বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল শ্রমিকের

জাতীয়, 16 October 2023, 522 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
রাজধানীর কদমতলীতে নির্মীয়মাণ ভবনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. শাকিল খান (২০) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করতেন। আজ ১৬ অক্টোবর সোমবার বিকেল ৫টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে।

নিহত শাকিল খান লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার আশার কোটা গ্রামের নবির হোসেনের ছেলে।

তিনি কদমতলীর মুজাহিদনগরে থাকতেন।

সহকর্মী ইকরামুল ও মৃতের খালাতো ভাই মো. সুজন বলেন, কদমতলীর রায়েরবাগ এলাকায় একটি নির্মীয়মাণ ভবনের তৃতীয় তলায় ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিচে পড়ে যান। গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘মৃতদেহটি হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবগত করা হয়েছে।’

Leave a Reply

চিকিৎসা সহায়তা প্রদান

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগর আঞ্চলিক কার্যালয়ের উদ্যোগে আশার সদস্যদের মাঝে Read more

সরাইলে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইলে দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা Read more

আশুগঞ্জে গাঁজাসহ গ্রেফতার ২

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ২৩ কেজি গাঁজাসহ মোঃ সুমন (৩০) Read more

ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আনন্দ মিছিল,…

চলারপথে রিপোর্ট : ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় Read more

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের খবরে ছাত্রদলের আনন্দ মিছিল

চলারপথে রিপোর্ট : অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার খবরে আখাউড়ায় Read more

ঘরের মাঠে বড় পরাজয় বাংলাদেশের

অনলাইন ডেস্ক : ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট সিরিজ দিয়ে Read more

সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন

অনলাইন ডেস্ক : সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে Read more

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিল…

চলারপথে রিপোর্ট : রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ করার দাবিতে Read more

চালক নয়নকে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার কেরানীগঞ্জে মো. নয়ন (২৫) নামের এক Read more

ভারতকে ৩-১ হারিয়ে সেমিফাইনালে বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক : সেমিফাইনাল নিশ্চিতের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল শক্তিশালীয় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কার্ডধারিদের মধ্যে টিসিবি’র পণ্য বিক্রয়…

চলারপথে রিপোর্ট : নিম্ন আয়ের কার্ডধারীদের মধ্যে ভুর্তুকিমূল্যে অক্টোবর মাসের Read more

আখাউড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষীদের মাঝে মাছের…

চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়ায় বন্যা, অতিবৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে Read more

বিশ্বশান্তি নিশ্চিত করা এখন অতীতের চেয়ে কঠিন : শেখ হাসিনা

জাতীয়, 29 May 2024, 209 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বিশ্বশান্তি নিশ্চিত করা অতীতের চেয়ে এখন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রসার ও অগ্রযাত্রার সঙ্গে বাড়ছে নতুন নতুন হুমকি। ফলে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনগুলোর শান্তিরক্ষীদের বহুমাত্রিক জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, শান্তিরক্ষা মিশনগুলো উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে সমৃদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা এখন বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ও বিপজ্জনক অঞ্চলে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারে, সেজন্য তাদের সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

আজ ২৯ মে বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ দিবস-২০২৪’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, নারীর অধিকার ও জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করতে আমাদের পদক্ষেপ ‘উইমেন স্পিচ অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাজেন্ডা’ তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে। বাংলাদেশ অন্যতম বৃহৎ নারী শান্তিরক্ষী দেশ হিসেবেও পরিচিতি লাভ করছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ৩ হাজার ৩৮ জন নারী শান্তিরক্ষী অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে জাতিসংঘের শান্তি মিশন সম্পন্ন করেছেন। এখন দাবি আসছে, আরো নারী শান্তিরক্ষী প্রেরণ করার। জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল নিজেই আমাকে বলেছেন, আমরা যেন আরও বেশি করে নারী শান্তিরক্ষী প্রেরণ করি।

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ও জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেছি। যেখান থেকে ৩০ প্রকার ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হয়। আমাদের কমিউনিটি ক্লিনিকের অনুকরণে বর্তমানে সেন্ট্রাল আফ্রিকায় জাতিসংঘের শান্তি মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশের রক্ষীদের সহায়তায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট ফস্টিন আর্চেঞ্জ তোয়াদেরার নামে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়েছে। যার নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু-তোয়াদেরা কমিউনিটি ক্লিনিক। বিদেশের মাটিতে জাতির পিতার নামে এমন সম্মাননা বাংলাদেশের জন্য একটি গৌরবের অধ্যায়।

