চলারপথে রিপোট
নিজের জীবন দিয়ে বোনকে বাঁচালেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ফাবিহা আফিফা সৃজনী। বেপরোয়া ট্রাকের ধাক্কায় আহত সৃজনী আজ ৩ সেপ্টেম্বর রবিবার দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক মো. রনি হোসাইন এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতাল থেকে আমাদের সৃজনীর মৃত্যুর খবর জানানো হয়। আমরা এখন সেখানে যাচ্ছি।
সৃজনী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (৫০তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে তিনি রাজধানীর বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
সৃজনীর সহপাঠীরা জানান, শনিবার বিকালে সৃজনী তার ছোট বোনকে সঙ্গে নিয়ে কুড়িল এলাকার ৩০০ ফিটে গিয়েছিলেন। সেখানে সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে নামার পর লক্ষ্য করেন পেছন থেকে দ্রুতগামী একটি ট্রাক আসছে। ছোট বোনকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলেও নিজে সরে যেতে পারেননি। ট্রাকের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে সৃজনী মাথায় মারাত্মক আঘাত পান এবং তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যান।
চলারপথে রিপোর্ট :
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, আবাসন মানুষের কাঙ্খিত বিষয়। দেশের সকল জনগণকে আবাসনের ব্যবস্থা করে দিতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ।
আজ ২৬ এপ্রিল শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাউজিং প্রকল্প প্রাঙ্গণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সমবায় সমিতি লিমিটেডের উদ্যোগে তাকে দেয়া সংবর্ধনা ও সমিতির বার্ষক সাধারণ সভা উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পিআরএল ভোগরত-(গ্রেড-১) কর্মকর্তা ও প্রকল্পের সভাপতি ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গণপূর্ত মন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি আরো বলেন, নতুন নতুন ভবন নির্মাণ করার সময় এসটিপি (সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট) যারা করবে তারাই শুধু ভবন নির্মাণের অনুমোদন পাবেন। এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেয়া হবেনা।
এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, ঢাকা দূষিত শহরের তালিকায় বিশ্বের এক থেকে তিন নম্বরের ভেতরে থাকে। এই অবস্থায় মানুষ জন আমরা কেউই শান্তিতে থাকতে পারবোনা। তিনি বলেন, আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যেও একটি বড় অংশ মধ্যবিত্ত। এই মধ্যবিত্তের সুবিধাও চিন্তা করতে হবে। দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী চিন্তা করছেন। যার কারণে তিনি আশ্রায়ণ প্রকল্প গড়ে তুলেছেন।
তিনি বলেন, তিতাসের পূর্বপাড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরকে সম্প্রসারিত করা হবে। করুলিয়া খালের দক্ষিণপাড়ে এপার্টম্যান্ট করা হবে। পৌর এলাকাকে বর্ধিত করা হবে। পরিকল্পিত নগরায়ণ করা হবে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমির রেক্টর (সচিব) মো. সহিদ উল্যাহ, সাবেক সচিব গোলাম রব্বানী, বিয়াম ফাউন্ডেশনের সাবেক মহাপরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান, সমবায় অধিদপ্তরের অতিরিক্ত নিবন্ধক আহসান কবীর, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন ও পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবির। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সমবায় অধিদপ্তরের যুগ্ম নিবন্ধক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। এর আগে সমিতির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় চট্টগ্রামে মামলা হয়েছে ১৪৮টি। এসব মামলায় ঢালাও আসামি করার অভিযোগ ওঠে শুরু থেকেই। তখন তদন্ত চলা অবস্থায় একের পর এক আসামির নাম বাদ দিতে বাদীরা আদালতে আবেদন করছেন বা হলফনামা দিয়ে বলছেন ‘ভুলবশত’ আসামি করা হয়েছে।
আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ৪০ মামলা থেকে ৬৭৫ জন আসামির নাম বাদ দিতে আদালতে গেছেন বাদীরা। এ জন্য তাঁরা ৩৫৪টি আবেদন ও হলফনামা দিয়েছেন। কোনো আবেদনে একজন, কোনোটিতে দুজন আবার কোনো আবেদনে চার-পাঁচজন করে ব্যক্তির নাম মামলা থেকে বাদ দিতে বলেছেন বাদীরা।
