চলারপথে রিপোর্ট :
‘এবার প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা করা হয়েছে। সেই হিসাবে এক মণ মাংসে আট হাজার টাকা অর্থাৎ পাঁচ মণের একটা গরু কিনলে ক্রেতাকে অতিরিক্ত ৪০ হাজার টাকা গুনতে হবে। মূলত গরুর খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় মাংসের দাম বেড়েছে।’ এভাবেই বলছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খামারিরা।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এবার প্রায় ১৯ হাজার কোরবানির পশুর ঘাটতিও রয়েছে। তবে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পশু এ ঘাটতি পূরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সীমান্ত পেরিয়ে গরু না এলে খামারিসহ সাধারণ বিক্রেতারাও লাভবান হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিবছর বাড়ছে কোরবানির পশুর চাহিদা।
তবে, নানা সংকটের কারণে অনেক খামার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চাহিদার তুলনায় প্রতিবছরই সংকট তৈরি হচ্ছে পশুর। এবারও একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এতে দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলায় এবার কোরবানির জন্য গরু, মহিষ, ছাগলসহ এক লাখ ৪০ হাজার পশুর চাহিদা রয়েছে।
এর বিপরীতে খামারগুলোতে কোরবানিযোগ্য পশু আছে প্রায় এক লাখ ২১ হাজার। ফলে ঘাটতি রয়েছে ১৯ হাজার পশুর। যার প্রভাব পড়বে হাটে। এবার অন্তত দেড় হাজার কোটি টাকার পশু কেনাবেচা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রায় ১৪ হাজার ছোট-বড় খামারি পশু লালন-পালন করেছেন।
এবার জেলায় অন্তত ১০০টি পশুর হাট বসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
খামারিরা বলছেন, সংকটের চেয়েও পশুর দাম বাড়ার প্রধান কারণ হলো পশুখাদ্যের দাম বৃদ্ধি। এ অবস্থায় ভারত থেকে গরু আমদানি হলে তাদের বেশ লোকসানের মধ্যে পড়তে হবে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. সাইফুদ্দিন খান শুভ্র জানান, এটা একটা শিল্প। এ শিল্পের বড় ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে। পশুখাদ্যের দাম কমিয়ে উৎপাদন বাড়ালে বিদেশ থেকে গরু কিংবা মাংস আমদানি করতে হবে না। এতে কোরবানির জন্য ভারতীয় পশুর ওপর নির্ভরতা আর থাকবে না। লাভবান হবেন ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কাজী নজরুল ইসলাম জানান, প্রতিবছরই পশুর চাহিদা বাড়ছে। সে অনুযায়ী উৎপাদন বাড়ে না। যে কারণে ঘাটতি থেকেই যায়। তবে কোরবানির পশুর যে ঘাটতি আছে, তা পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে পশু এনে পূরণ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস গ্যাসক্ষেত্রে প্রায় আড়াই বছর ধরে বন্ধ থাকা ১৪ নম্বর কূপ থেকে আবার গ্যাস উত্তোলন করতে কূপের সংস্কারকাজ (ওয়ার্কওভার) শুরু হয়েছে। সংস্কারকাজ শেষে ওই কূপ থেকে দৈনিক দেড় কোটি (১৫ মিলিয়ন) ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।
আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিএফসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ফজলুল হক সংস্কারকাজের উদ্বোধন করেন।
আগামী দুই মাসের মধ্যে সংস্কারকাজ শেষ করা হবে বলে জানিয়েছে বিজিএফসিএল কর্তৃপক্ষ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিজিএফসিএলের আওতাধীন তিতাস গ্যাসক্ষেত্রের ২৩টি কূপ থেকে প্রতিদিন ৩৯২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়। কিন্তু পানি ওঠাসহ নানা কারণে সেখানকার চারটি কূপ বন্ধ আছে। এ ছাড়া দেশের আরও কয়েকটি কূপ থেকে দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস উত্তোলন বন্ধ আছে।
এমতাবস্থায় গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে তিতাস, হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ ও মেঘনা গ্যাসক্ষেত্রের বন্ধ থাকা সাতটি কূপ সংস্কারের (ওয়ার্কওভার) জন্য ৫২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প নেয় বিজিএফসিএল। বিজিএফসিএল সূত্র জানায়, সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে অবস্থিত ১৪ নম্বর কূপটি ২০০০ সালে খনন করা হয়। এরপর ২০০৯ সাল পর্যন্ত ওই কূপ থেকে ২৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন ঘনফুট হারে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। ২০০৯ সালে গ্যাসের সঙ্গে অতিরিক্ত পানি আসায় কূপটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে সংস্কার (ওয়ার্কওভার) করে ওই বছর আবার উৎপাদনে আসে। এরপর ২০২০ সাল পর্যন্ত কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস সরবরাহ হয়। ২০২০ সালে আবার পানি এলে গ্যাসের সরবরাহ কমে যায়। একপর্যায়ে ২০২১ সালের ১ নভেম্বর কূপটি বন্ধ হয়ে যায়। সরকার সাতটি কূপ সংস্কারের (ওয়ার্কওভার) প্রকল্প নেওয়ার পর নতুন করে কূপটির সংস্কার শুরু হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক ইসমাইল মোল্লা বলেন, ২০২১ সালের নভেম্বরে ১৪ নম্বর কূপটি বন্ধ হয়ে যায়। এখন কূপটির ওয়ার্কওভার শুরু হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে দুই মাসের মধ্যে ১৪ নম্বর কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হবে। ওই কূপসহ এখন তিতাসের তিনটি কূপ বন্ধ আছে। তিনটি কূপের ওয়ার্কওভার শেষে জাতীয় গ্রিডে ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যোগ হবে। ইসমাইল মোল্লা আরও বলেন, পর্যায়ক্রমে সাতটি কূপের ওয়ার্কওভারের কাজ করা হবে। তখন জাতীয় গ্রিডে ৬০ থেকে ৭০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া বাকি চারটি কূপ এখনো উৎপাদনে আছে। উৎপাদন ধরে রাখতে মেইনটেন্যান্স করতে হবে।
তিনি বলেন, সাতটি কূপের মধ্যে চারটি ওয়ার্কওভারের কাজ করবে বাপেক্স। দ্রুত গ্যাস উত্তোলনের স্বার্থে অন্য কূপগুলোর সংস্কার করবে বিদেশি প্রতিষ্ঠান। বিজিএফসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ফজলুল হক বলেন, প্রায় ৫৫ বছরে তিতাস গ্যাসক্ষেত্রের কূপগুলো থেকে প্রায় সাড়ে ৫ টিএসএফ গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে। তবে কূপগুলোতে গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় উৎপাদনও কমছে। গ্যাসের চাপ স্বাভাবিক রাখতে কয়েকটি কূপে ওয়েলহেড কম্প্রেসর বসানো হয়েছে।
এ ছাড়া বন্ধ কূপগুলোর ওয়ার্কওভার শেষ হলে বিজিএফসিএলের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাসের উৎপাদন আরো বাড়বে।
চলারপথে রিপোর্ট :
দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৬টি আসনে ৫৪ জন প্রার্থী মনোয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১-(নাসিরনগর) ৯ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য বি.এম. ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম।
বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রোমা আক্তার ও বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ.টি.এম মনিরুজ্জামান সরকার।
জাতীয় পার্টি থেকে শাহানুল করিম, সদ্য বহিস্কৃত বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা (স্বতন্ত্র প্রার্থী) সৈয়দ এ.কে এমরামুজ্জামান, জাকের পার্টির জাকির হোসেন চৌধুরী, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের ইসলাম উদ্দিন, ওয়ার্কার্স পার্টির মোহাম্মদ বকুল হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) ১০ প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। প্রার্থীরা হলেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য শাহজাহান আলম সাজু, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈনউদ্দিন মঈন (বিদ্রোহী স্বতন্ত্র), অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ (জাতীয় পার্টি), অ্যাড. জিয়াউল হক মৃধা (স্বতন্ত্র), ছৈয়দ জাফরুল কদ্দুস (বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন), মাইনুল হাসান, (তৃণমূল বিএনপি), রাজ্জাক হোসেন (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি), আবুল হাসনাত (ইসলামী ঐক্যজোট), জহিরুল ইসলাম জুয়েল (জাকের পার্টি), কাজী মাসুদ আহম্মেদ (বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি)।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩-(সদর-বিজয়নগর) আসন:এই আসনে মোট ১২ জন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, ফিরোজুর রহমান ওলিও (বিদ্রোহী স্বতন্ত্র), রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া (জাতীয় পার্টি), সেলিম কবির (জাকের পার্টি), সৈয়দ নূরে আজম ( ইসলামী ফ্রন্ট), আব্দুর রহমান খান ওমর (জাসদ), মাওলানা মজিবুর রহমান হামিদি (বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন), জহিরুল হক চৌধুরী (স্বতন্ত্র), কাজী জাহাঙ্গীর (স্বতন্ত্র), সৈয়দ মাহমুদুল হক আক্কাস (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি), সোহেল মোল্লা (বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি), জামাল রানা (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন)।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪-(কসবা-আখাউড়া) ৬ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী দুইবারের সংসদ সদস্য ও আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। তারেক এ.আদেল (জাতীয় পার্টি), জাহাঙ্গীর আলম (জাকের পার্টি), শাহীন খান (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি), বজলুর রহমান মিলন (বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টি), সৈয়দ জাফরুল কদ্দুস (বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন)।