অনলাইন ডেস্ক :
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি মাঝে মধ্যে এক দফার আন্দোলন ঘোষণা করে। সুতরাং নতুন করে আবার এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা- বিশেষ গুরুত্ব বহন করে না। তবে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে থাকব, কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার সুযোগ দেব না।
আজ ১১ জুলাই মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে মতবিনিময়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা অতীতেও দেখেছি বিএনপি যখনই কর্মসূচি ঘোষণা করে, তখনই তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায়। জনজীবনে ভোগান্তি ঘটায়। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারই তাদের মূল উদ্দেশ্য। সেই সুযোগ আমরা দেব না। আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক দল, আমরা রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকব, জনগণের পাশে থাকব।
তিনি বলেন, ইউরোপীয় প্রতিনিধি দল এখন দেশে অবস্থান করছে। এ সময় বিএনপির এ ধরনের কর্মসূচি দেওয়ার অর্থ হলো তারা কর্মসূচি জনগণকে দেখাতে চায় না, দেখাতে চায় বিদেশিদের। কারণ বিদেশিরা তাদের শক্তি সামর্থ্য নিয়ে সন্দিহান। তাই তারা শক্তি দেখানোর জন্য চেষ্টা করছে মাত্র।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির কোনো অনুযোগ, অভিযোগ থাকলে সেটি জনগণের কাছে বলতে পারে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য তাদের সব কর্মসূচি, সব কথাবার্তা হচ্ছে বিদেশিদের মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য। এটি একটি রাজনৈতিক দলের দেউলিয়াত্বের প্রকাশ।
রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল অর্ডার (আরপিও) সংশোধন বিল পাশ হওয়ায় নির্বাচন কমিশন সন্তোষ প্রকাশ করলেও বিএনপি বিরূপ মন্তব্য করেছে- এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। তারা যখন সন্তোষ প্রকাশ করে আমি সেটির সঙ্গে সহমত পোষণ করি।
‘আমরা রাজা-রানির দেশে বাস করতে চাই না, গণতন্ত্রের জন্য দেশ স্বাধীন করেছিলাম’- বিএনপি মহাসচিবের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব কখন মুক্তিযুদ্ধ করেছেন আমি সেই প্রশ্ন রাখতে চাই। মুক্তিযুদ্ধের পরে তো উনি কিছু দিন উনার বাবাসহ আÍগোপনে ছিলেন। উনি তো মুক্তিযুদ্ধ করেন নাই। বরং ক’দিন আগে মির্জা ফখরুল সাহেব বলেন, পাকিস্তানই ভালো ছিল। যে দলের মহাসচিব পাকিস্তানই ভালো ছিল বলে, সেই দল বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে কতটুকু বিশ্বাস করে সেটি নিয়েই তো প্রশ্ন থেকে যায়।
অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে আর দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ ১০ মে শনিবার বিকালে চট্টগ্রামে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আয়োজিত সমাবেশে তিনি একথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা এই মাঠে যারা আছি, তারা সবাই শুধু নয়, আমরা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ এই আওয়ামী লীগকে দেখতে চাই না। তিনি বলেন, এই আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের মানুষকে নির্যাতন করে আসছে, গণ্ঠতন্ত্রকে ধ্বংস করে আসছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। আওয়ামী লীগ অর্থনীতিকে বন্ধ করে দিয়েছিল। সেই অর্থনীতিকে সেই জিয়াউর রহমান সাহেব খুলে দিয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সংস্কার সংস্কারের কথা বলেন। প্রথম সংস্কার তো করেছেন জিয়াউর রহমান। একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছেন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়ে দিয়েছেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা দিয়ে দিয়েছেন, অর্থনীতিকে মুক্ত করে দিয়েছেন। আজকের অর্থনীতির যে ভিত্তি, সেই গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি এবং আমাদের মানুষদের বিদেশে পাঠানো, এটাও শুরু করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৪৩তম ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। ১৯৮১ সালের এই দিনে প্রায় ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফিরে আসেন তিনি। দিনটিকে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রামের সূচনার স্মারক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার সময় বিদেশে অবস্থানের কারণে তাঁর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রাণে বেঁচে যান। জাতির ইতিহাসের এ বিষাদময় ঘটনার সময় স্বামী পরমাণুবিজ্ঞানী প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার কর্মসূত্রে স্বামী ও বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন শেখ হাসিনা। পরে দীর্ঘ প্রবাসজীবন শেষে ভারত হয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন করেন তিনি।