আইনজীবীরা বলছেন, এ রকম আবেদন এখনো জমা পড়ছে। হলফনামা দিয়ে ও আবেদন করে বাদীরা বলছেন, এজাহারে ভুলে আসামিদের নাম কে বা কারা লিখে দিয়েছেন। তাই তাঁদের জামিন কিংবা মামলা থেকে নাম বাদ দিতে আপত্তি নেই। বেশির ভাগ আবেদনের ভাষা প্রায় একই রকম।
পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, জুলাই আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় চট্টগ্রাম ও মহানগরে এ পর্যন্ত ১৪৮ মামলা হয়েছে। এসব এজাহারনামীয় আসামির সংখ্যা ১৩ হাজার ২৭ জন। এর বাইরে অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা অন্তত ৩০ হাজার। এসব মামলায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, সন্ত্রাসী যেমন আসামি আছেন; আবার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন এমন ব্যক্তি, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন পেশার মানুষকেও আসামি করা হয়েছে। এখন মামলা থেকে এ ধরনের ব্যক্তিদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য যেমন আবেদন করছেন অনেক বাদী, পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীর জন্যও আবেদন করা হয়েছে। এর মধ্যে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনও রয়েছেন। মামলা থেকে বাদ দিতে আবেদন করা হয়েছে এমন অন্তত ২০ জনের নাম পাওয়া গেছে যাঁরা আগে থেকে অস্ত্র, মাদক ও চাঁদাবাজি মামলার আসামি।
ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা বলছেন, এসব বাদীর পেছনে কিছু আইনজীবী ও বিএনপির নেতা-কর্মী রয়েছেন। তবে মামলা থেকে রেহাই পেতে টাকা লেনদেনের বিষয়ে ভুক্তভোগীরা কেউ পরিচয় প্রকাশ করে কিছু বলতে রাজি হননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, কিছু কিছু মামলার ক্ষেত্রে শুরুতেই এক দফা ‘বাণিজ্য’ করেছে একটি চক্র। খসড়া এজাহার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে পরে টাকার বিনিময়ে বাদ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ আছে। গত ২ জানুয়ারি গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ‘মামলা-বাণিজ্যের’ ব্যাপারে নগরবাসীকে সতর্ক থাকতে বলেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ।
তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, চট্টগ্রামে দায়ের হওয়া অনেক মামলা সাজানো। অনেক বাদী আসামিদের চেনেন না। মামলার নেপথ্যে বিভিন্ন চক্র কাজ করেছে। এ ধরনের মামলার তদন্ত নিয়ে বেকায়দায় আছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
এক মামলারই ৪৫ জনকে বাদ দেওয়ার আবেদন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত বছরের ১৬ জুলাই চট্টগ্রামের মুরাদপুরে গুলিতে নিহত হন দোকান কর্মচারী মো. ফারুক। এ ঘটনায় তাঁর বাবা ভ্যানচালক মো. দুলাল ২৮ আগস্ট পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। এতে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছিরসহ ২৬৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫০ জনকে আসামি করা হয়।
এর মধ্যে মামলা থেকে আ জ ম নাছিরের নাম বাদ দিতে ৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন বাদী। তাতে বলা হয়, বাদীর অজ্ঞাতসারে অন্য কেউ ব্যক্তিগত শত্রুতাবশত মামলায় আ জ ম নাছিরের নাম দিয়েছে। নাছির ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।
বাদীর পক্ষে আদালতে আবেদন পেশ করেন আইনজীবী আখেলুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কাকে মামলার আসামি রাখবে না রাখবে, সেটি বাদীর বিষয়। আদালত বাদীর আবেদন নথিভুক্ত করে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছেন।
এর মাসখানেক পর ৫ ডিসেম্বর একই মামলার আরও সাত আসামির নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করেন বাদী। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর হাসান মুরাদ, গিয়াস উদ্দিন ও মোহাম্মদ হোসেন, বায়েজিদ বোস্তামী থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল নবী ও খুলশী ১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কায়সার মল্লিক এবং আওয়ামী লীগ কর্মী আজগর আলী ও মো. মানিক।
এর আগে ৭ অক্টোবর সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে মজিবুর রহমানের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করেছিলেন বাদী। এভাবে গত চার মাসে এ মামলা থেকে ৪৫ জনের নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
