চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে মাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বৃদ্ধা মারা যান।
নিহত মালেকা বেগম (৫৫) আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের মাজন খাঁর স্ত্রী।
নিহত মালেকা বেগমের নাতনি সানজিদা অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে তার মামা শাহিন মিয়া ও তার স্ত্রী জান্নাত এবং বড় মামি সেফালি ও মামাতো ভাই ইয়াসিন মালেকা বেগমকে মারধর করেন। তারা মালেকাকে মারধর করে প্রায়ই ৪ ঘণ্টা ঘরে ফেলে রাখে। এ সময় তার মেজো মামা তার নানিকে অজ্ঞান অবস্থায় দুপুর ১টার দিকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে ভর্তি করলে সন্ধ্যার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহমেদ বলেন, ছেলে ও পুত্রবধূর সঙ্গে মালেকা বেগমের প্রায়ই ঝগড়া হত। দুপুরে মালেকা বেগমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে তিনি মারা যান। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জের আলোচিত সন্ত্রাসী মো. দ্বীন ইসলাম সরকার ওরফে ধীরাকে (৪৫) আটক করেছে পুলিশ। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে ২৫ জুলাই মঙ্গলবার সকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে বন্দর এলাকার ট্রানজিট মাঠের বিদ্যুতের টাওয়ারের নিচে ঝোপের মাটির নিচ থেকে ৪ রাউন্ড সিসা কার্তুজসহ একটি দেশীয় পাইপগান উদ্ধার করা হয়। এর আগে সোমবার রাতে উপজেলা শহরের আর জে টাওয়ার রিসোর্ট অ্যান্ড বারের সামনে থেকে তাকে আটক করা হয়।
মো. দ্বীন ইসলাম সরকার ওরফে ধীরা উপজেলার চরচারতলা গ্রামের হাজী মো. মোগল মিয়া সরকারের ছেলে। তার বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ থানায় হত্যা, মাদক ও অবৈধ অস্ত্র মামলাসহ ১৫টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহাম্মেদ জানান, সোমবার রাতে আশুগঞ্জের আলোচিত সন্ত্রাসী ধীরা আর জে টাওয়ার রিসোর্ট অ্যান্ড বারের সামনে স্থানীয় লোকজনের সাথে বাক-বিতণ্ডায় লিপ্ত হয়ে ত্রাসের সৃষ্টি করেন। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ তাকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার দেওয়া তথ্যমতে ৪ রাউন্ড সীসা কার্তুজসহ কাঠের বাটযুক্ত লোহার তৈরি একটি দেশীয় পাইপগান উদ্ধার করা হয়।
আটক দ্বীন ইসলাম সরকার ওরফে ধীরার বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. কবির হোসেন বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে মামলা করেছে। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
চলারপথে রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল- আশুগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়নপত্র কিনলেন যারা তারা হলেন : সদ্য উপ-নির্বাচনে জয়ী আওয়ামীলীগ দলীয় সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম (শিউলি আজাদ) এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, মঈন উদিন মইন, সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এড. নাজমুল হোসেন, আশুগঞ্জ আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজী সফি উল্লাহ মিয়া, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী, এড. সৈয়দ তানভীর হোসেন কাউছার, সরাইল উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সভাপতি এড. আশরাফ উদ্দিন মনতু, আন্তর্জাতিক মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এমডি জালাল মিয়া, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল হান্নান রতন, অ্যাড. কামরুজ্জান আনসারী, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমান, জাপান যুবলীগ নেতা আবু শামীম মোহাম্মদ পিয়ার (পলাশ) প্রমুখ।
স্ব-স্ব আস্থাভাজন ও অনুসারী দলীয় নেতাকর্মী সাথে নিয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। তবে মনোনয়নপত্র কেনার সংখ্যা আরো বাড়তে পারে ধারণা করা হচ্ছে। এ আসনে দলীয়, জোট, মহাজোট ও স্বতন্ত্র হিসেবে যারা মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন বা করবেন এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তা জানা যায়নি। এদিকে এই আসনে তৃণমূল বিএনপির মনোনয়ন নিয়েছেন প্রয়াত আলোচিত সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে মাইনুল ইসলাম তুষার।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে মাথায় বাঁশ পড়ে জুবেদা বেগম (৬০) নামের এক ভিক্ষুক প্রাণ হারিয়েছেন।
২১ নভেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আশুগঞ্জের খড়িয়ালা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ভিক্ষুক মারা যান।
জুবেদা খাতুন উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের খড়িয়ালা গ্রামের খোদেজা বেগমের বাড়িতে বসবাস করতেন। জুবেদা খাতুনের স্বামী/পিতার নাম-ঠিকানা জানা যায়নি।
