চলারপথে রিপোর্ট :
চলতি বোরো মৌসুমে চাল সংগ্রহ ও অন্যত্র পাঠানোর ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। এ কারণে চাল সংগ্রহ অভিযান ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন চালকল মালিকরা।
চাল সরবরাহকারীদের দাবি, সরকার নির্ধারিত দামে গুদামে চাল দিয়ে তাঁদের মুনাফা হয় না। চাল নিয়ে দিনের পর দিন অপেক্ষা করায় গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ট্রাক ভাড়া।
জানা গেছে, এক মাসে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ১৪০০ টন। তবে এক মাসে সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ৯ হাজার টন। দৈনিক ৪৮০ টন চাল সংগ্রহের কথা থাকলেও সংগ্রহের পরিমাণ ৩০০ টনের কম।
তবে খাদ্য বিভাগের দাবি, আশুগঞ্জের বরাদ্দের একটি অংশ (২০ হাজার টনের বেশি) জেলা সদর ও সরাইল উপজেলায় সংগৃহীত হচ্ছে।
চলতি মৌসুমে আশুগঞ্জ উপজেলা থেকে প্রায় ৫২ হাজার টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। উপজেলার দুই শতাধিক চালকল থেকে চাল সরবরাহ করার কথা। গত ১৫ মে থেকে সংগ্রহ অভিযান শুরু করে খাদ্য বিভাগ। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তা চলবে।
খাদ্যগুদাম এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চাল প্রদানে ৫০টি ট্রাক (প্রতি ট্রাকে ১৮-২০ টন) সড়কের দু’পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এসব ট্রাকের কোনোটি ২ দিন ধরে অপেক্ষায় রয়েছে। গুদাম থেকে সংগৃহীত চাল অন্যত্র (ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন খাদ্যগুদাম) প্রেরণের জন্য রয়েছে মাত্র ৬টি ট্রাক।
চালকল মালিকরা জানান, আশুগঞ্জ গুদামের ধারণক্ষমতা আড়াই হাজার টন। প্রতিদিন সংগৃহীত চালের বিপরীতে অন্যত্র প্রেরণ অর্ধেক।
জেলা চালকল মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও খান অটো রাইস মিলের মালিক মো. জিয়াউল করিম সাজু খান বলেন, চাল সংগ্রহের ধীরগতির কারণে চাল নিয়ে এসে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয়। এতে প্রতিদিন ৩-৪ হাজার টাকা অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয় তাঁদের।
সরকারি গুদামে চাল দিয়ে চালকল মালিকদের লাভ নেই বলে দাবি করেন মো. জিয়াউল করিম। তিনি বলেন, সরকারি দামের চেয়ে খোলাবাজারে চালের দাম বেশি। তার পরও মালিকরা সরকারি সংগ্রহ অভিযান সফল করতে প্রস্তুত। তিনি দ্রুত গুদাম সমস্যার সমাধান ও চাল অন্যত্র পাঠানোর গতি আরও বাড়ানোর দাবি জানান।
জেলা চালকল মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. ওবাইদুল্লাহ, উন্দা মিয়া রাইস মিলের মালিক মো. সাদেক মিয়া ও রজনীগন্ধা অটো রাইস মিলের মালিক হাসান ইমরানও একই মত দিয়েছেন।
জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মো. বাবুল আহমেদ ও উপজেলা চাতালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. হেলাল সিকদার বলেন, চলতি বছর চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অনেক। ডেসপাস দ্রুত করা না হলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নাও হতে পারে।
গুদামের ধারণক্ষমতা কম বলে স্বীকার করেছেন জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবির। তিনি বলেন, সামনে ঈদ থাকায় চাহিদামতো ট্রাক মিলছে না। ফলে অন্যত্র পাঠানোয় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। আশুগঞ্জের বরাদ্দের ২০ হাজার টনের বেশি চাল জেলা সদর ও সরাইল উপজেলা খাদ্যগুদামে নেওয়া হচ্ছে। চাল সংগ্রহ গতিশীল করা হবে। নির্ধারিত সময়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে আশা করেন তিনি।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে কাভার্ডভ্যান থেকে ১০৪ কেজি গাঁজাসহ জিয়াউর রহমান (৩৮) নামের এক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ ৫ আগস্ট শনিবার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। জিয়াউর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার দেলি উত্তর পাড়া গ্রামের মৃত খেলু মিয়ার ছেলে।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মাদক উদ্ধারের অভিযানের সময় একটি কাভার্ডভ্যানে তল্লাশি করে ১০৪ কেজি গাঁজা পাওয়া যায়। এই ঘটনায় এক মাদক কারবারিকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি কাভার্ডভ্যানটি জব্দ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানার এসআই মো. কবির হোসেন বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন। গ্রেফতার কারবারিকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সামাজিক বন্ধনকে সুসংহত করার লক্ষ্যে সামাজিক সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১৪ অক্টোবর শনিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো: শাহগীর আলম।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসেন, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সী, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা শারমিন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিমা সুলতানা, আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাহিদ আহমেদ। এসময় বক্তারা বলেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সামাজিক বন্ধনকে সুসংহত করার লক্ষ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান।
