চলারপথে রিপোর্ট :
ক্রমেই চাঙ্গা হয়ে উঠেছে আবাসন ব্যবসা। অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি ও পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভেবে মানুষ এখন ফ্ল্যাটমুখী। গত ৫ বছরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আবাসন ব্যবসা।
তবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে রড, সিমেন্টসহ নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে ফ্ল্যাটের দাম। প্রতিবছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে বিক্রি হচ্ছে কমপক্ষে তিনশত ফ্ল্যাট। যার বাজার মূল্য প্রায় একশত পঁচিশ কোটি টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক বছরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে জায়গার দাম বেড়েছে কয়েক গুন। নিম্ন আয়ের লোকেরা তাদের চাহিদামতো শহরে জায়গা কিনে বাড়ি করতে পারছেন না, তাই তারা ফ্ল্যাটের দিকেই ঝুঁকছেন। আবার অনেক প্রবাসীরাও তাদের সন্তানের লেখাপড়ার সুবিধার্থে শহরে ফ্ল্যাট কিনছেন।
এছাড়াও জায়গা কিনে বাড়ি নির্মান করা বিরাট ঝামেলার কাজ ও বাড়ি নির্মানে পৌরসভার অনুমোদন পাওয়া আগের চেয়ে কঠিন হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানুষ এখন ফ্ল্যাটমুখী হচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ১০ বছর আগেই আবাসন ব্যবসা শুরু হয়। তবে মানুষ বর্তমানে ফ্ল্যাটমুখী হওয়ায় গত ৫ বছর ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবাসন ব্যবসা চাঙ্গা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ফ্ল্যাটের মালিক বলেন, শহরে জায়গার দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার কারণে জায়গা কিনে বাড়ি করতে পারবোনা বুঝে ফ্ল্যাট কিনেছি। তাছাড়া ফ্ল্যাটে রয়েছে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা।
কয়েক ফ্ল্যাট মালিক বলেন, বর্তমানে শহরে বাড়ি নির্মাণের জন্য জায়গা-জমি কেনা, নির্মাণ সামগ্রী রাখার জায়গার অভাব এবং ভবন নির্মাণে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে অনুমোদন নেওয়াসহ নানা জটিলতার কারনে আমরা ফ্ল্যাট কিনেছি।
আবার অনেক বাড়ির মালিক নিজেরা একটু আরাম-আয়েশে ও বিলাসী জীবনযাপনের জন্য তাদের বাড়ি আবাসন ব্যবসায়ীদেরকে (ডেভলাপার) দিয়ে দিচ্ছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলাকা ও জায়গার অবস্থান ভেদে আবাসন ব্যবসায়ীদের (ডেভলাপারদের) ৬০ ভাগ, জায়গার মালিকের ৪০ ভাগ, ডেভলাপারদের ৫৫ ভাগ, জায়গার মালিকের ৪৫ ভাগ, ডেভলাপারদের ৫০ ভাগ, জায়গার মালিকের ৫০ ভাগ হারে জায়গার মালিকরা তাদের জায়গা আবাসন ব্যবসায়ীদেরকে দিয়ে দিচ্ছেন।
আবাসন ব্যবসায়ীরা ওই জায়গা নিয়ে দুই ইউনিট, তিন ইউনিট ও চার ইউনিটের ৬তলা, ৮তলা, ১০তলা, ১২তলা ভবন নির্মান করছেন। তবে গত কয়েক বছর ধরে পৌরসভা থেকে ৬ তলার উঁচু ভবনের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছেনা।
জেলা শহরের মৌলভীপাড়া, হালদারপাড়া, বাগানবাড়ি, পাইকপাড়া, কাজীপাড়া, কাউতলী ও মুন্সেফপাড়া এলাকায় ফ্ল্যাটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।বর্তমানে এলাকা ও জায়গার অবস্থান ভেদে ফ্ল্যাটের প্রতি স্কয়ার ফুটের মূল্য ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা। যা আগে ছিল ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত।
শহরের হালদারপাড়ার বাসিন্দা বকুল মিয়া বলেন, শহরে জায়গার দাম খুবই বেশী। তাই তিনি সাড়ে চার হাজার টাকা স্কয়ারফুট দামে ১হাজার ২শত স্কয়ারফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। দুই ইউনিটের ৮তলা বিশিষ্ট ভবনটিতে লিফট, জেনারেটর, পানিসহ সকল সুবিধা রয়েছে। তবে গ্যাস নেই। তিনি সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করেন।
