ড্রাগন চাষ করে চাষী মহসিনের সাফল্য

কসবা, 12 July 2023, 271 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ড্রাগন ফল চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন প্রবাস ফেরত এ. কে. এম মহসিন। তার এই সফলতা দেখে স্থানীয় অনেকেই ড্রাগন ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। ড্রাগন ফল চাষ করে তাঁর আর্থিক স্বচ্ছলতাও বেড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের বিদ্যানগর গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের ছেলে এ. কে. এম মহসিন দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুরে চাকুরি করে ২০১৮ সালে দেশে ফিরে আসেন।

পরে তিনি ২০২১ সালে বাড়ির পাশে তার পরিত্যাক্ত ৫ কানি (১৫০ শতাংশ) জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান করেন। প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করে তিনি জমিতে ৬ হাজার ড্রাগন ফলের চারা রোপন করেন। প্রথম বছরেই তিনি প্রায় ১০ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করেন।

এ. কে. এম মহসিন জানান, চলতি মৌসুমের শুরুতেই তার বাগানে ১ হাজার ২০০ কেজি ড্রাগন ফল উৎপাদন হয়। স্থানীয় বাজারে এই ফলগুলো আড়াই লাখ টাকা বিক্রি করেন। তিনি বলেন, এ বছর তিনি প্রায় ২০ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে বাগান থেকেই ২শত টাকা কেজি দরে ড্রাগন ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, তিনি আশা করছেন এ বছরই বাগানে বিনিয়োগ করা টাকা তিনি তুলতে পারবেন। আগামী বছর থেকে তিনি ড্রাগন ফল বিক্রি করে লাভের মুখ দেখবেন। তিনি বলেন, তার সফলতা দেখে স্থানীয় অনেক তরুণই ড্রাগন চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

এ ব্যাপারে কসবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজেরা বেগম বলেন, আমরা ড্রাগন ফলের চাষী এ. কে. এম মহসিনকে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগীতা দিচ্ছি। ড্রাগন চাষ লাভজনক হওয়ায় ও মহসিনের সাফল্য দেখে এলাকার অনেক তরুনই বর্তমানে ড্রাগন ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছে।

Leave a Reply

ফাইল ছবি

আশুগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবক নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে Read more

বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস পালিত

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে মাটি ও Read more

সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার গ্রহণ…

চলারপথে রিপোর্ট : গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে স্বাধীনতার Read more

আগামীকাল ডিসেম্বর মাসের টিসিবির পণ্য বিক্রি…

অনলাইন ডেস্ক : প্রতি মাসের বিক্রয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সরকারি Read more

‘সিআইডি’ ধারাবাহিকের ফ্রেডরিক্স মারা গেছেন

বিনোদন ডেস্ক : ভারতীয় গোয়েন্দা ভিত্তিক প্রথম টিভি সিরিজ ‘সি. Read more

চিনাইরে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার…

চলারপথে রিপোর্ট : মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড কুমিল্লা’র চেয়ারম্যান Read more

রাতের মধ্যেই দুর্বল হয়ে পড়বে মিগজাউম

অনলাইন ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম রাতের মধ্যেই দুর্বল হয়ে পড়বে। Read more

আমারই ফল্ট ছিল: ডলি সায়ন্তনী

অনলাইন ডেস্ক : পাবনা-২ (সুজানগর-বেড়ার একাংশ) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের Read more

নির্বাচনী হলফনামা : শূন্য থেকে ৬৫…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী Read more

নবীনগরে নিখোঁজের পরদিন নদীতে মিললো শিশুর…

চলারপথে রিপোর্ট : নবীনগর উপজেলায় মেঘনা নদীতে নিখোঁজের একদিন পর Read more

ফেসবুকে ট্যুর প্যাকেজ, বুকিং মানির নামে…

অনলাইন ডেস্ক : ইন্টেরিয়র আর্কিটেক্টের কাজ করেন নাহিদ হাজারিকা ইতি। Read more

নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করবেন জোটের প্রার্থীরা…

অনলাইন ডেস্ক : জোটের প্রার্থীরা নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করবেন বলে Read more

কসবায় সফিকুল ইসলাম খান স্মৃতি পাঠাগার মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা ও বৃত্তি দিয়েছে