সমাবেশে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, ইমাম, পুরোহিত ও শিক্ষকসহ সর্বস্তরের জনগণ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
একই বিদ্যালয়ে পাশাপাশি দুটি ভবন। একটি নির্মাণের চার বছর পর আরেকটি নির্মাণ করা হয়। পুরাতন ভবনটির সব ঠিক থাকলেও পরবর্তীতে নির্মাণ করা ভবনটি মাত্র ১৭ বছরে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ভবনের পিলারে পলেস্তারা খসে পড়ে দেখা দিয়েছে ফাটল এবং বের হয়ে এসেছে রড। বিদ্যালয়ের ছাদ থেকেও খসে পড়ছে পলেস্তারা। ছাদের বেশ কয়েকটি জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় নতুন ভবনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেওয়া হলেও মেলেনি কোনো সাড়া। ঝুঁকি নিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের পাঠদান।
এমন চিত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের খড়িয়ালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের খড়িয়ালা পূর্বপাড়ায় ১৯৬৮ সালে খড়িয়ালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ে ২৪৭ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। এর মধ্যে ছেলে শিক্ষার্থী ১০৮ ও মেয়ে শিক্ষার্থী ১৩৯ জন আছে। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও একজন সংযুক্তি শিক্ষকসহ পাঁচজন আছেন।
২০০১-২০০২ অর্থ বছরে বিদ্যালয় চত্বরের পূর্বদিকে একটি পাকা ভবন এবং ২০০৫-০৬ অর্থবছরে পশ্চিমদিকে আরেকটি পাকাভবন নির্মাণ করা হয়। দুটি ভবনই পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ২০০৫-২০০৬ সালে নির্মাণ করা বিদ্যালয়ের পশ্চিমদিকের ভবনের নিচের পিলার, বিমের পলেস্তরা খসে পড়েছে। বেশ কয়েকটি জায়গায় রড বের হয়ে গেছে। পশ্চিমদের ভবনে শ্রেণিকক্ষ, বারান্দা, দপ্তরের ছাদের ওপর একাধিক জায়গায় ফাটল আছে। খসে পড়ছে পলেস্তরা। এর মধ্যেই প্রধান শিক্ষক হাসিনা বেগমসহ অন্য শিক্ষকরা ঝুঁকি নিয়েই সেখানে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন। পশ্চিমদিকের জরাজীর্ণ ভবনে দুটি শ্রেণিকক্ষ, একটি দাপ্তরিক কাজ ও শিক্ষকদের বসার জন্য একটি কক্ষ এবং শৌচাগার আছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিমদিকের ভবনে সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত প্রাক প্রাথমিকের এবং সাড়ে ১২টা থেকে সোয়া ৪টা পর্যন্ত পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান চলে। পাশের ভবনে দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ শ্রেণির পাঠদান চলে। প্রধান শিক্ষক হাসিনা বেগম গত বছরের শেষ দিকে বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনের কথা উল্লেখ করে নতুন ভবনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি লিখেন। একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ভবনটির দুরবস্থার কথা জানালেও কোনো কাজ হয়নি। অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই সেখানে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবদুল হাই, রোমান মিয়া, জোনাকি আক্তার জানায়, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস করতে তাদের ভয় লাগে। ছাদের রড বের হয়ে গেছে। স্কুলের ছাদ থেকে সিমেন্ট খসে খসে পড়ে। সিঁড়ির দেওয়ালও ভেঙে গেছে। সিঁড়ির দিকের ফাটল দেখলে ভয় লাগে। ভয় নিয়ে আমরা ক্লাস করি।
স্থানীয় হানিফ মিয়া বলেন, চার বছর আগে নির্মাণ করা ভবন ভালো আছে। পরে নির্মাণ করা ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। জরাজীর্ণ ভবনে আতঙ্ক নিয়ে চলে শিক্ষা কার্যক্রম।
খড়িয়ালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসিনা বেগম বলেন, সর্বশেষ ২০২২ সালের শেষের দিকে বিদ্যালয়ের একটি ভবনের জরাজীর্ণের অবস্থা উল্লেখ করে নতুন ভবনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দিয়েছি। আগেও বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাঠদান চালানোর জন্য বিকল্প কোনো ভবন নেই। তাই বাধ্য হয়েই জরাজীর্ণ ভবনে শ্রেণির কার্যক্রম এবং দাপ্তরিক কার্যক্রম চালাতে হয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খোরশেদ আলম বলেন, জেলা ও সব উপজেলার জরাজীর্ণ ভবনের তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের তালিকায় এ বিদ্যালয়ের নামও আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
চালের বস্তায় ধানের জাত, মিলগেটের মূল্য, উৎপাদনের তারিখ ও প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠানের নাম লিখতে হবে। এমনকি প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠানের অবস্থান (জেলা ও উপজেলা) উল্লেখ করতে হবে। থাকতে হবে ওজনের তথ্যও। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এমন নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আজ ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে ডায়ার মিল পরিদর্শন করেছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ডিসি ফুড) আলমগীর কবির। এ সময় অন্যান্যদের মাঝে আশুগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিযন্ত্রক আব্দুর রউফ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ তকদির হোসেন, সরাইল উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নূর আলী, কসবা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাউছার সজীব, আশুগঞ্জ খাদ্য গোদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, এলএসডি) মোহাম্মদ সোলাইমান মিয়া ও রজনীগন্ধা এ্যাগ্রোফুডের স্বত্বাধিকারী হাসান ইমরান উপস্থিত ছিলেন।