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর): ১১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের ফয়জুর রহমান বাদল মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে একই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (বিদ্রোহী) হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম মমিনুল হক সাঈদ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের ধর্ম বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার নজরুল ইসলাম ভূইয়া মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া অন্য প্রার্থীরা হলেন, মোবারক হোসেন দুলু (জাতীয় পার্টি), অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আক্তার হোসেন সাঈদ (জাসদ), মেহেদী হাসান (ইসলামী ঐক্যজোট) মো. জামাল সরকার (বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি), মো. মোস্তাক (স্বতন্ত্র), মো.জামসেদ মিয়া (জাকের পার্টি) ও ছৈয়দ জাফরুল কদ্দুস বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, মুফতী হাবিবুর রহমান (তৃণমূল বিএনপি)।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬-(বাঞ্ছারামপুর) এ আসনে মোট ৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। এরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ.বি তাজুল ইসলাম। অ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেন (জাতীয় পার্টি), আব্দুর আজিজ (জাকের পার্টি), সফিকুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), কবির মিয়া (বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি), সফিকুল ইসলাম (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি)।
স্টাফ রিপোর্টার :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুনরায় আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সকল আদালত বর্জনের ঘোষণা দিলেন আইনজীবীরা। আজ ৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে জেলা আইনজীবীর সমিতিরি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বিশেষ সাধারণ সভা ও সম্প্রতি অনুষ্ঠিত আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে নব-নির্বাচিত নেতৃবৃন্দের কাছে দায়িত্বভার হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। আগামীকাল ৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার থেকে তাদের সকল আদালত বর্জন কর্মসূচি শুরু হবে চলবে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
জেলা আইনজীবী সমিতির সূত্রে জানা গেছে, আদালতের শীতকালীর ছুটির আগে গত ১ ডিসেম্বর আদালতের শেষ কার্যদিবস ছিল। ওই দিন তিনটি মামলা না নেয়ায় ১ জানুয়ারি থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল -১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জন শুরু করেন আইনজীবীরা। ২ জানুয়ারি বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের সাথে আইনজীবীদের বাদানুবাদের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে বিচারকের সাথে অশোভন আচরণের অভিযোগে গত ৪ জানুয়ারি আদালতের কক্ষে ও প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে একদিনের কর্মবিরতি ও মানববন্ধন পালন করে জেলা বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন।
এ ঘটনার পর গত ৫ জানুয়ারি থেকে পুরো আদালত বর্জনের কর্মসূচি শুরু করেন আইনজীবীরা। তারা জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের অপসারণ ও জজ আদালতের নাজির মমিনুল ইসলামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এদিকে বিচারকের সাথে অশোভন আচরনের অভিযোগে সভাপতিসহ তিন আইনজীবীকে ১৭ জানুয়ারি উচ্চ আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
এছাড়াও আন্দোলন চলাকালে জেলা ও দায়রা জজের বিরুদ্ধে অশালীন শ্লোগান দেয়ার অভিযোগে গত ১১ জানুয়ারি ২১ আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব করা হয়।
এমন পরিস্থিতিতে গত ১২ জানুয়ারি রাতে ঢাকায় আইনমন্ত্রীর বাসভবনে বৈঠক করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ। বৈঠকে আইনমন্ত্রী আইনজীবীদের তিনটি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে আদালতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আইনজীবীরা।
মন্ত্রীর সাথে বৈঠকের পর ২৪ জানুয়ারির মধ্যে জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের অপসারণ ও ও জজ আদালতের নাজির মমিনুল ইসলামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে গত ১৫ জানুয়ারি থেকে দুই আদালত ব্যতিত (জেলা জজ শারমিন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের আদালত) সকল আদালতে ফিরে যান আইনজীবীরা। এতে আদালতের অচলাবস্থা দূর হয়।
