চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে ৯ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে অভিযুক্ত কানাই মিয়াকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
আজ ২০ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-২ এর বিচারক মোহাম্মদ রেজাউল করিম এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে কানাই মিয়াকে ১ লাখ টাকা জরিমানার ও আদেশ দেয়া হয়।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত কানাই মিয়া সরাইল উপজেলার পশ্চিম কুট্টাপাড়ার লিবু মিয়ার ছেলে।
আদালতের নথিপত্র থেকে জানা গেছে, আদালতের নথিপত্র থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর প্রতিবেশীর বাড়িতে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হয় পশ্চিম কুট্টাপাড়ার আবদুল হাফিজের ৯ বছর বয়সী মেয়ে ও কুট্টাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী জয়নব।
পরে আর তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরদিন ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বাড়ির কাছের একটি বাঁশঝাড় থেকে জয়নবের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে সরাইল থানায় ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন শিশুটির মা ফেরদৌসী বেগম। মামলার একদিন পর তদন্তে কানাই মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই শিশু ও কানাইয়ের বাড়ি কাছাকাছি।
গ্রেফতারের পর কানাই আদালতে ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করেন। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে কানাই জানায়, সে ৪টি বিয়ে করেছে। ভবঘুরে ও বখাটে স্বভাবের কারণে সব স্ত্রী তাকে ত্যাগ করেছে। দাম্পত্য জীবনে তার কোনো সন্তান নেই। ১৬ ডিসেম্বর নিখোঁজের দিন সন্ধ্যার পর শিশুটিকে সে চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে নিজ ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে এবং পরে শিশুটিকে হত্যা করে রাতেই লাশ বাঁশঝাড়ে ফেলে রাখে।
এ ঘটনায় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কানাই মিয়াকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ মেরাজুল ইসলাম জানান, কানাইয়ের জবানবন্দির প্রেক্ষিতে আদালত তাকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে। এতে আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। এ রায়ে বাদীপক্ষের লোকজন সন্তুষ্ট। এদিকে আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন প্রবীণ আইনজীবী আবু তাহের ।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের পরিদর্শক দিদারুল আলম জানান, শিশু ধর্ষণের ঘটনায় আদালত একজনকে ফাঁসির রায় দিয়েছেন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামীকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
অবৈধভাবে বালি দিয়ে কৃষি জমি ও পুকুর ভরাটের দায়ে জহিরুল ইসলাম (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ ৮ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মোশারফ হোসাইন উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম কুট্টাপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে এই জরিমানা করেন। জরিমানা দেয়া জহিরুল ইসলাম উপজেলার পানিশ্বর এলাকার আলি আকবরের ছেলে।
এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মোশারফ হোসাইন বলেন, সদর ইউনিয়নের পশ্চিম কুট্টাপাড়া গ্রামে একদল মানুষ অবৈধভাবে বালি দিয়ে কৃষি জমি ও জমির পাশে থাকা পুকুর ভরাট করছে এমন গোপন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে দুপুরে যেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে অপরাধীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ জহিরুল নামে ১জনকে আটক করে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ১৫(১) ধারায় জহিরুলকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
তিনি আরো জানান, ভরাটকৃত বালি দ্রুত অপসারণ করে জমিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার (ওসি) মোঃ রফিকুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় এক ডজন মামলার আসামী ও চিহ্নিত চোর আসাদ উল্লাহ প্রকাশ কাউছার মিয়া-(৩৭) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় একটি প্রাইভেটকার জব্দ ও বিভিন্ন ধরনের স্বর্ণালংকার (২ ভরি ৫ আনা) এবং একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
আজ ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার ভোর রাতে উপজেলার অনন্দা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মোড় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসাদ উল্লাহ প্রকাশ কাউছার মিয়া সরাইল উপজেলার রানীদিয়া গ্রামের মোঃ তাজুল ইসলামের ছেলে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে উপজেলার অন্নদা মোড়ে চেকপোষ্ট বসানো হয়। এ সময় চেকপোষ্ট এলাকা অতিক্রম করার সময় একটি প্রাইভেটকারের গতিবিধি সন্দেহ হলে প্রাইভেটকারসহ আসাদ উল্লাহ প্রকাশ কাউছারকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার শরীর তল্লাশী করে বিভিন্ন প্রকারের স্বর্ণ অলংকার যার ওজন (২ ভরি ৫ আনা) ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, বুধবার রাতে উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের বিটঘর গ্রামের ফজলু মিয়ার ঘরে থেকে এই স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন চুরি করে কাউছার। সে একজন পেশাদার চোর।
