চলারপথে রিপোর্ট :
ফলের স্বর্গ রাজ্য হিসেবে পরিচিত বিজয়নগর উপজেলা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর থেকে ভারতীয় সীমান্তঘেষা বিজয়নগর উপজেলার দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিলোমিটার। প্রাকৃতিক ও নৈর্সগিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই বিজয়নগর উপজেলার টিলা ভূমির মাটি ফল চাষের জন্য খুবই উপযোগী। বর্তমানে দেশী ও বিদেশী অনেক ধরনের ফলই বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এই বিজয়নগরে। সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা গেছে প্রতি বছর এই উপজেলায় প্রায় ৫০ কোটি টাকার বিভিন্ন ফল বিক্রি করা হয়।
উৎপাদিত দেশী ফলের মধ্যে রয়েছে কাঁঠাল, আম, জাম, লিচু, পেয়ারা, মালটা, বড়ুই (বল সুন্দরী), কমলা ও লটকন। বিদেশী ফলের মধ্যে রয়েছে আপেল, আঙ্গুর, ড্রাগন ইত্যাদি। বর্তমানে বানিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি আম ‘মিয়াজাকি’। মিয়াজাকি আমকে বাংলাদেশে সূর্যডিম আম বলা হয়।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর বিজয়নগর উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে লটকন, ৪২০ হেক্টর জমিতে লিচু, ৩৪০ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল, ৬৫ হেক্টর জমিতে সবুজ মাল্টা, ৪২ হেক্টর জমিতে পেয়ারা ও ১৬ হেক্টর জমিতে লেবু চাষ করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছর বিজয়নগরে প্রায় ৮ কোটি টাকার বেশি কাঁঠাল, প্রায় ১৯ কোটি টাকার লিচু ও প্রায় ১৩ কোটি টাকার মালটা বিক্রি করা হয়। প্রায় ১ কোটি টাকার লটকন বিক্রি করা হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও পেয়ারা প্রায় সোয়া ৪ কোটি টাকা ও প্রায় ১ কোটি টাকার লেবু বিক্রি করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সাল থেকে বিজয়নগর উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে লিচুর আবাদ করা শুরু হয়। কম পরিশ্রমে বেশী লাভ হওয়ায় এখানকার ধানি জমি গুলোকেও লিচু বাগানে পরিনত করতে থাকেন চাষীরা।
চলতি বছর বিজয়নগর উপজেলার ৪২০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ করা হয়েছে। প্রায় তিন শতাধিক লিচুর বাগান রয়েছে এই উপজেলায়। এখানকার লিচু মিষ্টি ও রসালো হওয়ায় দেশজুড়ে রয়েছে এই লিচুর আলাদা কদর। বিজয়নগরে চাষ করা হয় পাঁচ ধরনের লিচ। এর মধ্যে রয়েছে দেশী লিচু, এলাচি লিচু, চায়না লিচু, পাটনাই লিচু ও বোম্বাই লিচু।
বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর, বিষ্ণুপুর, কাঞ্চনপুর, খাটিঙ্গা, কাশিমপুর, সিঙ্গারবিল, চম্পকনগর, আদমপুর, কালাছড়া, মেরাশানী, সেজামুড়া, কামালমোড়া, নুরপুর, হরষপুর, মুকুন্দপুর, নোয়াগাঁও, অলিপুর, চান্দপুর, কাশিনগর, ছতুরপুর, রূপা, শান্তামোড়া, কামালপুর, কচুয়ামোড়া, ভিটিদাউপুর এলাকায় রয়েছে এই লিচুর বাগানগুলি। এ বছর বিজয়নগরে প্রায় ১৯ কোটি টাকার লিচু বিক্রি করা হয়েছে।
উপজেলার কামালমুড়া গ্রামের মোঃ শাহাবুদ্দিন বলেন, তার বাগানে থাকা ৭০ টি গাছের লিচু তিনি এ বছর ৬ লাখ টাকা বিক্রি করছেন। উপজেলার সেজামুড়া গ্রামের বাগান মালিক কাউছার ভূইয়া বলেন, তার ৪টি বাগানে থাকা ১৭০টি গাছের লিচু তিনি এ বছর প্রায় ১২ লাখ টাকা বিক্রি করেছেন।
উপজেলার মহেশপুর গ্রামের লিচুর চাষী মাসুদুল হাসান বলেন, তার বাগানে থাকা ৬০টি গাছের লিচু তিনি এ বছর ৬ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করেছেন।
