চলারপথে রিপোর্ট :
কক্সবাজারের টেকনাফে অপহরণের পর ৬ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা অপহৃত এক শিশুকে ৬ দিন পর উদ্ধার করেছে পুলিশ। অপহৃত শিশু টেকনাফের হ্নীলা মৌলভীবাজার নাইক্ষ্যংখালী গ্রামের মো. ইউনুস ও সাজেদা বেগমের ছেলে খায়রুল আমিন (১২)। শিশুটি মৌলভীবাজার ইসলামিক আজিজিয়া ফয়জুল উলুম মাদ্রাসার হিফজ খানায় পড়ালেখা করে। শিশু অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১ নারীসহ ৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
তারা হলেন নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. আলম (২৭), মৃত ইজ্জত আলীর ছেলে আহমদ হোসেন (৫২), আহমদ হোসেনের ছেলে মো. পারভেজ (২০), সাইফুল ইসলামের স্ত্রী আজিজা খাতুন (২১)। এরা সকলেই হ্নীলা ইউনিয়নের মরিচ্যাঘোনা বড়বিল গ্রামের বাসিন্দা।
অপহৃত পরিবারের অভিযোগের বরাত দিয়ে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবদুল হালিম জানান, শুক্রবার সকাল ১০টায় হ্নীলা বাজার থেকে রঙ্গিখালী বন্ধু ফরহাদের বাসায় যাওয়ার জন্য হ্নীলা বাজার থেকে জনৈক আলমের ইজিবাইক (টমটম) গাড়িতে উঠে। পানখালী যাওয়ার পথে ভিকটিম খায়রুল আমিনের বন্ধু ফরহাদ (১২) এর সাথে দেখা হয়। ফরহাদ ভিকটিমকে তার বাসায় যাওয়ার জন্য বলে এবং কিছুক্ষণ পরে হ্নীলা বাজার থেকে আসার কথা বলে। ভিকটিম খায়রুল আমিনকে নিয়ে ইজিবাইক (টমটম) এর ড্রাইভার আলম পানখালী যাওয়ার পথে কৌশলে তার অপর সহযোগীকে গাড়িতে তোলে। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক ভিকটিম খায়রুল আমিনকে টমটম গাড়ি নিয়ে রঙ্গিখালী পাহাড়ের ঢালায় নিয়ে যায়।
সেখানে ভিকটিম খায়রুল আমিনের হাত বেঁধে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। কিছুক্ষণ পর টমটম ড্রাইভার আলম তার গাড়ি নিয়ে সেখান থেকে চলে আসে। একই তারিখ রাত ১০টায় ভিকটিম খায়রুল আমিনকে পাহাড়ের উপরে তুলে অবস্থান করতে থাকে এবং রাত ১টায় ভিকটিম খায়রুল আমিনকে নিয়ে একজন অপহরণকারীর বাড়িতে চলে আসে। ভিকটিম খায়রুল আমিনকে অপহরণকারী সদস্য তার বাড়িতে নিয়ে আসলে ধৃত আজিজা খাতুন ভিকটিম ও তার স্বামীকে খাবার খেতে দেয় এবং তার বাড়িতে রাতে আটক রাখে।
পরদিন ১৭ জুন ভোরে ফজরের আজানের সময় টমটম ড্রাইভার আলমের গাড়িতে করে অপহরণকারীরা ভিকটিমকে পাহাড়ের পাদদেশে নিয়ে পুনরায় পাহাড়ের উপরে উঠে অবস্থান করতে থাকে এবং রাত ১টায় অপহরণকারীরা ভিকটিমকে সামনে রেখে তার মায়ের মোবাইলে ফোন করে ৬ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এসময় অপহরণকারীরা ভিকটিমকে গাছের ডাল দিয়ে মারধর করে ভিকটিমের মাকে কান্না শোনায়।
ভিকটিমের মামা থানায় নিখোঁজ ডায়রি করার পর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয়। অপহরণকারীদের অবস্থান জেনে স্থানীয় লোকজন ও গ্রাম পুলিশের সহায়তায় দফায় দফায় পাহাড়ের উপর বিভিন্ন ঘর-বাড়ি তল্লাশি করা হয়। অপহরণকারীরা অত্যন্ত অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকে।
টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপরেশন) আব্দুর রাজ্জাক নেতৃত্বে অফিসারসহ পুলিশ ফোর্সের একটি চৌকস অভিযানিক দল সার্বক্ষনিক উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখে। অভিযান পরিচালনাকালে ২০ জুন সন্ধ্যায় টমটম ড্রাইভার আলমকে আটক পূর্বক ভিকটিম উদ্ধারের জন্য পাহাড়ের উপর অভিযান চলমান রাখার এক পর্যায়ে মঙ্গলবার ভোর ৫টায় পাহাড়ের উপর ভিকটিমসহ অপহরণকারীদের সন্ধান পেয়ে তাড়া করলে অপহরণকারীরা ভিকটিম খায়রুল আমিনকে রেখে পালিয়ে যায়।
থানা পুলিশ সকাল সাড়ে ৫টায় ভিকটিম খায়রুল আমিনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। ঘটনায় জড়িত অপহরণকারীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রেখে ভিকটিমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। শিশু অপহরণ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. আলম (২৭), মৃত ইজ্জত আলীর ছেলে আহমদ হোসেন (৫২), আহমদ হোসেনের ছেলে মো. পারভেজ (২০), সাইফুল ইসলামের স্ত্রী আজিজা খাতুনকে (২১) আটক করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় এক সন্তানের জননী ডলি রানী দেবনাথ (২৬) নামের এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ফেসবুক চ্যাটিংয়ের জের ধরে ডলির স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন ওই গৃহবধূকে হত্যা করেছে বলে স্থানীয়রা জানায়।
