ডেস্ক রিপোর্ট :
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম ৭ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েছেন কোনো বোলার। মাত্র চার ওভারে ৭ উইকেট শিকার করেন সাইয়াজরুল ইদ্রুস!
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সে ইতিহাস গড়লেন মালয়েশিয়ার এই পেসার। ৭ উইকেটের কোনোটিতেই কারও সহায়তা লাগেনি তার। সব আউটই ছিল বোল্ড।
আজ ২৬ জুলাই বুধবার ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে চীনের মুখোমুখি হয় মালয়েশিয়া। ৮ রানে ৭ উইকেট নেন ইদ্রুস। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম এক ম্যাচে ৭ উইকেট নিতে পারলেন কোনো বোলার।
কুয়ালালামপুরে এই ম্যাচে প্রথম পরিবর্তিত বোলার হিসেবে তৃতীয় ওভারে আক্রমণে আসেন ইদ্রুস। তার বোলিং ফিগার ৪-১-৮-৭।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সেরা বোলিংয়ের আগের রেকর্ড ছিল ৫ রানে ৬ উইকেট। ২০২১ সালে সিয়েরা লিওনের বিপক্ষে রেকর্ডটি গড়েছিলেন নাইজেরিয়ার পিটার আহো।
অনলাইন ডেস্ক :
দিনের শুরুটা ভালো না হলেও পরবর্তীতে বোলার ও ব্যাটারদের দুর্দান্ত নৈপুন্যে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ৯ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৭০ রানের বড় ব্যবধানে এগিয়ে থেকে চালকের আসনে বসে গেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
আজ ১৫ জুন বৃহস্পিতবার সকালে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩৮২ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এরপর আফগানিস্তানকে প্রথম ইনিংসে ১৪৬ রানে গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশের বোলাররা। এতে প্রথম ইনিংস থেকে টাইগাররা ২৩৬ রানের লিড পেলে ফলো-অনে পড়ে আফগানিস্তান। কিন্তু আফগানিস্তানকে ফলো-অন না করিয়ে ম্যাচের তৃতীয় ইনিংসে দ্বিতীয়বারের মত ব্যাট হাতে নেমে দ্বিতীয় দিন শেষে ১ উইকেটে ১৩৪ রান করে বড় লিড দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশ।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম দিন শেষে ৭৯ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৬২ রান করেছিলো বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্ত ১৪৬, মাহমুদুল হাসান জয় ৭৬ রানে আউট হন। দিন শেষে মুশফিকুর রহিম ৪১ ও মেহেদি হাসান মিরাজ ৪৩ রানে অপরাজিত ছিলেন।
আজ, দ্বিতীয় দিন ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশের পরের দিকের ব্যাটাররা। বাকী ৫ উইকেটে মাত্র ২০ রান যোগ করতে পারে বাংলাদেশ। ৯ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় টাইগাররা। এরমধ্যে ৩টিই নেন আফগানিস্তানের হয়ে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা নিজাত মাসুদ।
