চলারপথে রিপোর্ট :
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার তুলশীগঙ্গা নদীর তীরবর্তী সন্যাসীতলায় মন্দিরের পাশে বসে দুই দিনব্যাপী ঘুড়ির মেলা। গ্রামীণ এ মেলা সন্যাসতলীর ঘুড়ির মেলা হিসেবে পরিচিত। মেলার সঠিক ইতিহাস কেউ বলতে না পারলেও জনশ্রুতি রয়েছে, সন্যাসী পূজাকে ঘিরে দুশ বছরের অধিক সময় আগে মেলাটির উৎপত্তি ঘটে। সেই থেকে পঞ্জিকা অনুসারে প্রতিবছর বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ আজ ১৬ জুন শুক্রবার বিকেলে বসে গ্রামীণ এ মেলা। মেলায় আশপাশের গ্রাম ছাড়াও দূর দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষের আগমন ঘটে।
জয়পুরহাটের এই সন্যাসতলীতে হিন্দু ধর্মের লোকজন মন্দিরে সন্যাসীকে পূজা দিয়ে দিনটি উদযাপন করলেও এটি মূলত হিন্দু-মুসলিমের একটি মিলন মেলা। বিকেলের পর সময় গড়ানোর সাথে সাথে মেলায় মানুষের ঢল নামে। মেলাকে ঘিরে জামাই এবং স্বজনদের আপ্যায়ন চলে মেলা সংলগ্ন আশপাশের কয়েক গ্রামে। রং বেরংয়ের ঘুড়ি মেলার আকর্ষণ হলেও বর্তমানে মেলায় বসে রকমারি মিষ্টির দোকান। যেখানে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি ও চিনির শাহী জিলাপি আকৃষ্ট করে মেলায় আসা দর্শকদের। মেলায় বাঁশ কাঠ ও লোহার তৈরি সংসারের বিভিন্ন সামগ্রী ও মাছ ধরার নানা যন্ত্রের আমদানিও নজর কাড়ে মানুষের। শিশুদের খেলাধুলার জিনিসপত্র এবং কসমেটিক্স এর দোকানও বসে দুইদিনের এ মেলায়। জামাই-মেয়ের পাশাপাশি স্বজনদের আপ্যায়নের রীতি এলাকায় চলে আসছে এ মেলাকে ঘিরেই। স্থানীয় মহব্বতপুর গ্রামের আনিছুর রহমান, দেওগ্রামের জেমিয়ার হোসেন বলেন, আমাদের বাবা-দাদারা এই মেলা করতে এসেছিল, আমরাও এই মেলাতে কেনাকাটা করতে আসি।
এ মেলাকে ঘিরে আশে পাশের জেলা থেকে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে। মেলাতে আসা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার ফারুক হোসেন, বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার নিতাই চন্দ্র, দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা আলিফ হোসেন বলেন, প্রতি বছর এই সন্যাসতলী মেলাতে আসি আমরা শুধু ঘুড়ি কিনতে। ঘুড়ি ছাড়াও এখানে সব ধরনের জিনিসপত্র পাওয় যায়।
সন্যাসতলী মেলা কমিটির সভাপতি মন্টু চন্দ্র বলেন, প্রতি বছরের মত এবারেও বসেছে সন্যাশতলী মেলা এই মেলা প্রায় দুশ বছরের পুরাতন মেলা। এ মেলা হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলে পরিচালনা করে থাকি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা এ মেলায় আসেন।
ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, এই সন্যাসতলী মেলাকে ঘিরে আশপাশের জেলা থেকে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে। মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে পানিতে ডুবে রাফি আহমেদ হিমেল (৮) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
আজ ১৩ অক্টোবর শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে কেরানীগঞ্জের সারিঘাট এলাকার খালে এ ঘটনা ঘটে।
মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালে রাফির বাবা গাড়িচালক রায়হান মিয়া জানান, তারা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়ায় থাকেন। দুপুরে ছেলেকে নিয়ে বাড়ির পাশে সারিঘাট খালে গোসল করতে যান। সেখানে গোসলের এক পর্যায়ে সাঁতার না জানা রাফি পানিতে তলিয়ে যায়। এরপর তার নজরে এলে পানির নিচ থেকে তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন।
স্বজনরা জানায়, দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় রাফি। সে স্থানীয় একটি স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে পড়তো।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার:
আজ মহান বিজয় দিবস, বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখন্ডের নাম জানান দেয়ার দিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৫ মার্চে গণহত্যা শুরু হলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদ ও দু’লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক সেনাদের আত্ম সমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। সেই হিসাবে বিজয়ের ৫১ বছর পূর্তির দিন কাল। জাতীয় পর্যায়ে এদিন ঢাকায় প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তববক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিতিতে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বাংলাদেশে অবস্থনরত বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, মুক্তিযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণকারী আমন্ত্রিত ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যগণ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
এছাড়া সকাল সাড়ে ১০টায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রীও এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। এ উপলক্ষ্যে ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি পরাধীনতার শেকল ভেঙ্গে প্রথম স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করে। ২৪ বছরের নাগপাশ ছিন্ন করে জাতির ভাগ্যাকাশে দেখা দেয় এক নতুন সূর্যোদয়। প্রভাত সূর্যের রক্তাভা ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। সমস্বরে একটি ধ্বনি যেন নতুন বার্তা ছড়িয়ে দেয় ‘জয়বাংলা’ বাংলার জয়, পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল। মহামুক্তির আনন্দ ঘোর এই দিনে এক নতুন উল্লাস জাতিকে প্রাণ সঞ্চার করে সজিবতা এনে দেয়। যুগ যুগ ধরে শোষিত বঞ্চিত বাঙালি চোখে আনন্দ অশ্রু আর ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় সামনে। বিন্দু বিন্দু স্বপ্নের অবশেষে মিলিত হয় জীবনের মোহনায়। বিশ্ব কবির সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, জীবনানন্দের রূপসী বাংলা, রূপের তাহার নেইকো শেষ, বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ। বাঙালি যেন খুঁজে পায় তার আপন সত্তাকে।
আদি বাঙালির সাংস্কৃতিক ও আর্থ-সামাজিক জীবন এবং ক্রমবিকাশের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে বাঙালির শৌর্য-বীর্য যেন আর একবার ধপ করে জ্বলে উঠে। প্রথম আগুন জ্বলে ’৫২-র একুশে ফেব্রুয়ারি। ফাগুণের আগুনে ভাষা আন্দোলনের দাবি আর উন্মাতাল গণমানুষের মুষ্টিবদ্ধ হাত একাকার হয়ে যায় সেদিন। ভাষার জন্য প্রথম বলীদান বিশ্ববাসী অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করে। সেই থেকে শুরু হয়ে যায় বাঙালির শেকল ভাঙার লড়াই। পাকিস্তানিদের সাথে হিসেব-নিকেশের হালখাতার শুরুতেই রক্তের আঁচড় দিয়ে বাঙালি শুরু করে তার অস্তিত্বের লড়াই। পলাশীর আম্রকাননে হারিয়ে যাওয়া সেই সিরাজদ্দৌলা আবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রূপে এ লড়াইয়ে সেনাপতি হিসেবে আবির্ভূত হন। ’৫২ সালে যে আগুন জ্বলেছিল রাজধানী ঢাকা শহরে সে আগুন যেন ক্রমান্বয়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকে দেশের আনাচে-কানাচে সবখানে। যে আগুন জ্বলেছিল মোর প্রাণে, সে আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে সবখানে সবখানে। বাঙালির বুকের ভেতর জ্বলে উঠা আগুন যেন সহস্র বাঙালির মধ্যে প্রবাহিত হতে থাকে।
বাষট্টি, ঊনসত্তর এবং সত্তর শেষ করে একাত্তরে বাঙালি জাতি হিসাব করতে বসে। হিসেব-নিকেশ আর দেনা-পাওনায় পাকিস্তানিরাও বসে নেই। তারাও অংক কষতে থাকে কিভাবে বাঙালি জাতিকে যুগ যুগ ধরে পরাধীনতার শেকল পরিয়ে রাখা যায়। তাদের কাছে এই অলংকারই বাঙালির শ্রেষ্ঠ প্রাপ্য। ঘড়ির কাঁটার টিক টিক শব্দ জানিয়ে যায় সময় আসছে হিসেব নিকেশ চুকিয়ে দেয়ার পালা। অবশেষে গভীর কালো নিকষ আঁধার থেকে জেগে উঠে হিরন্ময় হাতিয়ার। ৭ মার্চ একাত্তরের বিশাল জনসমুদ্র থেকে যুগের কবি, মহাকাব্যের প্রণেতা বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠ ঘোষণা দেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তি সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। রক্ত যখন দিয়েছি তখন আরো দেব, তবুও এদেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। এই একটি মাত্র উচ্চারণে যেন বাঙালি সত্যিকার দিক-নির্দেশনা পেয়ে যায়। চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে থাকে বাঙালি। বাঙালি বুঝে যায় শেষ কামড় দেয়ার সময় আসন্ন। পাকিস্তানিরাও আর বসে নেই। পুরো জাতিকে স্তব্ধ করার লক্ষ্যে মারাত্মক মারণাস্ত্র নিয়ে ২৫ মার্চ একাত্তর ঘুমন্ত জাতির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু হয় বাঙালি নিধন যজ্ঞ। বাতাসে লাশের গন্ধ, বারুদে বারুদে আর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন আকাশ। এ যেন এক প্রেতপুরী। আকাশে শকুনের উদ্যত থাবা, নিচে বিপন্ন মানুষের বিলাপ। হায় বাংলাদেশ। একি বাংলাদেশ। এ যেন এক জ্বলন্ত শ্মশান। কিন্তু ঠিকই হাড়ের আর খুলির স্তুপ একদিন পাললিক হয়।
মুক্তি পাগল বাংলার দামাল ছেলেরা স্বাধীনতার রক্ত সূর্যকে ছিনিয়ে আনবে বলে একদিন অস্ত্র কাঁধে তুলে নেয়। ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার সবাই শরিক হয়ে থাকে এ লড়াইয়ে। যতই দিন অতিবাহিত হতে থাকে আরো শাণিত হয় প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার অস্ত্র। লক্ষ্য স্থির রেখে শত্রু হননে দৃঢ়তায় এগিয়ে যায় বীর বাঙালি। ইতোমধ্যেই বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন স্পষ্ট হয়ে উঠে। প্রতিবেশী ভারতও জড়িয়ে পড়ে বাঙালির ভাগ্য যুদ্ধে। ডিসেম্বর শেষ পর্যায়ে এসে চূড়ান্ত রূপ নেয় এই যুদ্ধের।