১৯ ফেব্রুয়ারি বুধবার রাতেই এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর ভাই পিন্টু দেবনাথ বাদী হয়ে স্বামী ঝন্টুসহ চার জনের বিরুদ্ধে কুমিল্লার বাঙ্গরা থানায় মামলা করেছেন।
আজ ২০ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বাঙ্গরা থানার ওসি মাহফুজুর রহমান দুপুরে কাছে মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, ইতিমধ্যে ওই গৃহবধূর স্বামী ঝন্টু দেবনাথ (৩২)-কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ, মামলার এজাহার ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার জিনদপুর ইউনিয়নের কড়ইবাড়ি গ্রামের অবনী দেবনাথের একমাত্র মেয়ে ডলি রানী দেবনাথের সঙ্গে ২০১৭ সালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা হাটাশ গ্রামের দুলাল দেব নাথের ছেলে কাপড় ব্যবসায়ী ঝন্টু দেবনাথের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ছয় বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বিয়ের পর ডলি ও ঝন্টুর মথ্যে সুন্দর দাম্পত্য জীবন চললেও, ডলির সাথে অন্য কারো ফেসবুকে চ্যাট করাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ফেসবুকের চ্যাটিংযের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকতে পারে।
ডলির শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি, ঘরের জানালার শিকে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ডলি।
গৃহবধূ ডলির বড় ভাই ও মামলার বাদী ব্যবসায়ী পিন্টু দেবনাথ অভিযোগ করে বলেন, ‘ফেসবুকে চ্যাটিং হলো একটি অপপ্রচার। এটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কারণ, পারিবারিক কলহ নিয়ে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রায়ই আমার বোনকে মারধর করত। আমার বোন প্রায়ই আমাকে টেলিফোনে বলত, তার স্বামী ঝন্টু ও শ্বশুর দুলাল নাকি তাকে ছোটখাটো ভুলের জন্যও প্রচণ্ড মারধর করে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরো বলেন, শেষ পর্যন্ত আমার আদরের একমাত্র বোনটাকে সত্যি সত্যিই পাষণ্ড ঝন্টুসহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মেরেই ফেলল।
কুমিল্লার বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মো. মাহফুজুর রহমান আজ দুপুরে গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা বাড়িতে গিয়ে গৃহবধূর মরদেহ ঝুলন্ত নয়, মাটিতে শোয়ানো অবস্থায় পেয়েছি।
তবে মরদেহের গলায় আঘাতের কালো চিহ্ন রয়েছে। গৃহবধূর ভাই বাদী হয়ে স্বামী ঝন্টুসহ চারজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। ওই গৃহবধূর স্বামী ঝন্টুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটি ময়নাতদন্তের পর বোঝা যাবে।’
অনলাইন ডেস্ক :
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে ৩০০ বিচারক চেয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
আজ ১ নভেম্বর বুধবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে সহযোগিতা চান সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। সুপ্রিম কোর্ট কার্যালয়ে প্রধান বিচারপতির খাস কামরায় এ বৈঠক হয়।
সূত্র জানায়, এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য সিইসিকে পরামর্শ দেন প্রধান বিচারপতি।
ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর সিইসি হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা মূলত প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসেছিলাম। প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের পর তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিনন্দন জানিয়েছি। সেই সঙ্গে শুধু একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। সেটা হচ্ছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিচারকরা ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটির দায়িত্ব পালন করেন। আগামী ডিসেম্বরে আদালতে অবকাশ থাকবে। সে সময়ে অধস্তন আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা যেন দায়িত্ব পালন করতে পারেন, সে বিষয়টি প্রধান বিচারপতিকে জানিয়েছি। তিনি আমাদের বিষয়টি বিবেচনায় রাখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।’ সিইসি বলেন, প্রধান বিচারপতি তাদের যথেষ্ট সময় দিয়েছেন এবং সৌজন্য বিনিময় করেছেন।
তপশিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন শেষে গেজেট হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী আচরণবিধির বিষয়টি ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটি পর্যবেক্ষণ করে। এই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয় নির্বাচন কমিশন। ওই কমিটিতে সারাদেশে সিনিয়র সহকারী জজ ও যুগ্ম জেলা জজ পর্যায়ের বিচারকরা দায়িত্ব পালন করেন। সিইসি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতিকে জানিয়ে রেখেছি, যাতে ডিসেম্বর মাসে ওনারা (বিচারকরা) দায়িত্ব পালন করেন। আর জানুয়ারি মাসে আগের মতোই দায়িত্ব পালন করবেন।’ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার বিষয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সিইসি বলেন, এমন কোনো আলোচনা হয়নি।
নির্বাচন কমিশনারদের নিয়ে দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে সুপ্রিম কোর্টে যান সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। তাঁর সঙ্গে ছিলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, মো. আনিছুর রহমান, নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম এবং যুগ্ম সচিব (আইন) মো. মাহবুবার রহমান সরকার। বৈঠকে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালের নির্বাচনে ১২২টি ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। নিম্ন আদালতের বিচারকদের নিয়ে এসব কমিটি করা হয়।
জায়েদুল কবির ভাঙ্গি, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর :
আজ শুক্রবার সকালে গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য হাজার হাজার মানুষের ঢল নেমেছে। ফলে মানুষের তুলনায় বাস সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে ঘরমুখো মানুষের এখন শেষ ভরসা এখন ট্রাক, পিকআপসহ ছোট যানবাহন। এসব যানবাহনে যেতে গিয়ে দ্বিগুন তিনগুন বা তারচেয়েও বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। এতে বড় রকমের ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
আজ ৬ জুন শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে গাজীপুর মহানগরের চান্দনা-চৌরাস্ত ও ভোগড়া বাইপাস মোড় এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে অনেকে স্ত্রী-সন্তান ও পরিবারের অন্যদের নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু তারা বাসে উঠতে পারছেন না।
কারণ বাসে কোন সিটই খালি নেই, লোকে ঠাসা। স্থানীয় পোশাক শ্রমিক জাহানারা বেগম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর তাদের বেতন-বোনাস হয়েছে। পরদিন শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে স্বামী-সন্তানদের নিয়ে ভোগড়া বাইপাস মোড় এলাকায় গ্রামের বাড়ি রংপুরে যাওয়ার জন্য বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু সাড়ে ৮টায়ও তারা বাসে চড়তে পারেননি। তাই তারা পাশের পেয়ারা বাগান এলাকা থেকে ৮শ’ টাকা ভাড়ায় ট্রাকে উঠেছেন।
স্থানীয় পোশাক কারখানার শ্রমিক দম্পতি সানোয়ার হোসেন-জাহানারা বেগম। তারা জানান, চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় কিশোরগঞ্জ যাওয়ার জন্য শুক্রবার ৭টা থেকে বাসের অপেক্ষা করছেন তারা। সকাল ৯টায়ও তারা বাসে উঠতে পারছেন না। বিকল্প যান সিএনজি চালিত অটোতে যেতে গেলে দুইশ/ আড়াইশ’ টাকার ভাড়ার স্থলে ৮শ’ টাকা থেকে এক হাজার টাকা ভাড়া চাচ্ছে অটো চালকেরা। শেষে ৫শ’ টাকায় পিকআপে উঠেছেন তারা। তারা জানান, পাশে ডিউটিতে থাকা পুলিশকে জানিয়েও কোন প্রতিকার না পেয়ে পিকআপে উঠেছেন। তাদেও মতো শত শত যাত্রী এমন ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন।
সড়কে এসে গাড়ির জন্য তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। বিশেষ করে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে পরিবহন সংকট চরমে। এতে ঘরমুখো মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