দেশে ফেরার আগেই ১৯৮১ সালের ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দলের জাতীয় কাউন্সিলে শেখ হাসিনাকে সর্বসম্মতিক্রমে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনে নানামুখী কার্যকর উদ্যোগ নেন তিনি। পাশাপাশি জনগণের গণতান্ত্রিক এবং ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অবিরাম সংগ্রাম শুরু করেন।
তাঁরই উদ্যোগে আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী-সমর্থকের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা দেখা দেয়। দেশবাসীও উজ্জীবিত হয় নতুন প্রেরণায়।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারী শাসকদের বিরুদ্ধে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলে। তাঁর নেতৃত্বেই দলটি দীর্ঘ সময় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রাখলে ১৯৯০ সালে স্বৈরশাসকের পতন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়। আর মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়সহ গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে কয়েকবার গৃহবন্দি হয়েছেন শেখ হাসিনা। ওয়ান-ইলেভেনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় ১১ মাস বিশেষ কারাগারে কারাবন্দিও ছিলেন তিনি।
তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এ পর্যন্ত চার মেয়াদে ক্ষমতাসীন হয়েছে। প্রথমবার ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে ২৩ জুন সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। দ্বিতীয়বার ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ মহাজোট চার-তৃতীয়াংশ আসনে বিশাল বিজয়ী হয়ে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সরকার গঠন করে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বিশাল বিজয় নিয়ে ১২ জানুয়ারি সরকার গঠন করে তারা। তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও বিপুল জয়ের পর ৭ জানুয়ারি সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের জন্য সারাদেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সর্বস্তরের নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
অনলাইন ডেস্ক :
চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁওয়ে নির্মাণাধীন শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারে ফ্রিল্যান্সার ও আইটি উদ্যোক্তাদের বিনামুল্যে অফিস দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। প্রথম ছয় মাস পাঁচ হাজার বর্গফুটের একটি ফ্লোরসহ ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ সেবা ব্যবহারের সুবিধা পাবেন ফ্রিল্যান্সাররা।
আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে পঞ্চম চট্টগ্রাম আইটি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই ঘোষণা দেন প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামকে আমরা স্মার্ট, গ্রিন ও ক্লিন শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। চট্টগ্রাম থেকে যদি কোনো তরুণ-তরুণী প্রযুক্তিখাতে উদ্যোক্তা হতে চায় সরকার তাদের সুযোগ-সুবিধা দিবে।
এ ছাড়া আমরা চট্টগ্রামে ১৫টি উপজেলায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলব, যেখানে লক্ষাধিক তরুণ-তরুণী তথ্য ও প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ নিতে পারবে।
চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন, মেলায় চট্টগ্রামের আইটি প্রতিষ্ঠানগুলো তুলে ধরা হচ্ছে। দেশি-বিদেশি প্রায় ৪০টি প্রতিষ্ঠানের ৬৪টি স্টল রয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি মেলায় অংশ নিচ্ছে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন ও আয়ারল্যান্ডের মালিকানাধীন আইটি ও সলিউশনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে তথ্য প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ অনেকদুর এগিয়ে গেছে। এক সময় যে সকল মন্ত্রণালয়, দপ্তরে কেবল হাতে কলমে কাজ হত সেখানেও এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে কাজ হচ্ছে।
এদিকে শনিবার সকাল থেকে নানা বয়সের দর্শনার্থীরা ভিড় করছে মেলার বিভিন্ন স্টলে। মেলায় দেশি-বিদেশি ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান নিজেদের দক্ষতা প্রদর্শন করছে। ফলে নতুন নতুন প্রযুক্তি স¤পর্কে জানতে পারছে মেলায় আসা দর্শনার্থীরা।
সোসাইটি অব চিটাগং আইটি প্রফেশনালসের সভাপতি মো. আবদুল্লাহ ফরিদ বলেন, আমরা চট্টগ্রামের আইটি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তুলে ধরতে চাই। নতুন নতুন প্রযুক্তি স¤পর্কে জানতে পারবে মেলায় আসা দর্শনার্থীরা। এ ছাড়াও মেলার পাশাপাশি আমরা তিনদিনে তিনটি বিশেষ সেমিনার করবো। আগামী সোমবার পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য এই মেলা উন্মুক্ত থাকবে।
আখাউড়া প্রতিনিধি :
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন ‘একটি গণতান্ত্রিক দেশে যে কোন রাজনৈতিক দল তার রাজতৈনিক কর্মকান্ড করতে পারে। তাতে আওয়ামীলীগ এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের কোন আপত্তি নাই। কারণ আওয়ামীলীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। আওয়ামীলীগ বাংলাদেশে গণতন্ত্র স্থাপন করেছে।
আজ ২৭ জানুয়ারি শুক্রবার সকালে আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি’র পদযাত্রী কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি সংবিধান আছে। বাংলাদেশের সংবিধানে জাতীয় নির্বাচন কিভাবে হবে তা সম্পূর্ণ ভাবে লিখা আছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে।
এর আগে তিনি সকাল সোয়া দশটায় আন্ত:নগর মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকা থেকে আখাউড়া স্টেশনে এসে পৌঁছেন। এসময় ষ্টেশনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অংগ সংগঠনের নেতাকর্মীসহ উপস্থিত লোকজনকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইন সচিব গোলাম সারোয়ার, পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল, আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. আব্দুল্লাহ ভূইয়া বাদল, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মমিন বাবুল, ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাব উদ্দিন বেগ শাপলু, সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন নয়ন প্রমুখ।
আখাউড়া থেকে সড়ক পথে কসবা যাওয়ার পথে পৌরশহরের রাধানগর হাজী মহল্লায় পুন: নির্মিত মসজিদে নূর এর উদ্বোধন করেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক কসবায় কয়েকটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
‘শবে কদর’ কথাটি ফারসি। শব মানে রাত বা রজনী আর কদর মানে সম্মান, মর্যাদা, গুণ, সম্ভাবনা, ভাগ্য ইত্যাদি। শবে কদর অর্থ হলো মর্যাদার রাত বা ভাগ্যরজনী। শবে কদরের আরবি হলো লাইলাতুল কদর তথা সম্মানিত রাত। আজ লাইলাতুল কদর। এটি একটি সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আমি কোরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে।’ ‘লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’ ‘এ রাতে ফেরেশতারা ও জিবরাইল তাদের প্রভুর অনুমতিক্রমে সব সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করেন। শান্তিময় এ রাত ফজরের সূচনা পর্যন্ত’। (সুরা কদর)।
এ রাত কোরআন নাজিলের রাত। মহত্ব ও গুরুত্বসহকারে মহান আল্লাহর ইবাদতের রাত। এ রাত হলো হাজার মাস তথা তিরাশি বছর চার মাসের চেয়ে উত্তম। ওই ব্যক্তির চেয়েও ভাগ্যবান আর কে হতে পারে, যে এ রাতে নির্ঘুম থেকে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার সুযোগ পেয়েছে। এ পবিত্র রাতে ফেরেশতারা পৃথিবীতে আসে মানবজাতির জন্য বরকত, রহমত ও কল্যাণ নিয়ে।
সূর্যাস্তের পরপরই এ রাতে মহান আল্লাহ তার আরশ থেকে প্রথম আকাশে নেমে আসেন। মায়া আর দয়া নিয়ে, প্রেম ও ভালোবাসা দিয়ে মানবজাতিকে ডাকেন আর বলেন, ‘কে আছ পাপী! তুমি ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। কে আছ দুঃখী! আমি তোমার দুঃখ মোচন করব। কে আছ রোগী! আমি তোমাকে সুস্থ করে দেব। কে আছ দায়গ্রস্ত! আমি তোমাকে দায়মুক্ত করে দেব। তোমাদের কার রিজিকের প্রয়োজন! আমার কাছে চাও, আমি তার রিজিক বৃদ্ধি করব।’ মহান আল্লাহ এভাবে ফজর পর্যন্ত ডাকতে থাকেন। যারা তার ডাকে সাড়া দিয়ে প্রার্থনায় লিপ্ত হয়, তারা কল্যাণকামী হয়। সৌভাগ্যবান হয়।