তবে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ তদন্তে যা পাবে তা-ই প্রতিবেদন দেবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ভুক্তভোগী প্রথম আলোকে বলেন, নাম বাদ দিতে তাঁদের কারও ৩০ হাজার, কারও এক লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়েছে। মামলা চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে এসব লেনদেন হয়েছে।
তবে বাদী মো. দুলাল প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, ‘তাড়াহুড়া করে মামলা করেছি, এতে অনেকের নাম এসে গেছে। তাই বাদ দেওয়ার আবেদন করেছি।’ টাকার বিনিময়ে আসামিদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করেছেন, এমন অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
৪০ আসামিকে বাদ দিতে চান আহত সিরাজ
গত বছরের ৪ আগস্ট চট্টগ্রামের তিনপুলের মাথায় আহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২৫৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বিএনপির কর্মী সিরাজ খান। পরে গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ৪০ জনের নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করেন তিনি। তাঁদের মধ্যে চাকরিজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ রয়েছেন।
এ বিষয়ে বাদী সিরাজ খান প্রথম আলোর কাছে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তদন্তে যেসব আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।
বাদীর অজান্তে অন্য কেউ আসামি দিয়েছে!
৫ আগস্ট মনসুরাবাদ এলাকায় গুলিতে আহত হন মো. মানিক। ওই ঘটনায় তিনি ২০ নভেম্বর ডবলমুরিং থানায় মামলা করেন। আসামি করেন ১০৮ জনকে। পরে ৩০ ডিসেম্বর তিনি আওয়ামী লীগ নেতা আ জ ম নাছিরসহ ২৬ জনের নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করেন।
আবেদনে বাদী লেখেন, আ জ ম নাছিরের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ নেই। ফায়দা লোটার জন্য সুকৌশলে কেউ নাছিরের নাম ঢুকিয়ে দিয়েছে। বাকি ২৫ জনের নাম বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রেও একই কথা বলেন তিনি। এ বিষয়ে প্রথম আলোকে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি মানিক।
৪ আগস্ট আহত হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে বিএনপির কর্মী এনায়েতুল গণি হাটহাজারী থানায় মামলা করেন ৩০১ জনের বিরুদ্ধে। পরে ২৪ আসামির নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেন তিনি।
মো. সেলিম নামে সিএনজিচালিত অটোরিকশার এক চালক গুলিতে আহত হওয়ার ঘটনায় চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন। পরে ৫১ আসামির মধ্যে ১৮ জনের নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করেন তিনি।
এভাবে অন্তত ৪০ মামলার বাদীরা ৬৭৫ আসামির নাম বাদ দেওয়ার জন্য হলফনামা ও আবেদন দিয়েছেন আদালতে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আদালতে প্রায়ই আসামির নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করছেন বিভিন্ন মামলার বাদী। আদালত তা নথিভুক্ত করে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
প্রকৃত অপরাধীদের বিচার দাবি
গণ-অভ্যুত্থানের ঘটনায় করা মামলায় হয়রানিমূলক আসামি যাচাই-বাছাই করতে চট্টগ্রাম নগর ও জেলায় দুটি কমিটি করা হয়েছে। দুটিরই সদস্য নগর পুলিশ কমিশনার ও জেলা পুলিশ সুপার।
নগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) রইছ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছেন দাবি করে এরই মধ্যে অনেক আসামি আবেদন করেছেন। এগুলো যাচাই-বাছাই করছে কমিটি।
প্রায় অভিন্ন কথা বলেন অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মো. রাসেল। তিনি বলেন, পুলিশ যা তদন্তে পাবে, তা-ই অভিযোগপত্রে দেবে।
জুলাই আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় করা মামলা নিয়ে এমন আচরণ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) রাসেল আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অনেকে বাণিজ্য করার উদ্দেশ্যে মামলা দিয়েছেন। অনেক নিরপরাধ লোককে আসামি করা হয়েছে, কিন্তু সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়নি। হলেও কিছু বাদী এখন নাম বাদ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে নিরপরাধ ব্যক্তিদের বাদ দেওয়া হোক।’
