স্ত্রীর কিডনিতে বাঁচল স্বামীর জীবন

নাসিরনগর, 23 June 2023, 1240 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
দীর্ঘদিন কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন স্বপন কুমার সরকার। একপর্যায়ে দুটি কিডনিই বিকল হয়ে যায়। এর পর থেকেই কিডনি প্রতিস্থাপনের চেষ্টা চালাতে থাকেন রোগীর আত্মীয়-স্বজন। হন্যে হয়ে খুঁজে খুঁজে মিলানো যাচ্ছিল না কিডনি। তখনই এগিয়ে আসেন রোগীর স্ত্রী মায়া রানী সরকার। নিজের কিডনি দিয়ে স্বামীর জীবন বাচাঁলেন মায়া। এমন মানবিক ঘটনায় প্রশংসায় ভাসছেন স্ত্রী মায়া।

banner

এ মানবিক ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে।

স্বপন-মায়া দম্পতি বর্তমানে ঢাকা কিডনি ফাউন্ডেশনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। স্বামীর জন্য স্ত্রীর এমন ত্যাগ এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

পরিবার সূত্র জানায়, প্রায় ২২ বছর আগে বিয়ে হয় স্বপন-মায়া দম্পতির। বর্তমানে তাদের রয়েছে দুই সন্তান। বড় ছেলে দীপ্ত সরকার (১৮) এ বছর এইচএসসি পাশ করেছে, আর ছোট ছেলে শান্ত সরকার তৃতীয় শ্রেণীতে অধ্যয়নরত।

জানা গেছে, স্বপন কুমার সরকার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করাকালীন কিডনি সমস্যা ধরা পরে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানা যায়, তার দুটি কিডনি বিকল হয়ে পড়েছে। শুরু হয় ডায়ালায়সিস।

দেশের বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসাসহ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের চেন্নাইয়েও চিকিৎসা নেন। পরে চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, বেঁচে থাকতে হলে স্বপন সরকারের কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। অনেক খোঁজাখোঁজি করেও কিডনি পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে স্বামীর জীবন বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দিয়ে দেন মায়া রানী সরকার। গত ২১ জুন তাদের কিডনি প্রতিস্থাপন হয়।

স্বপন সরকারের ভাই মৃণাল কান্তি সরকার বলেন, ভাইকে জীবন বাঁচাতে আমার বৌদি নিজের একটি কিডনি দিয়েছে। এখন তারা হাসপাতালে সুস্থ আছে। বৌদি স্বেচ্ছায় তার স্বামীর জীবন বাঁচাতে কিডনি দিয়েছে। স্ত্রীর কিডনি দিয়ে স্বামীর প্রাণ বাঁচানোর ঘটনায় এলাকায় অনেকে ওই গৃহবধূর প্রশংসা করছেন।

Leave a Reply

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বীজ, সার ও গাছের চারা…

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে সরাইল Read more

ইখলাস মানুষের হৃদয়ে সৃষ্টি হয়

আল্লামা মাহ্‌মূদুল হাসান : ইখলাস মানুষের দিলে সৃষ্টি হয়। আর Read more

প্রাথমিক তদন্তেই ভুয়া মামলার আসামিরা রেহাই…

অনলাইন ডেস্ক : উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ফৌজদারি কার্যবিধির একটি সংশোধন Read more

গাজীপুরে শফিক, তারিক, পাপনের ১০ তলা…

জায়েদুল কবির ভাঙ্গি, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর : গাজীপুর সদরের চান্দনা Read more

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা পরিষদ…

অনলাইন ডেস্ক : বরগুনার পাথরঘাটায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা Read more

ইসরাইলি হামলায় একদিনে আরো ৮১ ফিলিস্তিনি…

অনলাইন ডেস্ক : গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৮১জন ফিলিস্তিনি Read more

কৃষি বীজ সংরক্ষণাগার ভেঙে দোকান নির্মাণের…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের দেলি Read more

মিথ্যা মামলা করলে কী কী শাস্তি?