মুশফিক ৭৬ বলে ৪টি চারে ৪৭ ও মিরাজ ৮টি চারে ৮০ বলে ৪৮ রানে আউট হন। লোয়ার অর্ডারে তাসকিন আহমেদ ২, তাইজুল শূন্য, শরিফুল ইসলাম ৬ রানে আউট হন। বল হাতে আফগানদের পক্ষে সেরা বোলার ছিলেন প্রথম দিন ২ উইকেট নেয়া মাসুদ। ১৬ ওভারে ৭৯ রানে ৫ উইকেট নেন তিনি।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আফগানিস্তানের দুই ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান ও আব্দুল মালিক। ৫ ওভারে ১৭ রান তুলে ফেলেন তারা। অবশ্য দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে বিচ্ছিন্ন হতে পারতেন জাদরান ও মালিক। শরিফুলের বলে লিটনের হাতে জীবন পান জাদরান।
জীবন পেয়ে সুবিধা করতে পারেননি জাদরান। ষষ্ঠ ওভারে শরিফুলের শিকার হন তিনি। ৬ রান করেন জাদরান। এরপর আফগানিস্তানের উপর চাপ বাড়ান আরেক পেসার এবাদত। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে আফগানদের ২ উইকেট তুলে নেন এবাদত। মালিককে ১৭ ও রহমত শাহকে ৯ রানে শিকার করেন এবাদত। এতে ৩ উইকেটে ৩৫ রান নিয়ে বিরতিতে যায় আফগানিস্তান।
বিরতি থেকে ফিরে আফগানিস্তান শিবিরে দ্বিতীয়বারের মত আঘাত হানেন শরিফুল। অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শাহিদিকে ৯ রানে থামান তিনি। এতে ৫১ রানে ৪ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। এ অবস্থায় দলের হাল ধরে বাংলাদেশের বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন আফসার জাজাই ও নাসির জামাল। জুটিতে ৭৩ বলে ৬৫ রান তুলে উইকেটে সেট হয়ে যান তারা। এ অবস্থায় জুটি ভাঙ্গতে মরিয়া ছিলো বাংলাদেশ।
অবশেষে দলীয় ১১৬ রানে জামালকে লেগ বিফোর আউট করে বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন মিরাজ। ৬টি চারে ৩৫ রান করেন জামাল।
মিরাজের ব্রেক-থ্রুর পর আফগানিস্তানকে চেপে ধরেন এবাদত ও তাইজুল। এতে ৩৯ ওভারে ১৪৬ রানে শেষ হয় আফগানদের প্রথম ইনিংস। আফগানদের পক্ষে জাজাই সর্বোচ্চ ৩৬ ও জানাত ২৩ রান করেন।
এবাদত ৪৭ রানে ৪টি, শরিফুল ২৮ রানে, তাইজুল ৭ রানে এবং মিরাজ ১৫ রানে ২টি করে উইকেট নেন। ইনিংসে ২ উইকেট নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৫০ ও মিরপুরের ভেন্যুতে ৫০ শিকার পূর্ণ করেন মিরাজ।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৩৮২ রানের জবাবে ১৪৬ রানে অলআউট হয়ে ফলো-অনে পড়ে আফগানিস্তান। কিন্তু আফগানদের ফলো-অন না করিয়ে ম্যাচের ২৩৬ রানে এগিয়ে থেকে তৃতীয় ইনিংসে আবারও ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ।
জাকির হাসানকে নিয়ে ইনিংস শুরু করে প্রথম ওভারের শেষ বলে ক্যাচ দিয়ে জীবন পান মাহমুদুল হাসান জয়। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে আফগানিস্তানের বাঁ-হাতি স্পিনার আমির হামজার বলে আউট হন ৪টি চারে ১৩ বলে ১৭ রান করা জয়।
দলীয় ১৮ রানে জয়ের বিদায়ের পর জাকিরকে নিয়ে ওয়ানডে স্টাইলে খেলেছেন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যক্তিগত ৯ রানে জীবন পেয়ে আহমাদজাইর করা ১৮তম ওভারে শেষ চার বলে চারটি বাউন্ডারি মারেন শান্ত।
