চলারপথে রিপোর্ট :
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে নানা বাড়ি বেড়াতে এসে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ ২৭ জুন মঙ্গলবার দুপুরে মাধবখালী ইউনিয়নের রামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত দুই ভাই মো. মেহেদি হাসান নুর (২০) ও মো. ইব্রাহীম (১০) দুমকী উপজেলার নলদোয়ানি গ্রামের মো. সোহরাব হোসেন এর ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, নিহত দুই শিশুর বাবা সোহরাব হোসেন খুলনায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরির সুবাদে সেখানেই পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। ঈদ উপলক্ষে গত রবিবার মির্জাগঞ্জে রামপুর গ্রামে নানা আব্দুল কাদের মুসুল্লির বাড়িতে মায়ের সাথে দুই ভাই বেড়াতে আসে। দুপুর ১টার দিকে দুই ভাই নানা বাড়ির পাশে একটি পুকুরে গোসল করতে যায়। তারা দুজনেই সাঁতার জানত না। গোসল করে না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাদের খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। এক পর্যায়ে বাড়ির লোকজন পুকুরের পানি থেকে উদ্ধার করে তাদেরকে বাকেরগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
কাঠাঁলতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এস আই মো. মোকাম্মেল হোসেন জানান, নানা বাড়ি বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে দুই শিশু মেহেদি হাসান নুর ও মো. ইব্রাহীম নামে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিশেষ প্রতিনিধি :
একসময় রাজা-বাদশাহদের বাহন ছিল ঘোড়া ও ঘোড়ার গাড়ি। যুদ্ধক্ষেত্রেও তার ঘোড়া ব্যবহার করতো। যদিও এখন এই বাহন হিসেবে ঘোড়া ও ঘোড়ার গাড়ি বিলুপ্তির পথে। পাশাপাশি সেই আদিকাল থেকেই কৃষিকাজে ঘোড়ার ব্যবহার হয়ে আসছে। তবে ঘোড়ার পাশাপাশি কৃষি কাজে গরু-মহিষও ব্যবহার হতো। কৃষকরা গরু-মহিষ দিয়ে হালচাষ করতো। কিন্তু কালের বির্বতনে ঐতিহ্যবাহী গরু-মহিষের হাল আজ বিলুপ্তির পথে। বর্তমানে কৃষকরা পশু দিয়ে চাষাবাদ না করে উন্নতমানের যান্ত্রিক প্রযুক্তির সাহায্যে জমিতে হালচাষ করছেন। এতে কম খরচে স্বল্প সময়ে অধিক জমি চাষ করা সম্ভব।
যান্ত্রিক সভ্যতার এ যুগে যখন গরু দিয়ে হালচাষ বিলুপ্তির পথে তখন ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন মো. হানিফ (৫০) নামের এক কৃষক।
দীর্ঘকাল ধরে রণক্ষেত্রের পাশাপাশি মালামাল ও মানুষ পরিবহনে ঘোড়া ব্যবহৃত হয়ে আসলেও কালের পরিক্রমায় তা আজ বিলুপ্তির পথে। কিন্তু বর্তমান সময়ে ঘোড়া দিয়ে জমিতে হালচাষ করা এক বিরল ঘটনা এমনটাই বললেন স্থানীয়রা।
হানিফ দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ফতেজংপুর ইউপির উত্তর পলাশবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। বুধবার বিকালে সরজমিন দেখা যায়, ঘোড়া দিয়ে জমিতে হালচাষ করছেন কৃষক হানিফ। হালচাষ দেখতে প্রতিনিয়ত অনেক মানুষ পথ চলতে চলতে থমকে দাঁড়ান।
কৃষক হানিফ জানান, বর্তমান বাজারে এক জোড়া হালের গরুর দাম কমপক্ষে এক লাখ টাকা। সেই তুলনায় বর্তমান বাজারে গরুর চেয়ে ঘোড়ার দাম কম। কিছুদিন পূর্বে তিনি মাত্র ৪৫ হাজার টাকা দিয়ে দুটি ছোট সাইজের ঘোড়া কিনেছেন। এ ঘোড়া দুটি দিয়ে তিনি প্রতিদিন এক থেকে দেড় বিঘা জমি চাষ করছেন। তিনি নিজের জমি ছাড়াও গত ৩ বছর ধরে অন্যের জমিতেও টাকার বিনিময়ে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করছেন।
তিনি আরো জানান, গরুর চেয়ে ঘোড়া হাঁটে-চলেও অনেক বেশি। ফলে গরুর হালের চেয়ে একই সময়ে ঘোড়া দিয়ে তিনগুণ বেশি জমি চাষ করা যায়। ঘোড়া দিয়ে তিনি প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত দেড় থেকে দুই বিঘা জমিতে হালচাষ করতে পারেন। তিনি জমি চাষ করতে বিঘাপ্রতি ৬০০ টাকা করে নেন। এতে তার প্রতিমাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা আয় হয়। ঘোড়া দুইটির খাদ্য বাবদ দৈনিক ১০০ টাকা করে খরচ হয়। অবশিষ্ট টাকা দিয়ে পরিবারের ৫ সদস্যের খরচ চলে। এ ঘোড়ার হাল দিয়েই তিনি ঘোড়াচ্ছেন তার জীবিকার চাকা। ঘোড়ার হাল দিয়ে অন্যের জমি চাষ করে যা উপার্জন হয় তা দিয়েই তিনি সংসারের চাহিদা পূরণ করছেন। হালচাষ বা জমিতে মই দিয়ে যা পেয়ে থাকেন তা দিয়েই সংসার ভালোভাবেই চলে।