অনলাইন ডেস্ক : দেশের অন্যতম আলোচিত বিষয় হলো মিথ্যা মামলা। Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বহিস্কার

চলারপথে রিপোর্ট : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা Read more

আখাউড়ায় অবৈধ চায়না রিং জাল ধ্বংস

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় তিতাস নদীতে অভিযান পরিচালনা Read more

রেলপথে মাদক পাচার প্রতিরোধে রেলওয়ে পুলিশের…

চলারপথে রিপোর্ট : মাদক চোরাচালান, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ দমন Read more

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির…

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান Read more

নাসিরনগরে মাদরাসার হাফেজ ছাত্রদের মধ্যে পাগড়ী প্রদান

নাসিরনগর, 5 April 2024, 759 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা সদরের ফিরোজিয়া হাফিজিয়িা মাদরাসার হাফেজ ছাত্রদের পাগড়ী প্রদান করা হয়েছে। আজ ৫ এপ্রিল শুক্রবার বাদ জুমা মাদরাসা মসজিদে পাগড়ী প্রদান করা হয়।.

banner

মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি ও মাদরাসার দাতা মোঃ নাছির চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইমরানুল হক ভূইয়া।

মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সম্পাদক সাংবাদিক আকতার হোসেন ভূইয়ার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মাদ্রাসা জামে মসজিদের খতিব মূফতি মাওলানা নজরুল ইসলাম, ইমাম ও প্রধান শিক্ষক হাফেজ মোঃ ইয়াইয়া মাহমুদ।

এসময় মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির কোষাধ্যক্ষ প্রধান শিক্ষক এবিএম ছালেম,সদস্য হাজী আলামিন চৌধুরী,ইলিয়াছ মিয়া,প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিমসহ পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ,শিক্ষার্থী ও মুসল্লীগণ উপস্থিত ছিলেন। মাদ্রাসার ৩ জন হাফেজ মো: জাকির হোসেন,হাফেজ মো: আবুল খায়ের ও হাফেজ মো: রাকিবুল ইসলামের মাথায় পরিধান করান মাদ্রাসা জামে মসজিদের খতিব মূফতি মাওলানা নজরুল ইসলাম। নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

নাসিরনগরে হাওড়ে টিউবয়েল বসানোয় কৃষকদের প্রশান্তি

নাসিরনগর, 23 April 2024, 740 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হাওড় এলাকায় দুটি টিউবয়েল বসানো হয়েছে। পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে কিছু গাছের চারা রোপণেরও। ছোট্ট এ উদ্যোগে যেন বড় প্রশান্তির খবর কৃষকদের জন্য। তপ্ত রোদে ধান কাটতে এসে আপাতত টিউবয়েলের পানিতে তারা তৃষ্ণা মিটাতে পারছে। তারা আশায় আছে কাঠফাঁটা রোদে বৃক্ষের ছায়াতলে জিরিয়ে নিয়ে কাজ করতে পারার সময়টুকুর।

banner

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের পতইর গ্রামের পূর্বপাড়া ছাত্র ও যুব সমাজের কয়েকজন হাওড়ে টিউবয়েল বসানোর উদ্যোগ নেন। এ কাজে এগিয়ে আসেন কয়েকজন প্রবাসী। তাদের উদ্যোগে ইতিমধ্যেই পতই এলাকার হাওড়ে দুটি টিউবয়েল বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।

আজ ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে ধান কাটতে আসা কৃষক ও কৃষি শ্রমিকরা ওই টিউবয়েল থেকে পানি নিতে শুরু করে। অনেকে ওই টিউবয়েলের কাছে বসে খাবারও খায়।

এক কৃষক বলেন, ‘এখন অনেক রোদ। গরমও বেশি। ধান কাটতে এসে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকরা তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়ে। সঙ্গে যেটুকু পানি থাকে তাতেও হয় না। যে কারণে এখানে টিউবয়েল বসানোয় আমাদের অনেক উপকার হলো। আমরা অনেক খুশি হয়েছি টিউবয়েলটি বসানোয়।’

ওই এলাকার বাসিন্দা ও উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত একজন বলেন, ‘আমরা চার-পাঁচজন মিলে এমন একটি উদ্যোগ নেওয়ার কথা মাথায় আনি।

ছাত্র ও যুবসমাজের পাশাপাশি প্রবাসীরা এগিয়ে এলে কাজটি সহজ হয়ে যায়। এখন পর্যন্ত দুটি টিউবয়েল বসানো হয়েছে। আরো একাধিক টিউবয়েল বসানো হবে। এ ছাড়া হাওড় এলাকার কৃষকের বিশ্রামের জন্য কিছু গাছের চারা লাগানোরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’

