বিয়ের দিনটিকে স্মরণীয় রাখতে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে!

নাসিরনগর, 12 October 2023, 613 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
শ্বশুরের আবদার মেয়ের জামাইকে আসতে হবে হেলিকপ্টারে চড়ে। যেই কথা সেই কাজ। জামাইও শ্বশুরের আবদার রাখতে এলেন হেলিকপ্টারে চড়ে।

এমন ঘটনা ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ভলাকূট ইউনিয়নের খাগালিয়া গ্রামে। হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করেতে আসা মোহাম্মদ আব্দুল হাকিম তালুকদার একই উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের শিশু মিয়া তালুকদারের ছেলে। সৌদি আরব প্রবাসী ওই বর একজন ব্যবসায়ী।

মেয়ের বিয়ের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে জামাইয়ের কাছে এমন আবদার করেন কনে রোমা আক্তারের বাবা সাবেক মেম্বার আরাফাত আলী।

এদিকে হেলিকপ্টারে বিয়ে হওয়া নবদম্পতিকে দেখতে ভিড় করেন শত শত উৎসুক জনতা। উপচেপড়া মানুষের ভিড় সামলাতে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে পুলিশ।

বিয়ের পর বিকালে আব্দুল হাকিম নববধূকে নিয়ে হেলিকপ্টারে করে গোয়ালনগর মাঠে অবতরণ করেন।

কনের বাবা আরাফাত আলী জানান, মেয়ে আমার সন্তানদের মধ্যে বড়। আমার আদরের রাজকন্যাকে নিতে হবে হেলিকপ্টারে করে, এটা আমার চাওয়া ছিল। জামাই আমার আবদার রেখেছে। এজন্য আমি অনেক খুশি। আমার মেয়ের জন্য সবাই দোয়া করবেন।

বিয়ের দাওয়াতে আসা ও চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আমিনুল হক তালুকদার বলেন, বর-কনে উভয়েরই হাওর এলাকায় বসবাস। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এসব এলাকায় হেলিকপ্টার তো দূরের কথা চার চাকার গাড়িই দেখা যায় না। এজন্য মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে সৌদি প্রবাসী বর আব্দুল হাকিম জানান, মেয়ের বিয়ের দিনটাকে স্মরণীয় করে রাখতে আমার শ্বশুরের ইচ্ছা ছিল জামাই যেন হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করতে আসেন। আমারও ইচ্ছা ছিল হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করব।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহাগ রানা বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।

Leave a Reply

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে অভিযান, জরিমানা…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে অভিযান চালিয়েছে Read more

মধ্য পাইকপাড়া চামেলীবাগ জামে মসজিদের কমিটি…

মোজাম্মেল হক সভাপতি ও রাশেদ কবির আখন্দ সাধারণ সম্পাদক শহরের Read more

নবীনগরে ৫০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ব্যবসায়ী…

চলারপথে রিপোর্ট : নবীনগর উপজেলার নাছিরাবাদ গ্রামের মো. আশিক মিয়া Read more

আখাউড়ায় ছাত্র অধিকারের কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায়…

চলারপথে রিপোর্ট : ৪ বছর আগে আখাউড়ায় ছাত্র অধিকার পরিষদের Read more

সরাইলের ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও Read more

ভাটপাড়ায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অপহরণের চেষ্টাকালে…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাটপাড়ায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে স্বামী গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় দ্বীপা রানী কর (২২) Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি ও পদত্যাগের…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পলি ক্যাবলস এর মতবিনিময় সভা…

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পলি কেবলস -এর বিক্রয় ও বিপণন কার্ষক্রম উন্নয়ন লক্ষ্য Read more

ইউনিয়ন পরিষদ বহাল রাখার দাবিতে মানববন্ধন

চলারপথে রিপোর্ট : ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বাররা (সদস্য) কোনো দলীয় প্রার্থী Read more

নবীনগরে ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের মানববন্ধন

চলারপথে রিপোর্ট : নবীনগরে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত Read more

বিজয়নগরে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগরে নাশকতার মামলায় চম্পকনগর ইউপি চেয়ারম্যান ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থীতে বেকায়দায় আওয়ামীলীগ

নাসিরনগর, রাজনীতি, 31 December 2023, 797 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১-(নাসিরনগর) : হাওর বেষ্টিত এই আসনটি আওয়ামীগের ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিচিত। ১৩টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই আসনের ভোটার সংখ্যা ২লাখ ৫২হাজার ৫৪৭জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৩ হাজার ১০৯জন, মহিলা ভোটার ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৩৬জন এবং হিজরা ২জন। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা বদরুদ্দোজা মোঃ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দূর্গ হিসেবে পরিচিত এই আসন থেকে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন আওয়ামীলীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলেন ৫জন প্রার্থী।

