অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের নদী বাঁচাতেই হবে। বাংলাদেশ বাঁচাতে হলে নদী বাঁচাতে হবে।’
আজ ৪ ডিসেম্বর সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণরোধ ও নাব্যতা রক্ষায় প্রণীত মাস্টারপ্ল্যানের আলোকে সম্পাদিত সমীক্ষা প্রতিবেদন অবলোকন এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্প গ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্তবিষয়ক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘নদী আমাদের বাংলাদেশের জন্য তেমন, ঠিক আমাদের দেহে যেমন রক্ত চলাচলের জন্য শিরা-উপশিরা আছে। আমাদের বাংলাদেশের টিকে থাকাটাও নির্ভর করে এ নদীর ওপরে। বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখার জন্য (প্রয়োজন) সেই প্রবহমান নদী। শিরা-উপশিরার মধ্য দিয়ে রক্তধারা আমাদের শরীরকে বাঁচায়, বাংলাদেশকেও কিন্তু বাঁচায় এ পানি ও নদী। কথাটা আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে।’
গত বছরগুলোতে নদীদূষণ-দখল বন্ধ এবং নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সরকারে আসার পর আমাদের সবসময় একটা প্রচেষ্টা ছিল, নদীগুলোকে কীভাবে সুরক্ষিত করা যায়, কীভাবে নাব্যতা ফিরিয়ে আনা যায়। একসময় বাংলাদেশের নৌপথই ছিল পণ্য পরিবহনের একমাত্র বাহন, একমাত্র জায়গা। নৌপথগুলো কমতে কমতে অনেক জায়গায় এখন নদীপথ নেই, এমন একটা জায়গায় চলে এসেছে ‘
নদীর নাব্যতা ঠিক রাখার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হতো না জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নদী শাসনের নামে শুধু বাঁধ নির্মাণে ছিল সবার নজর। আর বাঁধ নির্মাণ করতে গিয়ে ফসলের জমি নষ্ট হয়। নদী রক্ষা করা, নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা বা দূষণ থেকে নদীকে রক্ষা করার দিকে নজর ছিল না। অপরিকল্পিত নিচু ব্রিজ নৌ চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। শুধু এখানে নয়, সারা বাংলাদেশে স্থানীয় সরকারের পক্ষ থেকে কতগুলো ব্রিজ করা হলো, সে সময় ব্রিজগুলো মানুষের খুব উপকারে এলো, কিন্তু ব্রিজগুলো করার সময় এটা মাথায় রাখা হয়নি যে, এগুলোতে নৌ চলাচল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যার জন্য এখন সমস্যা হয়ে গেছে। ব্রিজগুলো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে।’
রাজধানীর বাইরে অন্য শহরগুলো পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকার বাইরে অন্য শহরগুলোর ক্ষেত্রেও এখনই পরিকল্পনা নিতে হবে। আমরা যে পরিকল্পনাই করি না কেন, সেখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পানির প্রবাহ ঠিক থাকে। নদীগুলোর ড্রেজিং করার সঙ্গে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
বগুড়ার শিবগঞ্জে যাত্রীবাহী বাস উল্টে এক কিশোরসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো দুইজন। আজ ২৮ জুন বুধবার সকাল ৬টার দিকে উপজেলার ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের চন্ডিহারাতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, রংপুরের মিঠাপুকুরের বাসিন্দা আল আমিন (১৫) ও অজ্ঞাত এক যুবক (২৫)। আহত দুইজনকে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা শেষে ছুটি দিয়েছেন চিকিৎসক।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম। তিনি জানান, ঢাকা থেকে আসা রংপুরগামী বৈশাখী পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের রোড ডিভাইডারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন মারা যান। নিহত কিশোরের মরদেহ তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছেন। এছাড়াও অজ্ঞাত ওই যুবকের মরদেহ থানা হেফাজতে রাখা আছে। তার পরিচয় শনাক্তে কাজ চলছে।
ওসি আরও জানান, দুর্ঘটনার পর বাসের চালক ও সহকারী পালিয়ে যাওয়ায় আটক করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের নতুন প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ৯৫ (১) ধারা অনুযায়ী মঙ্গলবার এ নিয়োগ দিয়েছেন। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতি শপথ পড়াবেন।
আজ ১২ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার আইন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক বিচারপতি হাসানকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছেন। এই নিয়োগ শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে, বর্তমান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অবসরে যাবেন। ওইদিন তার ৬৭ বছর পূর্ণ হবে। সুপ্রিমকোর্টে অবকাশ চলায় গত ৩১ আগস্ট ছিল তাঁর শেষ বিচারিক কর্মদিবস।