২০১৫ সাল থেকে বিজয়নগরে বাণিজ্যিকভাবে সবুজ মাল্টার চাষ শুরু হয়। গত বছর উপজেলার ৬৫ হেক্টর জমিতে সবুজ মাল্টার চাষ করা হয়। কৃষি বিভাগের প্রণোদনায় গত ২০১৬ সাল থেকে বারি-১ ও বারি-২ জাতের মাল্টা গাছের চারা রোপন করেন চাষীরা। শুরুতে রসালো এই ফলটির ফলন নিয়ে চাষীদের মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্ধ থাকলে খরচ কম এবং ফলন ভালো হওয়ায় মাল্টার প্রতি আগ্রহ বাড়ে চাষীদের।
বর্তমানে উপজেলার পাহাড়পুর, চম্পকনগর, বিষ্ণুপুর ও সিঙ্গারবিল ইউনিয়নে রয়েছে ছোট বড় মিলিয়ে ৭৫৪টি মাল্টার বাগান। গত বছর বাগানগুলোতে মাল্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রায় ১৩ কোটি টাকার মাল্টা বিক্রি করা হয় বলে জানা গেছে।
উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের মেরাশানী গ্রামের মালটা বাগানের মালিক মোঃ সোহাগ ভূইয়া জানান, তার বাগানে ১২০টি মালটা গাছ আছে। গত বছর তিনি প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকার মালটা বিক্রি করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় প্রায় দুইশত বছর আগে বিজয়নগরে বাণিজ্যিকভাবে কাঁঠালের চাষ শুরু হয়। উৎপাদন খরচ ও পরিশ্রম কম হওয়ায় আস্তে আস্তে কাঁঠাল চাষে উদ্ধুদ্ধ হয় এখানকার চাষীরা। চলতি বছর বিজয়নগর উপজেলার বিজয়নগর উপজেলায় ৩৪০ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের চাষ করা হয়েছে।
উপজেলার কালাছড়া, বিষ্ণুপুর, কাঞ্চনপুর, খাটিঙ্গা, কাশিমপুর, সিঙ্গারবিল, চম্পকনগর, মেরাশানী, কামালমোড়া, নুরপুর, কাশিমপুর, হরষপুর, ধোরানাল, মুকুন্দপুর, সেজামুড়া, নোয়াগাঁও এবং পত্তন এলাকায় রয়েছে প্রায় ৩ শতাধিক কাঠাল বাগান। চলতি বছর বিজয়নগরে প্রায় ৮ কোটি টাকার কাঁঠাল বিক্রি করা হয়েছে।
গত দুই বছর ধরে বিজয়নগরে লটকনের চাষ হলেও চলতি বছর থেকে বাণিজ্যিকভাবে লটকন চাষ করা হয়েছে। চলতি বছর উপজেলার প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে লটকন চাষ করা হয়। উপজেলার চম্পকনগর, মেরাশানি, সিঙ্গারবিল ও পাহাড়পুর এলাকায় রয়েছে লটকনের বাগান। উপজেলার ১৫ হেক্টর জমিতে লটকনের চাষ করা হলেও শুধু উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নেই রয়েছে প্রায় ১০ হেক্টর লটকনের বাগান।
মেরাশানী গ্রামের লটকন চাষী বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বলেন, গত ৭/৮ বছর আগে তিনি ময়মনসিংহ জেলা থেকে ১০০ লটকনের চারা এনে একটি বাগান করি। প্রথমে যখন লকটকের বাগান করি এলাকার অনেকেই এনিয়ে হাসি-ঠাট্টা করেছেন। গত ২ বছর ধরে কিছু কিছু গাছে লটকন ধরা শুরু করলেও এবছর সব গাছে লটকন ধরেছে। তিনি বলেন, বাগান থেকে লক্ষাধিক টাকার উপর লটকন বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি। তিনি বলেন, কৃষি অফিসের লোকজন সব সময় আমাকে পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে বানিজ্যিকভাবে আমি লটকনের চাষ করবো।
উপজেলার সিঙ্গার বিল গ্রামের লটকন বাগানের মালিক জাকির মিয়া বলেন, এ বছর লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিদিন দূর-দুরান্ত থেকে পাইকারা এসে বাগান থেকেই লটকন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, তার বাগান থেকে তিনি ২ লাখ টাকার লটকন বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করছেন।
একই এলাকার আবদুল হাসিম বলেন, তার বাগানে ১০০টি লটকন গাছ আছে। বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে লটকন নিয়ে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শাব্বির আহমেদ বলেন, বিজয়নগরের মাটি লটকন চাষের জন্য খুবই উপকারি। এই বছর বাণিজ্যিকভাবে উপজেলায় লকটন চাষ করা হয়েছে। উপজেলার ২০/২৫ জন চাষী ১৫ হেক্টর জমিতে লটকনের বাগান করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে বাগান মালিকদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগীতা দেয়া হচ্ছে। এ বছর উপজেলায় লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশাকরি এ বছর উপজেলায় প্রায় ৮০ লাখ টাকার লটকন বিক্রি করতে পারবেন চাষীরা।