শহরের পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা মোঃ আল-আমিন বলেন, শহরে জায়গার দাম বেশী। তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন। শহরে জায়গা কিনে তার পক্ষে বাড়ি করা সম্ভব নয় বিধায় তিনি গ্রামে কিছু জায়গা-জমি বিক্রি করে ৩৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। তিনি জানান, তার বাসায়ও গ্যাস নেই। তিনিও সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি স্কুলের একজন শিক্ষক জানান, তিনি আশুগঞ্জের একটি সরকারি স্কুলে চাকুরি করেন। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার কথা চিন্তা করে গত ১০/১২ বছর ধরে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে শহরের মুন্সেফপাড়ায় ১হাজার ২শত স্কয়ারফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন।
সেলিম মিয়া নামে একজন প্রবাসী জানান, তার বাড়ি নবীনগর উপজেলায়। ছেলেমেয়েদর লেখাপড়ার কথা চিন্তা করে তিনি শহরের বাগানবাড়ি এলাকায় সাড়ে চার হাজার টাকা স্কয়ারফুট দামে ১০৫০ স্কয়ারফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন।
শহরের কাজীপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমগীর জানান, শহরের প্রতিটি মহল্লাতেই এখন চড়া দামে জায়গা বিক্রি হচ্ছে। ফলে জায়গা কিনে বাড়ি নির্মাণ করা মধ্যবিত্তদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই মানুষ এখন ফ্ল্যাটের দিকে ঝুঁকছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কলেজ শিক্ষক জানান, শহরে জায়গার দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা তিন বন্ধু মিলে বছর পাচেক আগে হালদারপাড়া এলাকায় এক বাড়ির মালিকের কাছ থেকে অর্ধেক অর্ধেক হারে ৪ শতক জায়গা নিয়ে তাতে দুই ইউনিটের ৬তলা ভবন নির্মান করেছেন। তারা তিন বন্ধু পেয়েছেন ৬টি ফ্ল্যাট ও মালিক পেয়েছেন ৬টি ফ্ল্যাট। এতে তারা লাভবান হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরে কমপক্ষে ১৫ থেকে প্রতিষ্ঠান আবাসন ব্যবসার সাথে জড়িত। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ঠিকাদারও আছেন। আবার ৭/৮জন যুবক মিলেও আবাসন ব্যবসা করছেন। এলাকা ভেদে ও জায়গার অবস্থান বুঝে জায়গার মালিকদের সাথে চুক্তি করেন আবাসন ব্যবসায়ীরা। আবাসন ব্যবসায়ীদের (ডেভলাপারদের) ৬০ ভাগ, জায়গার মালিকের ৪০ ভাগ, ডেভলাপারদের ৫৫ ভাগ, জায়গার মালিকের ৪৫ ভাগ, ডেভলাপারদের ৫০ ভাগ, জায়গার মালিকের ৫০ ভাগ হারে জায়গার মালিকরা তাদের জায়গা আবাসন ব্যবসায়ীদেরকে দিয়ে দিচ্ছেন। ভবন নির্মানের সকল খরচ বহন করেন আবাসান ব্যবসায়ীরা। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে আবাসন রেডি হওয়া পর্যন্ত জায়গার মালিক অন্য যে বাসায় ভাড়া থাকেন সেই ভাড়াও পরিশোধ করেন আবাসন ব্যবসায়ীরা।
কয়েকজন আবাসন ব্যবসায়ী জানান, ভবন নির্মাণের জন্য পৌরসভা থেকে নকশা অনুমোদন নিতে হয়। যে স্থানে ভবন নির্মাণ করা হবে- তার পাশে ১৪ থেকে ১৬ ফুট পর্যন্ত রাস্তা থাকলেই ছয়তলা বিশিষ্ট ভবনের অনুমোদন দেয়া হয়। তারা জানান, পৌর শহরের অধিকাংশ এলাকাতেই এই আকারের রাস্তা নেই। এজন্য ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত বিদ্যমান বিধি শিথিল করার দাবি জানান তারা।
আবাসন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রফিক কনস্ট্রাকশনের মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, “ মানুষ বাড়ি নির্মাণের ঝামেলা এড়াতে ফ্ল্যাটের দিকে ঝুঁকছেন। সবাই চান ঝামেলামুক্ত আবাসন। আমরা মানুষকে সকল সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ফ্ল্যাট দিচ্ছি। এছাড়া মধ্যবিত্তরা কিস্তির মাধ্যমেও ফ্ল্যাট কিনতে পারছেন।