প্রধান বিচারপতি সৌদিতে: এদিকে বর্তমান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্য সোমবার বিকেলে সৌদি আরব গেছেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন বলে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয় থেকে মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, ১১ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর অনুপস্থিতিতে বা তার পুনরায় দায়িত্বভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালনের দায়িত্ব প্রদান করেছেন।
জীবনী: আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস, এমএসএস ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে জেলা বারের সনদ প্রাপ্ত হন। ১৯৮৮ সালে হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে এবং ২০০৫ সালে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। তিনি সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে ৫ বছর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে ২০০৯ সালের ৩০ জুন যোগদান করেন এবং ২০১১ সালের ৬ জুন একই বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত দুই নম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একজন সদস্য হিসেবে ২০১২ সালের ২৫ মার্চ যোগদান করেন এবং একই বছরের ১৩ ডিসেম্বর এই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হয়ে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। ওবায়দুল হাসান ২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ১৯৫৯ সালের ১১ জানুয়ারি নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম ডা. আখলাকুল হোসাইন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন এবং গণপরিষদ সদস্য হিসাবে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের সংবিধান রচনায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন ও সংবিধানে স্বাক্ষর প্রদান করেন।
‘অবর্ণনীয় নির্মমতার চিত্র: একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য’ এবং ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ: একজন যুদ্ধশিশুর গল্প ও অন্যান্য’ নামক দু’টি গ্রন্থ রচনা করেছেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
চলারপথে রিপোর্ট :
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য উৎপাদন ও বিপণন করার অপরাধে চারটি প্রতিষ্ঠানকে ২১ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ ২৫ মে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জয়পুরহাট র্যাব ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার রফিকুল ইসলাম ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারুফ আফজাল রাজনের নেতৃত্বে দুই ঘন্টার এ অভিযান চালানো হয়।
জয়পুরহাট র্যাব ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার রফিকুল ইসলাম জানান, পাঁচবিবি বিভিন্ন এলাকায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি,পাউরুটি ও বিস্কুট উৎপাদন এবং বিপনন হচ্ছে এমন খবর আসে র্যাবের কাছে। এমন খবরে র্যাব সদস্যরা অভিযান চালায়। এসময়
জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে স্মৃতি বেকারীর মালিক মোজাফরকে ৫ হাজার টাকা, আনছারী বেকারীর মালিক খলিল আনছারীকে ৮ হাজার টাকা,রাখি বেকারীর মালিক জীবন কৃঞ্চ সরকারকে ৫ হাজার, হিমালয় আইসক্রিমের মালিক মনিরুজ্জামান শান্তকে ৩ হাজার টাকা করে সর্বমোট ২১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় ভেজাল মিষ্টি,পাউরুটি ও বিস্কুট তৈরীর উপাদান ধ্বংস করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে কোনো ভুল করে থাকলে, তার জন্য করজোড়ে তরুণ প্রজন্মের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন ডাক, টেলিযোগযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। আজ ২ আগস্ট শুক্রবার বিকেলে নাটোরে নিজ বাসভবনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের কাছে যদি আমার কোনো ভুল হয়ে থাকে, আমি প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। ইন্টারনেট ব্যাহত হওয়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়ার দায় আমি নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছি। যেকোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার জন্য প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’