শবে কদরের রাতে কুরআন নাজিল সম্পর্কে আল্লাহতাআলা বলেন, ‘রমজান মাস! যে মাসে কুরআন নাজিল হয়েছে মানবের দিশারি রূপে ও হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শন। (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৫)। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আরও বলেন, ‘উজ্জ্বল কিতাবের শপথ! নিশ্চয় আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয় আমি ছিলাম সতর্ককারী, যাতে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয় আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি। এ হলো আপনার প্রভুর দয়া, নিশ্চয় তিনি সব শোনেন ও সব জানেন। তিনি নভোমণ্ডল-ভূমণ্ডল ও এ উভয়ের মাঝে যা আছে সে সবের রব। যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাস করো; তিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, তিনি জীবন ও মৃত্যু দেন, তিনিই তোমাদের পরওয়ারদিগার আর তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও। তবু তারা সংশয়ে রঙ্গ করে। তবে অপেক্ষা করো সে দিনের, যেদিন আকাশ সুস্পষ্টভাবে ধূম্রাচ্ছন্ন হবে। (সুরা-৪৪ দুখান, আয়াত: ১-১০)।
শবে কদর ও কোরআন অবতরণ এবং এই রাতের ফজিলত সম্পর্কে দয়াময় আল্লাহ কোরআনে ‘সুরা কদর’ নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা নাজিল করেছেন। তাতে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি মর্যাদাপূর্ণ কদর রজনীতে। আপনি কি জানেন, মহিমাময় কদর রজনী কী? মহিমান্বিত কদর রজনী হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ হজরত জিবরাইল (আ.) সমভিব্যাহারে অবতরণ করেন; তাঁদের প্রভু মহান আল্লাহর নির্দেশ ও অনুমতিক্রমে, সকল বিষয়ে শান্তির বার্তা নিয়ে। এই শান্তির ধারা চলতে থাকে ঊষার উদয় পর্যন্ত। (সুরা-৯৭ কদর, আয়াত: ১-৫)।
শবে কদরের রাতের ফজিলত সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ রাত গুনাহ মাফের রাত। হাদিসে এসেছে- ‘যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরে ঈমান সহকারে ও আল্লাহর কাছ থেকে বড় শুভফল লাভের আশায় ইবাদতের জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে, তার পেছনের সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে’ (বুখারি ও মুসলিম)। এ রাতের কল্যাণ থেকে একমাত্র হতভাগ্য লোক ছাড়া আর কেউ বঞ্চিত হয় না (ইবনে মাজাহ ও মিশকাত)।
কিয়ামুল লাইল: ‘কিয়ামুল লাইল’ অর্থ হলো রাত্রি জাগরণ। মহান আল্লাহর জন্য আরামের ঘুম স্বেচ্ছায় হারাম করে রাত জেগে ইবাদত করা আল্লাহর প্রিয় বান্দাহদের একটি গুণ। মহান আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাহদের পরিচয় দিয়েছেন এভাবে- ‘তারা রাত্রি যাপন করে রবের উদ্দেশে সিজদাবনত হয়েও দাঁড়িয়ে থেকে’ (সুরা ফুরকান : ৬৪)।
‘তাদের পার্শ্বদেশ বিছানা থেকে পৃথক থাকে (অর্থাৎ তারা শয্যা গ্রহণ করে না; বরং এবাদতে মশগুল থাকে)। তারা গজবের ভয়ে এবং রহমতের আশায় তাদের রবকে ডাকতে থাকে এবং আমি যা দিয়েছি তা থেকে দান করে থাকে। কেউ জানে না। তাদের আমালের পুরস্কারস্বরূপ (আখিরাতে) তাদের জন্য কী জিনিস গোপনে রাখা হয়েছে’ (সুরা সিজদা : ১৬-১৭)। নবীজি (সা.) একদিন সাহাবায়ে কেরামদের (রা.) সামনে বনি ইসরাইলের এক উপাসকের কথা বলছিলেন। সে ব্যক্তি এক হাজার মাস ধরে আল্লাহর ধ্যান ও সাধনায় লিপ্ত ছিল। এ কথা শুনে সাহাবায়ে কেরাম (রা.) আফসোস করতে লাগলেন আর বললেন, আমরা এত বছর ইবাদত করব কীভাবে? তাছাড়া আমাদের অনেকে তো এত বছর বেঁচেও থাকি না। ঠিক তখনই জিবরাইল (আ.) এ রাতের সুসংবাদসহ সুরা কদর নিয়ে নবীজির (সা.) কাছে হাজির হলেন এবং এ উম্মতকে শ্রেষ্ঠ উম্মত হিসেবে প্রমাণ করে দিলেন। (তাফসিরে মাজহারি)।
নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমরা মাহে রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদর তালাশ করো।’ (বুখারি)। এ রাত হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার রাত। হজরত আয়েশা (রা.) একবার রাসুল (সা.)কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি যদি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে আমি ওই রাতে কী দোয়া করব? তখন নবীজি (সা.) বললেন, তুমি এ দোয়াটি করবে- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফউন; তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি’ অর্থাৎ হে আল্লাহ! তুমি তো ক্ষমাশীল! ক্ষমাকে তুমি ভালোবাস। অতএব, আমাকে তুমি ক্ষমা কর।
নবীজির (সা.) সময় অনেক সাহাবী (রা.) রমজানের ২৭ তারিখকে লাইলাতুল কদর হিসেবে স্বপ্ন দেখেছেন। সাহাবীরা (রা.) নবীজিকে (সা.) স্বপ্নের কথা জানালে নবীজি (সা.) বলেন, আমিও এমনটা স্বপ্নে দেখেছি। হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, ‘মহান আল্লাহর শপথ করে বলছি-নবীজি (সা.) ২৭ রমজানের রাতকে লাইলাতুল কদরের রাত বলেছেন।’ অন্য হাদিসে রয়েছে, নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি দুর্বল অথবা কোনো কারণে অক্ষম হয়ে থাকে, সে যেন রমজানের ২৭ তারিখ রাতে ইবাদত করে।’ (মুসলিম)। আরেক হাদিসে এসেছে-নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদর পেতে চায়, সে যেন তা রমজানের সাতাশতম রাতে অনুসন্ধান করে। (মুসনাদে আহমদ)।