তিনি বলেন, লটকনের রয়েছে পুষ্টি ও ঔষধি গুণ। ভিটামিন “সি” তে ভরপুর এই ফল, যা প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখা যায়। ১০০ গ্রাম পাকা লটকনে আছে খাদ্যশক্তি ৯১ কিলোক্যালোরি। এছাড়া আমিষ ১.৪২ গ্রাম, চর্বি ০.৪৫ গ্রাম, ভিটামিন-সি ৫৫ মিলিগ্রাম।
উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের বামুটিয়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন জানান, তার বাগানে মালটা, লটকন, কমলা, কয়েক জাতের আম, লিচু, পেঁপে, কাঁঠাল, ড্রাগন ও সৌদি আরবের খেজুর গাছ রয়েছে। “মিয়াজাকি” আম গাছও আছে তাঁর বাগানে। মিয়াজাকি আমকে বাংলাদেশে সূর্যডিম আম হিসেবে পরিচিত।
উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারি কৃষি অফিসার মোঃ হাদিউল ইসলাম সৃজন বলেন, ফলের জন্য উর্বর ভূমি বিজয়নগর উপজেলা। দেশি, বিদেশি সব জাতের ফলই এখানে বাণিজ্যিভাবে উৎপাদিত হচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে সাধ্যমত সব ধরণের সহযোগিতা করা হয় চাষিদেরকে।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মুন্সী তোফায়েল হোসেন বলেন, ফলের স্বর্গ রাজ্য হিসেবে পরিচিত বিজয়নগর উপজেলা। এই উপজেলায় দেশীয় ফল কাঁঠাল, আম, জাম, লিচু, পেয়ারা, মালটা, বড়ুই (বল সুন্দরী), কমলা ও লটকন উৎপাদরের পাশাপাশি বিদেশী ফল আপেল, আঙ্গুর, ড্রাগন ইত্যাদিও চাষ করা হচ্ছে। বর্তমানে বানিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে “মিয়াজাকি” আম। মিয়াজাকি আমকে বাংলাদেশে সূর্যডিম আম বলা হয়। তিনি বলেন, আমরা বর্তমানে সূর্যডিম আম চাষেই গুরুত্ব দিচ্ছি । এই আমটিকে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে আগামী বছর দুয়েকের মধ্যে বাজারজাত করার জন্য আমরা কাজ করছি। তিনি বলেন, আমরা চাষীদেরকে বিভিন্নভাবে পরামর্শ ও সহযোগীতা করে থাকি। প্রতি বছর বিজয়নগরে প্রায় ৫০ কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের ফল বিক্রয় করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিজয়নগরে পিছিয়ে পড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহকে আইসিটি বিষয়ক জ্ঞানে আরো পারদর্শী করতে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধশালী ও স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার জন্য ৩৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ট্যাব, সাউন্ড সিস্টেম, স্কুল বেঞ্চ ও ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাছিমা লুৎফুর রহমান ওরফে নাছিমা মুকাই আলী, উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাহনেওয়াজ পারভীন।
অনুষ্ঠানে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাগন প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগন উপস্থিত ছিলেন।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বাধীনতা কাপ মহিলা ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণ সোমবার দুপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গভ. মডেল গার্লস উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে খেলো বাংলাদেশে স্পোর্টস সোসাইটি ও ভারত-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মৈত্রী পরিষদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। খেলো বাংলাদেশে স্পোর্টস সোসাইটি’র প্রধান উপদেষ্টা আ. ফ. ম কাউসার এমরানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাবেদ রহিম বিজন। বিশেষ অতিথি