একই সঙ্গে জুনাইদ আহমেদ বলেছেন, তাঁদের কারও দায়িত্বকর্তব্যে অবহেলার কারণে তরুণ প্রজন্ম যদি তাঁদের ভুল বোঝে, ক্ষুব্ধ হয়, তাহলে সে দোষে যেন তাঁরা শাস্তি পান। যেকোনো সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নিতে রাজি আছেন। কিন্তু তাঁদের ব্যর্থতার কারণে প্রধানমন্ত্রীকে দোষারোপ করা হলে তাঁরা কষ্ট পান। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ভুল না বুঝতে আহ্বান জানান।
সরকারের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, যে দূরত্ব হয়েছে, তাতে ছাত্রছাত্রীদের দোষ নেই। এটি আমাদের দোষ। এই দায় আমাদের, যারা আমরা দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছি। এই ব্যর্থতা আমাদের এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই ব্যর্থতা আমারও।’
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে, এটা কখনোই তাদের প্রতি কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে সমাধান সম্ভব নয়। সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে সমাধান করতে হবে। কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে শাসনের পথ বেছে না নিয়ে আমরা যদি তাঁদের প্রতি সংবেদনশীল হই, স্নেহ–মমতা নিয়ে তাঁদের কাছে বসি, তাঁদের কথা শুনি, তাহলে আমাদের বিশ্বাস, অবশ্যই এই ভুল–বোঝাবুঝির দূরত্ব দূর হবে এবং ষড়যন্ত্রকারীরা সরকারের সঙ্গে যে চেষ্টা করছে, তা সফল হবে না।’
শোকসভায় বক্তব্যের শুরুতে জুনাইদ আহমেদ বলেন, ‘আমরা এমন একটি সময়ে আমাদের এই শোকসভা, আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করছি, উপস্থিত হয়েছি, যখন আমাদের এই বাংলাদেশ, শিশু, কিশোর, কিশোরী, আমাদের সন্তানেরা একটি আন্দোলনে আছে। যখন আমাদের সরকারের সঙ্গে এই ছাত্রছাত্রী ভাইবোনেদের একটি ভুল–বোঝাবুঝির কারণে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। সেই সময়ে দেশে–বিদেশে স্বাধীনতাবিরোধী, দেশবিরোধী, ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে বাংলাদেশকে অশান্ত করা ও দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অপপ্রচার বন্ধে ব্যর্থতা এবং ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হওয়ার সব দায়ভার আমার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়ার দায় আমি নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যেকোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা তাঁদের যৌক্তিক কোটাবিরোধী আন্দোলন রাজপথে শান্তিপূর্ণভাবে করেছেন। তাঁদের এক মাস আন্দোলনে কোথাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, আওয়ামী লীগের বা ছাত্রলীগের কেউ তাঁদের কোনো জায়গায় কোনো আঘাত করেনি। তারাও কোনো বিশৃঙ্খলা করেনি। পুলিশ কোথাও শক্তি প্রয়োগ করেনি। কিন্তু মিথ্যা অপপ্রচার ছড়িয়ে ছাত্র মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে অশান্তির চেষ্টা করে বিএনপি–জামায়াত, ছাত্রদল–শিবির, জঙ্গি সন্ত্রাসীরা।
তবে সরকারের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, সেটা উল্লেখ করে জুনাইদ আহমেদ বলেন, ‘যে দূরত্ব ও ভুল–বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে, সেটা আমাদের দূর করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের ঘর, প্রতিবেশী ও প্রতিষ্ঠান থেকে করতে হবে। ছাত্রছাত্রী ভাইবোনদের চোখের ভাষা আমাদের বুঝতে হবে। তাঁদের মনের কথা বুঝতে হবে।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে ব্যাপক প্রাণহানি এবং দেশ টানা ৫ দিন ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন থাকায় সরকারের পাশাপাশি প্রতিমন্ত্রীও সমালোচনার মুখে রয়েছেন। সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করলেও তিনি বলেছেন, মহাখালীতে ডেটা সেন্টার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ও ফাইবার কেবল কাটা পড়ায় ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়।
প্রতিমন্ত্রী ইন্টারনেট বন্ধ থাকা প্রসঙ্গে বলেন, ‘দেশব্যাপী ইন্টারনেটের সেবা ব্যাহত হওয়ার জন্য যদি কেউ দায়ী হয়, তাহলে সে আমি। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দেশব্যাপী ইন্টারনেট ব্যাহত হওয়ার দায় আমার। দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে ব্যর্থ হওয়ার জন্য যদি কারও শাস্তি হয়, তাহলে আমার হওয়া উচিত। কিন্তু কেন প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করা হচ্ছে, তাঁর বিরুদ্ধে সমালোচনা করা হচ্ছে?’
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশে হামিদ কারজাই মার্কা সরকার বসানোর জন্য কিছু মুখোশধারী, চক্রান্তকারী টিভিতে ভালো মিষ্টি কথা বলছেন। এ ষড়যন্ত্র উদ্ঘাটন করতে সময় লাগবে।
গুজব প্রতিরোধ করতে ও সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যদি তিনি ব্যর্থ হন, সে জন্য আওয়ামী লীগ ও সংযোগী সংগঠনের সদস্যরা প্রতিমন্ত্রীকে দোষারোপ করতে পারেন বলেও উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের সামনে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব। সেখানে বেশির ভাগ দক্ষ জনগোষ্ঠী প্রয়োজন পড়বে। দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার জন্য ইতিমধ্যে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
আজ ১৫ জুলাই শনিবার রাতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে `স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ব্যবসায়ী সম্মেলনে’ প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইনকিউবেটর সেন্টার তৈরি করে কম্পিউটার ট্রেনিং দেওয়া শুরু করেছি। তাছাড়া স্কুল লেভেল থেকে কম্পিউটার ল্যাব করে দিচ্ছি, সেখানে ট্রেনিং দিচ্ছি। পাশাপাশি ন্যানো টেকনোলজির জন্য একটি আইনও করে দিয়েছি। ন্যানো টেকনোলজির ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছি। আইন ইতিমধ্যে কেবিনেট অনুমোদন দিয়েছি। দ্রুতই আইন পার্লামেন্টে পাস করে দেব। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযুক্ত স্মার্ট জনগোষ্ঠী গড়ে ওঠে সে জন্য এসব পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি।
সরকার বেসরকারি খাতকে গুরুত্ব দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় পরিকল্পনা নিয়েছিলাম সরকারে গেলে কী করব। আমাদের অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন করেছি। ব্যবসা-বাণিজ্যে বেসরকারি খাতকে আমরা উন্মুক্ত করে দিয়েছি। ব্যাংক, বিমা, হেলিকপ্টার সার্ভিস, বিমান থেকে শুরু করে বেসরকারি টেলিভিশন, শিল্প, কলকারখানা, হাসপাতাল, যা কিছু যেখানে দরকার সবকিছু তৈরি করার জন্য বেসরকারি খাতকে সব থেকে গুরুত্ব দিয়েছি। শিল্প, কলকারখানা বা বিনিয়োগ যদি না হয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে না। অনেক বাধা অতিক্রম করে আমাদের এসব করতে হয়েছে। অনেক পরামর্শদাতা বিদেশ থেকে এসে পরামর্শ দিত, এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবে না। সরকার গঠনের আগেই এই পরামর্শ শুনতে হয়েছে। আমার একটাই কথা ছিল, দেশটা আমাদের, মাটি ও মানুষও আমাদের। তাদের ভালো মন্দ কী হবে সেটা আমরা বুঝি, জানি। আমরা আমাদের মতো করেই করব।
সরকার প্রধান বলেন, আমাদের দেশের জনগণ হবে স্মার্ট সিটিজেন, আমাদের ইকোনোমি হবে স্মার্ট ইকোনমি, আমাদের সমস্ত গভর্নমেন্টকে আমরা স্মার্ট গভর্নমেন্ট করতে চাই, পাশাপাশি আমাদের সমাজ হবে স্মার্ট সোসাইটি। এভাবে বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। ২০০৮ সালে ঘোষণা দিয়েছিলাম, দিন বদলের সনদ, রূপকল্প ২০২১। আমরা তা বাস্তবায়ন করেছি। ফলে আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। এখন আমরা শিল্প কলকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষিসহ সকল ক্ষেত্রে স্মার্ট ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করতে চাই। সে ক্ষেত্রে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি, রোবোটিক, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ন্যানো টেকনোলজি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিজিটাল ডিভাইসে।
তিনি বলেন, শুধু স্বপ্ন দেখলে হবে না স্বপ্ন বাস্তবায়নেরও চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। সে জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এখানে যেমন বয়স্ক অভিজ্ঞ ব্যবসায়ীরা আছেন, আবার নতুন প্রজন্মের ব্যবসায়ীরাও আছেন। আমাদের যুব সমাজকে আমরা সেভাবে উৎসাহিত করতে চাই, তারা নিজেরাই মাস্টার হবে, নিজেরাই উদ্যোক্তা হবে, নিজেরাই চাকরি দেবে, সে যোগ্যতা তারা অর্জন করবে। সেজন্য ইতিমধ্যে স্ট্যাটাস প্রোগ্রাম আমরা কার্যকর করেছি। স্ট্যাটাস প্রোগ্রামের পাশাপাশি তাদের জন্য স্পেশাল ফান্ডও রেখেছি আমি বাজেটে। কোম্পানি আইন পরিবর্তন করে এক ব্যক্তি যাতে একাধিক কোম্পানি খুলতে পারে সেই ব্যবস্থাও নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ব্যবসা করি না। কিন্তু আমরা ব্যবসায়ীকে উৎসাহিত করা, সুযোগ সৃষ্টি করা, সুবিধার তৈরি করে দেওয়া, পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া এবং সেই সুযোগ নিশ্চিত করে ব্যবসাবান্ধব সরকার আমরা নিশ্চিত করেছি। সেটা আপনার উপলব্ধি করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দল-মত নির্বিশেষে কে কোন দলের আমরা কিন্তু সেটা দেখিনি। কে কোন ব্যবসা করে, কার কারণে দেশের মানুষ লাভবান হচ্ছে সেটাই আমার কাছে বিবেচ্য। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য যার যতটুকু প্রয়োজন সুযোগ সুবিধা আমরা কিন্তু সেটা দিই। এটা বলতে পারি আমরা কিন্তু হাওয়া ভবন খুলিনি, স্বাধীন মতো ব্যবসা করতে পারেন সেই ব্যবস্থাটাই করে দিয়েছি। অর্থাৎ সরকার সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করে দেবে, অবকাঠামো উন্নয়ন করে দেবে। সেভাবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে ব্যবসায়ী-বান্ধব সরকার। সেটা নিশ্চয়ই আপনারা টের পেয়েছেন। আমি চাই, ব্যবসা-বাণিজ্যের দিক থেকে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাক।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আর এক একটা কাজ করতে গিয়ে অনেক সমালোচনা শুনতে হয়। মেট্রোরেল করার সময় শুনতে হলো, ‘৩৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে মেট্রোরেল করার কী দরকার। ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করলেই তো নাকি সব সমাধান হয়ে যায়।’ অবশ্য ভালোই একদিকে। আমি বেসরকারি খাতে অনেক টেলিভিশন দিয়েছি, সেখানে সবাই টকশো করে আর টক টক কথা বলে। সেই টক টক কথা শুনতে হয়। মাঝে মাঝে আমি বলি, আপনারা শুধু টক টক বলেন কেন? কথা যদি টক-ঝাল-মিষ্টি হয় তখন না সুস্বাদু হবে।
তিনি বলেন, একজন বলে দিলেন, ‘এতো টাকা খরচ করে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল করার কী দরকার ছিল।’ মানে আপনি যাই করতে যান, কিছু লোকের মানসিকতাই হচ্ছে কিছুই ভালো লাগে না। তাই কিছুই ভালো লাগে না লোকের কথা ভুলে গিয়ে দেশের উন্নয়নের জন্য যা করা দরকার সেটাই করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকের বাংলাদেশের সঙ্গে সেই ৮১ সালের বাংলাদেশের অনেক তফাৎ। অনেকেই বলেছিলেন যে, ‘এতো ব্যাংক দিয়ে কী হবে? বাংলাদেশের অর্থনীতি তো এত বড় না।’ আমার কথা ছিল, অর্থনীতি তো এতো ছোটো থাকবে না। অর্থনীতি বড় করার জন্যই তো আমাকে ব্যাংক দিতে হবে। কাজেই সেভাবেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এ সময় নতুন বাজার খুঁজতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সরকার বলেন, ইউরোপ-আমেরিকায় মন্দা চলছে। সেখানে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। তাছাড়া সেখানে রপ্তানি খরচও বেড়ে গেছে। এজন্য বিকল্প বাজার খোঁজতে হবে।