এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 28 November 2023, 993 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্যাংকারদের মধ্যে অভিজ্ঞতা ও তথ্য বিনিময়, পেশাগত ও সামাজিক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে এসোসিয়েশনভূক্ত ব্যাংকসমূহের সদস্যদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়াস্থ ১০টি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকের ১২৫ শাখায় কর্মরত প্রায় ছয় শতাধিক কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত ‘এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, ব্রাহ্মণবাড়িয়া’ এর প্রথম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বার্ষিক সাধারণ সভা-২০২৩ অনুষ্ঠিত হলো। আজ ২৮ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় আমিন কমপ্লেক্সে (৮ম তলা) কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম মোঃ মোবারক হোসেন।

banner

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন জনতা ব্যাংকের অঞ্চল প্রধান মোঃ আবু হানিফা, কৃষি ব্যাংকের অঞ্চল প্রধান মোহাম্মদ ইউসুফ খান, কর্মসংস্থান ব্যাংকের অঞ্চল প্রধান তালিম হোসেন।

সভায় এসোসিয়েশনভূক্ত ব্যাংকসমূহের নির্বাহী ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় এসোসিয়েশনের প্রথম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশিত স্যুভেনির এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

এ ছাড়াও ২০২২, ২০২৩ সনে ব্যাংকিং প্রফেশনাল পরীক্ষার দ্বিতীয় পর্বে উত্তীর্ণদের এবং ২০২৩ সনে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের সংবর্ধনা দেয়া হয়।

সভায় এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাকালীন উপদেষ্টাদের সংবর্ধনা দেয়া হয়।

সোনালী ব্যাংকের এজিএম মোঃ শরীফুল হকের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অগ্রনী ব্যাংকের এসপিও মোঃ ছাগীউর রহমান।

একে একে সকল ব্যাংকের নির্বাহী ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাগণ বক্তব্য রাখেন।

সভা শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সভা সঞ্চালনা করেন সোনালী ব্যাংকের এসপিও মোঃ শহিবুর রহমান।

Leave a Reply

নবীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে প্রাইভেটকার ও ট্রাক্টরের সঙ্গে Read more

প্রতিপক্ষের হামলায় নারী নিহত, দুইজন আটক

চলারপথে রিপোর্ট : তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় খাইরুন Read more

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ বছর ৬০২টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গাপূজা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 5 October 2023, 1013 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ২০ অক্টোবর শুরু হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ৬০২টি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপুজা। যা গত বছরের চেয়ে ১১টি বেশী।

banner

এবছর জেলায় সবচেয়ে বেশি ১৪৮টি পুজা হবে নাসিরনগরে। এছাড়া নবীনগরে ১৩৩টি, সদর উপজেলায় ৭৯টি, বিজয়নগরে ৫৭টি, কসবায় ৫২টি, সরাইলে ৪৮টি, বাঞ্ছারামপুরে ৪৬টি, আখাউড়ায় ২৩টি ও আশুগঞ্জে ১৬টি মন্ডপে পুজা অনুষ্ঠিত হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৬০২টি পূজা মণ্ডপের মধ্যে ৩৯৪টিকে সাধারণ ও ২০৮টিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছে পুলিশ। এর মধ্যে নাসিরনগরের ১৪৮টি মণ্ডপকেই সাধারনের তালিকায় রাখা হয়। আজ ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সাথে জেলা পুলিশের অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এই তথ্য তুলে ধরা হয়। মূলত ‘ঝুঁকিপূর্ণগুলোকে’ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরে নেয় পুলিশ।

পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ি, নাসিরনগরের পাশাপাশি কসবা উপজেলায় কোনো গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপ নেই। সদর উপজেলার ৫৭টি, আশুগঞ্জের ১৬টি, সরাইলের ৩২, নবীনগরের ৪৬টি, বাঞ্ছারামপুরের ১২টি, আখাউড়ার ২০টি, বিজয়নগরের ২৫টি মণ্ডপকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়।

পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুুষ্ঠিত প্রস্ততি সভায় বক্তব্য রাখেন, সোমেশ রঞ্জন রায়, নির্মল চৌধুরী, সঞ্জীব সাহা বাপ্পী, নিতীশ চন্দ্র রায়, মন্টু রঞ্জন সাহা, সঞ্জয় সাহা, কার্তিক চৌধুরী, সঞ্জয় চৌধুরী প্রমুখ।

সভায় নাসিরনগর পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক নির্মল চৌধুরী বলেন, তাঁর এলাকার পুজা নিয়ে তিনি শঙ্কায় প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেনন, ২০১৬ সালের ৩০ মে নাসিরনগরে যে সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছিল সেসব মামলার আসামীরা এখন জামিন পেয়ে ঘুরাফেরা করছেন। যে কারণে তাদের এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে পুজা করা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারার শঙ্কায় সেখানে তিনি বাড়তি নজরদারির আবেদন জানান।

মত বিনিময় সভায় পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘সার্বিক প্রেক্ষপটে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। তবে গুজবে কান দেওয়া যাবে না। কিছু একটা ঘটলে আমাদেরকে ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।’ যেকোনো প্রয়োজনে পুলিশ জানাতে তিনি আহবান জানান।

এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত দুর্গাপুজার প্রস্তুতি মূলক সভায় বলা হয়, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের কারণে এবারের শারদীয় দুর্গোৎসবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।

জেলা প্রশাসকের সম্মেলনে কক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) হেলেনা পারীভনের সঞ্চানলায় এতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিজিবি-২৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল আরমান আরিফ, ৬০ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর জোবায়ের বিন জাবের, সিভিল সার্জন ডা. মো. একরাম উল্লাহ, সাবেক অধ্যক্ষ বিভ‚তিভূষন দেবনাথ, সাবেক অধ্যক্ষ অমৃত লাল সাহা, সোমেশ রঞ্জন রায়, সঞ্জিব সাহা বাপ্পী, নিতীশ রঞ্জন রায়, বিশ্বজিৎ পাল বাবু, সাধন চন্দ্র চৌধুরী, কার্তিক চৌধুরী প্রমুখ। সভায় বলা হয়, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুন্দরভাবে পুজা উদযাপনে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।

আওয়ামীলীগসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মসূচি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 9 January 2023, 1770 Views,
খবর বিজ্ঞপ্তির:
আজ ঐতিহাসিক ১০ জানুয়ারী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫১তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। দিবসটি উৎযাপন উপলক্ষ্যে আওয়ামীলীগ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভা, জেলাপরিষদ, রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট এবং জেলা ও সদর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থেকে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন সহ মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। তাছাড়া, দিবসটি উৎযাপন উপলক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট থেকে দরিদ্র ও অসহায় শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণের কর্মসূচী নেয়া হয়েছে।

জেলার ৪ উপজেলায় বন্যায় ভেসে গেছে প্রায় ১৯ কোটি টাকার মাছ

আখাউড়া, কসবা, বিজয়নগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 28 August 2024, 1761 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
চলমান বন্যায় ৪ উপজেলার ৮৬০টি পুকুরের অন্তত ৭৫৬ টন মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে সাড়ে ১৮ থেকে ১৯ কোটি টাকার বেশি লোকসান হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আখাউড়া উপজেলার খামারিসহ মাছ ব্যবসায়ীরা। তবে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