গত ২৪ জানুয়ারির মধ্যে আইনজীবীদের দাবি পূরন না হওয়ায় তারা ওইদিন বিশেষ সাধারণ সভা করে তারা তাদের কর্মসূচি ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করে। ৩০ জানুয়ারি মধ্যে তাদের দাবি পূরন না হওয়ায় তাদের কর্মসূচি আবার ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার আইনজীবীরা তাদের দাবি পূরন না হওয়ায় বিশেষ সাধারণ সভা করে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সকল আদালত বর্জনের ঘোষণা দেন।
এ ব্যাপারে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোঃ তানবীর ভূঞা জানান, গত ৩০ জানুয়ারি সমিতির সাধারণ সভা করে তাদের কর্মসূচি ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। ওই সভায় বলা হয়েছিল উল্লেখিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হলে পুনরায় বিশেষ সাধারণ সভা করে পরবর্তী কর্মসূচি দেয়া হবে।
কিন্তু আমাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় আমরা মঙ্গলবার পুনরায় সাধারণ সভা করে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সকল আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছি। সকল আইজীবীর মতামতের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বুধবার থেকে তাদের সকল আদালত বর্জনের কর্মসূচি শুরু হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরকার নির্ধারিত ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা মূল্যে অপারগতা প্রকাশ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে দুদিন ধরে গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। মূল্য বাড়ানোর দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার বিকেলে স্মারকলিপি দেন তারা। তবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যে মাংস বিক্রি করতে হবে। অন্যথায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
বিকেলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের কাছে স্মারকলিপি নিয়ে যান মাংস ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন ফারুক আহমেদ। এছাড়া সঙ্গে ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি ও এফবিসিসিআই এর পরিচালক আলহাজ্ব আজিজুল হক।
তারা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি তুলে দিয়ে দাবি-দাওয়া পেশ করেন। এসময় জেলা প্রশাসক দেশব্যাপী সরকার নির্ধারিত মূল্যে মাংস বিক্রির যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, জেলার মাংস ব্যবসায়ীরা তাদের লাভ হচ্ছে না জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবো। তবে সারাদেশে যে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে, তারা অবশ্যই তা মেনে চলবেন। কেউ অতিরিক্ত দাম নিলে তা আমরা দেখবো।
তবে, এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মাংস ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি আলহাজ্ব আজিজুল হক জানান, জেলা প্রশাসক মাংস ব্যবসায়ীদের বলেছেন, আপনারা আজ যেমন এসেছেন, কিন্তু আসার আগে মাংস বিক্রি কেন বন্ধ করলেন? সুবিধা-অসুবিধার কথা জানাতে পারতেন। তখন ব্যবসায়ীরা বলেন, সরকারি দরে তারা মাংস বিক্রি করতে পারবেন না। আবার অতিরিক্ত দরে বিক্রি করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করবেন। তাই তারা দোকান বন্ধ করছেন। সবশেষ জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, সরকার নির্ধারিত মূল্য মেনে মাংস বিক্রি করতে হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, আমাদের সমস্ত উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান আছে। কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়নি। রিজার্ভ নিয়েও দেশে কোনো সংকট নেই। আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি রিববার দুপুরে রাজশাহীতে কর্মরত গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দফতর ও সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের দীর্ঘসূত্রিতা সর্বত্রই বিরাজমান। এটা দূরীকরণে বর্তমান মন্ত্রীসভা কাজ করবে। দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার করে কীভাবে দ্রুত কাজগুলো করা যায় তা নিয়ে কাজ করবো। আর সুন্দর ও ভালো কাজ করতে গিয়ে হয়তো বিলম্বিত হয়। প্রকল্পে সমন্বয়ের ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে কাজে দীর্ঘসূত্রিতা হয় উল্লেখ করে রাজশাহীর উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর সমন্বয় সাধনে তিনি কাজ করছেন বলে জানান। আরডিএ থেকে অনুমোদন না নিয়ে কেউ আবাসন গড়ে তুললে সেটা বে-আইনি কাজ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এটা দেখার দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের। সুতরাং, জেলা প্রশাসক এটা দেখুক। এরআগে, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিনের সভাপতিত্বে রাজশাহীতে কর্মরত গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দফতর ও সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপূর্তমন্ত্রী।