সূত্র : প্রথম আলো, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
চলারপথে রিপোর্ট :
বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান বলেছেন, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সীমান্ত দিয়ে যেন অবৈধ অস্ত্র দেশে প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য সতর্ক রয়েছে বিজিবির জোয়ানরা। এছাড়া মাদক ও চোরাচালান বন্ধে আগের থেকেও বেশি সক্রিয় আমাদের বাহিনীর সদস্যরা।’
আজ ৩১ আগস্ট বৃহস্পতিবার কুমিল্লা বিবিরবাজার সীমান্ত পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, পুলিশ সুপার আবদুল মান্নানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য ইউনিটের সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বিবিরবাজার সীমান্ত পরিদর্শনে গেলে ভারতের বিএসএফ গোকুলনগর সেক্টরের ভারপ্রাপ্ত সেক্টর কমান্ডার রাজেশ সিং কানওয়ার তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। বিএসএফের পক্ষে থেকে বিজিবি মহাপরিচালককে মিষ্টি উপহার দেওয়া হয়।
এর আগে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান কুমিল্লা বিজিবির সেক্টর ও ব্যাটালিয়নের বিভিন্ন ইউনিটের অপারেশনাল, প্রশিক্ষণ ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি)। এবার সারাদেশে তিন হাজার ৭০০টি কেন্দ্রে ২৯ হাজার ৭৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে।
সূচি অনুযায়ী, প্রথম দিনে বৃহস্পতিবার বাংলা প্রথমপত্র দিয়ে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে আগামী ১২ মার্চ। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৩-২০ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি সূত্র জানায়, ১১টি বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৯ লাখ ৯২ হাজার ৮৭৮ এবং ছাত্রী ১০ লাখ ৩১ হাজার ৩১৪ জন। মোট কেন্দ্র ৩ হাজার ৭০০টি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৯ হাজার ৭৩৫টি।
বোর্ডভিত্তিক হিসাবে সবচেয়ে বেশি ৪ লাখ ৪ হাজার ৬৩৭ পরীক্ষার্থী ঢাকা বোর্ডে। এছাড়া রাজশাহীতে ২ লাখ ২৪৫ জন, কুমিল্লায় ১ লাখ ৮০ হাজার ৫২৭, যশোরে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৩৭১, চট্টগ্রামে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৯০, বরিশালে ৮৮ হাজার ৫৮৬, সিলেটে ১ লাখ ৯ হাজার ৪১২, দিনাজপুরে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৪৩৬ এবং ময়মনসিংহে ১ লাখ ১৯ হাজার ৭৫ জন।
এছাড়া মাদরাসা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ২ লাখ ৯০ হাজার ৯৪০ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৯৪ হাজর ৮৪১ জন এবং ছাত্রী ৩১ হাজার ৫৩২ জন। আর কারিগরি বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাাখ ২৬হাজার ৩৭৩ জন। এরমধ্যে ছাত্র ৯৪ হাজার ৮৪১ জন এবং ছাত্রী ৩১ হাজার ৫৩২ জন।
৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এসএসসি, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড দাখিল ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষা আয়োজনের দায়িত্ব পালন করছে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, এসএসসি পরীক্ষার সব প্রস্তুতি শেষ। প্রশ্নফাঁস হওয়ার কোনো সুযোগই নেই। কেউ এ নিয়ে গুজব ছড়ালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।
পরিদর্শনে যাবেন না শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ বিবেচনায় নিয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন না শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। কয়েকদিন আগে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এ তথ্য জানিয়ে দেন তিনি। মন্ত্রী মনে করেন কেন্দ্র পরিদর্শনের কারণে শিক্ষার্থীদের ওপর এক ধরনের হয়রানিমূলক পরিস্থিতি, মানসিক যন্ত্রণা ও জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেছেন, পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীরা এমনিতেই একটা ট্রমার মধ্যে থাকে। কেন্দ্র পরিদর্শনের নামে ব্যাপক জনসমাগম এ মানসিক চাপ আরও বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশে বিঘ্ন ঘটে।
মহিবুল হাসান চৌধুরী আরও বলেন, আইন অনুযায়ী কেন্দ্র পরিদর্শক ছাড়া অন্য কারও কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি নেই। তাই পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ যেন পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ না করেন সে বিষয়ে সবার সচেতন থাকা উচিত।