এ ব্যাপারে বিরুদ্ধে ১২টি চুরির মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস ২০২৪ পালন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে আজ ১৫ মার্চ শুক্রবার সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে একটি র্যালি বের হয়ে উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ মেজবাহ উল আলম ভূঁইয়া সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব শরীফ উদ্দিন, সরাইল প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ মাসুদ মিয়া, বাবুল হোসেন, আওয়ামীলীগ নেতা ইকবাল, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাবিববুর রহমান এ কে খান, আব্দুল জব্বার, আওয়ামীলীগ নেতা মাহফুজ আলী, বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বাবুল মিয়া, সাংবাদিক রিমন খান, জহিরুল ইসলাম রিপনসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক এবং স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় ব্যাটারী চালিত অটোরিকশার এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরো ২ জন আহত হয়েছেন।
সরাইল খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা এস.আই. সারোয়ার হোসেন জানান, শনিবার রাত ৮টার দিকে ঢাকা সিলেট মহাসড়কের উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ইসলামাবাদ (গোগদ) এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম সুজু মিয়া। সে নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা গ্রামের সাহেদ মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রাতে সিলেট থেকে ঢাকাগামী অজ্ঞাত একটি প্রাইভেটকার সরাইল উপজেলার ইসলামাবাদ ব্রিজের উপর ওভারটেক করতে গিয়ে সজোরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিকশায় থাকা ৩ যাত্রী ছিটকে পরে গুরুত্বর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সুজু মিয়া নামে একজন মারা যায়। দুর্ঘটনার পর পর প্রাইভেটকারটি পালিয়ে যায়।
চলারপথে রিপোর্ট :
দলীয় কোন্দলের জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলের আওয়ামী লীগ নেতা এ কে এম ইকবাল আজাদ হত্যা মামলায় চার জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
চট্টগ্রামের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারক হালিম উল্লাহ চৌধুরী আজ ৩ জুলাই বুধবার এ মামলার রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সরাইল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা রফিক উদ্দিন ঠাকুর, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মাহফুজ আলী, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ইসমত আলী এবং মোকারম আলী সোহেল। আর সদর ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার ও ইদ্রিস আলী, সিজার, বাবু, হারিছ, বকুল, লিমন, আবদুল্লাহ, শরীফ ও মিজানকে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
এ মামলায় অভিযুক্ত ১৯ আসামির মধ্যে বাকি পাঁচজনকে রায়ে খালাস দেওয়া হয়েছে বলে ট্রাইব্যুনালের পিপি অশোক কুমার দাশ জানান। ইকবাল আজাদ ছিলেন সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি। তার স্ত্রী উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলি আজাদ বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের তিনজনের আংশিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।
সরাইলের অরুয়াইল ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধের জের ধরে ২০১২ সালের ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় সরাইল থানা ভবনের কাছে খুন হন আজাদ। পরদিন তার ভাই এ কে এম জাহাঙ্গীর আজাদ বাদী হয়ে ২২ জনের নামে মামলা করেন।
তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বরউপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি আবদুল হালিম, সহসভাপতি সাদেক মিয়াসহ ২৯ নেতা-কর্মীকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। তাদের মধ্যে হালিম ও সাদেক পরে মারা যান।
২০১৩ সালের ৫ মার্চ আজাদ হত্যা মামলা চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হয়। আদালতে ডাক্তারসহ মামলার ১৪ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য বাকি থাকতেই ১৩৫ কার্যদিবস শেষ হয়ে গেলে ট্রাইব্যুনালের নিয়ম অনুসারে মামলাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর মামলাটি আবার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের জন্যে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাই কোর্টে আবেদন করেন মামলার বাদী। হাই কোর্টের আদেশে ২০২৩ সালের মে মাসে চট্টগ্রাম দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আবার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।