চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মেধাবী শিক্ষার্থী আনিকা আক্তারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে জেলা প্রশাসন। গতকাল রবিবার বিকেলে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত মেধাবী শিক্ষার্থী আনিকার পড়াশুনা চালানোর জন্য তার হাতে ২০ হাজার টাকা তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম।
আনিকা আক্তার জেলার নবীনগর উপজেলার ভোলাচং গ্রামের কাজীমাবাদ শালকান্দি গ্রামের প্রয়াত মোঃ ফারুকুল ইসলামের একমাত্র মেয়ে।
আনিকা আক্তার যখন ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী তখন তার বাবা ফারুকুল ইসলাম মারা যান।এরপর দারিদ্র্যের সাথে সংগ্রাম করে আনিকার পড়াশুনা চালিয়ে যান মা আয়েশা খাতুন।
অভাব অনটনের কারণে আনিকার বই কেনা, বিদ্যালয়ের বেতন, পরীক্ষার ফি ও ফরম পূরণের টাকা দেওয়ার মতো অবস্থা ছিলোনা মা আয়েশা খাতুনের। অনেক কষ্ট করে এসব টাকা পয়সা যোগাড় করতে হয়েছে আয়েশা খাতুনকে।
তবে কোনো কিছুই বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি সংগ্রামী আনিকার। ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় নবীনগর উপজেলার ভোলাচং উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অংশ নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগে সকল বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে আনিকা। পরে সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে ভর্তি হয়।
কিন্তু বিপত্তি বাঁধে এইচএসসি পর্যায়ের পড়াশোনার খরচ চালানো নিয়ে। বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম তাকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই কৃতি শিক্ষার্থীকে ২০ হাজার টাকার সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। যেহেতু এই শিক্ষার্থী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে, তাই সেখানে পড়াশোনার খরচ তেমন হবে না। নিয়মিত ক্লাশে উপস্থিত থাকলে এবং মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করলে এই শিক্ষার্থী ভালো ফলাফল করতে পারবে। তিনি এই শিক্ষার্থী ও তার মাকে সহায়তা ববাদ দেয়া টাকা পড়াশোনার জন্য খরচের পরামর্শ দেন।
এ ব্যাপারে আনিকা বলেন, বাবার আদর স্নেহ পেলেও সে কথা মনে নেই। মা আমার সব। এক চাচি পরীক্ষার ফি যোগাড় করে দিতেন। বই কেনাসহ অন্যান্য টাকা মামা দিতেন। বাবার আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না বলে সৌদি আরব প্রবাসী মামা আমজাদ হোসেনের বাড়িতে তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি।
নবীনগর পৌরসভার মেয়র শিব সংকর দাস বিদ্যালয়ের বেতন ও এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে ফি মওকুফ করিয়েছেন। শিক্ষকরা বিনা টাকা পড়িয়েছেন। আনিকা বলেন, সহায়তা পেয়েছি। জেলা প্রশাসক স্যারের কাছে কৃতজ্ঞ। এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের হোস্টেলে একটি সীট পেলেই হয়। প্রয়োজনে টিউশনি করব, তবুুও পড়াশোনা চালিয়ে যাব।
আনিকার মা আয়েশা খাতুন বলেন, মেয়ের বাবা বেঁচে নেই। আমার আয়ের কোনা উৎস নেই। সহায়তা নিয়ে পাশে দাঁড়ানোর জন্য জেলা প্রশাসনকে তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমি চাই মেয়ে পড়াশোনা করে সামনে এগিয়ে যাক।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে কেঁরির বড়ে খেয়ে তাঁরা বানু (৭০) নামে এক বৃদ্ধা আত্মহত্যা করেছে।
আজ ১৪ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার দিকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন ওই বৃদ্ধা মারা যান। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
তাঁরা বানু উপজেলার বিদ্যাকুট ইউনিয়নের মনিপুর গ্রামের মৃত বলু মিয়ার স্ত্রী।
হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ২০ বছর আগে বলু মিয়া মারা যায়। তারপর থেকে তাঁরা বানু একা হয়ে পড়ে। আজকে সকালে তাঁরা বানু পরিবারের অগোচরে গিয়ে কেঁরি ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে তাঁরা বানুকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসাইন জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক বৃদ্ধা মারা গেছে। কি কারনে আত্মহত্যা করেছে তা জানা যায়নি। আজকে সুরতহালের পর লাশের ময়নাতদন্ত হবে। তারপর নিহতের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করবো।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর পৌরসভার নারী কাউন্সিলর নিলুফা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মামলা কপিটি ভাইরাল হয়।
উপজেলা মহিলা লীগের নেত্রী সাবিনা ইয়াসমিন পুতুল গত ৩০ জুলাই চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এর ২৫(৩)/২৬(৩)/২৯(২)/৩১/৩৫ ধারায় মামলা করেন। মামলায় আরও ৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন। বাদীর আইনজীবী স্বরুপ কান্তি নাথ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পৌর এলাকার আলমনগর গ্রামের আবদুল কুদ্দুস মিয়ার স্ত্রী কাউন্সিলর নিলুফা ইয়াসমিনের সঙ্গে একই গ্রামে নসু মিয়ার মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন পুতুল এর বিরোধ চলে আসছিল। তারই জেরে বিভিন্ন সময় নারী কাউন্সিলর বাদী পুতুলের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমধ্যম ফেসবুকে মিথ্যা, কুৎসিত, অশ্লীল ও মানহানিকর বক্তব্য তুলে ধরতেন ও প্রচার করতেন।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী সাবিনা ইয়াসমিন পুতুল বলেন, ‘আমি উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সামাজিক বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত। আসন্ন পৌর নির্বাচনে আমি কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছি। তাই ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাকে হেয় করতে মিথ্যা ,কুৎসিত, অশ্লীল ও মানহানিকর বক্তব্য ছড়ানো হচ্ছে।’
এ ব্যাপারে কাউন্সিলর নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তার আইন মামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।’
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলায় বজ্রপাতে মো. সোহাগ (২৮) নামে এক সৌদি প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে।
আজ ১০ জুন সোমবার দুপুরের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার নবীনগর উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের বাইশমৌজা বাজারের পাশে আব্দুল্লাহ্ চরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সোহাগ কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের সাতঘর হাটির আব্দুস সালামের ছেলে। তিনি তিনমাস আগে ছুটিতে দেশে এসে বিয়ে করেছিলেন।
পরিবারের লোকজন জানায়, সোহাগ বাইশমৌজা বাজারের পাশে আব্দুল্লাহ্ চরে ১০/১৫টি মহিষকে ঘাস খাওয়াচ্ছিলেন। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পরে পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসেন।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাবুব আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে বিষধর সাপের কামড়ে সোনিয়া (১৮) নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার রাত ৯টায় নবীনগর উপজেলার বিটঘর ইউনিয়নের বিটঘর গ্রামের মধ্যপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃত সোনিয়া ওই এলাকার মজনু খানের মেয়ে। সোনিয়া বিটঘর উচ্চ বিদ্যালয় ১০ম শ্রেণির ছাত্রী।
সোনিয়ার বাবা মজনু মিয়া জানান, তার মেয়ে সোনিয়া রাতে শখের বসে হাতে মেহেদী দিচ্ছিল। এসময় সোফায় বসা অবস্থায় একটি বিষধর সাপ তার বাম পায়ে কামড় দিলে সোনিয়া সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে তারা সোনিয়াকে রাত ৯টায় জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আরিফুজ্জামান হিমেল মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সোনিয়াকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার পরিবারের লোকেরা। সোনিয়ার পায়ে সাপের কামড়ের চিহ্ন ছিল। বিষধর সাপের কামড়েই সোনিয়ার মৃত্যু হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের কেদেরখলা খালের ওপর নির্মিত কাঠের সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে ভেঙে গেছে। চার গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তায় অবস্থিত সেতুটি ভেঙে পড়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
কাঠের সেতু ব্যবহার করে জেলা ও উপজেলা সদরে বিভিন্ন প্রয়োজনে যাতায়াত করে থাকেন বিল এলাকায় অবস্থিত কেদেরখলা, শুভারামপুর, তিলকিয়া ও দুর্গারামপুর গ্রামের বাসিন্দারা। এছাড়া বীরগাঁও স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও বীরগাঁও সোবহানিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, স্থানীয় বাশমৌজা বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতা ও মালিক ভরসার মাজারের ভক্তদের সেতুটি পারাপার হতে হয়।
এলাকাবাসী জানান, পাঁচ বছর আগে উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের ওই চার গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াতের দুর্ভোগ লাঘবে সরকারি ও স্থানীয় ব্যক্তিদের যৌথ উদ্যোগে কেদেরখলা খালের ওপর একটি কাঠের সেতু তৈরি করা হয়। ৪ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি চার গ্রামের প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দার যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। কয়েক মাস আগে সেটি ভেঙে পড়লে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে জনসাধারণকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কেদেরখলা খালের ওপর ভেঙে যাওয়া কাঠের সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, নারী-শিশু ও বৃদ্ধদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আলাপকালে দুর্গারাম গ্রামের স্কুল শিক্ষক নুরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম, সরদার মোছেন মিয়াসহ কয়েকজন জানান, সেতুটি ভেঙে পড়ায় এলাকাবাসীকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ভাঙা সেতু পার হতে গিয়ে নিচে পড়ে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দ্রুত কাঠের সেতুটি সংস্কার ও খালের ওপর একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণের দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির বলেন, বর্ষাকালে কচুরিপানা এসে কাঠের পুলের নিচে জমা হয়ে যাওয়ায় এটি নড়বড়ে হয়ে পড়ে। মেরামত করা হলেও ভেঙে যায়। জনদুর্ভোগ কমাতে সেখানে উঁচু একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুতই সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া শেষ করা হবে।