এসময় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ডিসি ফুড) আলমগীর কবির বলেন, সম্প্রতি দেশের চাল উৎপাদনকারী কয়েকটি জেলায় পরিদর্শন করে নিশ্চিত হওয়া গেছে বাজারে একই জাতের ধান থেকে উৎপাদিত চাল ভিন্ন ভিন্ন নামে ও দামে বিক্রি হচ্ছে। চালের দাম অযৌক্তিক পর্যায়ে গেলে বা হঠাৎ বৃদ্ধি পেলে মিলার, পাইকারি বিক্রেতা, খুচরা বিক্রেতা একে অপরকে দোষারোপ করছেন। এতে ভোক্তারা ন্যায্যমূল্য ও পছন্দমত জাতের ধানের চাল কিনতে অসুবিধার সম্মুখিন হচ্ছেন।
এ অবস্থার উত্তরণের লক্ষ্যে চালের বাজার মূল্য সহনশীল ও যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে ধানের নামেই যাতে চাল বাজারজাতকরণ করা হয় তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে এবং এ সংক্রান্ত কার্যক্রম মনিটরিংয়ের সুবিধার্থে খাদ্য মন্ত্রনালয় এ নির্দেশনা জারি করেছে। যা গত পহেলা বৈশাখ থেকে কার্যকর হয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী চালের উৎপাদনকারী মিলমালিকদের গুদাম থেকে বাণিজ্যিক কাজে চাল সরবরাহের প্রাক্কালে চালের বস্তার ওপর উৎপাদনকারী মিলের নাম, জেলা ও উপজেলার নাম, উৎপাদনের তারিখ, মিল গেট মূল্য, ওজন এবং ধান বা চালের জাত উল্লেখ করতে হবে। বস্তার ওপর এসব তথ্য কালি দিয়ে লিখতে হবে। এক্ষেত্রে মিলগেট দামের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান চাইলে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য উল্লেখ করতে পারবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ, বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন, ২০২৩-এর ধারা ৬ ও ধারা ৭ মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আশুগঞ্জ প্রতিনিধি :
তিনদিন পর ফের আশুগঞ্জে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, দোকানপাট-বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। আজ ১৮ জানুয়ারি বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার দুর্গাপুরে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে প্রথমে আশুগঞ্জ থানা পুলিশ ও পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যাপক লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও শর্টগানের গুলি ছুঁড়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এসময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ১৫ জনকে আটক করে। এখনো পুলিশের অভিযান চলছে। এদিকে ফায়ার সর্ভিসের দুটি দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিভানোর কাজ করে। দুর্গাপুর গ্রামের জারুর গোষ্ঠি (রাসেল চেয়ারম্যানের গোষ্ঠি গং) এবং বারঘরিয়া (মিজান মেম্বারের গোষ্ঠি গং) গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত শুক্রবার ও শনিবারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ১১১ জনের নাম উল্লেখসহ ৩০০- ৪০০ জনের নামে মামলা দায়ের করে। গ্রামের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এরই মধ্যে বুধবার সাড়ে ৭টার দিকে একদল দাঙ্গাবাজ অর্তকিতে দুর্গাপুর বাজারে হামলা চালিয়ে অন্তত ৩০টি দোকান, ৩-৪টি বাড়িঘর ও ২০টির বেশি খড়ের ডিবিতে অগ্নিসংযোগ করে। বেশ কয়েকটি দোকানও ভাংচুর করে। মূহুর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়লে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করলে সংঘর্ষকারীরা সেখানেও বাধা দেয়। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও শর্টগানের গুলি ছুড়ে সংঘর্ষকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে গোটা গ্রামের বিভিন্ন পয়েন্টে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষকারীরা বিভিন্ন স্থানে খড়ের ডিবিতে আগুন লাগিয়ে এক ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে। পুলিশ একদিকে গেলে অন্য দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে অতিরিক্তি পুলিশ এলে বিভিন্ন দিক থেকে টিয়ারশেল, শর্টগানের গুলি ছুড়া শুরু ও ব্যাপক লাঠিচার্জ শুরু করে। এরপর সংঘর্ষকারীরা পিছু হটে এবং বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ আরো জানায়, সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন পুলিশসহ কমপক্ষে অর্ধ শতাধিক আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বাহার নামে একজনসহ কয়েকজনের বল্লমের আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গায়ে সিএনজির ধাক্কা লাগা নিয়ে উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের জারুর গোষ্ঠি (রাসেল চেয়ারম্যানের গোষ্ঠি গং) এবং বারঘরিয়া (মিজান মেম্বারের গোষ্ঠি গং) গোষ্ঠির লোকজনের মধ্যে গত শুক্রবার ও শনিবার দুদফা সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে।