চলারপথে রিপোর্ট :
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা, প্রকৃতির সৌন্দর্য বর্ধন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং সবুজ পরিবেশ গড়তে আখাউড়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভিন্ন জাতের ফলজ গাছের চারা বিতরণ করা হয়েছে।
প্রকৃতি ও পরিবেশ ক্লাবের উদ্যোগে গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ধলেশ্বর গ্রামে রাবিয়া খাতুন স্মৃতি পাঠাগার চত্বরে আকছির এম চৌধুরী চ্যারিটি ট্রাস্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি করে চারা বিতরণ করা হয়। এসময় ছাত্রছাত্রীকে বলা হয় গাছের যত্ন নিলে ফাইনাল পরীক্ষায় অতিরিক্ত পঞ্চাশ নম্বর দেওয়া হবে।
পরিবেশবাদী সংগঠন আখাউড়া প্রকৃতি ও পরিবেশ ক্লাবের আহ্বায়ক সাংবাদিক রুবেল আহমেদের সভাপতিত্বে চারা বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওই সংগঠন উপদেষ্টা ও রাবিয়া খাতুন স্মৃতি পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট আকছির এম চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এশিয়া সানি ইন্ডাস্ট্রি ইন্টারন্যশনাল কোঃ লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার চিনা নাগরিক জেসি জ্যাং ও মরটন সেনেটারিওয়ার ম্যানুফেকচার লিমিটেডের সেলস ম্যানেজার পেনসন সি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট আকছির এম. চৌধুরী বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে জনসংখ্যার অধিক চাপে পড়ে বেশিরভাগই ফসলি জমি উজাড় করে তৈরি করা হচ্ছে ঘরবাড়ি। প্রতিনিয়ত গাছপালা কাটা হচ্ছে। তাই পরিবেশ আজ হুমকির মুখে। এভাবে ব্যাপকহারে গাছপালা ও ফসলি জমি বিলীন হতে থাকলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গাছ লাগানোর বিকল্প নেই। পরিবেশ রক্ষার জন্য সবাইকে বেশি বেশি গাছ লাগানোর আহবান জানান।
অনুষ্ঠান শেষে দুজন বিদেশি নাগরিক পাঠাগার চত্বর ও আকছির এম চৌধুরী চ্যারিটি ট্রাস্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে একটি ঔষধি গাছ ও দুটি ফলজ গাছ রোপন করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় মায়ের মৃত্যু শোক সহ্য করতে না পেরে বিলাপ করতে-করতে মারা গেলেন ঝান্টু মোল্লা (৫০) নামে এক ব্যক্তি। রোববার রাত ৮টায় উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়া মোল্লাবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
আজ ৬ নভেম্বর সোমবার বেলা ১১টায় জানাযা শেষে ঝান্টুর মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি ওই গ্রামের মৃত ইদ্রিস মোল্লার ছেলে।
এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাতে বার্ধক্যজনিত কারণে ঝান্টুর মা রেজিয়া খাতুন (৭০) মারা যান।
স্থানীয় এলাকাবাসী দাবি করেছেন, মায়ের মৃত্যুতে মাতম করছিলেন বড় ছেলে ঝান্টু মোল্লা। শোক সইতে না পেরে বিলাপ করতে থাকেন তিনি। এতেই তার মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে মা-ছেলের মৃত্যুতে ঝান্টু মোল্লার স্ত্রী হাজেরা ও দুই মেয়ে সুমাইয়া এবং সামিয়া অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারা পারিবারিকভাবে প্রাথমিক চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা হুমায়ুন কবীর, সোহাগ ভূঁইয়া ও আলম মোল্লা বলেন, ঝান্টু মোল্লা মা ভক্ত ছিলেন। শুক্রবার দিবাগত রাতে তার মায়ের মৃত্যুর পর সে লাশের পাশে বসে কাঁদছিলেন। তার মাকে কবরস্থ করার পর শোক সইতে না পেরে বিলাপ করতে থাকেন তিনি। রবিবার রাত ৮টার দিকে বুকে ব্যথা ওঠে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
সোমবার জোহরের নামাজের পর জানাযা শেষে ঝান্টু মোল্লার মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এর আগে শনিবার একই কবরস্থানে তার মায়েরও দাফন করা হয়েছে।
আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. রহিম মিয়া বলেন, মায়ের শোকে ছেলেরও মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক। শুনেছি তাদের শোকে পরিবারের আরো তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় চার হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মোঃ রুবেল ভূইয়া (২৮) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ ২৩ সেপ্টেম্বর সোমবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার তুলাই শিমুল গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত রুবেল ভূইয়া উপজেলার মিনারকোট গ্রামের লিটন ভূঁইয়ার ছেলে।
এ ব্যাপারে আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবুল হাসিম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার সকাল নয়টার দিকে তুলাই শিমুল গ্রামের রাস্তা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার কাছ থেকে চার হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত রুবেল ভূইয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আগেও তিনটি মাদকের মামলা রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কিশোরগঞ্জের ভৈরব মেঘনায় রেলওয়ে সেতু পার হওয়ার সময় চলন্ত ট্রেন থেকে পা পিছলে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ার তানভীর নামে এক যুবক। নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ১৭ ঘণ্টা কেটে গেলেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার সন্ধানে নদীতে অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল।
