরা আপিল করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মো. রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বী আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজোয়ান আলী খাঁন হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি।
খালাস পান মো. মুসা (পলাতক), রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন।
২০১৯ সালের ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডের ক্যালিক্স একাডেমির সামনে স্ত্রী মিন্নির সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে জখম করে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীর সহযোগীরা। গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত মারা যান।
এরপর রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ডকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও পাঁচ/ছয়জনের বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় প্রথমে মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করেছিলেন নিহত রিফাতের বাবা।
পরে ২ জুলাই ভোরে জেলা সদরের বুড়িরচর ইউনিয়নের পুরাকাটা ফেরিঘাট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ প্রধান আসামি নয়ন বন্ড (২৫) নিহত হন।
হত্যাকাণ্ডের ২০ দিন পর ওই বছরের ১৬ জুলাই মিন্নিকে তার বাবার বাসা থেকে বরগুনা পুলিশ লাইনে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ হত্যায় তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে মনে হওয়ায় ওইদিন রাতেই মিন্নিকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
চলারপথে ডেস্ক :
এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের নামে প্রতারণা করার অভিযোগে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ বিভাগের একটি দল এক কলেজছাত্রকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার আব্দুর রউফ প্রীতম আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী। অনলাইনে জুয়া খেলার টাকা সংগ্রহ করার জন্যই প্রীতম এই প্রতারণার আশ্রয় নেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাতে ডিএমপি ডিবি লালবাগ বিভাগের গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সহযোগিতায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বঙ্গবন্ধু বিমানবাহিনী ঘাঁটির সামনে থেকে আব্দুর রউফ প্রীতমকে গ্রেফতার করে। প্রীতম আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করতে পারবে এরকম শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে তার ফেসবুক এবং মেসেঞ্জারে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিভিন্ন ছাত্র-ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে নগদ এবং বিকাশ মাধ্যমে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
ডিবি সূত্র আরও জানায়, এসএসসি ব্যাচ-২০২৩, এসএসসি শর্ট সিলেবাস-২০২৩ এবং দেশ ভিউ নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে প্রীতম চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত প্রচারণা চালাতে থাকেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক ছাত্রছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকেরা তার এই প্রচারণায় বিশ্বাস করে তার সঙ্গে বিভিন্ন অ্যাপসে যোগাযোগ করেন। একপর্যায়ে তার চাহিদামতো টাকা মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান বিকাশ, নগদ ও রকেটের মাধ্যমে পাঠিয়েছেন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের নামে প্রতারণার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য এই প্রতারক ছাত্র তার বাবা ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ এবং তার মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে একাধিক ব্যাংক হিসাব খুলেছিলেন।
ডিবির ডিসি মশিউর রহমান বলেন, চলমান এসএসসি পরীক্ষা প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, সংরক্ষণ, পরিবহণ অথবা বিতরণের মতো কোনো কাজেই এই ছাত্র বা তার কোনো আত্মীয় জড়িত ছিল না। তাই তার পক্ষে প্রশ্নপত্র ফাঁস করা একেবারেই অসম্ভব ছিল। অনলাইন জুয়া খেলায় দীর্ঘদিন ধরে আসক্ত এই ছাত্র জুয়া খেলা ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে ফুর্তি করার টাকা সংগ্রহ করার জন্যই এই প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রীতমের বিরুদ্ধে একটি নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
সদ্য সমাপ্ত দেশের পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জনগণ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পেরেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের আমলে সুষ্ঠু ভোট হয়, সিটি নির্বাচন এর প্রমাণ বলেও দাবি করেন তিনি।
আজ ৩ জুলাই সোমবার দুপুরে রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে দুই মেয়রকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী। আর কাউন্সিলরদের শপথবাক্য পাঠ করান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে গাজীপুর, খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
গত ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেটের সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপিসহ আরও কয়েকটি দলের ভোট বর্জনের মধ্যে দুই সিটিতেই মেয়র পদে অনেকটা সহজেই জয় পান নৌকার প্রার্থীরা।
রাজশাহীর মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী হলেন। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। আর সিলেটের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী লন্ডন আওয়ামী লীগের নেতা। তিনি দেশে এসে মনোনয়ন পেয়ে প্রথমেই সিলেটের নগরপিতা হয়ে বাজিমাত করলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় ভোট মানেই ছিল জুলুম-যন্ত্রণা। এখন গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই জনগণ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের উন্নয়ন শুধু নগরভিত্তিক না। আমরা তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়ন পৌঁছে দিতে চাই। একদম গ্রামে উন্নয়ন পৌঁছে দিতে চাই।
নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নে মনোযোগী হওয়ার তাগিদ দেন সরকারপ্রধান। এ সময় তিনি রাজশাহী ও সিলেটের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে এর সমাধানের তাগিদ দেন।
মেয়র-কাউন্সিলরদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা একটি কথা মনে রাখবেন, জনগণের ভোটে আপনারা নির্বাচিত। এজন্য জনগণের কথা চিন্তা করতে হবে। আপনি যে দলেরই হোন না কেন।
এর আগে সকালে গাজীপুর, খুলনা ও বরিশালে নবনির্বাচিত মেয়র-কাউন্সিলরদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে অনেকে অন্য দলের লোকও আছেন। আমরা কিন্তু কে ভোট দিল না দিল সেটা দেখি না। দেশের সব জনগণের জন্য কাজ করি। আমি যা করি জনগণের জন্য করি, জনগণের কল্যাণে করি। আমি ঘর করে দিয়েছি, সেখানে কে ভোট দিল না দিল সেটা দেখিনি। সব উন্নয়নের ক্ষেত্রেই আমরা সেটা করি।
সবাইকে জনকল্যাণে কাজ করার তাগিদ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, জনগণ আপনাদের স্বতস্ফূর্ত ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। মানুষের আকাঙ্ক্ষা আপনাদের পূরণ করতে হবে।
মেয়র-কাউন্সিলদের উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়ন আপনাদের ওপর নির্ভর করে। আমাকে তিনশ সিট দেখতে হয়। আপনারা নিজ নিজ এলাকা দেখবেন। আপনি আপনার এলাকা নিয়ে পরিকল্পনা করবেন। মানুষের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে হবে।
এ সময় প্রত্যেক মেয়র-কাউন্সিলরকে নিজ নিজ এলাকার ড্রেনেজ ও পয়ঃনিষ্কাশনব্যবস্থা উন্নত করার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রচুর বরাদ্দ আছে। সেই বরাদ্দ যেন সঠিকভাবে কাজে লাগানো হয় সেই তাগিদ দেন তিনি।