কসবা, 6 January 2023, 500 Views,
স্টাফ রিপোর্টার:
সফিকুল ইসলাম খান। যিনি মিয়া মাষ্টার হিসেবে পরিচিত এলাকায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার সৈয়দাবাদ গ্রামের গুণী এই শিক্ষকের স্বপ্ন-ইচ্ছেকে বাস্তবায়নে কাজ করছেন পরিবারের সদস্যরা। যেখানে বসে তিনি ছাত্রদের পড়াতেন সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে সফিকুল ইসলাম খান স্মৃতি পাঠাগার। এটি স্থায়ী করতে পাকা দালান ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এলাকার গুণীরাও ছিলো তার কদরনীয়। সেই কারণে এই পাঠাগার থেকে গুনীজন সংবর্ধনার আয়োজন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ বছর প্রথম ২ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। তারা হলেন শহীদ সেলিম ও পরেশ চন্দ্র। মিয়া মাষ্টার একজন দরিদ্র শিক্ষক হয়েও বিনামূল্যে ছাত্রদের পড়াতেন। সে কারণে মেধাবী দরিদ্র শিক্ষকদের শিক্ষাবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। এ বছর ৪৪ হাজার টাকা শিক্ষাবৃত্তি দেয়া হয়েছে। বৃত্তিপ্রাপ্ত ১০ জনের প্রত্যেককে ৪ হাজার টাকা করে দেয়া হয়। সৈয়দাবাদ সরকারি আদর্শ কলেজ অডিটোরিয়াম বৃত্তি ও গুনী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সরকারি আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুন নূর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মিয়া মাষ্টারের ছেলে ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তা সাখাওয়াত হোসেন খান।
এতে অতিথি ছিলেন সাবেক এমপি এডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. লিয়াকত আলী খান, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান ফারহানা সিদ্দিকী, বিনাউটি ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল আলম খান বেদন, সাবেক চেয়ারম্যান এডভোকেট ইকবাল হোসেন ভুইয়া, কামাল হোসেন, আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক শফিকুল ইসলাম চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা সহিদুল হক, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এরশাদুল হক মিন্টু মাস্টার, সাবেক প্রধান শিক্ষক মোঃ আলমগীর হোসেন প্রমুখ।

কসবায় মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

কসবা, 5 February 2023, 524 Views,

কসবা প্রতিনিধি :
কসবায় ৯ কেজি গাঁজাসহ মোঃ শফিক (৩৬) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ ৫ ফেব্রুয়ারি রবিবার সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের গোপীনাথপুর বাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেফতারকৃত মোঃ শফিক কসবা উপজেলার শাহপুর (রাজাপুর) এলাকার মোর্তুজ আলীর ছেলে।

পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে গোপীনাথপুর বাজারের দক্ষিন পাশে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার সাথে থাকা বস্তা তল্লাশী করে ৯ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

এ ব্যাপারে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মহিউদ্দিন জানান, তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্যের আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

লাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাবে প্রান্তিক খামারিরা দিশেহারা

কসবা, 20 June 2023, 286 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
গরুর ভাইরাসজনিত লাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাবে দিশেহারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার প্রান্তিক খামারিরা। এই রোগে আক্রান্ত গরুর গায়ে গুটি বের হতে দেখা যায়। পরে গায়ে প্রচণ্ড ব্যথায় গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা না থাকায় গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে রয়েছেন খামারি ও গরু পালনকারীরা।

কসবার গরু পালন অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই এখন গরু পালন করা হচ্ছে। অন্যদিকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামার বৃদ্ধি পাচ্ছে। গরু পালন অনেকের সংসারে সচ্ছলতা এনেছে। পাশাপাশি বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু নতুন এই রোগের কারণে শঙ্কিত গরু পালনকারীরা।

উপজেলা প্রাণীসম্পদ হাসপাতালে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চারশ আক্রান্ত গরু চিহ্নিত হয়েছে। এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে এই রোগ। প্রতিদিনই নতুন আক্রান্ত গরু চিহ্নিত হচ্ছে। এই রোগে গরুর গায়ে গোটা উঠতে দেখা যায়।

গরু পালনকারী সৈয়দাবাদ গ্রামের আলিম মিয়া জানান, গাভী গরুগুলো বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এতে প্রয়োজনীয় দুধ না পাওয়ায় বাছুর পালন করতে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। অন্যদিকে গরুর শরীরে ব্যথা ও শরীরে ঘা’র স্থলে মশা-মাছি বসে অস্থির করে রাখছে।

