চলারপথে রিপোর্ট :
চলতি বোরো মৌসুমে চাল সংগ্রহ ও অন্যত্র পাঠানোর ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। এ কারণে চাল সংগ্রহ অভিযান ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন চালকল মালিকরা।
চাল সরবরাহকারীদের দাবি, সরকার নির্ধারিত দামে গুদামে চাল দিয়ে তাঁদের মুনাফা হয় না। চাল নিয়ে দিনের পর দিন অপেক্ষা করায় গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ট্রাক ভাড়া।
জানা গেছে, এক মাসে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ১৪০০ টন। তবে এক মাসে সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ৯ হাজার টন। দৈনিক ৪৮০ টন চাল সংগ্রহের কথা থাকলেও সংগ্রহের পরিমাণ ৩০০ টনের কম।
তবে খাদ্য বিভাগের দাবি, আশুগঞ্জের বরাদ্দের একটি অংশ (২০ হাজার টনের বেশি) জেলা সদর ও সরাইল উপজেলায় সংগৃহীত হচ্ছে।
চলতি মৌসুমে আশুগঞ্জ উপজেলা থেকে প্রায় ৫২ হাজার টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। উপজেলার দুই শতাধিক চালকল থেকে চাল সরবরাহ করার কথা। গত ১৫ মে থেকে সংগ্রহ অভিযান শুরু করে খাদ্য বিভাগ। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তা চলবে।
খাদ্যগুদাম এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চাল প্রদানে ৫০টি ট্রাক (প্রতি ট্রাকে ১৮-২০ টন) সড়কের দু’পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এসব ট্রাকের কোনোটি ২ দিন ধরে অপেক্ষায় রয়েছে। গুদাম থেকে সংগৃহীত চাল অন্যত্র (ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন খাদ্যগুদাম) প্রেরণের জন্য রয়েছে মাত্র ৬টি ট্রাক।
চালকল মালিকরা জানান, আশুগঞ্জ গুদামের ধারণক্ষমতা আড়াই হাজার টন। প্রতিদিন সংগৃহীত চালের বিপরীতে অন্যত্র প্রেরণ অর্ধেক।
জেলা চালকল মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও খান অটো রাইস মিলের মালিক মো. জিয়াউল করিম সাজু খান বলেন, চাল সংগ্রহের ধীরগতির কারণে চাল নিয়ে এসে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয়। এতে প্রতিদিন ৩-৪ হাজার টাকা অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয় তাঁদের।
সরকারি গুদামে চাল দিয়ে চালকল মালিকদের লাভ নেই বলে দাবি করেন মো. জিয়াউল করিম। তিনি বলেন, সরকারি দামের চেয়ে খোলাবাজারে চালের দাম বেশি। তার পরও মালিকরা সরকারি সংগ্রহ অভিযান সফল করতে প্রস্তুত। তিনি দ্রুত গুদাম সমস্যার সমাধান ও চাল অন্যত্র পাঠানোর গতি আরও বাড়ানোর দাবি জানান।
জেলা চালকল মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. ওবাইদুল্লাহ, উন্দা মিয়া রাইস মিলের মালিক মো. সাদেক মিয়া ও রজনীগন্ধা অটো রাইস মিলের মালিক হাসান ইমরানও একই মত দিয়েছেন।
জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মো. বাবুল আহমেদ ও উপজেলা চাতালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. হেলাল সিকদার বলেন, চলতি বছর চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অনেক। ডেসপাস দ্রুত করা না হলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নাও হতে পারে।
গুদামের ধারণক্ষমতা কম বলে স্বীকার করেছেন জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবির। তিনি বলেন, সামনে ঈদ থাকায় চাহিদামতো ট্রাক মিলছে না। ফলে অন্যত্র পাঠানোয় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। আশুগঞ্জের বরাদ্দের ২০ হাজার টনের বেশি চাল জেলা সদর ও সরাইল উপজেলা খাদ্যগুদামে নেওয়া হচ্ছে। চাল সংগ্রহ গতিশীল করা হবে। নির্ধারিত সময়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে আশা করেন তিনি।
স্টাফ রিপোর্টার:
গৌরব ও অহংকারের ১৬ ডিসেম্বর বাঙ্গালী জাতির মহান বিজয় দিবস। বিজয় দিবসে জাতি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করবে স্বাধীনতার স্বপ্নপুরুষ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, জীবন উৎসর্গকারী ও যুদ্ধাহত বীর সন্তানদের, যাঁদের ত্যাগে অর্জিত হয়েছে আমাদের কাঙ্খিত বিজয়; জাতি অর্জন করেছে লাল সবুজ পতাকা এবং স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষে মহান বিজয় দিবস-২০২২ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। আজ প্রত্যুষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ফারুকী পার্কে ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে- ফারুকী পার্কস্থ স্মৃতিসৌধে সরকারি-বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত বিভাগ/সংস্থা সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনতা কর্তৃক স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পন, সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, বেসরকারি স্বায়ত্ব শাসিত এবং বেসরকারি ভবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবে জেলা প্রশাসন। এ সময় কুচকাওয়াজ ও অভিবাদন গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ১০টায় একই মাঠে মোরগ লড়াই ও বেলা ১১টায় কারাতে প্রতিযোগিতা, একই মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদেরকে সংবর্ধনা প্রদান এবং জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে বেলা ১১টায়। বেলা সাড়ে ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া মূক ও বধির নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সরকারি শিশু পরিবারের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর জেলার সকল মসজিদে বাদ জোহর জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা এবং মুক্তিযুদ্ধে শহিদ ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়সমূহে সুবিধাজনক সময়ে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি এদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সকল সরকারি হাসপাতাল, শিশু সদন, জেলখানা, এতিমখানা ও শিশু পরিবারে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। বিকেল আড়াটায় ব্রাহ্মণবড়িয়া নিয়াজ মুহাম্মদ স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন একাদশ বনাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ও মুক্তিযোদ্ধা একাদশ দলের মধ্যে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। বিকাল ৩টায় সরকারি মডেল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরষ্কার বিতরণ করা হবে। বিকেল সাড়ে ৫টায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হবে।
মহান এ দিবসের সকল অনুষ্ঠানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশপ্রেমি মানুষের স্ববান্ধব উপস্থিতি কামনা করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম।
অনুরূপ কর্মসূচি জেলার সকল উপজেলায় পালিত হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে মহাসড়কের পাশে পার্কিং করা একটি যাত্রীবাহি অটোরিক্সাকে একটি কাভার্ডভ্যান চাপা দিলে শিশুসহ ৪ জন নিহত এবং ৩ জন আহত হন। আজ ২১ আগস্ট সোমবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর বাসস্ট্যান্ডে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের বড়ইবাড়ি গ্রামের মোঃ সোহেল মিয়া (২৭), একই গ্রামের নাজমুল মিয়ার ছেলে মোঃ জিলানী (৮), একই ইউনিয়নের শাখাইতি গ্রামের জাফর আলীর ছেলে মোঃ আসকর মিয়া (৬০) ও কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের আবদুর রশীদের ছেলে মোঃ উজ্জ্বল মিয়া (৩৭)।
আহতরা হলেন, নিহত জিলানীর বাবা নাজমুল মিয়া, মা শাহানা বেগম ও ছোট বোন তাইরিন (দেড় বছর)। আহতদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, দুপুরে ঢাকাগামী একটি কাভার্ডভ্যান আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর বাসস্ট্যান্ড পৌছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সোহাগপুর বাসস্ট্যান্ডে পার্কিং করা একটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিক্সাযাত্রী সোহেল মিয়া ও জিলানী নিহত এবং আসকর মিয়া, উজ্জ্বল মিয়া, নাজমুল মিয়া, শাহানা বেগম ও শিশু তাইরিন আহত হন।
খবর পেয়ে হাইওয়ে থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে হতাহতের উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেরণ করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আসকর মিয়া ও উজ্জ্বল মারা যায়।
এ ব্যাপারে খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আশুগঞ্জে কাভার্ড ভ্যানের চাপায় শিশুসহ ৪জন নিহত এবং ৩জন আহত হয়েছে। আমরা নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করেছি। এ ঘটনায় যাথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। ঘটনার পর পরই কাভার্ড ভ্যানের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৯৮ কেজি গাঁজা এবং ৯০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ৬ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় মাদকদ্রব্য বহনকারী ২টি প্রাইভেটকার ও ১টি মোটর সাইকেল জব্দ করা হয়।
আজ ৩ সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল ১০টায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ উপজেলার সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজা এবং শনিবার বিকেলে সরাইল উপজেলার বাড়িউড়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ ও সরাইল থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার আলাবক্সপুর গ্রামের মাজহারুল ইসলাম ইমন (২৩), একই উপজেলার আহম্মদপুর গ্রামের মোঃ মশিউর আলম (২২), একই উপজেলার খরশপুর গ্রামের মাজহারুল ইসলাম রাব্বি (২০), স্বপন মিয়া (২৭), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার কালিশিমুল গ্রামের মোঃ সাকিব মিয়া (২১) ও একই উপজেলার জালালপুর গ্রামের রিপন (২২)।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহামেদ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার সকালে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজার সামনে অভিযান চালিয়ে একটি প্রাইভেটকার ও মোটর সাইকেল তাদের আটক করা হয়। পরে প্রাইভেটকার ও মোটর সাইকেলে তল্লাশী চালিয়ে ৯৮ কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী মাজহারুল ইসলাম ইমন, মশিউর আলম, মাজহারুল ইসলাম রাব্বি ও স্বপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার দুপুরে সরাইল উপজেলার বাড়িউড়া বাজারে অভিযান চালিয়ে একটি প্রাইভেটকার আটক করা হয়। পরে প্রাইভেটকারে তল্লাশী চালিয়ে ৯০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার ও মাদক ব্যবসায়ী সাকিব মিয়া ও রিপনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় সরাইল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আশুগঞ্জ প্রতিনিধি :
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক এমপি ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) নির্বাচনী এলাকায় অবাঞ্চিত করেছে ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ।
গতকাল শুক্রবার সকালে আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার এই ঘোষনা দেন।
আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজী মোঃ ছফিউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আল-মামুন সরকার বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী দেয়নি আওয়ামীলীগ। বিএনপি উপ-নির্বাচন বর্জন করেছে। আওয়ামীলীগ উপ-নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী না দিলেও সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ন নির্বাচনে সহযোগীতা করবে আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা।
তিনি সম্প্রতি আশুগঞ্জে দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় বিএনপির নেত্রী ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানার বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে উপ নির্বাচনের সময়কাল পর্যন্ত ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানাকে নির্বাচনী এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।
মতবিনিময় সভায় আল-মামুন সরকার বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা যদি সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ন নির্বাচন প্রতিহত, বানচাল বা বিশৃংখলার সৃষ্টির কোন অপচেষ্টা করে তাহলে তাদেরকে প্রতিহত করার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান জানান।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের আহমেদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন মঈন, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম সাজু, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান আনসারী প্রমুখ।
উল্লেখ্য, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচন। এই আসনটি উম্মুক্ত রেখেছে আওয়ামীলীগ। উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপি থেকে পদত্যাগকারী এই আসনের ৫ বারের সাবেক এমপি উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়া “কলারছড়ি” প্রতীক, আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদ “মটর গাড়ি (কার)” প্রতীক, জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হামিদ ভাসানী “লাঙ্গল” প্রতীক ও জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল “গোলাপ” ফুল প্রতীক।
উকিল আবদুস সাত্তার দলীয় সিদ্ধান্তে গত ১১ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে তিনি বিএনপির চেয়ারপার্সনের পদ থেকে পদত্যাগ করে উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন।
উপ-নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি। কিন্তু আওয়ামীলীগের তিনজন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। পরে তারা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।
স্টাফ রিপোর্টার :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে দু’পক্ষের মারামারির দুই মাস পর আহত হারুন মিয়া (৬০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। তিনি তার নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে হারুন মিয়া হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে সে মারা যায়। গত অক্টোবর মাসে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুত্বর ভাবে আহত হয়েছিলেন হারুন মিয়া। হারুন মিয়ার মৃত্যুর পর উপজেলার পত্তন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক দুধ মিয়ার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। হারুন মিয়া উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লক্ষীমুড়া গ্রামে মৃত কিতাব আলীর ছেলে। হাসপাতাল ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত লক্ষীমুড়া গ্রামের মৃত কিতাব আলীর ছেলে হারুন মিয়ার পরিবার ও মৃত সোবহান মিয়ার ছেলে করিম মিয়ার পরিবারের জমিতে গরুর ঘাস খাওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে করিম মিয়ার পক্ষের লোকেরা হারুন মিয়াসহ তার পরিবারের ৪-৫ জনকে পিটিয়ে জখম করে। তারপর বিজয়নগর থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পর করিম মিয়ার লোকজন হারুন মিয়াকে হত্যা করার হুমকি দেন? পরবর্তীতে স্থানীয় চেয়ারম্যান দু’পক্ষের লোকদেরকে ডেকে তা আপস করার চেষ্টা করেন। পরে হারুন মিয়া তার ছেলে-ভাতিজাকে নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পথিমধ্যে শেখ হাসিনা সড়কের উত্তর পাশে করিম মিয়ার লোকজন অতর্কিতভাবে তাদের উপর হামলা করেন। তাতে হারুন মিয়ার একটি হাত ও একটি পা ভেঙ্গে যায়। পরে তাদেরকে জেলা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। হারুন মিয়ার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে এক মাস হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়। পরবর্তীতে বাড়িতে তার চিকিৎসা চলে।
এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা যায়- এই হামলার ইন্দনদাতা পত্তন ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ সাধারণ সম্পাদক দুধ মিয়া।
নিহত হারুন মিয়ার ভাতিজা সোহেল বলেন, দুধ মিয়া সরাসরি করিম মিয়ার পক্ষে নিয়েছে। যার কারণে আমার চাচা হারুন মিয়ার উপর হামলা হয়েছে। আমার চাচার হত্যা সাথে দুধ মিয়া জড়িত। দুধ মিয়াসহ যারা আমার চাচাকে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসির দাবি জানায়।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, একজন মারা গেছেন বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে আছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যু রহস্য উন্মোচন হবে।