অস্ত্র তৈরি ও প্রতিযোগিতা না করে সেই অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মানুষদের রক্ষার জন্য ব্যয় করার আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দ্বন্দ্ব সংঘাত যুদ্ধ আজ বিশ্বশান্তি বিঘ্নিত করছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজায় ইসরাইলের হামলায় হাজার হাজার নিরীহ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা ইত্যাদি মানবজাতির জন্য এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি ঠিক জানি না এই সংঘাত বা এই যুদ্ধ মানবজাতির জন্য কি কল্যাণ বয়ে আনছে। অস্ত্র প্রতিযোগিতা প্রতিনিয়ত যত বৃদ্ধি পাচ্ছে, মানুষের জীবনও তত বেশি দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। বিশেষ করে নারী-শিশু, তারা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে। যুবকেরা অকাতরে জীবন দিচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না শান্তি চাই, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সব কিছু সমাধান করতে চাই। বিশ্বের এক বিশাল সংখ্যক মানুষ এখনো দারিদ্রসীমার নিচে রয়েছে। কোটি কোটি মানুষ দু’বেলা খাবার পায় না, শিশুরা শিক্ষা পায় না, শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। যারা অস্ত্র তৈরি ও অস্ত্র প্রতিযোগিতায় এত অর্থ ব্যয় করছে, তাদের কাছে আমার আহ্বান, আমরা শান্তির কথা বলি কিন্তু সংঘাতে লিপ্ত হই কেন?

সরকারপ্রধান বলেন, এই যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে, এই অর্থ যদি ক্ষুধার্ত মানুষের আহারের ব্যবস্থায়, শিক্ষায় ব্যবহার করা হতো, চিকিৎসায় ব্যবহার করা হতো তাহলে মানুষের জীবনমান আরও উন্নত হতো, মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচতে পারত। কিন্তু এই সংঘাত মানুষকে আরও কষ্টের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, সংঘাত নয়, যদি কোনো সমস্যা থাকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা, সেটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কাজ। অস্ত্র তৈরি আর প্রতিযোগিতা, এই অর্থটা যেসব দেশ এখনো জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে যাচ্ছে, সেই জলবায়ু অভিঘাত থেকে মানবজাতিকে রক্ষার জন্য সেই ফান্ডে দিতে পারে এবং ক্ষুধার্ত ও শিক্ষা বঞ্চিতদের জন্য ব্যবহার করতে পারে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ অনুসরণ করে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব দেশে আমাদের শান্তিরক্ষী বাহিনী কাজ করছে, তাদের রাষ্ট্র প্রধান, সরকার প্রধান বা মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা হয়, প্রত্যেকেই আমাদের শান্তিরক্ষীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। আর এই প্রশংসা শুনে সত্যিই আমার গর্বে বুক ভরে যায়।

তিনি বলেন, জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করে আমরা বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছি। শান্তিরক্ষা মিশন ছাড়াও আমরা অন্য আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে অবদান রেখে যাচ্ছি।

অনুষ্ঠানে এছাড়াও সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বক্তব্য দেন।

আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

জাতীয়, 17 April 2024, 293 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
আজ ১৭ এপ্রিল, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে তখনকার কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে। পাশাপাশি এ অনুষ্ঠানে ওই বছরের ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার প্রণীত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রও আনুষ্ঠানিকভাবে পাঠ করা হয়। এদিন থেকে স্থানটি মুজিবনগর নামে পরিচিতি লাভ করে।

দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতি দেশবাসীকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনে নিজ নিজ অবস্থান থেকে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদযাপনের মাধ্যমে বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করবে।’

প্রধানমন্ত্রী মুজিবনগর দিবসকে ‘বাঙালি জাতির পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্তির ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন’ উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতা শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ, শহীদ মোহাম্মদ মনসুর আলী ও শহীদ আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকে। শ্রদ্ধা জানাই মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ অকুতোভয় বীর শহীদের স্মৃতির প্রতি এবং দুই লাখ সম্ভ্রমহারা নির্যাতিত মা-বোনের প্রতি।’

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে সরকারের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসটির সূচনা হবে। সকাল ৯টায় মুজিবনগরের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে এবং মুজিবনগরের আম্রকাননে বীর মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি, বিএনসিসি, স্কাউটস, গার্লস গাইড ও স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী কর্তৃক গার্ড অব অনার প্রদান এবং বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে।

মুজিব ও স্বাধীনতা সংগ্রহশালা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 24 June 2024, 169 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
জাতীয় সংসদ ভবনে নির্মিত ‘মুজিব ও স্বাধীনতা’ সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। তিনি আজ ২৪ জুন সোমবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের প্রথম লেভেলে স্থাপিত ‘মুজিব ও স্বাধীনতা’ পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ছিলেন।

এ সময় ‘মুজিব ও স্বাধীনতা’ সংগ্রহশালায় প্রদর্শিত বিভিন্ন স্থিরচিত্র ও ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন স্পিকার।