স্টাফ রিপোর্টার :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে দু’পক্ষের মারামারির দুই মাস পর আহত হারুন মিয়া (৬০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। তিনি তার নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে হারুন মিয়া হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে সে মারা যায়। গত অক্টোবর মাসে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুত্বর ভাবে আহত হয়েছিলেন হারুন মিয়া। হারুন মিয়ার মৃত্যুর পর উপজেলার পত্তন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক দুধ মিয়ার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। হারুন মিয়া উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লক্ষীমুড়া গ্রামে মৃত কিতাব আলীর ছেলে। হাসপাতাল ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত লক্ষীমুড়া গ্রামের মৃত কিতাব আলীর ছেলে হারুন মিয়ার পরিবার ও মৃত সোবহান মিয়ার ছেলে করিম মিয়ার পরিবারের জমিতে গরুর ঘাস খাওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে করিম মিয়ার পক্ষের লোকেরা হারুন মিয়াসহ তার পরিবারের ৪-৫ জনকে পিটিয়ে জখম করে। তারপর বিজয়নগর থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পর করিম মিয়ার লোকজন হারুন মিয়াকে হত্যা করার হুমকি দেন? পরবর্তীতে স্থানীয় চেয়ারম্যান দু’পক্ষের লোকদেরকে ডেকে তা আপস করার চেষ্টা করেন। পরে হারুন মিয়া তার ছেলে-ভাতিজাকে নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পথিমধ্যে শেখ হাসিনা সড়কের উত্তর পাশে করিম মিয়ার লোকজন অতর্কিতভাবে তাদের উপর হামলা করেন। তাতে হারুন মিয়ার একটি হাত ও একটি পা ভেঙ্গে যায়। পরে তাদেরকে জেলা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। হারুন মিয়ার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে এক মাস হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়। পরবর্তীতে বাড়িতে তার চিকিৎসা চলে।
এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা যায়- এই হামলার ইন্দনদাতা পত্তন ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ সাধারণ সম্পাদক দুধ মিয়া।
নিহত হারুন মিয়ার ভাতিজা সোহেল বলেন, দুধ মিয়া সরাসরি করিম মিয়ার পক্ষে নিয়েছে। যার কারণে আমার চাচা হারুন মিয়ার উপর হামলা হয়েছে। আমার চাচার হত্যা সাথে দুধ মিয়া জড়িত। দুধ মিয়াসহ যারা আমার চাচাকে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসির দাবি জানায়।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, একজন মারা গেছেন বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে আছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যু রহস্য উন্মোচন হবে।

banner

নাসিরনগরে ঐতিহ্যবাহি শুঁটকি মেলা অনুষ্ঠিত

নাসিরনগর, 17 April 2023, 1540 Views,

চলারপথে রিপোর্ট  :
নাসিরনগরে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাংলা পঞ্জিকার নিয়ম অনুযায়ী পহেলা বৈশাখ ঐতিহ্যবাহি শুঁটকি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মেলার বড় বৈশিষ্ট হচ্ছে “বিনিময় প্রথা”। অর্থাৎ পণ্যের বিনিময়ে পণ্য।

banner

উপজেলা সদরের কুলিকুন্ডা গ্রামের উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যলয় মাঠে বসে এই মেলা। মেলা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শুঁটকি ব্যবসায়ীরা শুঁটকি নিয়ে আসেন মেলায়। জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ আশপাশ জেলা থেকে ভোজন রসিকরা আসেন এই মেলায় শুঁটকি কিনতে। পছন্দের শুঁটকি কিনে ক্রেতারা তৃপ্ত হন। শুঁটকি মেলায় প্রায় দুই শতাধিক জাতের শুঁটকির পসরা নিয়ে বসেন দোকানিরা। এসব শুঁটকির মধ্যে ছিলো বোয়াল, গজার, শোল, বাইম, ছুড়ি, লইট্টা, পুটি ও টেংরাসহ নানা জাতের দেশীয় মাছের শুঁটকি। এছাড়াও মেলায় ভারত থেকে আমদানি করা বিভিন্ন প্রজাতির শুঁটকিও উঠে।

মেলায় জেলার বিভিন্ন এলাকার শুঁটকি ব্যবসায়ীরা ছাড়াও চট্টগ্রাম, সিলেট ও সুনামগঞ্জ থেকে শুঁটকি নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা। মেলায় সামুদ্রিক অনেক বিরল জাতের মাছের শুঁটকি ছাড়াও ইলিশ ও কার্প জাতীয় মাছের ডিমের শুটকি উঠে।

স্থানীয়রা জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাংলা পঞ্জিকার নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে উপজেলার কুলিকুন্ডা গ্রামে এই শুঁটকি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। তারা বলেন, প্রায় দুইশ বছরেরও অধিক সময় ধরে পহেলা বৈশাখে এখানে শুটকি মেলা বসে। প্রতি বছরই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা তাদের শুঁটকি নিয়ে আসেন মেলায়। এই শুঁটকি মেলার বড় বৈশিষ্ট হচ্ছে “বিনিময় প্রথা”। অর্থাৎ পণ্যের বিনিময়ে পণ্য। ভোরে মেলা বসার পর সকাল ১০টা পর্যন্ত বিনিময়ের মাধ্যমে চলে বেচা কেনা। এ কারণেই ধারণা করা হয় এই মেলার ইতিহাস অনেক পুরনো।