গাজীপুর মহানগরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টও মো. আক্তারুজ্জামান জানিয়েছেন, আজ শুক্রবার ভোরে চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় একটি লরি বিকল পয়ে পড়লে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন আটকা পড়ে গাড়ির দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হয় প্রায় এক ঘন্টা পর লরিটি উদ্ধার করলে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। তবে এর এক ঘন্টা পরও গাড়ির চাপ কমেনি। এদিকে মনোযোগ দিতে গিয়ে কারা বেশি ভাড়া নিচ্ছে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি। সকাল সাড়ে ৯টার দিকেও গাজীপুরের চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের প্রচন্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সরেজমিন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় দেখা যায়, গাড়ি না থাকায় হাজার হাজার যাত্রী সড়কে দাঁড়িয়ে আছেন। অনেকে ঝুঁকি নিয়ে মোটরসাইকেল, পশুবাহী ট্রাক পিকআপে বাড়ি ফিরছেন।
কালিয়াকৈর পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার পোশাক শ্রমিক অনোয়ার হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার ‘‘কারখানা ছুটি হয়েছে দুপুরে। এরপর শুক্রবার সকালে গ্রামের বাড়ি বগুড়ায় যাওয়ার জন্য অটোরিকশায় চন্দ্রায় যাই৷ সেখানে গিয়ে দেখি হাজার হাজার যাত্রী। কোন বাস-গাড়ি খালি নেই। কখন বাস পাব আর কখন বাড়ি পৌঁছব জানি না।’’
নাওজোর হাইওয়ে পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সওগাতুল আলম বলেন, গতকাল ‘‘দুপুরে কলকারখানা ছুটির পর বিকেলে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা মোড় ও সফিপুর এলাকায় যাত্রীদের ঢল নামে। শুক্রবার সকালেও একই অবস্থা চলছে। যানবাহন সঙ্কটে কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে। মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে।’’
চলারপথে রিপোর্ট :
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার নামাপাড়া এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শাহরিয়ার শ্রাবণ (২০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন ফারুক হোসেন (৪০) নামের আরো একজন। আজ ১২ আগস্ট শনিবার বিকেলে ঘটনা ঘটে। শ্রাবণ মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে।
মৃতের বড় ভাই আদিত্য ইসলাম দিপু জানান, তারা পুরাতন এসি কেনা-বেচা ও মেরামতের কাজ করেন। ধোলাইখাল এলাকায় তাদের দোকান রয়েছে। পূর্ব নামাপাড়া এলাকার একটি প্রতিষ্ঠানের পুরাতন এসি খুলে নামানোর সময় পাশে থাকা বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের তারের সঙ্গে এসির পাইপ স্পর্শ লেগে বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন তারা।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া।
তিনি বলেন, মরদেহটি হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। অপরজন চিকিৎসাধীন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবিহিত করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বহুল কাঙ্ক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে এই রেলপথ। উদ্বোধনের আগে আজ ১৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন থেকে ভারত সীমান্তবর্তী শিবনগর পর্যন্ত একটি খালি কনটেইনার ট্রেন চালানো হয়েছে।
এ সময় রেলপথ নির্মাণকারী ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের কান্ট্রি ম্যানেজার শরৎ শর্মা ও আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ প্রকল্পের পরিচালক (বাংলাদেশ অংশ) মো. আবু জাফর মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৮ সালের জুলাইয়ে আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। করোনা মহামারিসহ নানা সংকটের কারণে দেড় বছর মেয়াদি প্রকল্পের কাজ শেষ করতে সময় লাগছে পাঁচ বছরেরও বেশি। রেললাইনের কাজ শেষ হলেও ইমিগ্রেশন, কাস্টমস ভবন এবং প্ল্যাটফর্মের ফিনিশিং কাজ এখনো চলছে।
আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ প্রকল্পের পরিচালক (বাংলাদেশ অংশ) মো. আবু জাফর মিয়া জানান, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আমাদের অংশে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হয়েছে। ট্রেনটি ৪০ কিলোমিটার গতিতে চলেছে। উদ্বোধনের পর প্রথম দিকে পণ্যবাহী ট্রেন এবং পরবর্তীতে যাত্রীবাহী ট্রেনও চালানো হবে এই রুটে।