ইনিংসের ২১তম ওভারে বাউন্ডারি মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান জাকির। পরের ওভারের প্রথম বলে চারের সহায়তায় টেস্টে চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি করেন শান্ত। হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে অবিচ্ছিন্ন থেকে দিন শেষ করেন জাকির ও শান্ত। দু’জনই ৬৪ বল করে খেলে সমান ৫৪ রানেই অপরাজিত আছেন। জাকির ৬টি ও শান্ত ৮টি চার মারেন।
স্কোর কার্ড (টস-আফগানিস্তান)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস (প্রথম দিন শেষে ৩৬২/৫, ৭৯ ওভার, মুশফিক ৪১*, মিরাজ ৪৩*) :
মাহমুদুল হাসান ক ইব্রাহিম ব রহমত ৭৬
জাকির হাসান ক আফসার ব নিজাত ১
নাজমুল হোসেন শান্ত ক নাসির ব হামজা ১৪৬
মোমিনুল হক ক আফসার ব নিজাত ১৫
মুশফিকুর রহিম ক জামাল ব মাসুদ ৪৭
লিটন দাস ক ইব্রাহিম ব জহির ৯
মিরাজ ক হামজা ব আমাদজাই ৪৮
তাসকিন এলবিডব্লু ব আজাদজাই ২
তাইজুল ক মালিক ব নিজাত ০
করিফুল বোল্ড মাসুদ ৬
এবাদত অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (বা-৮, লে বা-১, নো-১৬, ও-৭) ৩২
মোট (অলআউট, ৮৬ ওভার) ৩৮২
উইকেট পতন : ১/৬ (জাকির), ২/২১৮ (মাহমুদুল), ৩/২৫৬ (মোমিনুল), ৪/২৭১ (শান্ত), ৫/২৯০ (লিটন), ৬/৩৭৩ (মিরাজ), ৭/৩৭৫ (মুশফিক), ৮/৩৭৫ (তাইজুল), ৯/৩৭৭ (তাসকিন), ১০/৩৮২ (শরিফুল)।
আফগানিস্তান বোলিং :
আহমদজাই : ১০-১-৩৯-২ (নো-১),
মাসুদ : ১৬-২-৭৯-৫ (ও-১, নো-৪),
জানাত : ১১-৩-৩৩-০ (ও-১),
জহির : ১৬-০-৯৮-১ (ও-১, নো-৮),
হামজা : ২৪-১-৮৫-১ (নো-৩),
শাহিদি : ৩-০-৯-০
রহমত : ৬-১-৩০-১।
আফগানিস্তান প্রথম ইনিংস :
জাদরান ক লিটন ব শরিফুল ৬
মালিক ক জাকির ব এবাদত ১৭
রহমত ক তাসকিন ব এবাদত ৯
শাহিদি ক মিরাজ ব শরিফুল ৯
জামাল এলবিডব্লু ব মিরাজ ৩৫
জাজাই ক শরিফুল ব এবাদত ৩৬
জানাত স্টাম্প লিটন ব মিরাজ ২৩
হামজা ক মোমিনুল ব এবাদত ৬
আহমাদজাই ক লিটন ব তাইজুল ০
মাসুদ ক জাকির ব তাইজুল ০
জহির অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (লে বা-১, নো-৪) ৫
মোট (অলআউট, ৩৯ ওভার) ১৪৬
উইকেট পতন : ১/১৮ (জাদরান), ২/২৪ (মালিক), ৩/৩৫ (রহমত), ৪/৫১ (শাহিদি), ৫/১১৬ (জামাল), ৬/১১৬ (জাজাই), ৭/১২৮ (হামজা), ৮/১৪০ (আহমাদজাই), ৯/১৪৬ (মাসুদ), ১০/১৪৬ (জানাত)।
বাংলাদেশ বোলিং :
তাসকিন : ৭-০-৪৮-০ (নো-৪),
শরিফুল : ৮-২-২৮-২,
এবাদত : ১০-১-৪৭-৪,
তাইজুল : ৫-০-৭-২,
মিরাজ : ৯-১-১৫-২।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস :
মাহমুদুল হাসান ক জাদরান ব হামজা ১৭
জাকির হাসান অপরাজিত ৫৪
নাজমুল হোসেন শান্ত অপরাজিত ৫৪
অতিরিক্ত (নো-৩, ও-৬) ৯
মোট (১ উইকেট, ২৩ ওভার) ১৩৪
উইকেট পতন : ১/১৮ (জয়)।
আফগানিস্তান বোলিং :
আহমদজাই : ৫-০-৩৪-০,
মাসুদ : ৩.৫-০-৩০-০ (নো-৩),
হামজা : ৬.১-০-২৭-১,
জানাত : ৪-০-২৪-০ (ও-২),
জহির : ৪-০-১৯-০।
স্পোর্টস ডেস্ক :