অবশেষে ন’মাসের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটিয়ে বাঙালি জাতির জীবনে এলো নতুন প্রভাত। ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সূচিত হল মুক্তিযুদ্ধের অনিবার্য বিজয়। এর মধ্য দিয়ে এলো হাজার বছরের কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা। বাঙালি জাতি এদিন অর্জন করে তার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর ২ লাখ ধর্ষিতা মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীনতা ধরা দেয় বাঙালির জীবনে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিয়াল্লিশহর এলাকায় বন্ধুর ছুরিকাঘাতে রনি ঢালী (১৭) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ১৮ মার্চ শনিবার রাত ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বিয়াল্লিশহর মসজিদের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রনি জেলা শহরের ভাদুঘর এলাকার মানিক ঢালীর ছেলে। এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত রাজু (১৭) পলাতক রয়েছে।
নিহতের স্বজনদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রনি এবং রাজু দুইজনের বাড়ি ভাদুঘরে। রনির সঙ্গে কোনো একটি বিষয় নিয়ে রাজুর কথা কাটাকাটি হয়। তবে কী নিয়ে কথা কাটাকাটি- তা স্পষ্ট করে জানা যায়নি। এর জেরে শনিবার রাতে বিয়াল্লিশহর এলাকায় রনিকে একা পেয়ে ছুরিকাঘাত করে রাজু। পরে স্থানীয়রা রনিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর থেকেই রাজু পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে আন্তঃনগর সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের সংঘর্ষ হয়েছে। উপজেলার হাসানপুর রেল স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনের পেছন থেকে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ধাক্কা দিলে ১৬ এপ্রিল রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুই ট্রেনের সংঘর্ষে সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে অন্তত অর্ধশত যাত্রী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
লাকসাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন চৌধুরী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
ওসি জসিম উদ্দিন বলেন, মালবাহী ট্রেনটি হাসানপুর স্টেশনে দাঁড়িয়েছিল। এ সময় চট্টগ্রাম থেকে আসা সোনার বাংলা এক্সপ্রেস একই লাইনে ঢুকে পেছন থেকে মালবাহী ট্রেনটিকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জসিম উদ্দিন বলেন, মালবাহী ট্রেনটিকে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ধাক্কা দিলে চারটি বগি মালবাহী কন্টেইনারের ওপর উঠে যায়। এ ছাড়া অন্য বগিগুলো লাইনচ্যুত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরাও জানান, সোনার বাংলা এক্সপ্রেস স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দেয়।
অনলাইন ডেস্ক :
নরসিংদীতে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, বিরোধী দল কাকে বলে, তা বিএনপি জানেই না। সেই সক্ষমতাও তাদের নেই। সেই সাথে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির অস্তিত্ব থাকবে কিনা এখন সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শেখ হাসিনার কারিশমার কাছে সবাই হেরে গেছে।
এখন কাজ দেশকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। দেখেন নির্বাচনের পর বহির্বিশ্বের সুর পাল্টে গেছে।
আজ ১৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে নরসিংদী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা পর্যায়ের সকল সরকারি দপ্তর প্রধানগণের সঙ্গে মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলমের সভাপতিত্বে মতবিনিময়সভায় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
মতবিনিময়সভায় শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৫ বছরে জেলায় প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। এরমধ্যে ১৯১ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে এবং ১২৩টি প্রকল্প বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছে। এছাড়া জেলায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে উন্নয়ন হিসেবে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি মেডিক্যাল কলেজ নির্মানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ‘বেলাবতে একটি শিল্পপার্ক নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
’ পাশাপাশি মনোহরদীতে একটি বিসিক নির্মাণের আশাবাদ ব্যক্ত করেন শিল্পমন্ত্রী।
এরপর বিকেলে নরসিংদী জেলা আইনজীবী সমিতির এমএ মজিদ ভবন মিলনায়তনে আইনজীবীদের সঙ্গে এক মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন শিল্পমন্ত্রী। পরে সন্ধ্যায় মনোহরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।