একই গ্রামের গরু পালনকারী বিল্লাল মিয়া বলেন, এ রোগ হলে চিকিৎসা কী হবে, সে বিষয়ে আমাদের কোনো ধারণা নেই। প্রাণীসম্পদ হাসপাতালেও কোনো চিকিৎসা নেই। শুধু জ্বর ও ব্যথার ইনজেকশন দিচ্ছে। এতে আক্রান্ত গরুর ফোলা ও গুটি সারতে অনেক সময় লাগছে। অনেক টাকা খরচ হচ্ছে।

কসবা উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তারেক মাহমুদ বলেন, মশা-মাছির মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। মশা বা মাছি আক্রান্ত গরুর শরীরে বসে। অন্য একটি সুস্থ গরুর শরীরে বসলে সেটিও আক্রান্ত হয়ে যায়। তাই এই রোগ প্রতিরোধে গরুগুলোকে মশারির ভেতরে রাখা ও বাড়ির আশপাশ (গোয়াল ঘর) পরিষ্কার রাখতে বলা হচ্ছে। এছাড়া এ রোগের বিস্তার ঠেকাতে স্থানীয়দের মাঝে সচেতনতার জন্য লিফলেট বিতরণ ও উঠান বৈঠক করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ভাইরাসজনিত এই রোগের কোনো টিকা বা ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। তবে ছাগলের বসন্ত রোগের মিল থাকায় প্রাথমিকভাবে ১১ হাজার সুস্থ গরুকে ‘গোট পক্স’ টিকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রোগ দেখা দিলে তাৎক্ষণিক নিকটস্থ প্রাণীসম্পদ দপ্তর বা ভেটেরিনারি সার্জনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে।

সাংবাদিক এইচ.এম. সিরাজ’র পিতার চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ

কসবা, 31 December 2022, 503 Views,
স্টাফ রিপোর্টার:
আজ ১ জানুয়ারি’২৩ রোববার সাংবাদিক এইচ.এম. সিরাজ’র পিতা আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ মিয়ার চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। দিবসটি উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামস্থ নিজ বাড়িতে মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবারের ন্যায় এবারও মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনায় গ্রহণ করা হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি।

গৃহিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে রোববার বাদ ফজর মরহুমের কবর জিয়ারত ও ফাতেহা পাঠ, বাদ আসর মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মহফিল এবং তাবারুক বিতরণ। এসব কর্মসূচিতে মরহুমের আত্মীয়-পরিজন, শুভানুধ্যায়ী এবং স্থানীয়দের সবান্ধব অংশগ্রহণ একান্তভাবে কামনা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, কসবার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের প্রাক্তন রেশন ডিলার, গোপীনাথপুর শহীদ বাবুল উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির প্রাক্তন সদস্য, বিশিষ্ট সমাজ সেবক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ মিয়া বিগত ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে ৯৮ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেন, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ মিয়ার দ্বিতীয় পুত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের গ্রন্থাগার সম্পাদক, দৈনিক প্রজাবন্ধু’র নির্বাহী সম্পাদক ও দৈনিক শেয়ার বিজ’র জেলা প্রতিনিধি, শিক্ষানবিশ অ্যাডভোকেট, কবি ও লেখক এইচ.এম. সিরাজ তার পিতার আত্মার মাগফেরাত কামনায় সকল মহলের নিকট দোয়া কামনা করেছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুটিসহ দেশে ৫০ মডেল মসজিদের উদ্বোধন

কসবা, জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 17 January 2023, 1329 Views,
স্টাফ রিপোর্টার :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২টিসহ দেশে আরও ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সারাদেশে মডেল মসজিদগুলো খুলে দেন।
গতকাল সোমবার দুপুরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি সারা দেশের মডেল মসজিদ উদ্বোধনকালে জেলা সদরের ছয়বাড়িয়ায় একটি ও কসবা উপজেলা সদরে একটি মডেল মসজিদের উদ্বোধন করেন। এ উপলক্ষে শহরের ছয়বাড়িয়া মডেল মসজিদের হলরুমে ইসলামী ফাউন্ডেশন ও গণপূর্ত বিভাগের আয়োজনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাকিউল আলম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম শেখ, ইসলামী ফাউন্ডেশন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপপরিচালক আশিকুর রহমান, জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমান ওলিও, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এডঃ মোঃ লোকমান হোসেনসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, আলেম-ওলামাগণসহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। গণপূর্ত অধিদপ্তর ২৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে মডেল মসজিদ দুটি নির্মাণ করেছে।