ফুটবল ইতিহাসে একমাত্র দল হিসেবে টানা তিনটি বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছে স্পেন। তাদের সে রেকর্ডে ভাগ বসানোর পথে শেষ ধাপে এসে পৌঁছাল আর্জেন্টিনা। কোপা আমেরিকায় ফাইনালের এই ধাপটা এখন পাড়ি দিতে পারলেই স্পেনের অনন্য সেই কীর্তিতে উচ্চারিত হবে লিওনেল মেসি-আনহেল দি মারিয়াদের নামও। আর্জেন্টিনা তা পারবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে।
কানাডার বিপক্ষে জয়টা প্রত্যাশিতই ছিল। মাঠের পারফরম্যান্সেও দেখা গেল দাপুটে আর্জেন্টিনার পুরো চিত্র। স্কোরলাইন যদিও বলছে আর্জেন্টিনা ম্যাচ জিতেছে ২-০ গোলের ব্যবধানে। তবে নব্বই মিনিটের খেলায় আলবিসেলেস্তেরা ছিল আরও বেশি পরিণত। কোপা আমেরিকা এবং বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা খেললেন চ্যাম্পিয়নদের মতোই। তাতে টানা দ্বিতীয়বার এবং শেষ আট কোপায় ৬ষ্ঠবার ফাইনালে চলে গেল আর্জেন্টিনা।
২০১৫ সাল থেকেই কোপা আমেরিকার ফাইনালে নিয়মিত মুখ আর্জেন্টিনা। মাঝে বাদ গিয়েছিল শুধু ২০১৯ সালের কোপা আমেরিকা। যেবারে সেমিফাইনালে ব্রাজিলের কাছে হেরে সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল আলবিসেলেস্তেদের। এরপর ২০২১ সালে শিরোপাটাই জয় করে তারা। এবার তাদের সামনে সুযোগ টানা দুইবার কোপা আমেরিকা জয়ের। যে জয় পেলে ফুটবলের বিরল এক রেকর্ডে নাম উঠবে আর্জেন্টিনার।
দুই মহাদেশীয় আসর আর এক বিশ্বকাপ টানা জয়ের কীর্তি এর আগে আছে কেবল স্পেনের। ২০০৮ সালের ইউরো, ২০১০ বিশ্বকাপ এবং ২০১২ সালের ইউরো জয় করেছিল স্পেন। এবার সেই সুযোগ আর্জেন্টিনার সামনে। আগামীকালের উরুগুয়ে ও কলম্বিয়া ম্যাচের জয়ী দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোরে ফাইনালে নামবে লিওনেল মেসির দল।
ম্যাচের প্রথমদিকে অবশ্য খানিক ভুগতে হয়েছে মেসিদের। কানাডার আক্রমণ এদিন শুরুতে বারবার বিব্রত করেছে আর্জেন্টিনাকে। যদিও ম্যাচে ফিরে আসতে ২০ মিনিটের বেশি সময় নেয়নি কোপার বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ২১ মিনিটেই পেয়ে যায় নিজেদের প্রথম গোল। মাঝমাঠ থেকে রদ্রিগো ডি পলের লম্বা পাস। সেটা ধরে এক ডিফেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে স্কোরশিটে নাম তুললেন হুলিয়ান আলভারেজ। দিয়েগো ফোরলান, রোমারিও ও মেসির পর চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে কোপা আমেরিকা ও বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে গোল করলেন আর্জেন্টাইন নাম্বার নাইন।
ডি মারিয়া এদিন ছিলেন ডানপ্রান্তে। ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে আরও একবার দেখা গেল মেসির সঙ্গে তার দুর্দান্ত বোঝাপড়া। দুজনের রসায়নে পুরো আসরের তুলনায় মেসি ছিলেন আরও বেশি উজ্জ্বল। ম্যাচের ৪৪ মিনিটে গোল পেয়েও যেতে পারতেন। এক ডিফেন্ডারকে ডামি করে গোলমুখে শট নিয়েছিলেন। অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় সেটা।
ম্যাচের ৫১ মিনিটে নিজের কাঙ্ক্ষিত গোল পেয়ে যান লিওনেল মেসি। জটলার মাঝে এনজো ফার্নান্দেজের শটে পা ছুঁইয়ে বলের দিক পরিবর্তন করেন লা পুলগা। বল জড়ায় জালে। অফসাইডের অভিযোগ ছিল। তবে কানাডার রক্ষণের এক খেলোয়াড় ডিফেন্স লাইনের অনেকটাই নিচে ছিলেন। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি বাতিল করেন অফসাইডের আবেদন। এই গোলের সুবাদে বেশকিছু রেকর্ডও নিজের করেছেন মেসি।
ব্রাজিলের জিজিনিয়োর পর দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ৬টি ভিন্ন ভিন্ন কোপায় গোল পেয়েছেন এলএমটেন। এছাড়া নিজের ১৮৬তম ম্যাচে এসে পেয়েছেন ১০৯তম আন্তর্জাতিক গোল। ইরানের আলী দাঈয়ের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি গোলের টালিতে দুইয়ে আছেন মেসি। আর এক গোল পেলেই ছাড়িয়ে যাবেন তাকে।
দুই গোল ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার পরও অবশ্য হাল ছাড়েনি কানাডা। যদিও ৬৮ মিনিটে পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে পড়ে তাদের। পায়ের চোটে মাঠ ছাড়েন কানাডা তারকা আলফোন্সো ডেভিস। ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে এসে গোলের সুযোগটাও পেয়ে যায় তারা। ৮৯ মিনিটে তানি ওলুয়াসারির বক্সের মাথা থেকে নেওয়া শট দুর্দান্তভাবে পা দিয়ে ঠেকান আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজ।
সবশেষ ১০ বছরে আর্জেন্টিনা খেলবে তাদের ৬ষ্ঠ মেজর ফাইনাল। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপের পর ৩ বিশ্বকাপের মাঝে দুবার। আর ২০১৯ ব্যতীত ৪র্থ কোপা আমেরিকার ফাইনাল খেলতে নামবে আর্জেন্টাইনরা। সবশেষ ৩ বছরে দুর্দান্ত সাফল্য পাওয়া দলটার সামনে তাই এখন ইতিহাস গড়ার হাতছানি।
অনলাইন ডেস্ক :
সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। নির্ধারিত সময়ে খেলা ১-১ গোলে সমতায় থাকার পর টারইব্রেকারে ভারতকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশের কিশোরীরা। বাংলাদেশের গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগম তিনটি শট ঠেকিয়েছেন।
প্রথমার্ধে ভারত ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল। ৭০ মিনিটে বাংলাদেশের মরিয়ম বিনতে আন্না গোল করে সমতা আনেন। কোনো দল আর গোল করতে না পারায় নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয় ১-১ এ। ফাইনালের ভাগ্য নির্ধারণ হলো টাইব্রেকারে।
শুরু থেকেই চাপ প্রয়োগ করে খেলতে থাকে ভারতের মেয়েরা। বাংলাদেশ ছিল এলোমেলো। ভুল পাস ও সমন্বয়হীনতায় শুরুর দিকে ছন্নছাড়া ছিল সাইফুল বারী টিটুর দল। সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে চতুর্থ মিনিটেই এগিয়ে যায় ভারত।
মাঝ মাঠ থেকে উড়ে আসা বল ঠিকঠাকমতো ডিফেন্স করতে পারেননি বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। বল বের করে নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন আনুসকা কুমারী। তিনি বাম দিকে ঢুকে কোনাকুনি শটে বল জালে জড়িয়ে দেন দ্বিতীয় পোস্ট দিয়ে।
বিরতির বাঁশির দুই মিনিট আগে বাংলাদেশ সমতায় ফেরার ভালো সুযোগ পেয়েছিল। সাথীর কর্নার রুখে দেন ভারতের গোলরক্ষক মুন্নী । তবে ৭০ মিনিটে বদলি অনন্য মুরমু বিথীর কর্নার থেকে গোল করেন বাংলাদেশের মরিয়ম বিনতে আন্না।
ইয়ারজান বেগম, অর্পিতা বিশ্বাস, শিউলি রায়, আরিফা আক্তার, সাথী মুনদো, আলপি আক্তার, ক্রানুচিং মারমা (অনন্যা মুরমু বিথি), ফাতেমা আক্তার (মমিতা) ও সুরভী আকন্দ প্রীতি।
অনলাইন ডেস্ক :
খেলার দুনিয়ার সবকিছুকে ছাড়িয়ে যার অবস্থান। যেখানে সুযোগ পাওয়া প্রতিটি অ্যাথলেটের কাছে সর্বোচ্চ প্রাপ্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ তো আর এমনি এমনি বলা হয় না অলিম্পিককে। সেই মহাযজ্ঞের আনুষ্ঠানিক পর্দা উঠতে যাচ্ছে। প্রেমের শহর, ঐতিহ্যের শহর, সৌন্দর্যের শহর প্যারিসের কাঁধে এবার গুরুদায়িত্ব। বাংলাদেশ সময় আজ ২৬ জুলাই শুক্রবার জমকালো উদ্বোধনে শুরু হচ্ছে অলিম্পিক। কেমন হচ্ছে এবারের উদ্বোধন, কতজন অ্যাথলেটের মিলনমেলা হচ্ছে যাচ্ছে প্যারিসে? সিন নদীর তীরে চোখ রাখার আগে জেনে নেওয়া যাক- উদ্বোধনী অনুষ্ঠান কোথায়: অলিম্পিকের আয়োজক হিসেবে কোনও দেশের নাম থাকে না। থাকে শহরের নাম। এবারের অলিম্পিক হচ্ছে প্যারিসে। তো এই শহরের মূল ভেন্যু, অর্থাৎ প্রধান অ্যাথলেটিক স্টেডিয়ামে হওয়ার কথা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। যেটা হয়ে এসেছে আগের আসরগুলোতে। কিন্তু এই জায়গায় প্যারিস অলিম্পিক ব্যতিক্রম। মূল স্টেডিয়ামে নয়, এবারের অলিম্পিকের উদ্বোধন সিন নদীতে। ৬ থেকে ৭ হাজার অ্যাথলেট অস্টারলিটজ সেতু থেকে নৌকা ও বার্জে করে সিন নদীর ৬ কিলোমিটার পাড়ি দেবেন। উদ্বোধন দেখার জন্য প্রায় প্রায় ৫ লাখের বেশি দর্শকের জন্য বানানো হয়েছে বিশেষ স্ট্যান্ড। আগ্রহ যে তুঙ্গে সেটার প্রমাণ পাওয়া যায় ২ হাজার ৭০০ ইউরোর বেশি দামে টিকিট বিক্রির চিত্রে। উদ্বোধন কখন: শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ৩০ মিনিটে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হবার কথা রয়েছে। প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী এই অনুষ্ঠানের বেশিরভাগ সময় দিনের আলোয়। তবে সূর্যাস্তের সময়ও রয়েছে আয়োজন। যাতে প্রেমের শহর হিসেবে পরিচিত প্যারিসের গোধূলির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন দর্শকেরা। অনুষ্ঠানে কী রয়েছে: ঐতিহ্য মেনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সবার আগে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে অলিম্পিকের জন্মভূমি গ্রিসকে। এরপর শরণার্থী অলিম্পিক দলের পরিচিতি পর্ব। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশের পতাকায় অংশ নিতে পারবেন না রাশিয়া ও বেলারুশের অ্যাথলেটরা। তারা অংশ নেবেন ব্যক্তিগত পরিচয়ে। পরিচয় পর্ব শেষে রয়েছে বিনোদন পর্ব। এই অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা সাজিয়েছেন বিখ্যাত থিয়েটার পরিচালক টমাস জলি। অনুষ্ঠানটিকে ১২টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেখানে ৩ হাজার নৃত্যশিল্পী, সংগীতশিল্পী ও বিনোদনকর্মী অংশ নেবেন। অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা সিন নদীর তীরে, সেতুতে ও কাছাকাছি স্মৃতিস্তম্ভগুলোয় থাকবেন। খরচ কত: প্যারিস অলিম্পিক আয়োজক ঠিক কত খরচ হচ্ছে, সেটি নিশ্চিত করতে পারেনি ফ্রান্স। তবে ফ্রান্সের জাতীয় নিরীক্ষণ সংস্থার প্রধান পিয়েরে মসকোভিচি জানিয়েছেন, ৩০০ থেকে ৫০০ কোটি ইউরো খরচ হবে। মসকোভিচির বলেছেন, ‘অলিম্পিক আয়োজনের খরচ এখনও আমরা জানি না। এ গেমস আয়োজনে তিন, চার কিংবা পাঁচ শত কোটি ইউরো খরচ হতে পারে।’যদি এই খরচের পরিমাণ সত্যি হয়, তাহলে সেটি ফ্রান্সের অলিম্পিক বাজেট ছাড়িয়ে যাবে। কারণ অলিম্পিকের বাজেট করার সময় ফরাসি সরকার জানিয়েছিল, অলিম্পিক আয়োজনে তাদের বাজেট ধরা হয়েছে ২৪৪ কোটি ইউরো।
কতদিনের গেমস:
২৬ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হচ্ছে প্যারিস অলিম্পিক। তবে উদ্বোধনের আগেই শুরু হয়েছে বেশ কয়েকটি ইভেন্ট। এর মধ্যে ফুটবল অন্যতম।
তবে যদি আনুষ্ঠানিক সময়ের হিসাব টানা যায়, তাহলে প্যারিস অলিম্পিক চলবে ১৭ দিন। ২৬ জুলাই শুরু হয়ে পর্দা নামবে ১১ আগস্ট।
অ্যাথলেট সংখ্যা কত:
২০৬টি দেশের অ্যাথলেট অংশ নিচ্ছে এবারের অলিম্পিকে। আফ্রিকার ৫৪টি, ইউরোপের ৪৮টি, এশিয়ার ৪৪টি, আমেরিকার ৪১টি ও ওশেনিয়া অঞ্চলের ১৭টি দেশের সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয় ও শরণার্থী দলের হয়ে অংশ নেবেন অ্যাথলেটরা। এবারের অলিম্পিকে ৩২টি খেলার ৩২৯টি ইভেন্টে প্রায় ৭ হাজার অ্যাথলেট অংশ নিচ্ছে পদকের লড়াইয়ে।
অলিম্পিক ফুটবল:
৩২টি খেলা নিয়ে সাজানো হয়েছে এবারের অলিম্পিক। অনেক আকর্ষণীয় খেলার মধ্যে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে ছেলের ফুটবল। এবারের প্রতিযোগিতায় স্বাগতিক ফ্রান্স ছাড়াও রয়েছে আর্জেন্টিনা, স্পেন, মরক্কো, মিশরের মতো দলগুলো। তবে সুযোগ পায়নি গত টোকিও অলিম্পিকের সোনাজয়ী ব্রাজিল।
১৬ দল চার গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে প্রথম রাউন্ড। প্রত্যেক গ্রুপের শীর্ষ দুই দল নিশ্চিত করবে কোয়ার্টার ফাইনাল। এরপর চার দলের সেমিফাইনাল। জয়ী দুই দল খেলবে সোনার লড়াইয়ে। আর হেরে যাওয়ার দুই দল মুখোমুখি হবে ব্রোঞ্জের লড়াইয়ে। খেলাগুলো হবে ফ্রান্সের সাতটি ভেন্যুতে। প্রতিটি দলের স্কোয়াডে আছেন ২২ খেলোয়াড়। ১৮ জন মূল খেলোয়াড় ও ৪ জন বিকল্প। অলিম্পিক ফুটবল মূলত অনূর্ধ্ব-২৩ দলের লড়াই। তবে এই বয়সের উর্ধ্বে থাকা তিনজন খেলোয়াড়কে স্কোয়াডে রাখার অনুমোদন আছে। অর্থাৎ, ২৩ পেরিয়ে যাওয়া তিনজন খেলোয়াড় নিয়ে স্কোয়াড সাজিয়েছে সুযোগ পাওয়া ১৬ দল। আর্জেন্টিনা যেমন তাদের স্কোয়াডে রেখেছে হুলিয়ান আলভারেজ, নিকোলাস ওতামেন্দি ও থিয়াগো আলমাদাকে। মরক্কোর রেখেছে আশরাফ হাকিমিকে।