বন্ধ কোচিং সেন্টার
এদিকে, প্রশ্নফাঁসের গুজব ও নকলমুক্ত পরিবেশে এসএসসি পরীক্ষা আয়োজনে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী ১২ মার্চ পর্যন্ত একমাস সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে নানা উদ্যোগ
প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে কোচিং বন্ধ ছাড়াও নানা উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। পরীক্ষার কেন্দ্রে জেলা পর্যায়ের ট্রেজারি ও উপজেলা বা থানা পর্যায়ে থানা হেফাজতে সংরক্ষণ করা হবে। থানা বা ট্রেজারি থেকে পুলিশ প্রহরায় প্রশ্ন কেন্দ্রে কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রশ্নফাঁস বা এ সংক্রান্ত গুজব ঠেকাতে ফেসবুকসহ সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলবে নজরদারি। এ কাজে তৎপর চক্রগুলোর কার্যক্রমের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো নজরদারি চালাবে। প্রশ্নফাঁস বা পরীক্ষার্থীদের কাছে উত্তর সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষা বোর্ডের যত নির্দেশনা
এসএসসি শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষা বোর্ড থেকেও কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা হবে। প্রথমে বহুনির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল বা রচনামূলক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং দুই পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না। এছাড়া পরীক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা শুরুর তিনদিন আগে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে, পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে। কেন্দ্রসচিব ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বা পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন আনতে এবং ব্যবহার করতে পারবেন না।
থাকবে কুইক রেসপন্স টিম
এসএসসি পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের যে কোনো সমস্যা নিরসনে ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) প্রস্তুত থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান।
তিনি জানিয়েছেন, পরীক্ষার্থীদের যে কোনো অসুবিধা মোকাবিলা করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের প্রতিটি জোন কর্তৃক আলাদা আলাদা কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) গঠন করা হবে। এছাড়া যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯-এ ফোন করে সহায়তার আহ্বান জানানো যাবে। এক্ষেত্রে ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আজ ২৩ অক্টোবর সোমবার বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় হলে এর নাম হবে হামুন। বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করার সময় এটি দুর্বল হয়ে ফের নিম্নচাপ বা গভীর নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম দুপুরে বলেন, ‘আজ বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
তবে স্থলভাগ অতিক্রম করার সময় এটি দুর্বল হয়ে নিম্নচাপ বা গভীর নিম্নচাপে হবে। আগামী বুধবার বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে বাংলাদেশের বরিশাল ও চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে এটি।’
এদিকে, গভীর নিম্নচাপটি আরো কিছুটা উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে এসে বর্তমানে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দেশের তিন সমুদ্র বন্দর ও কক্সবাজারকে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের দেওয়া বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হচ্ছে। ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং কক্সবাজারকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
এর প্রভাবে আগামী বুধবার পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জায়গায় হালকা থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অতি ভারি বৃষ্টিও হতে পারে। তবে বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি আবার কমে আসতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।