পরিদর্শন শেষে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টির প্রশংসা করেন এবং পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন। তিনি জাতীয় সংসদে ‘মুজিব ও স্বাধীনতা’ স্থাপনের জন্য স্পিকারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিনন্দন জানান। পরে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যসহ জাতীয় সংসদ সদস্যরা ‘মুজিব ও স্বাধীনতা’ পরিদর্শন করেন।

সংসদ সচিবালয় থেকে জানানো হয়েছে, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস সংরক্ষণ ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দেওয়ার এক অনন্য প্রয়াস ‘মুজিব ও স্বাধীনতা’।

এখানে প্রথম কক্ষে বাংলার প্রাচীন ইতিহাস থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধুর শৈশব ও কৈশোর, খোকা থেকে শুরু হয়ে তারুণ্যে মুজিব ভাই হয়ে ওঠা, ভারত ভাগ ও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা, উত্তাল ভাষা আন্দোলন ও ১৯৫০-এর দশকের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান ও ১৯৭০-এর নির্বাচন পর্যন্ত প্রদর্শিত হয়েছে।

১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে বিজয়ের প্রেক্ষাপট থেকে শুরু করে দ্বিতীয় কক্ষের ঘটনাপ্রবাহ এগিয়ে গেছে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসের দিকে। বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠে ৭ মার্চের ভাষণ, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ২৫ মার্চের গণহত্যা, ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা, দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষের অকাতর সংগ্রাম এবং মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদের আত্মত্যাগের ধারা বর্ণনা স্থান পেয়েছে এই কক্ষে।

তৃতীয় কক্ষে বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল বিজয়, মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বপূর্ণ অবদানের সঙ্গে আরো রয়েছে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন, আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের পরিচিতি সুসংহত করার স্বর্ণালি ইতিহাস।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের সংগ্রামী জীবন ও বঙ্গবন্ধুর পারিবারিক জীবনের কিছু খণ্ডচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে। এরপর বাংলাদেশের ইতিহাসের কালো অধ্যায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্থান পেয়েছে।

নির্বাচন কখন হবে সেটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত: প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয়, 25 August 2024, 85 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের সংকটকালে ছাত্রদের আহ্বানে আমরা সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। কখন নির্বাচন হবে সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, আমাদের সিদ্ধান্ত নয়। দেশবাসীকে ঠিক করতে হবে আপনারা কখন আমাদের ছেড়ে দেবেন। আজ ২৫ আগস্ট রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার এই ভাষণ বিটিভি, বিটিভি ওয়ার্ল্ড এবং বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে একযোগে সম্প্রচার করা হচ্ছে।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, একটা বিষয়ে সবাই জানতে আগ্রহী, কখন আমাদের সরকার বিদায় নেবে। এটার জবাব আপনাদের হাতে, কখন আপনারা আমাদেরকে বিদায় দেবেন। আমরা কেউ দেশ শাসনের মানুষ নই। আমাদের নিজ নিজ পেশায় আমরা আনন্দ পাই। আমাদের উপদেষ্টামণ্ডলীও এই লক্ষ্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে সবাই মিলে একটা টিম হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, কখন নির্বাচন হবে সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, আমাদের সিদ্ধান্ত নয়। দেশবাসীকে ঠিক করতে হবে আপনারা কখন আমাদের ছেড়ে দেবেন। আমরা ছাত্রদের আহ্বানে এসেছি। তারা আমাদের প্রাথমিক নিয়োগকর্তা। দেশের আপামর জনসাধারণ আমাদের নিয়োগ সমর্থন করেছে। আমরা ক্রমাগতভাবে সবাইকে বিষয়টি স্মরণ করিয়ে যাবো যাতে হঠাৎ করে এই প্রশ্ন উত্থাপিত না হয়- আমরা কখন যাব। তারা যখন বলবে আমরা চলে যাব।

ড. ইউনূস বলেন, আমরা সংস্কারের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনকেও সংস্কার করব। কমিশনকে যে কোনো সময় আদর্শ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত রাখব।

ইউনূস আরো বলেন, একটা বিশেষ ব্যাপারে আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাচ্ছি। আমাদের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রতিদিন সচিবালয়ে, আমার অফিসের আশপাশে, শহরের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করা হচ্ছে। গত ১৬ বছরের অনেক দুঃখ- কষ্ট আপনাদের জমা আছে। সেটা আমরা বুঝি। আমাদের যদি কাজ করতে না দেন তাহলে এই দুঃখ ঘোচানোর সব পথ বন্ধ হয়ে থাকবে। আপনাদের কাছে অনুরোধ আমাদের কাজ করতে দিন। আপনাদের যা চাওয়া তা লিখিতভাবে আমাদের দিয়ে যান। আমরা আপনাদের বিপক্ষ দল নই। আইনসংগতভাবে যা কিছু করার আছে আমরা অবশ্যই তা করব।

তিনি বলেন, আমাদের ঘেরাও করে আমাদের কাজে বাধা দেবেন না। সবাই মিলে তাদের বোঝান তারা যেন এ সময়ে তাদের অভিযোগের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আমাদের দৈনন্দিন গুরুত্বপূর্ণ কাজে বাধা না দেন।

উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর ৬ আগস্ট বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধান ও ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

গত ৯ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন ড. ইউনূস।

দেশের অর্থনীতি গতিশীল রাখতে প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছি: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 26 February 2023, 974 Views,

চলারপথে ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘করোনা অতিমারী ও ইউক্রেন যুদ্ধ- সবকিছু মিলিয়ে সারা বিশ্বের অর্থনীতি মন্দার কবলে, সেখানে আমাদের প্রচেষ্টা দেশের অর্থনীতি গতিশীল রাখা। সেজন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশ একদিন উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হবে।’

আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি রবিবার সকাল ১০টায় প্রয়াত ডা. এস এ মালেকের স্মরণসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু পরিষদ এ সভার আয়োজন করে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. এস এ মালেক আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন। গত বছরের ৬ ডিসেম্বর তিনি মারা যান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্কুল জীবন থেকে রাজনীতি করি। কলেজে ছাত্রলীগ করতাম, কলেজে ভিপিও ছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রলীগে সম্পৃক্ত ছিলাম। কখনও নেতৃত্ব নেওয়ার চিন্তা করিনি। দলের জন্য যখন প্রয়োজন হয়েছে, আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেটাই পালন করেছি। পঁচাত্তরের পরেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। তখনও আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিতে হবে- সেটা ভাবিনি। বঙ্গবন্ধু পরিষদ গঠন হয়েছে শুনে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করেছি। ডা. মালেক আমাকে চাপ দিতেন, তোমাকে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিতে হবে। সত্যি কথা বলতে, আমি দলের দায়িত্ব নেওয়ায় ডা. মালেকের অনেক অবদান রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডা. মালেককে আমরা ছোটবেলা থেকে চিনি, তার সঙ্গে আমাদের পারিবারিকভাবে সম্পর্ক রয়েছে। তিনি সবসময় রাজনীতি সচেতন ছিলেন। দেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তার ভূমিকা ছিল। মুক্তিযুদ্ধে নিজের হাতে অস্ত্র তুলে প্রতিরোধ করেন। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর মুশতাক সংসদ সদস্যদের বৈঠকে ডাকে। তবে ডা. মালেকসহ অনেক সংসদ সদস্য সে বৈঠকে যোগ দেননি। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। সেখানে টিকতে না পেরে তিনি ভারতে চলে যান।’

এস এ মালেকের স্মৃতিচারণ করে সরকারপ্রধান আরো বলেন, ‘১৯৯৬ সালে ডা. মালেক আমার রাজনৈতিক উপদেষ্টা থাকাকালে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন। তার মধ্যে কোনো অহমিকা ছিল না। তিনি হোমিওপ্যাথির প্র্যাকটিস করতেন, বিনামূল্যে ওষুধও দিতেন। তিনি অনেক বৈরী পরিবেশে জাতির পিতার আদর্শকে এগিয়ে নিয়েছেন এবং নেতাকর্মীদের মধ্যেও সেটি দক্ষভাবে ছড়িয়ে গিয়েছেন। লেখালেখিতেও তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রচার করেছেন।’

বঙ্গবন্ধু পরিষদ নিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ ও তার আদর্শ তুলে ধরতে ঢাবি উপাচার্য মতিন চৌধুরী বঙ্গবন্ধু পরিষদ গড়ে তোলেন। সেসময় বঙ্গবন্ধুর নাম নেওয়াও নিষিদ্ধ ছিল। সে সময় তারা একটি বইও প্রকাশ করেন। বিভিন্ন লেখনীতে বঙ্গবন্ধুর কর্ম জাতির সামনে তুলে ধরেন। তবে তাদেরকে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

সভায় আলোচনায় অংশ নেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আবদুল খালেক, বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান, বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মতিউর রহমান লাল্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক অর্থনীতিবিদ লিয়াকত আলী মোড়ল ও অ্যাডভোকেট আব্দুল সালাম।

বক্তারা বলেন, ডা. এস এ মালেক ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক ও বলিষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সকল প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন তিনি। সারা জীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে তিনি নিজের জীবনকে পরিচালিত করেছেন। নতুন প্রজন্ম যদি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে তাদের জীবন পরিচালিত করতে পারে তাহলে প্রয়াত ডা. এস এ মালেকের আত্মার শান্তি পাবে। এ সময় বক্তারা তার নামে দেশের একটি সড়ক নামকরণের দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে এস এ মালেকের স্মরণে ‘তুমি রবে নীরবে’ গান পরিবেশিত হয়। ‘ডা. এস এ মালেক: বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আলোয় আঁকা একজন সাহসী মানুষের প্রতিকৃতি’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অজিত কুমার সরকার।