অনলাইন ডেস্ক :
বাঁচামরার ম্যাচ। এশিয়া কাপে টিকে থাকতে হলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে আজ রবিবার জিততেই হবে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া এই ম্যাচেই দুর্দান্ত ব্যাটিং করলো টাইগাররা।
মেহেদি হাসান মিরাজ আর নাজমুল হোসেন শান্তর জোড়া সেঞ্চুরিতে ভর করে ৫ উইকেটে ৩৩৪ রানের পাহাড় গড়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ জিততে হলে আফগানিস্তানকে করতে হবে ৩৩৫।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টসভাগ্য সহায় ছিল সাকিব আল হাসানের। প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
ওপেনিংয়ে চমক। নাইম শেখের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করতে নামেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ৪৭ বলে জুটিতে ফিফটি পূরণ করেন এই দুজন। ১০ ওভারে হয় ৬০ রানের জুটি। নাইম শেখকে বোল্ড করে ওপেনিং জুটি ভাঙেন মুজিব উর রহমান। নাইম ৩২ বলে ৫ বাউন্ডারিতে করেন ২৮ রান।
পরের ওভারে আরও একটি উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্তর বদলে তিন নম্বরে নামেন তাওহিদ হৃদয়। সুবিধা করতে পারেননি। নিজের মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলেই স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন হৃদয় (০)। তার উইকেটটি নেন গুলবাদিন নাইব।
এরপর মিরাজ-শান্তর রূপকথার ব্যাটিং। তৃতীয় উইকেট জুটিতে তারা যোগ করেন ১৯৪ রান। ৬৫ বলে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন মিরাজ। আফগান পেসার ফজলহক ফারুকিকে ছক্কা হাঁকিয়ে ফিফটি পূরণ করেন শান্ত।
আফগান বোলারদের নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলা করেছেন মিরাজ আর নাজমুল হোসেন শান্ত। ওপেনিংয়ে নেমে মিরাজ করেছেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি, ১১৫ বলে। এরপর শান্তও ছুঁয়েছেন তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার।
তার আগেই অবশ্য উঠে গেছেন মিরাজ। শান্তর সঙ্গে জুটিতে ১৯৪ যোগ করে রিটায়ার্ট হার্ট হয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরেন এই অলরাউন্ডার। ১১৯ বলে ১১২ রানের ইনিংসে মিরাজ ৭টি বাউন্ডারির সঙ্গে হাঁকান ৩টি ছক্কা।
মিরাজ উঠে যাওয়ার পরপরই সেঞ্চুরি পূরণ করেন শান্ত। ১০১ বলে শতরান ছুঁয়েছেন এই বাঁহাতি। শান্তর ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি এটি। তার দুর্দান্ত ইনিংসটি সমাপ্তি হয়েছে দুর্ভাগ্যজনক রানআউটে।
এক রান নিতে গিয়ে মাঝপথে চলে গিয়েছিলেন শান্ত। ফেরার সুযোগ পাননি। পা পিছলে পড়ে যান মাঝ পিচে। ১০৫ বলে শান্তর ১০৪ রানের ইনিংসটি ছিল ৯ চার আর ২ ছক্কায় সাজানো।
এছাড়া মুশফিক ১৫ বলে ২৫, সাকিব শেষদিকে নেমে ১৮ বলে অপরাজিত ৩২ আর শামীম পাটোয়ারী ৬ বলে করেন ১১ রান।