প্রার্থীরা হলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বদরুদ্দোজা মোঃ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম (নৌকা প্রতীক), বিএনপির চেয়ারপারসনের বহিষ্কৃত উপদেষ্টা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব সৈয়দ একে একরামুজ্জামান (কলার ছড়ি প্রতীক), জাতীয় পার্টির মুহাম্মদ শাহানুল করিম (লাঙ্গল প্রতীক), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মোঃ ইসলাম উদ্দিন (মোমবাতি প্রতীক) ও ওয়ার্কার্স পার্টির মোহাম্মদ বকুল হোসেন-( হাতুড়ি প্রতীক)।

বর্তমানে নির্বাচনী এলাকায় বিরাজ করছে উৎসব মুখর পরিবেশ। প্রতিদ্ব›িদ্ব প্রার্থীরা তাদের প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রার্থীরা গণসংযোগ, উঠান বৈঠক ও নির্বাচনী সভা করছেন।

কাগজে-কলমে এই আসনে ৫ জন প্রার্থী থাকলেও ইতিমধ্যেই জাতীয় পার্টির প্রার্থী মুহাম্মদ শাহানুল করিম ঘোষনা দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব সৈয়দ একে একরামুজ্জামানের কলার ছড়ি প্রতীকের সমর্থনে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মোঃ ইসলাম উদ্দিন (মোমবাতি প্রতীক) ও ওয়ার্কার্স পার্টির মোহাম্মদ বকুল হোসেন-( হাতুড়ি প্রতীক) এর তেমন প্রচার-প্রচারনা নেই।

নির্বাচনী মাঠে আওয়ামীলীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মোঃ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব সৈয়দ একে একরামুজ্জামান ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১-(নাসিরনগর) আসনটি ১৯৯৬ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগের দখলে। ২০০১ সালের নির্বাচনে চট্টগ্রাম বিভাগে আওয়ামীলীগের বিপর্যয়ের সময়ও বর্ষিয়ান আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট ছায়েদুল হক এই আসন থেকে বিজয়ী হয়েছিলেন। অ্যাডভোটে ছায়েদুল হক ১৯৯৬ সাল থেকে টানা ৪ বারসহ মোট ৫ বার এই আসন থেকে বিজয়ী হয়েছিলেলন।
২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর অ্যাডভোকেট ছায়েদুল হক মৃত্যুবরণ করলে ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে বি.এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে এই আসনে প্রথমবারের মতো বিজয়ী হন। পরবর্তীতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বি.এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী ও বিএনপির চেয়ারপারসনের তৎকালীন উপদেষ্টা সৈয়দ একে একরামুজ্জানকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আবার মুখোমুখী হয়েছেন আওয়ামীলীগ প্রার্থী বি.এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম এবং হেভিওয়েট প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ একে একরামুজ্জান।

এবারের নির্বাচনী মাঠে বদরুদ্দোজা মোঃ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম অনেকটা চাপে আছেন। দলীয় অনেক নেতা-কর্মীই তার পক্ষে নেই। আওয়ামীলীগের এই বিভক্তির কারনে নির্বাচনী মাঠে সুবিধা পাচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব সৈয়দ একে একরামুজ্জামান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বঞ্চিত তিন নেতা কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের অর্থ সম্পাদক আলহাজ্ব নাজির মিয়া, তার স্ত্রী ও নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রোমা আক্তার এবং নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এটিএম মনিরুজ্জামান সরকার প্রকাশ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব সৈয়দ একে একরামুজ্জামানের কলার ছড়ির পক্ষে মাঠে কাজ করছেন। এছাড়াও নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ানো জাতীয় পার্টির নেতা মুহাম্মদ শাহানুল করিমও কলার ছড়ির পক্ষে মাঠে কাজ করছেন। এদিকে আওয়ামীলীগের প্রার্থী বদরুদ্দোজা মোঃ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম স্থানীয় এক সাংবাদিককে ও একজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়ায় নির্বাচনী মাঠে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে গত ২৪ ডিসেম্বর সংগ্রামকে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি তাকে শোকজ করে। পরদিন ২৫ ডিসেম্বর তিনি স্বশরীরে অনুসন্ধান কমিটির কাছে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেন। সব মিলিয়ে নির্বাচনী মাঠে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বদরুদ্দোজা মোঃ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম অনেকটা বেকায়দায় আছেন। এবারের নির্বাচনে আসনটি আওয়ামীলীগের হাতছাড়া হওয়ার আশাঙ্কা রয়েছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কৃষকলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ নাজির মিয়া বলেন, বি.এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম ক্ষমতায় থেকে তাদের উপর, দলের নেতা-কর্মীদের উপর অনেক অত্যাচার, অবিচার করেছেন এজন্য তারা নাসিরনগরবাসীকে নিরাপদে রাখতে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন।

এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বদরুদ্দোজা মোঃ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম সাংবাদিকদের জানান তিনি নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়ন কর্মকান্ড করেছেন। নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।

এ ব্যাপারে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব সৈয়দ একে একরামুজ্জামান বলেন, নির্বাচনী মাঠে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। জনগন পরিবর্তন চায়, এক ব্যক্তির কারাগার থেকে মুক্তি চায়। তিনি বলেন, আগে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছি। বর্তমানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করায় আমার সাথে আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা আছে। আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত তিন প্রার্থী আমার জন্য কাজ করছেন। ইতিমধ্যেই জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাহানুল করিমও আমাকে সমর্থন করে নির্বাচন থেকে সড়ে দাড়িয়েছেন। সাধারন মানুষের কাছ থেকে বিপুল সাড়া পাচ্ছি। বর্তমান পরিবেশ যদি বজায় থাকে তাহলে আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদি।

নাসিরনগরে মাসিক সভায় দুই ইউপি সদস্যদের মারামারি

নাসিরনগর, 24 May 2024, 266 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে কুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদে দুই ইউপি সদস্যের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় একজন নারী ও অপর পুরুষ ইউপি সদস্য আহত হওয়ার খবর মিলেছে। ঘটনার পর একজন আরেকজনকে দোষ দিয়ে যাচ্ছেন। তবে আহত নারী ইউপি সদস্য মোছা. জাকিয়া আক্তার প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ এনে থানায় এজহার দিয়েছেন। ২৩ মে বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদে মাসিক সভায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত দুই ইউপি সদস্য হলেন ৩নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য মো. ইরন মোল্লা ও ৭, ৮ এবং ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য মোছা. জাকিয়া আক্তার।

কুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নাছির মিয়া ও নারী সদস্য জাকিয়াকে ঘটনার পর থেকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন ইরন। এরই প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুরে কুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্য অনাস্থার প্রস্তাব এনে লিখিত দিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ইমরানুল হক ভূইয়ার কাছে।

জানা গেছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কুন্ডা ইউনিয়নের বাসিন্দা ও বিএনপির সাবেক সহসভাপতি (সদ্য বহিস্কৃত) ওমরাও খানের (আনারস প্রতীক) পক্ষে নির্বাচন করেন সাধারণ ইউপি সদস্য ইরন মোল্লা। এদিকে আ.লীগের সহসভাপতি রোমা আক্তার (ঘোড়া প্রতীক) পক্ষে নির্বাচন করেন সংরক্ষিত নারী সদস্য জাকিয়া আক্তার। নির্বাচনের পর প্রথম মাসিক সভার আহবান করেন চেয়ারম্যান।

২৩ মে পরিষদের কক্ষে সভা চলাকালীন সময় বিএনপির সহ-সভাপতি ওমরাও খান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার বিষয়টি তুলেন ইরন মোল্লা। সে সময় চেয়ারম্যান ও জাকিয়াকে দোষারোপ করেন ইরন। সভা কক্ষে অন্য আলোচনা পরিহার করে ইউনিয়ন পরিষদের আলোচনা শুরু করতে বলায় গালমন্দ করতে থাকেন ইরন। এক পর্যায়ে নারী ইউপি সদস্য প্রতিবাদ করায় তার মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করেন ইরন। এ সময় ইরন ও জাকিয়া উভই আহত হন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় জাকিয়াকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।

আহত জাকিয়া আক্তার বলেন, ইরন একজন খুনি। সে ডাকাত দলের সদস্য। সে শুধু আমার উপরই হামলা করেনি, চেয়ারম্যান ও অপর একজন সদস্যকেও মারধর করতে চেয়েছে। কিন্তু অন্যরা লজ্জায় বলতে পারছে না। ঘটনার পর থেকে চেয়ারম্যান ও আমাকে খুন করার প্রকাশ্য হুমকি দিয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইরন মোল্লা বলেন, আমি আগে খারাপ কাজ করতাম কিন্তু বর্তমানে সব কিছু ছেড়ে আমি ভালো হয়ে গেছি। নির্বাচনে আমি বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ওমরাও খানের পক্ষে কাজ করছি এটা সত্য। পরিষদে এসব বিষয় নিয়ে সুন্দরভাবে আলোচনা হচ্ছিল। কিন্তু জাকিয়া আমায় খারাপ ভাষায় গালমন্দ করলে আমি তাকে আঘাত করি।

কুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নাছির উদ্দিন বলেন, ইরন নাসিরনগরের জন্য একটি আতংকের নাম। ঘটনার পর থেকে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি। ইউএনওর কাছে লিখিত দিয়েছি। থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমরা সঠিক বিচার চাই।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহাগ রানা বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দেওয়া হবে।

ইউএনও মোহাম্মদ ইমরানুল হক ভূইয়া বলেন, সভা চলাকালীন একজন ইউপি সদস্য আরেকজন নারী ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে আহত করেছে। এর পর ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও নারী সদস্যকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিয়েছে। যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নাসিরনগরে ডাকাত গ্রেফতার

নাসিরনগর, 19 September 2024, 65 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সদস্য দুর্র্ধর্ষ ডাকাত নূর মোহাম্মদকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার দিবাগত রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার গােকর্ণ ইউনিয়নের নুরপুর গ্রাম থেকে নাসিরনগর থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। সে ওই গ্রামের ফিরোজ আলীর ছেলে। নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল কাদের জানান, নুর মোহাম্মদ দুর্র্ধর্ষ ডাকাত। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে নাসিরনগর থানায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। আটক নুর মোহাম্মদকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

নাসিরনগরে পুলিশের কর্মবিরতি

নাসিরনগর, 8 August 2024, 136 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে নিরাপত্তাসহ ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করছেন পুলিশ সদস্যরা। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে নাসিরনগর থানা প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেন পুলিশ সদস্যরা।

থানা ভবনের সামনে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নুরে আলম ও চাতলপাড় তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ রঞ্জন কুমার ঘোষের উপস্থিতিতে পুলিশের এসআই, এএআই ও কনস্টেবলরা কর্মবিরতিতে অংশ নেন। সেখানে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়া এবং আত্মগোপনে থাকা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে পুলিশ সদস্যরা।

পুলিশ সদস্যরা জানান, তারা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে। তারা কোন সরকারের পক্ষ হয়ে কাজ করবে না। পুলিশ জনগণের শত্রু না, বন্ধু। এসময় বিভিন্ন শ্লোগান দিতে দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের।

এ সময় তারা এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পুলিশ সদস্য হত্যার বিচার, যেসব পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়াসহ বিচার, পুলিশের ইউনিফর্ম পরিবর্তন, কনষ্টেবল থেকে আইজি পর্যন্ত একেই ড্রেসকোড, পুলিশকে রাজনীতিমুক্ত রেখে নিরপেক্ষতার সাথে কাজ করার সুযোগ নিশ্চিত করা, ৮ ঘন্টার বেশি ডিউটি না করা, পদোন্নতির ক্ষেত্রে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেভাবে দ্রুত পদোন্নতি পায়, ঠিক সেইভাবে নিম্ন পদে যারা আছেন তাদেরকেও পদোন্নতির ব্যবস্থা করা, ২০ দিনের ছুটি বৃদ্ধি করে ৬০ দিন করা, অফিসারদের মত কনস্টেবলদেরকেও সোর্স মানি দেয়া, প্রত্যেক মাসের ১০ তারিখের মধ্যে টিএ-ডিএ বিল নিশ্চিত করা, পুলিশের ঝুঁকিভাতা বৃদ্ধি করা, প্রত্যেক পুলিশ সদস্যদেরকে নিজ রেঞ্জে বদলি করাসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন।

এ সময় কনস্টেবল লুৎফর রহমান মীর, মোঃ রিয়াজ উদ্দিন, সাদ্দাম হোসেনসহ অন্য পুলিশ সদস্য বক্তব্য রাখেন।

স্টাফ রিপোর্টার:
১১ ডিসেম্বর আশুগঞ্জ মুক্ত দিবস। নানা আয়োজন ও আননন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে পালিত হল দিবসটি। এই উপলক্ষে গতকাল রবিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের উদ্যোগে উপজেলার গোলচত্বরে সম্মুখ সমরের ¯ভৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে সম্মুখ সমর থেকে একটি র‌্যালি বের হয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ গোলচত্ত্বরসহ বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে সম্মুখ সমরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সম্মুখ সমরে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা কমান্ড কাউন্সিলের প্রশাসক অরবিন্দ বিশ্বাসের সভাপতিত্ব আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সি, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিমা সুলতানা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা শারমিন, বাংলাদেশ আইনসমিতির সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান আনসারি, আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ রহমান, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাসিম, বীরমুক্তিযোদ্ধা শেখ জসিম উদ্দিন আহমেদ, হেবজুল বারী, মোজাম্মেল হক গোলাপসহ বিশেষ ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন ।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের এদিনেই পাক হানাদার বাহিনীকে বিতাড়িত করে আশুগঞ্জকে শত্রুমুক্ত করে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সদস্যরা।