banner

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় পুকুর, দিঘি ও খামারের সংখ্যা ২ হাজার ৩৪৮। এগুলোর মোট আয়তন ৬২১ হেক্টর। এসব জলাশয়ে প্রায় ৫০০ ব্যবসায়ী মাছ চাষ করেন। আর চাষির সংখ্যা ২ হাজার ১০৭। বন্যায় ১২১ দশমিক ৮৬ হেক্টর আয়তনের ৪৩০টি দিঘি, খামার ও পুকুরের সব মাছ পানিতে ভেসে গেছে। ৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা মূল্যের মোট ৪৫৬ টন মাছ পানিতে ভেসে গেছে। আর ১ কোটি ১৫ লাখ পোনা পানিতে ভেসে গেছে, যার বাজারমূল্য ৩ কোটি টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যবসায়ীর ১০ লাখ টাকার অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আখাউড়ার মোগড়া ইউনিয়নের নিলাখাদ গ্রামের খামারি বলেন, ‘বন্যায় যে ক্ষতি হয়েছে, তা সামলে ওঠা অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। বন্যার পানিতে পাঁচ কোটি টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এই ক্ষতি কীভাবে পূরণ করব, বুঝতে পারছি না।’

বন্যার পানিতে প্রায় দেড় কোটি টাকার মাছ ভেসে যাওয়ার দাবি করেছেন কর্ণেল বাজারের বাসিন্দা বাছির মিয়া। তিনি বলেন, পুকুরে মাছ মাত্র বড় হয়েছিল। কয়েক দিনের মধ্যেই বাজারে বিক্রি করতেন। কিন্তু বন্যার পানিতে সব মাছ ভেসে দেড় কোটি টাকার লোকসান হয়েছে।

মোগড়া গ্রামের বাসিন্দা দুলাল মিয়া বলেন, ‘পানি কমলেও আমার পুকুরে আর মাছ নেই। যা মাছ ছিল সব পানিতে ভেসে গেছে। প্রায় এক কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে।’

এ বিষয়ে ক্ষয়ক্ষতি-সংক্রান্ত প্রাথমিক একটি তালিকা করেছে আখাউড়া উপজেলার মৎস্য কার্যালয়।

আখাউড়া উপজেলার মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, বড় ব্যবসায়ীরা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ইউনিয়ন পর্যায়ে খামারিদের ক্ষতির তালিকা করা হচ্ছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।

এদিকে কসবা উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় বন্যার পানিতে ২০০ পুকুর, দিঘি ও খামারের মাছ ভেসে গেছে। এগুলোর আয়তন ৩৮ হেক্টর। ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার বড় মাছ ও ১০ লাখ টাকার পোনা পানিতে ভেসে গেছে। বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি অবকাঠামো ভেঙে মোট ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও আখাউড়া উপজেলা মৎস্য কার্যালয় জানিয়েছে, সদর উপজেলায় ৬০ হেক্টর আয়তনের ১৪৫টি পুকুর, দিঘি ও খামারের মাছ ভেসে গেছে। ১৫ লাখ টাকা মূল্যের ১২ লাখ পোনা ও ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকার বড় মাছ পানিতে ভেসে গেছে। অবকাঠামো ভেঙে যাওয়াসহ বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ায় মোট ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

বিজয়নগর উপজেলায় ১১ হেক্টর আয়তনের ৮৫টি পুকুর, দিঘি ও খামারের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। ১৩ লাখ টাকা মূল্যের ১ লাখ পোনা ও ৪০ লাখ টাকার বড় মাছ পানিতে ভেসে গেছে। বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি অবকাঠামো ভেঙে যাওয়ায় মোট ৫৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবির বলেন, বন্যার পানিতে ৮৬০টি পুকুর প্লাবিত হয়ে সাড়ে ১৮ থেকে ১৯ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। খামারি ও ব্যবসায়ী মিলিয়ে ৮৬০ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

২০ আগস্ট রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া ইমিগ্রেশন-সংলগ্ন খাল দিয়ে ভারতে থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি আসতে শুরু করে। এরপর আখাউড়া উপজেলাসহ পর্যায়ক্রমে কসবা উপজেলায় বন্যা দেখা দেয়।

শত বছরের পুরোনো কাঠবাড়িয়ার পুকুর ভরাটের অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 21 January 2024, 926 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
কয়েক মাস ধরে সরকারি জায়গাসহ ফসলি জমি কেটে ট্রাক্টরে করে মাটি নিয়ে কাঠবাড়িয়ার পুকুর ভরাট করেছে প্রভাবশালী এই চক্র।

banner

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবাসন প্রকল্প করে প্লট আকারে জায়গা বিক্রি করতে শত বছরের পুরোনো পুকুর ভরাট করছেন যুবলীগ নেতা। কয়েক মাস ধরে সরকারি জায়গাসহ ফসলি জমি কেটে ট্রাক্টরে করে মাটি নিয়ে সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের গৌতমপাড়ার কাঠবাড়িয়ার পুকুর ভরাট করেছে প্রভাবশালী এই চক্র। পুকুরের প্রায় ৯০ শতাংশ ভরাট করে ফেললেও স্থানীয় প্রশাসন নীরব রয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মাহিন খন্দকার শত বছরের পুরোনো ওই পুকুর ভরাট করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলার সরকারি দলের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা পরোক্ষভাবে যুবলীগ নেতাকে মদদ দিয়ে যাচ্ছেন। সরকারি জায়গা থেকে বালু উত্তোলন এবং সরকারি কর্মকর্তাকে প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় যুবলীগ নেতা মাহিনকে আসামি করে সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন তালশহর পূর্ব ইউনিয়ন (ভূমি) সহকারী কর্মকর্তা পংকজ কুমার বর্ধন।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ অনুযায়ী জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গা ভরাট বা এর শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না।

তবে ইউএনও মোহাম্মদ সেলিম শেখ বলেন, ‘পুকুর ভরাট করার কোনো সুযোগ নেই। বিশেষ কোনো প্রয়োজনে পুকুর ভরাট করতে হলে অনুমতি নিতে হবে। সেখানে আগেও একবার অভিযান চালানো হয়েছিল। নির্বাচন ব্যবস্থার জন্য খোঁজ নেওয়ার সুযোগ হয়নি। আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পুকুর থেকে সম্পূর্ণ মাটি উত্তোলন করে নিলামে বিক্রি করা হবে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার ঘাটুরা গৌতমপাড়ার কাঠবাড়িয়া এলাকায় শত বছরের পুরোনো একটি পুকুর রয়েছে। একসময় পুকুরটির মালিক ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। পরে পুকুরটির মালিক হন শহরের পৈরতলা এলাকার জাহাঙ্গীর কবির। তিনি সম্পর্কে এরশাদ সরকারের সময়ের সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবিরের আপন ভাই। জাহাঙ্গীর কবির থেকে আবাসন প্রকল্প করে প্লট আকারে জায়গা বিক্রি করতে পুকুরটি কেনেন মাহিন খন্দকার ও স্থানীয় কাজী রানু মিয়া। তিন–চার মাস ধরে তাঁরা মাটি দিয়ে পুকুরটির ভরাটকাজ শুরু করেন। প্রথমে তাঁরা খননযন্ত্র দিয়ে পুকুর ভরাট করেন। পরে তাঁরা পুকুর থেকে প্রায় এক থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে গৌতমপাড়ার আশ্রয়ণ প্রকল্পের সামনের পশ্চিম দিকের ফসলি জমি খননযন্ত্র দিয়ে কেটে মাটি উত্তোলন শুরু করেন। সেই মাটি ট্রাক্টরে ভরে ফসলি জমির ওপর দিয়ে নিয়ে পুকুরে ফেলে ভরাট করছেন। পাশাপাশি অষ্টগ্রাম মৌজার ১ নম্বর খতিয়ানের ৩৫ শতক সরকারি নাল জায়গা থেকে অবৈধভাবে খননযন্ত্রের সাহায্যে মাটি কেটে ভরাটের জন্য কাঠবাড়িয়ার পুকুরে ফেলেছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে যুবলীগ নেতা মাহিনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা হয়।

সদর উপজেলার অষ্টগ্রাম মৌজার ১ নম্বর বিএস খতিয়ানের ‘ক’ তফসিলভুক্ত একটি ইজারা মামলার বিএস ৭৩৪৯ দাগে ১১ শতক, ৭৩৫০ দাগে ১২ শতক, ৭৩৫১ দাগে ১২ শতক মোট ৩৫ শতক ভূমি থেকে অবৈধভাবে খননযন্ত্রের মাধ্যমে মাটি কেটে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন মাহিন খন্দকার। তিনি সরকারি সম্পত্তি ব্যাপকভাবে আত্মসাৎ করেছেন। ১৫ জানুয়ারি সকাল ১০টায় বাধা দিলে মাহিন ও তাঁর লোকজন অকথ্য গালিগালাজ করেন। ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেন মাহিন।

প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০ অনুযায়ী, কোনো পুকুর, জলাশয়, নদী, খাল ইত্যাদি ভরাট করা বেআইনি। আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী, প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন বা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার, ভাড়া, ইজারা বা হস্তান্তর বেআইনি। কোনো ব্যক্তি এ বিধান লঙ্ঘন করলে আইনের ৮ ও ১২ ধারা অনুযায়ী, ৫ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বাসিন্দা বলেন, পুকুরটি মাহিন ও রানু মিয়ার কাছে বিক্রি করে দেন জাহাঙ্গীর। আবাসন প্রকল্পের জন্য তাঁরা পুকুরটি মাটি দিয়ে ভরাট করছেন। পরে ভরাটকৃত জায়গা প্লট আকারে বেশি দামে তাঁরা বিক্রি করবেন।

অভিযুক্ত সুহিলপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মাহিন বলেন, ‘আমি এর সঙ্গে জড়িত নই। এটি আমার পুকুর না।’ স্থানীয় বাসিন্দারা সবাই আপনার নাম বলছেন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুকুরটি আমার ছিল। এক বছর আগে বিক্রি করে দিয়েছি।’

গণপূর্ত মন্ত্রী হলেন মোকতাদির চৌধুরী

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 11 January 2024, 899 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের ৪ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। আজ ১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দায়িত্ব বণ্টন করেন।

banner

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের এমপি র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৭২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন তিনি। আসনটি থেকে টানা চারবার নির্বাচিত হয়েছেন যুদ্ধাহত এ বীর মুক্তিযোদ্ধা। আগের মন্ত্রিসভায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে কোনো মন্ত্রী ছিলেন না।

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর জন্ম ১৯৫৫ সালের ১ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চিনাইর গ্রামে। তার বাবা মো. আবদুর রউফ চৌধুরী ও মাতা মোসাম্মৎ হালিমা খাতুন চৌধুরী।

ঢাকা মাদরাসা-ই-আলিয়া থেকে ফাজিল পাস করে ভর্তি হন ঢাকা কলেজে। সেখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি। ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকা অবস্থায় ১৯৬৯ সালে তিনি ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন।

১৯৭০ সালে উবায়দুল মোক্তাদির ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। যুদ্ধের ময়দানে পাকিস্তান বাহিনীর গুলিতে তার একটি পা আঘাতপ্রাপ্ত হয়।

স্বাধীন দেশের রাজনীতিতে ১৯৭৩-৭৪ সালে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠন হলে ২১ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোনীত হন উবায়দুল। ১৯৭৫ সালের কালরাত্রিতে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রতিবাদে ২০ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিলের নেতৃত্বদান ও ৪ নভেম্বর ঢাকার রাজপথে প্রথম প্রতিবাদ মিছিলের অন্যতম সংগঠক হিসেবে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন তিনি।

১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিব ছিলেন। পরবর্তীতে সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে পুরোপুরি রাজনীতিতে মনোনিবেশ করেন।

২০১০ সালের ২২ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের এমপি অ্যাডভোকেট লুৎফুল হাই সাচ্চু মৃত্যুবরণ করলে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বার এবং ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা তৃতীয় বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন। নবম জাতীয় সংসদে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, দশম জাতীয় সংসদে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং একাদশ জাতীয় সংসদে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।