এদিকে দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫০টি মসজিদ খোলার মাধ্যমে, প্রধানমন্ত্রী এখন পর্যন্ত ৯৪৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৫৬৪টির মধ্যে ১০০টি মসজিদ উদ্বোধন করলেন। তিনি এর আগে ২০২১ সালের ১০ জুন প্রথম ধাপে ৫০টি মসজিদ উদ্বোধন করেছিলেন। আশা করা হচ্ছে, আগামী ফেব্রুয়ারির শেষে তৃতীয় ধাপে আরও ৫০টি মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র চালু করা হবে।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মসজিদগুলোতে ওজু ও নামাজের জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে। এছাড়া হাজীদের জন্য রেজিস্ট্রেশন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র ও ইসলামিক লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, লাশ দাফনের আগের প্রস্তুতি, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও কুরআন শিক্ষার ব্যবস্থা, ইসলামী সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের জন্য সম্মেলন কক্ষ ও থাকবে। ইসলামিক দাওয়াত, ইসলামী বই বিক্রয় কেন্দ্র এবং দেশী-বিদেশী অতিথিদের জন্য বোর্ডিং সুবিধা থাকবে। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান বক্তব্য দেন। বিভিন্ন জেলা থেকেও কর্মসূচিতে ভাচুয়ালি যুক্ত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দল, সরকারি কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষ। অনুষ্ঠানে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ওপর একটি ভিডিও-ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
ইসলামের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে শেখ হাসিনা সারাদেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল ইসলামী ভ্রাতৃত্ব এবং এর মূল্যবোধের প্রচার এবং সেইসাথে চরমপন্থা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ইসলামের সারমর্ম প্রচার করা কারণ ধর্ম কখনই এগুলোকে সমর্থন করে না।

এটি সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- প্রচারের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টিতেও মনোনিবেশ করবে। এ ক্যাটাগরির অধীনে, ৬৪টি জেলা ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় লিফট সুবিধা এবং ফ্লোর স্পেস ২,৩৬০.০৯ বর্গমিটার বিশিষ্ট প্রায় ৬৯টি চারতলা মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। বি ক্যাটাগরির অধীনে, প্রতিটি ১৬৮০.১৪ বর্গ মিটার ফ্লোর স্পেসসহ ৪৭৫টি মসজিদ তৈরি করা হচ্ছে এবং উপকূলীয় অঞ্চলে সি ক্যাটাগরির অধীনে ১৬টি মসজিদের প্রতিটি ২,০৫২.১২ বর্গ মিটার মেঝে থাকবে।
জাতির পিতা ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন আইন, ১৯৭৫ প্রণয়ন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর চিন্তাধারার সাথে সঙ্গতি রেখে প্রকল্পটি সারা দেশে এই মসজিদ এবং ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী ইসলামী সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তোলার দিকেও দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।

উদ্বোধন হওয়া ৫০টি মসজিদ হলো: ভাঙ্গা উপজেলা ও ফরিদপুরের নগরকান্দা, গাজীপুরের কাপাসিয়া, গোপালগঞ্জের সদর উপজেলা, সদর উপজেলা ও কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী, ঘিওর উপজেলা ও মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া, সদর উপজেলা ও নরসিংদীর মনোহরদী, গোয়ালন্দ উপজেলা মডেল মসজিদ রাজবাড়ি, জেলা সদর শরীয়তপুর ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা, ধুনট উপজেলা ও বগুড়ার নন্দীগ্রাম, নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলা, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলা, ভাঙ্গুড়া ও সুজানগর উপজেলা পাবনা, সিরাজগঞ্জের কাজীপুর, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, রংপুরের কাউনিয়া ও গঙ্গাচরা ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলা, শেরপুরের সদর উপজেলা, পিরোজপুরের সদর উপজেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলা ও কশবা, খাগড়াছড়ির সদর উপজেলা ও মানিকছড়ি, কুমিল্লার চান্দিনা ও চৌদ্দগ্রাম, খুলনার রূপসা, খোকসা ও ভেড়ামারা কুষ্টিয়া। জেলা সদর ও গাংনী মেহেরপুর, সাতক্ষীরার দেবহাটা, সিলেটের গোয়াইনঘাট, জেলা সদর ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর, হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট।