চলারপথে রিপোর্ট :
খুদে শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ ঘটানো এবং প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে আখাউড়ায় কিন্ডারগার্টেন স্কুলের মেধা যাচাই (বৃত্তি) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্ডারগার্টেন ইউনিটি অব আখাউড়ার আয়োজনে শনিবার সকালে আখাউড়া রেলওয়ে স্কুলে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণির দুই শতাধিক ছাত্র ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নেয়।
১ম থেকে ৩য় শ্রেণির ছাত্র ছাত্রীরা বাংলা, অংক, সাধারণ জ্ঞান, ইংরেজি বিষয়ে মোট ৩০০ নম্বর এবং ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণীর ছাত্রীরা ৬ টি বিষয়ে ৪০০ নম্বরের পরীক্ষা দেয়। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অংকুর কিন্ডারগার্টেন এর প্রতিষ্ঠা পরিচালক শফিকুল আলম তুরান বলেন, প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষা মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য মেধা যাচাই বৃত্তি পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। এতে ছাত্র ছাত্রীদের পরীক্ষা ভীতি দূর হয়। মেধার বিকাশ ঘটে।
বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রীরা একে অপরের সাথে পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয়। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার মান উন্নয়নে সহায় ভূমিকা পালন করে।
এসম অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কিন্ডারগার্টেন ইউনিটি অব আখাউড়ার উপদেষ্টা রাধা কৃষ্ণ নুনিয়া,
শিক্ষক আহসান কবির লিটন, সরাফুল ইসলাম, সম্রাট খাদেম, ফারজানা আক্তার প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণের জন্য আট কর্মকর্তাকে ভোট গ্রহণের দায়িত্ব না দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।
গতকাল ১৪ মে মঙ্গলবার সকালে নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাবেয়া আক্তারের কাছে লিখিতভাবে এ আবেদন জানান চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মনির হোসেন। অভিযোগে পৌর মেয়র তাকজিল খলিফার নিয়ন্ত্রিত চারটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও তাঁর ঘনিষ্ঠ আট কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছয়জনই সরকারি কর্মকর্তা।
দ্বিতীয় ধাপে ২১ মে আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের চেয়ারম্যান মনির হোসেন (ঘোড়া প্রতীক) এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. মুরাদ হোসেন ভূঁইয়া (আনারস প্রতীক)। ইতিমধ্যে মুরাদকে সমর্থন দিয়েছেন আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফা। তাঁর অনুসারীরা মুরাদকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বলে এলাকায় প্রচারণাও চালাচ্ছেন।
লিখিত আবেদনে মো. মনির হোসেন অভিযোগ করেন, আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. তাকজিল খলিফা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মুরাদ হোসেন ভূঁইয়াকে সমর্থন দিয়ে সভা-সমাবেশ করছেন। আচরণবিধি ভঙ্গ করে পৌরসভা কার্যালয়েও সভা করছেন। সভা-সমাবেশে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেন সম্পর্কে মানহানিকর বক্তব্য দিচ্ছেন। মেয়র তাকজিল খলিফার নিয়ন্ত্রণাধীন চার প্রতিষ্ঠান হলো আখাউড়া পৌরসভা, জাহানারা স্কুল অ্যান্ড স্কুল, নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও সিরাজুল হক উচ্চবিদ্যালয়। তিনি উপজেলার ওই তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি। মেয়রের নিয়ন্ত্রিত এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মুরাদ হোসেন ভূঁইয়ার পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভোটের দিন নিজেরা যেন সিল মেরে ব্যালট বাক্সে ভরেন, সে বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করছেন বলে তথ্য রয়েছে। সেসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অনেকে গোপনে এসে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মনির হোসেনের কাছে তথ্য দিচ্ছেন। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে বিব্রত বোধ করছেন বলেও জানিয়েছেন।
পৌর মেয়রের নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা ভোট গ্রহণের দায়িত্ব পেলে নির্বাচন প্রভাবিত করতে পারেন বলে মনির হোসেন আশঙ্কা করছেন। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে তাকজিল খলিফার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও তাঁর ঘনিষ্ঠজনকে নির্বাচনের দায়িত্বে না দেওয়ার জন্য সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন তিনি।
লিখিত আবেদনে যে আট কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁরা হলেন আখাউড়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী তানভীর হাসান, উপসহকারী প্রকৌশলী ফয়ছেল আহাম্মদ খান, নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক দেবব্রত বণিক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক কাজী মো. ইকবাল, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. মোসলেহ উদ্দিন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাপস কুমার চক্রবর্তী, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হাসেন ও উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা ইউসুফ নুরুল্লাহ। তাঁরা অতীতে বিভিন্ন নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তবে নাম উল্লেখ করা সরকারি ছয় কর্মকর্তার মধ্যে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন বলেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা বিব্রত। তাঁরাও চান না, নির্বাচনের দিন তাঁদের কোনো দায়িত্বে রাখা হোক। আর রাখা হলেও প্রয়োজনে কন্ট্রোল রুমে কিংবা তাঁদের বাদ দেওয়া হোক।
চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেন বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মুরাদ হোসেনের পক্ষে প্রকাশ্যে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ। প্রতিনিয়ত সরকারিসহ দলীয় প্রতিষ্ঠানে সভা-সমাবেশ হচ্ছে। ভূরিভোজসহ আচরণবিধির তোয়াক্কা করছেন না মেয়রের অনুসারীরা।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আখাউড়ার ইউএনওর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেন। সেখানে আমাদের কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তার নাম রয়েছে। আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
কোনো রকমে ঠেলা ধাক্কায় ওপরে ওঠা। এরপর শুরু একের পর ঝাঁকি। মোট ৩৬টা। ততক্ষণ পর্যন্ত ‘ইস’ আর ‘উফ’ আওয়াজ।
বেশি বেকায়দায় পড়লে শোনা যায় হায় হায় শব্দ। পড়ে গেলাম পড়ে গেলাম বলে চিৎকার। দৌড়ে এসে রক্ষার চেষ্টা। রেললাইন ১২টা, ডুয়াল গেজের।
একেকটায় তিনটি করে রেলপাত। সেই হিসাবে মোট ৩৬টি পাত পার হওয়ার সময় প্রতিবারই বেশ ঝাঁকি লাগে। এতে যানবাহনে চলাচলকারী যাত্রীরা প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। রেল ওভারপাসটি ওঠার সময়ও দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর এলাকার লাল বাজারের একটি লেভেলক্রসিংয়ে প্রতিনিয়ত এভাবেই দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। এ লেভেলক্রসিং পার হয়েই যেতে হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। লেভেলক্রসিংয়ের পরেই রয়েছে বড় বাজার নামে একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার। এ ছাড়া জেলা সদর ও উপজেলা সদরের বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এ লেভেলক্রসিং পার হয়ে এলাকায় যান।
সরজমিনে ঘুরে ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লালবাজার নামে এলাকার শেষ হতেই লেভেলক্রসিং শুরু।
এক থেকে দেড় শ গজ পার হয়ে ওপারে বড় বাজার। আখাউড়া-লাকসাম ডুয়াল গেজ প্রকল্প নির্মাণের আগে তিনটি রেললাইন পার হয়ে এপার-ওপার যাওয়া যেত। আর এখন মোট ১২টি রেললাইন বসানোয় এটি পার হতে বেগ পেতে হয়। প্রতিটি রেললাইনের পরের জায়গা বেশ উঁচু-নিচু। এ ছাড়া নতুন রেললাইন অনেক উঁচুতে নির্মাণ হওয়ার সেটি সড়ক থেকে বেশ উঁচুতে। যে কারণে ঠেলা-ধাক্কায় যানবাহন ওঠাতে হয়। বাধ্য হয়ে অনেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছেন। কখনো মালবাহী অনেক যান এখানে প্রায়ই দুর্ঘটনার মধ্যে পড়ছে।
স্থানীয়রা আরো জানান, ২৪ ঘণ্টায় অর্ধশতের বেশি ট্রেন এ পথ দিয়ে চলাচল করে। যে কারণে একটু পর পর বেরিয়ার ফেলে রাখা হয় এ লেভেলক্রসিংয়ে। এতে হাসপাতালে জরুরি সেবা নিতে যাওয়া রোগীরা অনেক সময় আটকা পড়ে যান। লেভেলক্রসিং পার হতে গিয়ে বেশ ঝাঁকি লাগে বলে রোগীরা আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে যানবাহন চালকরা এ পথ দিয়ে যেতেও চান না।
দুর্ভোগের বিষয়টি এ প্রতিবেদক একাধিবার নিজেই দেখেন। যানবাহন চড়তে দুর্ভোগের বিষয়টি নিশ্চিত করতে গত ১৫ জানুয়ারি এ প্রতিবেদক একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় চড়ে। রাধানগর চৌরাস্তা মোড় থেকে ওই লেভেলক্রসিংয়ে হয়ে স্টেশনে যাওয়ার পথে ঠিকই দুর্ভোগে পড়তে হয়। লেভেরক্রসিংয়ে ওঠার সময় এ প্রতিবেদকের অটোরিকশা আটকে যায়। একপর্যায়ে অটোরিকশাটি পেছন দিকে নামতে থাকলে অস্থায়ী বেরিয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েক যুবক টেনে ধরেন।
লেভেলক্রসিং সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা আখাউড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শেখ বোরহান উদ্দিন আহমেদ এখানে একটি আন্ডারপাস বা ওভারপাস নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘উপজেলার একমাত্র হাসপাতাল, একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার এবং জেলা সদর ও আখাউড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে যেতে এ সড়কটি ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু সড়ক থেকে রেললাইন অনেক উঁচু হওয়া ও অনেকগুলো রেললাইন পার হতে হয় বলে দুর্ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। দুর্ঘটনা ও দুর্ভোগের শিকার এলাকার মানুষ এখানে একটি আন্ডারপাস বা ওভারপাস করার দাবিতে মানববন্ধনও করেছে। আশা করছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দ্রুত বিবেচনায় নেবেন।’
আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. হিমেল খান বলেন, ‘হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা এ বিষয়ে প্রতিনিয়তই অভিযোগ করেন। নতুন রেলপথ নির্মাণ হওয়ার পর থেকে চলতে গিয়ে তাদের খুবই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে হাড়ভাঙা রোগী, গর্ভবতী নারীদের বেলায় সমস্যা হচ্ছে বেশি। এ পথ ছাড়া হাসপাতালে আসার কোনো বিকল্প রাস্তাও নেই। জনগণের সমস্যার কথা চিন্তা করে এখানে একটি আন্ডারপাস বা ওভারপাস নির্মাণের জন্য এলাকার সংসদ সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।’
এ বিষয়ে লাকসাম-আখাউড়া ডুয়াল গেজ রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. আব্দুল্লাহ বলেন, ‘রেললাইন পার হতে গিয়ে দুর্ভোগের বিষয়টি এলাকাবাসী বলেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও বিষয়টি অবগত আছেন। কিন্তু এই মুহূর্তে কিছু করার নেই। তবে যত দূর জানি পরবর্তীতে আখাউড়া-সিলেট ডুয়াল গেজ রেললাইন নির্মাণ কিংবা অন্য প্রকল্পে চলাচলের সুবিধার্থে একটি ওভারপাস কিংবা একটি আন্ডারপাসের পরিকল্পনা থাকতে পারে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় বিশেষ অভিযানে আলোচিত মোরছালিন ভূঁইয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবদুল্লাহকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামের মৃত মঙ্গল মিয়ার ছেলে। তিনি ওই হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পলাতক ছিলেন।
৭ মার্চ বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে থানা পুলিশ এ তথ্য জানায়।
আখাউড়া থানার ওসি মো.নূরে আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জেলা পুলিশের বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে দুপুরে ধরখার হাইওয়ে রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে আব্দুল্লাহকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আদালতে সোপর্দ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বাড়িতে ডেকে নিয়ে মোরছালিন ভূঁইয়াকে (২৬) হত্যা করা হয়। পরদিন রবিবার বিকেলে ওই ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামে মঙ্গল মিয়ার ছেলে আব্দুল্লাহর তালাবদ্ধ ঘর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত মোরছালিন উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের মিনারকুট গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে।
নিহতের স্বজনদের দাবি, পাওনা টাকা চাওয়ায় আব্দুল্লাহ ও তার সহযোগীরা তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন। এ ঘটনার পর আব্দুল্লাহসহ অন্য আসামিরা গা-ঢাকা দেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলমান বন্যায় ৪ উপজেলার ৮৬০টি পুকুরের অন্তত ৭৫৬ টন মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে সাড়ে ১৮ থেকে ১৯ কোটি টাকার বেশি লোকসান হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আখাউড়া উপজেলার খামারিসহ মাছ ব্যবসায়ীরা। তবে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় পুকুর, দিঘি ও খামারের সংখ্যা ২ হাজার ৩৪৮। এগুলোর মোট আয়তন ৬২১ হেক্টর। এসব জলাশয়ে প্রায় ৫০০ ব্যবসায়ী মাছ চাষ করেন। আর চাষির সংখ্যা ২ হাজার ১০৭। বন্যায় ১২১ দশমিক ৮৬ হেক্টর আয়তনের ৪৩০টি দিঘি, খামার ও পুকুরের সব মাছ পানিতে ভেসে গেছে। ৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা মূল্যের মোট ৪৫৬ টন মাছ পানিতে ভেসে গেছে। আর ১ কোটি ১৫ লাখ পোনা পানিতে ভেসে গেছে, যার বাজারমূল্য ৩ কোটি টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যবসায়ীর ১০ লাখ টাকার অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আখাউড়ার মোগড়া ইউনিয়নের নিলাখাদ গ্রামের খামারি বলেন, ‘বন্যায় যে ক্ষতি হয়েছে, তা সামলে ওঠা অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। বন্যার পানিতে পাঁচ কোটি টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এই ক্ষতি কীভাবে পূরণ করব, বুঝতে পারছি না।’
বন্যার পানিতে প্রায় দেড় কোটি টাকার মাছ ভেসে যাওয়ার দাবি করেছেন কর্ণেল বাজারের বাসিন্দা বাছির মিয়া। তিনি বলেন, পুকুরে মাছ মাত্র বড় হয়েছিল। কয়েক দিনের মধ্যেই বাজারে বিক্রি করতেন। কিন্তু বন্যার পানিতে সব মাছ ভেসে দেড় কোটি টাকার লোকসান হয়েছে।
মোগড়া গ্রামের বাসিন্দা দুলাল মিয়া বলেন, ‘পানি কমলেও আমার পুকুরে আর মাছ নেই। যা মাছ ছিল সব পানিতে ভেসে গেছে। প্রায় এক কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে।’
এ বিষয়ে ক্ষয়ক্ষতি-সংক্রান্ত প্রাথমিক একটি তালিকা করেছে আখাউড়া উপজেলার মৎস্য কার্যালয়।
আখাউড়া উপজেলার মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, বড় ব্যবসায়ীরা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ইউনিয়ন পর্যায়ে খামারিদের ক্ষতির তালিকা করা হচ্ছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।
এদিকে কসবা উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় বন্যার পানিতে ২০০ পুকুর, দিঘি ও খামারের মাছ ভেসে গেছে। এগুলোর আয়তন ৩৮ হেক্টর। ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার বড় মাছ ও ১০ লাখ টাকার পোনা পানিতে ভেসে গেছে। বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি অবকাঠামো ভেঙে মোট ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও আখাউড়া উপজেলা মৎস্য কার্যালয় জানিয়েছে, সদর উপজেলায় ৬০ হেক্টর আয়তনের ১৪৫টি পুকুর, দিঘি ও খামারের মাছ ভেসে গেছে। ১৫ লাখ টাকা মূল্যের ১২ লাখ পোনা ও ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকার বড় মাছ পানিতে ভেসে গেছে। অবকাঠামো ভেঙে যাওয়াসহ বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ায় মোট ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বিজয়নগর উপজেলায় ১১ হেক্টর আয়তনের ৮৫টি পুকুর, দিঘি ও খামারের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। ১৩ লাখ টাকা মূল্যের ১ লাখ পোনা ও ৪০ লাখ টাকার বড় মাছ পানিতে ভেসে গেছে। বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি অবকাঠামো ভেঙে যাওয়ায় মোট ৫৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবির বলেন, বন্যার পানিতে ৮৬০টি পুকুর প্লাবিত হয়ে সাড়ে ১৮ থেকে ১৯ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। খামারি ও ব্যবসায়ী মিলিয়ে ৮৬০ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
২০ আগস্ট রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া ইমিগ্রেশন-সংলগ্ন খাল দিয়ে ভারতে থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি আসতে শুরু করে। এরপর আখাউড়া উপজেলাসহ পর্যায়ক্রমে কসবা উপজেলায় বন্যা দেখা দেয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে ১০ কেজি গাঁজাসহ দুই কারবারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন পৌর শহরের রাধানগর এলাকার আবু তাহেরের ছেলে মামুন মিয়া বর্তমান দেবগ্রাম টানা ব্রিজ সংলগ্ন ইয়াকুব মিয়ার ভাড়াটিয়া ও উত্তর ইউনিয়নের আমোদাবাদ গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে তুহিন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদেরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে থানা পুলিশ এ তথ্য জানান।
পুলিশ জানায়, জেলা পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানের অংশ হিসাবে গোপন সংবাদ মাধ্যমে খবর পেয়ে বুধবার বিকেলে আখাউড়া-সিঙ্গারবিল সড়কের পৌর শহরের টানপাড়া এলকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় ওই দুইজন রাস্তার পাশে যাত্রীবেশে পরিবহনের জন্য দাঁড়িয়ে থাকে। তাদের হাতে থাকা ৯টি প্লাস্টিকের মোড়া সুতলি দিয়ে বাঁধা এর ভেতরে বিশেষ কায়দায় স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় দেখেতে পেয়ে পুলিশের সন্দেহ হয়। এক পর্যায় মোড়াগুলোর স্কচপেট খোলে ভেতরে গাঁজা দেখতে পেয়ে তাদেরকে হাতে নাতে গ্রেফতার করে।
আখাউড়া থানার ওসি মো. নূরে আলম বলেন, মাদক বিরোধী অভিযানে ১০ কেজি গাঁজাসহ দুইজনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা যাত্রী বেশে অন্যত্র নিয়ে বিক্রি করতে কৌশলে প্লাস্টিকের মোড়ার ভেতরে বিশেষ কায়দায় স্কচটেপ দিয়ে পেঁচিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। স্কচপেট খোলে ভেতরে গাঁজা দেখতে পেয়ে তাদেরকেগ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে নিয়মিত মাদক মামলা দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
তিনি আরো বলেন, মাদক বিরোধী অভিযান নিয়মিত চলছে। যে কোনো মূল্যে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা হবে।