আজ ১ জুন শনিবার সকাল ১০টায় ভৈরব নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে ভৈরবের মেঘনা নদীর ওপর শহীদ হাবিলদার রেলওয়ে সেতু পাড়ি দেওয়ার সময় চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তানভীর আখাউড়া পৌর শহরের দেবগ্রাম এলাকার মেরাজ মিয়ার ছেলে।
জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল তানভীরের। সেই মোতাবেক মালয়েশিয়া যেতে বাড়িতে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বের হন। ছেলেকে বিমানে তুলে দিতে বাবাও বাড়ি থেকে ঢাকায় আসেন।
বিমানবন্দর এসে হঠাৎ জানতে পারে অনিবার্য কারণে মালয়েশিয়া যাওয়ার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এরপর ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে নোয়াখালীগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে করে বাবার সঙ্গে নিজ বাড়ি ফিরছিলেন তানভীর। ট্রেনটি মেঘনায় রেলওয়ে সেতু পাড়ি দেওয়ার সময় হঠাৎ দরজা থেকে পা পিছলে সে নদীতে পড়ে যান। পরে নদীতে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তানভীরের সন্ধান মেলেনি।
ভৈরব নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান বলেন, চলন্ত ট্রেন থেকে মেঘনা নদীতে পড়ে এক যুবক নিখোঁজ হয়েছেন। এরপর থেকে তার সন্ধানে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল।
চলারপথে রিপোর্ট :
রেলপাত বসানোর কাজ পুরোপুরি শেষ। আনুষঙ্গিক অন্যান্য ফিটিংস লাগানোর কাজও শেষ হয়েছে। চলছে শেষ মুহূর্তের ঘষামাজা। সক্ষমতা যাচাইয়ের কাজও একই সঙ্গে চলমান।
সংশ্লিষ্টরা নিয়মিত আসছেন এর দেখভাল করতে। বলা চলে, পুরোপুরি প্রস্তুত আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ। অপেক্ষা ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের। আশা করা হচ্ছে, এ রেলপথ চালু হলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়বে। যাত্রী চলাচলে আরো ব্যাপকতা পাবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী উল্লিখিত পথে মঙ্গলবার পরীক্ষামূলকভাবে এ পথে ট্রেন চালানোর কথা। তবে শোকের মাসের কারণে সেটি পিছিয়ে দেওয়া হয়। বুধবার এ বিষয়ে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য সভায় পরীক্ষামূলক চলাচলের দিনক্ষণ ঠিক হতে পারে।
সেপ্টেম্বরে পরীক্ষামূলক চলাচলের পর ওই মাসেই দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী রেলপথটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করতে পারেন বলে আভাস পাওয়া গেছে।
এদিকে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মঙ্গলবার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি দেখতে আসেন। প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তারা। প্রকল্প কর্মকর্তারা পরিদর্শনের সময় গত কয়েক দিনের মতো ‘গ্যাং কার’ নামে পরিচিত ‘ট্র্যাক কার’ পরিচালনা করা হয়। রেলওয়ের বিশেষ ওই কারটি আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে সীমান্তবর্তী শিবনগর পর্যন্ত ৬.৭৮ কিলোমিটার অংশ পর্যন্ত চলাচল করে।
গত ১৬ আগস্ট ‘গ্যাং কার’ বা ‘ট্র্যাক কার’ চালানো হয়ে। ‘গ্যাং কার’ নামে পরিচিত ‘ট্র্যাক কার’ বিশেষ আকৃতিতে নির্মিত রেলের ‘ইঞ্জিন’। এর সঙ্গে দুটি বগি সংযুক্ত করে উল্লিখিত পথে চালানো হয়।
দুই দেশের এ রেলপথের দৈর্ঘ্য ১২.২৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে ৬.৭৮ কিলোমিটার। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়ন ৫৭ কোটি পাঁচ লাখ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। প্রথমে প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ১৮ মাস। এরপর করোনার প্রভাবসহ নানা কারণে পাঁচ দফা মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ নির্মাণকাজের মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী বছরের জুন নাগাদ করা হয়েছে।
প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভারতের নয়াদিল্লির টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের বাংলাদেশ প্রধান শরৎ শর্মা মঙ্গলবার পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘গ্যাং কারে উঠে বাংলাদেশ অংশের পুরো রেললাইন পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। আরো কী কী কাজ করা দরকার সেটি পর্যবেক্ষণ করা হয়। কয়েক দিনের মধ্যেই রেলপথটি পুরোপুরি চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে।’
বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী ও আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. আবু জাফর মিয়া বলেন, ‘সীমান্ত পর্যন্ত রেললাইন বসানো হয়ে গেছে। ফিটিংস লাগানোও শেষ হয়েছে। লেভেল ঠিক রাখার কাজ চলছে। ইমিগ্রেশন ভবনের কাজ যেটুকু বাকি আছে, সেটি দ্রুত শেষ করা হবে।’ প্রকল্পের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
একাধিক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে রেলওয়ের এ সংযোগ প্রকল্পটি চালু হলে মূলত ভারতীয়রাই বেশি লাভবান হবেন। বিশেষ করে ভারতীয়রা আগরতলা থেকে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে কলকাতা গেলে বর্তমানের চেয়ে তিন ভাগের এক ভাগ সময় কম লাগবে। সূত্র : কালেরকণ্ঠ