হাসপাতাল ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খোদেজা বেগমের বাড়িতে ৫-৬ নারী ভিক্ষুক বসবাস করেন। এসব ভিক্ষুক গ্রামে বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষা করেন। জুবেদা বেগম ভিক্ষা শেষে থাকার ঘরে আসার পর হঠাৎ তীরের বাঁশ মাথায় পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে পাশের বাড়ির খোকন মিয়া জুবেদাকে উদ্ধার করে প্রথমে আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরবর্তীতে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে ভর্তি করলে রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জুবেদা মারা যান।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) নাহিদ আহম্মেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিশেষ প্রতিনিধি :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদের (মোটর গাড়ী) প্রতিক প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মুছা মিয়া গ্রেফতারের পর এবার নিখোঁজ হয়েছেন প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ২৭ জানুয়ারি শুক্রবার থেকে তিনি নিখোঁজ আছেন। পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, আবু আসিফের বাড়ির সামনে দিন-রাত সাদা পোশাকধারী লোকজন অবস্থান করছেন। গত শুক্র ও শনিবার তার বাড়িতে তল্লাশী করা হয়েছে। এ অবস্থায় পরিবারের লোকজন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
আবু আসিফ আহমেদ আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে উপ-নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার পর তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
তিনি উপ-নির্বাচনে বিএনপির সাবেক নেতা এবং এই আসন থেকে নির্বাচিত পাঁচবারের সাবেক সংসদ ও বর্তমানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়ার (কলারছড়ি প্রতীক) এর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি।
এর আগে গত বুধবার আবু আসিফের নির্বাচনী প্রচারণার দায়িত্বে থাকা মুছা মিয়া (৮০) কে হামলা ও সংঘর্ষ মামলায় গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। আবু আসিফের নির্বাচন সমন্বয়কারি ও তার শ্যালক সাফায়েত সুমন ইতিমধ্যেই আত্মগোপনে আছেন।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫ জন প্রার্থী। এরা হলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া এই আসনের ৫ বারের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়া-(কলারছড়ি প্রতিক), জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবদুল হামিদ ভাসানী-(লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী ও এই আসনের ২ বারের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা (আপেল প্রতীক), জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল-(গোলাপ ফুল), ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আবু আসিফ আহমেদ-(মোটর গাড়ী প্রতীক)।
তবে, প্রতীক বরাদ্দের পর স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছেন।
উপ-নির্বাচনে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ না করলেও উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়া সমর্থক গোষ্ঠির ব্যানারে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর আসনের সংসদ সদস্য র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা আজাদ ওরফে শিউলী আজাদ, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল-মামুন সরকারের নেতৃত্বে দলীয় নেতা-কর্মীরা প্রতিদিন নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে কলারছড়ির পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নেতৃবৃন্দ ভোটের দিন প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে স্থানীয় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদেরকে নির্দেশনা দিচ্ছেন।
আজ ২৯ জানুয়ারি রবিবার দুপুরে প্রার্থী আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরন্নিছা মেহরীন জানান, আমার স্বামীর কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। আমার বাড়ির সামনে সাদা পোশাকে লোকজন অবস্থান করছেন। আমার বাড়িতে একাধিকবার তল্লাশী হয়েছে। আমি আতঙ্কের মধ্যে আছি।
তিনি বলেন, ‘তার (আবু আসিফ) শুভাকাক্সক্ষীরা তাকে দাঁড় করিয়েছেন। তারা এখন বলছেন সে যেখানেই থাকুকনা কেন প্রচারণায় তারা কাজ চালিয়ে যাবেন। তারা কেন্দ্রেও যাবেন। তবে সুষ্ঠু ভোট হবে কিনা সেটা এখন বড় বিষয়।
আবু আসিফের বাড়ির দারোয়ান মোঃ ইউসুফ বলেন, পরশু রাতে কয়েকজন এসে পুলিশ পরিচয় দিয়ে পুরো বাড়ি তল্লাশী করে। পরের দিন আবার আসে। বাসার সামনে সাদা পোশাকধারী লোকজন অবস্থান করছেন।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ রহমান জানান, আবু আসিফ আহমেদ নিখোঁজ কি-না সে বিষয়ে পরিবার থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বাড়ির সামনে সাদা পোশাকধারী কারো অবস্থানের বিষয়টিও তিনি জানেন না বলে উল্লেখ করেন।