চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্ণামেন্টের উপজেলা পর্যায়ের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ৩০জুলাই রবিবার বিকালে উপজেলার আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম। খেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল মিয়া, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ কবির হোসেন ও মোঃ মাজহারুল হুদা।
নাসিরনগর উপজেলা শিক্ষা অফিসের আয়োজনে খেলায় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান রাফি উদ্দিন আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অসীম কুমার পাল, সাধারণ সম্পাদক মোঃ লতিফ হোসেন, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হাবিবুল্লাহ সরকার, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুবিনা আক্তার ও উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি নূর আলম শেখ, বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণির ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
খেলায় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্ণামেন্টে নূরপুর লাহাজুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ১-০ গোলে পরাজিত করে নাসিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন হয়। অপরদিকে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্ণামেন্টে চৈয়ারকুরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ১-০ গোলে পরাজিত করে লক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন হয়।
খেলা শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানে বিজয়ী দল, রানার্সআপ খেলোয়াড়দের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিরা।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বদরুদ্দোজা মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম এমপি বলেন, বর্তমান সরকার খেলাধুলার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছে। যার ফলে ক্রিকেট ফুটবলসহ সকল খেলায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। এইটুর্ণামেন্ট জনপ্রিয়তা পেয়ে গ্রামগঞ্জে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। শুধু তাই নয়, খেলাধুলায় সম্পৃক্ত হওয়ায় আমাদের সন্তানরা বিপথগামী না হয়ে সঠিক পথের দিশা পাচ্ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ হোসেন বলেছেন, বর্তমান সরকার গণতন্ত্রের সৌন্দর্য বজায় রাখতে একটি প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন দেখতে চায়। কিন্তু বিএনপি বড় বড় কথা বলে।
মূলত পরাজয়ের গ্লানি তাদের মনে ঢুকে গেছে বলে আওয়ামী লীগ ৩০ আসন পাবে বলে গল্প করে।
আজ ১৫ জুলাই শনিবার দুপুরে নাসিরনগরের ঐতিহাসিক হরিপুর বড়বাড়ি পরিদর্শনে এসে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিএনপির সব নেতারা এখন আমেরিকা, লন্ডন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মুখী। বাংলাদেশ আমেরিকার কলোনি বা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের অংশ নয়, যে তাদের প্রেসক্রিপশনে নির্বাচন করতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির চরম বিপর্যয় ঘটেছিল। মানুষ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। ৩০০ আসনে মনোনয়ন দিয়েছিল ৬৪১ জনকে। একটি আসন ২/৩ জনের কাছে বেচাকেনা করেছিল। এবারও নাকি আরো বেশি হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাতে প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে মানুষের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। শীঘ্রই হরিপুর বড় বাড়ির সংস্কার কাজ শুরু হবে।
বড়বাড়ি প্রাঙ্গণে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত সভায় জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলমের সভাপতিত্বে অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১ আসনের সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক চন্দন কুমার দে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রাফি উদ্দিন। পরে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে তাহমিনা আক্তার (২৬) নামে এক মায়ের বিরুদ্ধে দুই মাস বয়সী শিশু সন্তান সাইমকে পানিতে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ১২ মার্চ রবিবার রাতে উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের চান্দের পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আজ ১৩ মার্চ সোমবার সকালে তাহমিনাকে আটক করেছে পুলিশ।
শিশু সাইম উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামের মো. খোকন মিয়ার ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১১ বছর আগে তাহমিনা ও খোকন মিয়ার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। এরই মধ্যে তাদের ঘরে চারটি সন্তানের জন্ম হয়। সর্বশেষ ছোট ছেলে সাইম জন্ম নেওয়ার পর তার নাম রাখার সময় খাবারের আয়োজন করে খোকন মিয়া। কিন্তু তাহমিনার বাবার বাড়ির কম লোকজনকে দাওয়াত দেন খোকন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হয়। পর দিন রাগ করে বাবার বাড়ি পূর্বভাগ ইউনিয়নের চান্দের পাড়া গ্রামে চলে যান তাহমিনা। সেখানে গিয়ে খোকনকে ফাঁসানোর ফন্দি করেন তাহমিনা।
এরপর ১২ মার্চ রবিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে শিশু সাইমকে বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দেন তাহমিনা। ওই দিন রাতেই তাহমিনা পাড়ার সবাইকে বলতে থাকেন- খোকন এসে তার শিশু সন্তান সাইমকে নিয়ে পালিয়ে গেছেন। তবে ওই দিন রাতে খোকন গোকর্ণ গ্রামের একটি ইটভাটায় কাজ করছিলেন। পরের দিন সকালে স্থানীয়রা পুকুরে গোসল করতে গেলে শিশুর মরদেহ দেখতে পায়। তখন পুলিশ গিয়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে। তাহমিনাকে আটক করে পুলিশ।
নাসিরনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাহমিনা আক্তার তার শিশুকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় তার স্বামী খোকন মিয়া স্ত্রী তাহমিনা আক্তারের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে নাসিরনগরে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন শাখার ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সম্মেলনের প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক মীর জসিম উদ্দিন ।
জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্ধোধন করেন উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি নির্মল চন্দ্র চৌধুরী ।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহবায়ক সুশেন ঘোষ ও মো: শাকিল আব্বাসের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বদরুদ্দোজা মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম। এছাড়া প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত হোসেন।
এ সময়ে আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অসীম কুমার পাল, সাধারণ সম্পাদক মো. লতিফ হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান রাফি উদ্দিন আহমেদ, নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো.ওয়াহেদ উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক তপন রায় চৌধুরী ও নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পুতুল রানী দাস।
এছাড়াও সম্মলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ালীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ লিয়াকত আব্বাস টিপু, উপজেলা মহিলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক রুবিনা আক্তার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক বশীর আল হেলাল, সাবেক সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অরুনজ্যোতি ভট্টাচার্য, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ভানু চন্দ্র দেব। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এইচএম শুভ সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক রাহুল রায়সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সন্ধ্যার পর বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ ৫নং নাসিরনগর সদর ইউনিয়নের নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মীর জসিম উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সুশেন ঘোষ ।
নাসিরনগর প্রতিনিধি :
নাসিনরনগরে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করেছেন শেখ জহির উদ্দিন তুন্নান। তিনি পেশায় প্রকৌশলী ও নাসিরনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাফিউদ্দিন আহমেদের ছেলে। বিয়ের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে তুন্নান হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করেছেন।
কনে লিগার সুলতানা লিসা ও একজন প্রকৌশলী। তিনি নাসিরনগর উপজেলা সদরের সাবেক স্বাস্থ্য পরিদর্শক হাবিবুর রহমানের মেয়ে।
আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুপুরে বর তুন্নান কয়েকজন বরযাত্রী নিয়ে তার গ্রামের বাড়ি নাছিরপুর থেকে হেলিকপ্টার চড়ে নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে অবতরন করেন। সেখান থেকে ঘোড়ার গাড়িতে করে কনের গ্রামে পৌছান।
বিয়ের পর বিকেলে তুন্নান নববধূকে নিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে করে আশুতোষ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে যান। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে করে নাসিরনগর প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের মাঠে অবতরণ করেন। এদিকে হেলিকপ্টারে বিয়ে হওয়া নব দম্পতিকে দেখতে ভিড় করে শত শত উৎসুক জনতা। উপচেপড়া মানুষের ভীড় সামলাতে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে প্রকৌশলী শেখ জহির উদ্দিন তুন্নান জানান, বিয়ের দিনটাকে স্মরণীয় করে রাখতেই হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করেছি।
এ ব্যাপারে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হাবিবুল্লাহ সরকারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টির নিশ্চিত করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাংলা পঞ্জিকার নিয়ম অনুযায়ী পহেলা বৈশাখ ঐতিহ্যবাহি শুঁটকি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মেলার বড় বৈশিষ্ট হচ্ছে “বিনিময় প্রথা”। অর্থাৎ পণ্যের বিনিময়ে পণ্য।
উপজেলা সদরের কুলিকুন্ডা গ্রামের উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যলয় মাঠে বসে এই মেলা। মেলা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শুঁটকি ব্যবসায়ীরা শুঁটকি নিয়ে আসেন মেলায়। জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ আশপাশ জেলা থেকে ভোজন রসিকরা আসেন এই মেলায় শুঁটকি কিনতে। পছন্দের শুঁটকি কিনে ক্রেতারা তৃপ্ত হন। শুঁটকি মেলায় প্রায় দুই শতাধিক জাতের শুঁটকির পসরা নিয়ে বসেন দোকানিরা। এসব শুঁটকির মধ্যে ছিলো বোয়াল, গজার, শোল, বাইম, ছুড়ি, লইট্টা, পুটি ও টেংরাসহ নানা জাতের দেশীয় মাছের শুঁটকি। এছাড়াও মেলায় ভারত থেকে আমদানি করা বিভিন্ন প্রজাতির শুঁটকিও উঠে।
মেলায় জেলার বিভিন্ন এলাকার শুঁটকি ব্যবসায়ীরা ছাড়াও চট্টগ্রাম, সিলেট ও সুনামগঞ্জ থেকে শুঁটকি নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা। মেলায় সামুদ্রিক অনেক বিরল জাতের মাছের শুঁটকি ছাড়াও ইলিশ ও কার্প জাতীয় মাছের ডিমের শুটকি উঠে।
স্থানীয়রা জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাংলা পঞ্জিকার নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে উপজেলার কুলিকুন্ডা গ্রামে এই শুঁটকি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। তারা বলেন, প্রায় দুইশ বছরেরও অধিক সময় ধরে পহেলা বৈশাখে এখানে শুটকি মেলা বসে। প্রতি বছরই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা তাদের শুঁটকি নিয়ে আসেন মেলায়। এই শুঁটকি মেলার বড় বৈশিষ্ট হচ্ছে “বিনিময় প্রথা”। অর্থাৎ পণ্যের বিনিময়ে পণ্য। ভোরে মেলা বসার পর সকাল ১০টা পর্যন্ত বিনিময়ের মাধ্যমে চলে বেচা কেনা। এ কারণেই ধারণা করা হয় এই মেলার ইতিহাস অনেক পুরনো।
মেলায় শুঁটকি কিনতে আসা উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রুবেল মিয়া ও উপজেলার নুরপুর গ্রামের মতি মিয়া বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন বাপ-দাদার সাথে এই মেলা এসেছি। এবারো শুঁটকি কেনার জন্য মেলায় আসছি।
উপজেলার কুলিকুন্ডা গ্রামের বাসিন্দা মজিবুর রহমান সর্দার বলেন, এখানে শত বছরের বেশী সময় ধরে নিয়মিত ভাবে এই মেলা বসছে। এই মেলায় এখনো বিনিময় প্রথা চালু থাকায় আমরা ধারণা করছি, এ মেলা আদিম কালের। এই মেলা আমাদের কুলিকুন্ডা গ্রামের ঐতিহ্য বহন করে।
মেলায় শুঁটকি কিনতে আসা উপজেলার কুলিকুন্ডা গ্রামের মহব্বত আলী বলেন, প্রাচীনকালে যখন কাগজের মুদ্রা প্রচলন হয়নি তখন থেকেই কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের বিনিময়ে এখান থেকে শুঁটকি কিনতেন। কালের বির্বতনে এই মেলার জৌলুস অনেকটা কমেছে। হ্রাস পেয়েছে বিনিময় প্রথাও। তিনি বলেন, ঐতিহ্য হিসেবে এই মেলায় শুঁটকি কেনার জন্যে এসেছি। ছোট বেলায় বাবার সাথে এই মেলায় আসতাম।
মেলায় শুঁটকি নিয়ে আসা ব্যবসায়ী কৃষ্ণদাস বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারনে হ্রাস পেয়েছে ঐতিহ্যবাহী পণ্য বিনিময় প্রথা। এখন নামে মাত্র এই প্রথা চালু আছে। তিনি বলেন, আমি প্রতি বছরই শুঁটকি নিয়ে মেলায় আসি।
স্থানীয়রা জানান, একদিনের মেলায় লাখ লাখ টাকার শুঁটকি বিক্রি হয়। ব্যবসায়ীরা শুঁটকি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা নিয়ে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরে যায়। এছাড়াও মেলায় গৃহস্থালী পণ্যসহ বিভিন্ন ধরনের খেলনা বিক্রি হয়। তবে এবার শুঁটকির আমদানি বেশী হলেও দাম ছিল চড়া।
মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ওহাব আলী জানান, বিনিময় প্রথার ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্যে আজো অল্প পরিসরে সূর্যোদয়ের সাথে-সাথে কিছুক্ষনের জন্যে পণ্য বিনিময়ের মাধ্যমে শুঁটকি বেচা-কেনা শুরু হয়। পরে চলে টাকা দিয়ে বেচা-কেনা।
তিনি জানান, “বাংলা পুঞ্জিকা অনুযায়ী বছরের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে উপজেলার কুলিকুন্ডা গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ সহ আশপাশের জমিতে বসে ঐহিত্যবাহী শুটকি মেলা। তিনি বলেন, পূর্ব পুরুষদের কাছ থেকে শুনেছি, মোগল আমল থেকেই এখানে শুঁটকি মেলা হয়ে আসছে।