আবাসন ব্যবসায়ী মোঃ কাদেরউজ্জামান বলেন, “ রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের কারনে রড, সিমেন্টসহ নির্র্মান সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন ফ্ল্যাট তৈরিতে খরচ পড়ছে বেশি। প্রতি স্কয়ারফুটে এখন খরচ পড়ছে আড়াই হাজার টাকার মতো। তাছাড়া ছয়তলার বেশি উচ্চতার ভবনের অনুমোদন দিচ্ছেনা পৌরসভা। এসব কারণে ফ্ল্যাটের দাম কিছুটা বেশি’।
আবাসন ব্যবসায়ী এম.কে. বিল্ডার্সের মালিক কামরুল ইসলাম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে বছরে আড়াইশ থেকে তিনশ ফ্ল্যাট বিক্রি হচ্ছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে এই চাহিদা। কিন্তু জায়গা স্বল্পতা এবং ছয়তলার বেশি উচ্চতার ভবন তৈরির অনুমোদন না থাকায় আমরা ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী ফ্ল্যাট দিতে পারছি না। তিনি বলেন, শহরের অধিকাংশ এলাকায় ১৬ ফুটের রাস্তা নেই।
তিনি বলেন, ভবন নির্মাণের জন্য বিদ্যমান বিধি যদি কিছুটা শিথিল করে ছয়তলার অধিক উচ্চতার ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়, তাহলে ফ্ল্যাট বিক্রি বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ হবে। পাশাপাশি ক্রেতারা তুলনামূলক কম দামে ফ্ল্যাট কিনতে পারবেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র মিসেস নায়ার কবির বলেন, সর্বনিম্ন ১৪ ফুটের রাস্তা থাকলেই ছয়তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করা যাবে। তবে এটি পৌরসভার কোনো বিধি নয়। সরকার থেকেই এটি নির্ধানর করা হয়েছে। মূলত মানুষের হাঁটাচলা এবং যানবাহন যেন স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে- সেজন্যই এই বিধান করা হয়েছে। এক্ষেত্রে পৌরসভার কিছু করার নেই।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সেলিম শেখ বলেছেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিম একজন ব্যক্তির জন্য ভবিষ্যত তথা বৃদ্ধকালের স্বয়সম্পূর্ণ জীবনের একটি অংশ। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার একজন ব্যক্তির ভবিষ্যতে কারো উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে এ চিন্তা করে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছে। তিনি বলেন এটি একটি মহৎ উদ্যোগ।
আজ ২৪ এপ্রিল বুধবার সকাল ১১টায় নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় হলরুমে সদর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত উপজেলাধীন মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক ও মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ সকল শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জীবন কুমার ভট্রাচার্যের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্যে রাখেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জুলফিকার হোসেন, সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসলাম হোসেন।
প্রধান অতিথি এসময় সকল বাংলাদেশি নাগরিক জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে একটি নির্দিষ্ট মূল্যমানের চাঁদাদাতা হিসেবে সর্বজনীন পেনশন স্কীমে অংশ নিতে পারবেন। তবে বিশেষ বিবেচনায় ৫০ বছরের বেশি বয়সের নাগরিকগণ স্কীমে অংশ গ্রহণের তারিখ থেকে নিরবিচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা প্রদান শেষে আজীবন পেনশন প্রাপ্ত হবেন। সকল স্কীমের জন্য চাঁদার কিস্তি প্রদানকারীর পছন্দ মাফিক মাসিক-ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক ভিত্তিতে পরিশোধের সুযোগ থাকবে। চাঁদাদাতাগণ ইচ্ছে করলে অগ্রীম হিসেবে চাঁদার টাকা পেনশন ফান্ডে জমা দিতে পারবেন বলে অবহিত করেন। এসময় তিনি সকল শিক্ষক ও কর্মচারীদের সহযোগিতায় সর্বজনীন স্কীম সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলেন মনে করেন।