মেলায় শুঁটকি কিনতে আসা উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রুবেল মিয়া ও উপজেলার নুরপুর গ্রামের মতি মিয়া বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন বাপ-দাদার সাথে এই মেলা এসেছি। এবারো শুঁটকি কেনার জন্য মেলায় আসছি।

উপজেলার কুলিকুন্ডা গ্রামের বাসিন্দা মজিবুর রহমান সর্দার বলেন, এখানে শত বছরের বেশী সময় ধরে নিয়মিত ভাবে এই মেলা বসছে। এই মেলায় এখনো বিনিময় প্রথা চালু থাকায় আমরা ধারণা করছি, এ মেলা আদিম কালের। এই মেলা আমাদের কুলিকুন্ডা গ্রামের ঐতিহ্য বহন করে।

মেলায় শুঁটকি কিনতে আসা উপজেলার কুলিকুন্ডা গ্রামের মহব্বত আলী বলেন, প্রাচীনকালে যখন কাগজের মুদ্রা প্রচলন হয়নি তখন থেকেই কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের বিনিময়ে এখান থেকে শুঁটকি কিনতেন। কালের বির্বতনে এই মেলার জৌলুস অনেকটা কমেছে। হ্রাস পেয়েছে বিনিময় প্রথাও। তিনি বলেন, ঐতিহ্য হিসেবে এই মেলায় শুঁটকি কেনার জন্যে এসেছি। ছোট বেলায় বাবার সাথে এই মেলায় আসতাম।

মেলায় শুঁটকি নিয়ে আসা ব্যবসায়ী কৃষ্ণদাস বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারনে হ্রাস পেয়েছে ঐতিহ্যবাহী পণ্য বিনিময় প্রথা। এখন নামে মাত্র এই প্রথা চালু আছে। তিনি বলেন, আমি প্রতি বছরই শুঁটকি নিয়ে মেলায় আসি।

স্থানীয়রা জানান, একদিনের মেলায় লাখ লাখ টাকার শুঁটকি বিক্রি হয়। ব্যবসায়ীরা শুঁটকি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা নিয়ে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরে যায়। এছাড়াও মেলায় গৃহস্থালী পণ্যসহ বিভিন্ন ধরনের খেলনা বিক্রি হয়। তবে এবার শুঁটকির আমদানি বেশী হলেও দাম ছিল চড়া।

মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ওহাব আলী জানান, বিনিময় প্রথার ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্যে আজো অল্প পরিসরে সূর্যোদয়ের সাথে-সাথে কিছুক্ষনের জন্যে পণ্য বিনিময়ের মাধ্যমে শুঁটকি বেচা-কেনা শুরু হয়। পরে চলে টাকা দিয়ে বেচা-কেনা।

তিনি জানান, “বাংলা পুঞ্জিকা অনুযায়ী বছরের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে উপজেলার কুলিকুন্ডা গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ সহ আশপাশের জমিতে বসে ঐহিত্যবাহী শুটকি মেলা। তিনি বলেন, পূর্ব পুরুষদের কাছ থেকে শুনেছি, মোগল আমল থেকেই এখানে শুঁটকি মেলা হয়ে আসছে।

নাসিরনগরে ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে জরিমানা

নাসিরনগর, 18 September 2023, 1076 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে বিভিন্ন অভিযোগে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

banner

আজ ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নে এ অভিযান চালানো হয়।

এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. অভিজিত রায়সহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, অভিযানে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স ও ডাক্তারের সদন না থাকা এবং অন্যান্য কাগজপত্র হালনাগাদ না থাকায় ভলাকুট মডেল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুন তালুকদার ও শফিকুল ইসলাম চৌধুরীকে এক লাখ টাকা ও সনদ না থাকায় ডাক্তার আব্দুল মতিনকে ৫০ হাজার টাকা টাকা জরিমানা করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল বাতেন জানান, এটা শুধু নামেই মডেল ডায়াগনিস্টিক সেন্টার। ভিতরে কিছুই নাই। সেজন্য আজকে জরিমানা করছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফখরুল ইসলাম জানান, ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তাদের ব্যবসা চালিয়ে আসছে। এসব প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা হয়রানির শিকার হন। ভুল চিকিৎসাসহ নানা হয়রানি প্রতিরোধে জনস্বার্থে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।