ছিলেন, গভ. মডেল গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষক পারভীন আক্তার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি দীপক চৌধুরী বাপ্পী, সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ পাল বাবু, প্রেসক্লাবের সাবেক আইসিটি সম্পাদক মুজিবুর রহমান খান, ভারত-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মৈত্রী পরিষদ এর সভাপতি করবী চক্রবর্তী, সাধারন সম্পাদক সঞ্জয় দাস। সুষ্মিতা সাহার সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য দেন খেলো বাংলাদেশে স্পোর্টস সোসাইটির সাধারন সম্পাদক শিশির সিকদার।
ব্যাডমিন্টন খেলায় এককে রূপালী চ্যাম্পিয়ন, অনিতা রানার আপ হন। দ্বৈতে রূপালী ও নন্দিনি চ্যাম্পিয়ন এবং জান্নাত ও লিটা রানার আপ হন। এককে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ রূপালী ও দ্বৈতে জান্নাত। অতিথিরা খেলোয়ারড়দের হাতে নগদ টাকা ও ক্রেস্ট তুলে দেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, ‘খেলো স্পোর্টস সোসাইটি নারীদের নিয়ে ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন খেলার মতো যেসব আয়োজন করছে সত্যিই প্রশংসনীয়। নারীদেরকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদেরকে সুযোগ করে দিতে হবে। নারীরা এখন সমানতালে এগিয়ে চলছে’।
বিজয়নগরে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটায় দুইজনকে জরিমানা
বিজয়নগর প্রতিনিধি :
বিজয়নগরে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার অভিযোগে মোঃ মিজান মিয়া ও মোঃ জুয়েল মিয়া নামে দুইজনকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
২৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের দুই জনকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন।
জরিমানাপ্রাপ্তরা হলেন, উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ছতরপুর গ্রামের মো. মিজান মিয়া ও একই ইউনিয়নের বক্তারমোড়া গ্রামের জুয়েল মিয়া। তাদের প্রত্যেককেই ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় দেখা যায় ফসলি জমি ধ্বংস করে নিয়ম বর্হিভ‚তভাবে ভ্যাকু মেশিন ব্যবহার করে ফসলি জমি গভীরভাবে কেটে মাটি তোলা হচ্ছে। এতে করে পাশের জমিগুলোও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। পরে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ অনুযায়ী দুইজনকে পৃথক দুটি মামলায় ১ লাখ টাকা করে মোট ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়াও মাটি পরিবহনের সাথে জড়িত ২টি ট্রাক্টরের মালিককে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ অনুযায়ী ৫ হাজার টাকা করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
স্টাফ রিপোর্টার:
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) আরো ১০টি পণ্যকে মান সনদের আওতায় এনেছে। বিএসটিআই’র সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কাউন্সিলের ৩৭তম সভায় বাধ্যতামূলক মান সনদের তালিকায় ১০টি নতুন পণ্যকে মান সনদের অন্তর্ভূক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রোববার রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বিএসটিআই’র প্রাধন কার্যালয়ে এই প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কাউন্সিলের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিল্পমন্ত্রী ও বিএসটিআই কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। নতুন যে ১০টি পণ্য মান সনদের আওতায় আনা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ডিসপোজেবল ডায়াপারস, ফেসওয়াস, পেট্রোলয়িাম জেলি, রুটি (ফ্ল্যাটব্রেড/ টরটিলা), এ্যারোসলস, গিজার, শেভিং ফোম/জেল, আই কেয়ার, হেয়ার ডাইস লিকুইড ও শু-পলিশিং লিকুইড। বর্তমানে বিএসটিআই’র বাধ্যতামূলক মান সনদের আওতাভুক্ত পণ্যের সংখ্যা ২২৯টি। বিএসটিআই কাউন্সিলের প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, দ্বিতীয় ভাইস চেয়ারম্যান শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, এ সভায় শিল্প, স্বরাষ্ট্র, অর্থ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট, তথ্য, কৃষি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, তথ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশন, কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বিসিএসআইআর, আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রক, ইপিবি এবং এমসিসিআই, ক্যাবসহ কাউন্সিলের সদস্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। বিএসটিআই’র মহাপরিচালক ও কাউন্সিলের সদস্য সচিব মোঃ আবদুস সাত্তার এ সভা পরিচালনা করেন।
সভাপতির বক্তৃতায় শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিএসটিআই সকলের জন্য একটি আস্থার জায়গা তৈরি করেছে। পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআইকে আরও সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। অভ্যন্তরীণ বাজার এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে পণ্যের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ করা এবং মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে সহায়ক ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বে হালাল পণ্যের সার্টিফিকেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিএসটিআইকে পণ্যের হালাল সার্টিফিকেশনের ক্ষেত্রে গুণগত মান ঠিক রেখে এগিয়ে যেতে হবে।
জনগণের স্বার্থ রক্ষার্থে প্রয়োজনে বিএসটিআইকে আরও কঠোর ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়ে কাউন্সিলের প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ব্যবসায়ীরা করোনা মহামারিকে পূঁজি করে অতিরিক্ত মুনাফা করেছে। তারা পণ্যে ভেজাল দিচ্ছে, সিন্ডিকেট করছে। তিনি বলেন, ১৭ কোটি মানুষকে রক্ষায় বিএসটিআইকে দায়িত্ব নিতে হবে। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় রেখে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআইকে কাজ করতে হবে।
কাউন্সিল সভার পরে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বিএসটিআই’র ৯১ জন নবনিযুক্ত কর্মকর্তার নিয়োগ, যোগদান এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, বিএসটিআই’র মহাপরিচালক, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনেন্দ্র নাথ সরকারসহ শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বিএসটিআই’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিজয়নগরে মোঃ জুলহাস (২৫) ও আরমান হোসেন (১৭) নামে দুই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ফেন্সিডিল বহনকারী একটি সিএনজিচালিত অটোরিক্সা জব্দ করা হয়।
গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় উপজেলার চান্দুরা ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর জিলানী ফিলিং স্টেশনের সামনে থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত জুলহাস বিজয়নগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের ছিদ্দিক মিয়ার ছেলে ও আরমান হোসেন একই গ্রামের খলিল মিয়ার ছেলে।
এ ব্যাপারে বিজয়নগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিমল কর্মকার বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় ৯৩ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।