এসময় সদর উপজেলা মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা পর্যায়ের শিক্ষক অধ্যক্ষ কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জেলা সমাবেশ আজ ১০ অক্টোবর মঙ্গলবার বেলা ১১টায় সদর উপজেলার সুহিলপুর ৫ আনসার ব্যাটালিয়নে অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী কুমিল্লা রেঞ্জের পরিচালক ও রেঞ্জ কমান্ডার মোহাম্মদ আবদুল আউয়ালের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট হেলেনা পারভীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসাইন, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ একরাম উল্লাহ, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমান।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর কমান্ড্যান্ট আবদুল্লাহ আল হাদী, আশুগজ্ঞ উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ সোহরাব উদ্দিন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনে আনসারদের কাজ সবচেয়ে কঠিন। যারা ভোট ডাকাত, আমাদের ভোটাধিকারকে নষ্ট করেছে সে সমস্ত লোকেরা যাতে ভোট কেন্দ্র জবর দখল করতে না পারে সেটি প্রতিহত করা আপনাদের জন্যে গুরুত্বপূর্ন কাজ।
আগামী নির্বাচনে ভোট ডাকাতরা যেন ভোট ডাকাতি না করতে পারে সেজন্য নির্বাচনে সঠিক দায়িত্ব পালনের জন্য আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহবান জানান।
সমাবেশে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে বাইসাইকেল, সেলাই মেশিন ও ছাতা বিতরণ করা হয়। সমাবেশে তিনশত আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য অংশ গ্রহণ করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার বলেছেন, তৃনমূল থেকে জেলা সদর পর্যন্ত প্রতিটি উপজেলার আয়তন, জনসংখ্যা এবং অনগ্রসরতা বিবেচনায় জেলা পরিষদ থেকে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে অতীতের মত গোপনীয়তা বা অর্থলোটপাটের অভিযোগ করার কোন সুযোগ থাকবেনা।
আজ ১৯ ফেব্রুয়ারি রবিবার জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে তাঁর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পরিষদের তৃতীয় মাসিক সভায় তিনি এই প্রতিশ্রুতি ব্যাক্ত করেন। সভায় চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে জেলা পরিষদের রাজস্ব এডিপি ও সংসদ সদস্যদের চাহিত প্রকল্পে বিশেষ বরাদ্দের আওতা সর্ব মোট প্রায় ১১ কোটি টাকার দুই শতাধিক প্রকল্প গৃহীত হয়েছে।
এসব প্রকল্পের মধ্যে জেলা ঈদগাহ ময়দানের বাউন্ডারি দেয়াল, স্টেডিয়াম গেইট নির্মাণ, ডাকবাংলা স্থাপন ও সংস্কার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, ঈদগাহ মাঠ ও কবরস্থানের উন্নয়ন এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ প্রকল্প উল্লেখ যোগ্য।
জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা উপ-সচিব আমিনুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র মিসেস নায়ার কবির, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমান অলিও, কসবা উপজেলা চেয়াম্যান অ্যাড. রাশেদুজ্জামান কাওসার, আশুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সী, সরাইল উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ঠাকুর, নবীনগর উপজেলা চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান, আখাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান মোরাদ হোসেন ভূইয়া, নবীনগর পৌরমেয়র অ্যাড. শিব শংকর দাস, আখাউড়া পৌরমেয়র তাকজিল খলীফা কাজল, কসবা পৌরমেয়র গোলাম হাক্কানী এবং প্যানেল চেয়ারম্যান (১) মোঃ আব্দুল আজিজ (২) মোঃ নাছির উদ্দিন (৩) সনি আক্তার, সদস্য সামসুল কিবরিয়া রাজা ও রুমানুল ফেরদৌসী সহ কর্মকর্তা সদস্য নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া টেলিভিশন জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশন এর সহ-সভাপতি, বাংলা টিভির প্রতিনিধি আল আমীন শাহীনের পিতা রফিকুল ইসলাম খন্দকার (জানু মিয়া)’র আজ ৭ মার্চ ৩৬ তম মৃত্যুবার্ষিকী।
১৯৮৭ সালের ৭ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশিস্ট ব্যবসায়ী লাখীবাজারস্থ শাহীন ফার্মেসীর সত্ত্বাধিকারী সরাইল উপজেলার দেওড়া গ্রামের সন্তান মরহুম রফিকুল ইসলাম খন্দকার জানু মিয়ার সৌদি আরবের রিয়াদে ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে উত্তর পৈরতলাস্থ বাসভবনে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। মরহুম রফিকুল ইসলাম জানু মিয়ার রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া করার জন্য সকলের প্রতি জানান হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসামি না পেয়ে এক নারীর মাথায় পিস্তল ঠেকানোর ঘটনায় আদালতে অভিযোগ দিয়েছেন এক ভুক্তভোগী। অভিযোগে ডিবি পুলিশের সদস্য রেজাউল করিমসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া ডিবি পুলিশের সঙ্গীয় অজ্ঞাতনামা আরও আটজনকে আসামি করা হয়।
আজ ১৩ মে সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ আদালতের বিচারক বেগম আফরিন আহমেদ হ্যাপীর বরাবর অভিযোগটি জমা দেন ভোক্তভোগী বন্যা বেগম।
আদালতে জমা দেওয়া অভিযোগে সদর উপজেলার চান্দিয়ারা এলাকার এনামুল হক, একই এলাকার তার স্বজন সামসুল ইসলাম ও তাজুল ইসলাম ও ভাই মো. সাগর এবং ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিমসহ ডিবি পুলিশের সঙ্গীয় অজ্ঞাতনামা আরও ৮ জনকে আসামি করা হয়।
জানা গেছে, গত শুক্রবার বিকেলে আসামি গ্রেপ্তার করতে সদর উপজেলার থলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা ও সৌদিপ্রবাসী নূরুল আলমের বাড়িতে অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। আসামি নুরুল ইসলামকে না পেয়ে বাড়ির নারী ও শিশুদের মারধরসহ একপর্যায়ে ডিবির সদস্য রেজাউল করিম আসামির স্ত্রী বন্যা বেগমের মাথায় পিস্তল ঠেকান বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ) মো. জয়নাল আবেদীনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ। তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. বিল্লাল হোসেন ও পুলিশ পরিদর্শক (অপরাধ) হাবিবুল্লাহ সরকার।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৪০৬ ও ৪২০ ধারায় দায়ের করা মমালার বাদী এনামুল হক, তার আত্মীয় সামছুল ইসলাম ও তাজুল ইসলাম এবং ভাই মো. সাগর সঙ্গে পুলিশকে নিয়ে ভূক্তভোগীর বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানে বাড়িতে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে আসামি নুরুলের স্ত্রী বন্যা বেগম (৩৩) ও তার নয় বছর বয়সী মেয়েকে মারধর করে। এক পর্যায়ে বন্যার মাথায় বন্দুক তাক করেন। দুটি গুলিও করে ডিবি সদস্যরা।
বন্যা বেগমের আইনজীবী মো. শওকত আলী বলেন, সোমবার ভুক্তভোগী বন্যা বেগমের বাড়িতে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা, শিশুসহ কয়েকজনকে মারধর দুটি গুলি করেছেন ইত্যাদি উল্লেখ করে এজাহার আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে এই এজাহারের বিষয়ে আদালতে কোনো শুনানি হয়নি।