কৃষক নুরুল আলম, হেলাল জানান, ঘোড়া দিয়ে জমিতে হালচাষ করলে মাটি গভীরভাবে খনন হয়। মই দেয়ার সময় জমির উঁচু-নিচুও ভালোভাবে সমান হয়। এতে জমিতে পানি সমানভাবে ধরে রাখা সহজতর হয়। একদিনে অনেক জমিতে হালচাষ করা যায়। ফলে অর্থ ও সময় সাশ্রয় হয়। তাই এলাকায় হানিফের ঘোড়ার হালের বেশ চাহিদা রয়েছে।
চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, কৃষকরা এখন যান্ত্রিক উপায়ে জমি চাষ করেন। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে ঘোড়ার গাড়িও উঠে গেছে। ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করা দুর্লভ একটি বিষয়। এটা পারসেনট্রিনের মধ্যে পড়ে না। কৃষি বিভাগ আধুনিক মানের যন্ত্র ব্যবহার করে চাষাবাদ করার জন্য কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছে।
চলারপথে ডেস্ক :
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলেই উন্নয়ন হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ মানুষকে উপহার দেয় উন্নয়ন। আমরা আজ শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি প্রত্যেকের ঘরে ঘরে। আমরা নতুন নতুন স্কুল করেছি। ২৬ হাজার নতুন প্রাইমারি স্কুল সরকারীকরণ করেছি। আজ আমাদের সাক্ষরতার হার ৭৫ দশমিক ২ শতাংশ।
আজ ১১ মার্চ শনিবার বিকেলে ময়মনসিংহের সার্কিট হাউজ মাঠে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে ময়মনসিংহে চারটি সিনেমা হলে বোমা হামলা হয়। তখন অনেক মানুষ মারা যায় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওদের ক্ষমতায় থাকা মানেই দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে উন্নয়ন হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরই ময়মনসিংহকে বিভাগ করে দিয়েছি। প্রতিটি বিভাগের মতো এ বিভাগে ময়মনসিংহে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হবে, একটি পৃথক ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় করে দেবো। আমরা অনেক কিছু করতে পারতাম। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে অনেক কিছু সম্ভব হয়নি।’
দেশে খাদ্য উদ্বৃত্ত আছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘২০০১ সালে আমরা যখন ক্ষমতা হস্তান্তর করি, তখনো ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুত রেখে গেছি। ২০০১ সালে আসলো লুটেরা, সন্ত্রাসীর দল বিএনপি। তারা আবার বাংলাদেশকে খাদ্যে ঘাটতির দেশে পরিণত করে। ২০০৯ সালে আবার যখন সরকার গঠন করি, তখন দেখি সেই ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি। আল্লাহর রহমতে দেশে এখন আর খাদ্য ঘাটতি নেই। ২১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য এখন মজুত আছে।’
আমিষের উৎপাদন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আবাদি জমির পাশাপাশি আমাদের জলাভূমিকেও ব্যবহার করতে হবে। মাছ চাষের মাধ্যমে জলাভূমির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’
যুবসমাজকে উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘দেশের যুবসমাজকে উন্নয়নের অংশীদার হতে হবে। আমরা যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ ও ঋণের ব্যবস্থা করেছি। যুবকরা এসব সুযোগ নেওয়ার মাধ্যমে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আরও মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে পারবেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার একটাই লক্ষ্য—আমার বাবা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য তা বাস্তবায়ন করা।’
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার মাসে ময়মনসিংহে আমি আপনাদের জন্য কিছু উপহার নিয়ে এসেছি। এসময় উদ্বোধন করা ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্প পড়ে শুনিয়ে তিনি বলেন, স্বাধীনতার মাসে ৭৩টি প্রকল্প উদ্বোধন করে দিয়ে গেলাম, সেগুলো স্বযত্নে রাখবেন। এরপর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা ৩০টি প্রকল্প পড়ে শুনিয়ে বলেন, এগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।
এর আগে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে জনসভাস্থল সার্কিট হাউজ মাঠ থেকে একযোগে ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৩০টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরমধ্যে প্রায় ৫৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং প্রায় দুই হাজার ৭৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সরকারপ্রধান। দুপুর ২টা ৫৮ মিনিটে জনসভা মঞ্চে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেল ৩টায় প্রধান অতিথির আসন গ্রহণ করেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহেতাশেমুল আলমের সভাপতিত্বে জনসভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, মির্জা আজম এমপি, শফিউল আজম চৌধুরী নাদেল প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দিতে সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষ দলে দলে আসতে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠ। প্রধানমন্ত্রী আসার আগেই জনসমুদ্রে পরিণত হয় জনসভাস্থল। সকাল থেকে সড়কজুড়ে নাচ-গান আর বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে জনসভায় যোগ দেন নেতাকর্মীরা।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা। নওগাঁর মান্দা উপজেলার বড়পই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তখন পর্যন্ত কেউ আসেননি। শ্রেণি কক্ষ খোলা না থাকায় রোকেয়া ভবনের বারান্দার গ্রিল ধরে একাই দাঁড়িয়ে ছিল দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মুনমুন (৭)। অপেক্ষা করছিল শিক্ষক ও সহপাঠীদের জন্য। এর কিছু পরে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন প্রধান শিক্ষক আমিনা পারভীন।
এ সময় বিদ্যালয় মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিবেশী জাহানারা বেগম নামে এক নারী এগিয়ে আসেন। কুশল বিনিময় করেন প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে। পরে তারা দুজনেই শিক্ষক রুমের তালা খুলে ভেতরে যান। ওই নারীর সহায়তায় ঘর ঝাড়ু দিয়ে শিক্ষকদের কক্ষে থাকা বিদ্যুতের মেইন সুইস অন করেন প্রধান শিক্ষক আমিনা পারভীন। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার দিয়ে রোকেয়া ভবনের বারান্দার গ্রিল থেকে অন্তত ৬-৭ ফিট দূরে ছিটকে যায় শিক্ষার্থী মুনমুন।
শিশুটির চিৎকার শুনে প্রধান শিক্ষক ও প্রতিবেশী ওই নারী ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তারা দেখেন জ্ঞান হারিয়ে শিশুটি মাটিতে পড়ে আছে। সেখান থেকে উদ্ধার করে শিক্ষকদের রুমে নিয়ে শিশুটির জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করা হয়। জ্ঞান ফিরলে শিশু মুনমুনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনা পারভীন বলেন, বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন থেকে খোলা তার দিয়ে রোকেয়া ভবনে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া আছে। সেই তার কেটে ওই ভবনের দরজার গ্রিলে সেটি জড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। বিদ্যুতের মেইন সুইস অন করার সঙ্গে সঙ্গে ওই ভবনের পুরো বারান্দা বিদ্যুতায়িত হয়ে যায়। এতে শিক্ষার্থী মুনমুন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জান্নাতুন ফেরদৌস বলেন, বিদ্যুতের মেইন সুইস বন্ধ ও শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম থাকায় বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। এটি পরিকল্পিত বলেও দাবি করে তিনি।
অভিভাবক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এতে স্থানীয় অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি করছি।
জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার শাসমুজ্জামান বলেন, বিষয়টি জানার পর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে তিনি সভা করবেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
সদ্য সমাপ্ত দেশের পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জনগণ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পেরেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের আমলে সুষ্ঠু ভোট হয়, সিটি নির্বাচন এর প্রমাণ বলেও দাবি করেন তিনি।
আজ ৩ জুলাই সোমবার দুপুরে রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে দুই মেয়রকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী। আর কাউন্সিলরদের শপথবাক্য পাঠ করান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে গাজীপুর, খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
গত ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেটের সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপিসহ আরও কয়েকটি দলের ভোট বর্জনের মধ্যে দুই সিটিতেই মেয়র পদে অনেকটা সহজেই জয় পান নৌকার প্রার্থীরা।
রাজশাহীর মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী হলেন। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। আর সিলেটের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী লন্ডন আওয়ামী লীগের নেতা। তিনি দেশে এসে মনোনয়ন পেয়ে প্রথমেই সিলেটের নগরপিতা হয়ে বাজিমাত করলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় ভোট মানেই ছিল জুলুম-যন্ত্রণা। এখন গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই জনগণ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের উন্নয়ন শুধু নগরভিত্তিক না। আমরা তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়ন পৌঁছে দিতে চাই। একদম গ্রামে উন্নয়ন পৌঁছে দিতে চাই।
নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নে মনোযোগী হওয়ার তাগিদ দেন সরকারপ্রধান। এ সময় তিনি রাজশাহী ও সিলেটের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে এর সমাধানের তাগিদ দেন।
মেয়র-কাউন্সিলরদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা একটি কথা মনে রাখবেন, জনগণের ভোটে আপনারা নির্বাচিত। এজন্য জনগণের কথা চিন্তা করতে হবে। আপনি যে দলেরই হোন না কেন।
এর আগে সকালে গাজীপুর, খুলনা ও বরিশালে নবনির্বাচিত মেয়র-কাউন্সিলরদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে অনেকে অন্য দলের লোকও আছেন। আমরা কিন্তু কে ভোট দিল না দিল সেটা দেখি না। দেশের সব জনগণের জন্য কাজ করি। আমি যা করি জনগণের জন্য করি, জনগণের কল্যাণে করি। আমি ঘর করে দিয়েছি, সেখানে কে ভোট দিল না দিল সেটা দেখিনি। সব উন্নয়নের ক্ষেত্রেই আমরা সেটা করি।
সবাইকে জনকল্যাণে কাজ করার তাগিদ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, জনগণ আপনাদের স্বতস্ফূর্ত ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। মানুষের আকাঙ্ক্ষা আপনাদের পূরণ করতে হবে।
মেয়র-কাউন্সিলদের উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়ন আপনাদের ওপর নির্ভর করে। আমাকে তিনশ সিট দেখতে হয়। আপনারা নিজ নিজ এলাকা দেখবেন। আপনি আপনার এলাকা নিয়ে পরিকল্পনা করবেন। মানুষের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে হবে।
এ সময় প্রত্যেক মেয়র-কাউন্সিলরকে নিজ নিজ এলাকার ড্রেনেজ ও পয়ঃনিষ্কাশনব্যবস্থা উন্নত করার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রচুর বরাদ্দ আছে। সেই বরাদ্দ যেন সঠিকভাবে কাজে লাগানো হয় সেই তাগিদ দেন তিনি।
চলারপথে ডেস্ক :
বোনের বিয়ে উপলক্ষে দুবাই প্রবাসী বড় ভাই আরেক প্রবাসীর কাছে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন সেট কিনে পাঠান দেশে। কিন্তু এসব মূল্যবান জিনিস পরিবারের কাছে হস্তান্তর না করে আত্মসাৎ করতে বগুড়ায় শ্বশুরবাড়ি চলে যান ওই প্রবাসী। এ ঘটনায় ভেঙে যায় ওই বিয়ে। উপায়ান্তর না দেখে প্রবাসীর পরিবার থানায় মামলা করে। শেষ পর্যন্ত ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে আত্মসাৎ করা সামগ্রী উদ্ধার করে।
আজ ২ মার্চ রবিবার সেই মালপত্র প্রবাসীর মা-বাবার কাছে বুঝিয়ে দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
ডিবির লালবাগ বিভাগের ডিসি মশিউর রহমান বলেন, প্রতারক শাওন আহমেদের গ্রামের বাড়ি গাজীপুরে। তাঁর শ্বশুরবাড়ি বগুড়ায়। ওই মামলায় গ্রেপ্তারের পর তিনি এখন কারাগারে।
জানা যায়, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া ওই তরুণীর গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরে। বিয়ে ঠিক হলে দুবাই প্রবাসী বড় ভাই তাঁর বোনের জন্য স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন কেনেন। আর হবু বরের জন্য কেনেন আইফোন। দেশে ফেরার সময় শাওন নামে প্রবাসীর হাতে তা তুলে দেন। নির্দিষ্ট দিনে বিমানবন্দরে মালপত্র গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন কনের বাবা। কিন্তু প্রতারক ফাঁকি দিয়ে চলে যান বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে। সব বিক্রি করে দিয়ে একতলা বাড়ি নির্মাণের কাজ ধরেন, কেনেন দামি মোটরসাইকেলও।
এ ঘটনায় গত ১২ জানুয়ারি রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেন ভুক্তভোগী কন্যার বাবা। পরে উদ্ধার করা মালপত্র আদালতের অনুমতি নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।