চলারপথে রিপোর্ট :
সমাজকল্যাণের ব্রত নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের বাঘাউড়া গ্রামে যাত্রা শুরু করেছে বাঘাউড়া প্রবাসী সমাজকল্যাণ সংগঠন। গ্রামটির সব প্রবাসীদের উদ্যোগে ও নিরলস পরিশ্রমের পর আত্মপ্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
আজ ২৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সংগঠনটি ও একটি পাঠাগার উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পাঠাগারটি উদ্বোধন করেন গ্রামটির কৃতি সন্তান, শিবপুর ইউনিয়নের সাবেক সফল চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শাহীন সরকার।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের সেবার পাশাপাশি সংগঠনটি গ্রামের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়নেও ভূমিকা রাখবে। গ্রামের জ্ঞানপিপাসু শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের জ্ঞানের পরিধি বাড়ানোর লক্ষ্য পাঠাগারটি স্থাপন করা হয়েছে। সংগঠনের সদস্যদের আশা, এই পাঠাগারটি শিক্ষার্থীসহ সব বয়সের মানুষের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ গড়ে তুলবে।
ইতোমধ্যে এই সংগঠনের উদ্যোগে গ্রামের কবরস্থানের দেয়ালে টাইলসকরণ করা হয়েছে। এছাড়া, দুঃস্থ মানুষের সহায়তায় তাদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। একটি গৃহহীন পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মো. শাহীন সরকার তার বক্তব্যে বলেন, শুরু থেকেই গ্রামের মাদরাসা ও কবরস্থানের বিভিন্ন কাজে তাদের অনেক ভূমিকা আছে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা আগামীতে আরও ভালো ভালো কাজ করবে বলে বিশ্বাস করি। যারা প্রবাসে থেকে গ্রামের উন্নয়নের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়েছে তাদের জন্য আমরা দোয়া করব ও যেকোনো সময়ে যেকোনো সহযোগিতায় আমরা তাদের পাশে থাকব।
তিনি আরও বলেন, এখন আমরা গ্রামবাসী গ্রামের উন্নয়নে কাজ করছি, পাশাপাশি তারা প্রায় দুই শতাধিক যুবক মিলে গ্রামের উন্নয়নে অবদান রাখছে। আমরা সব গ্রামবাসী তাদের এই মহৎ উদ্যোগের জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।
সংগঠনের কর্মপরিকল্পনা ও পাঠাগার স্থাপনের বিষয়ে সংগঠনটির কুয়েত প্রবাসী সদস্য মো. নাহিদ মিয়া মোবাইলফোনে বলেন, শিক্ষা থেকে শুরু করে সমাজের সব উন্নয়নমূলক কাজ করার লক্ষ্য নিয়ে এই সংগঠনের যাত্রা শুরু করা। এখানে গরিব মানুষকে সহায়তার পাশাপাশি গরিব শিক্ষার্থীদেরও শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার জন্য সব ধরনের সহায়তা করা হবে। সবাইকে বইমুখি করতে আমাদের পাঠাগারে বিভিন্ন ধরনের বইয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে করে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ সবাই উপকৃত হবে বলে আশা করি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সংগঠনের আরও একটি উদ্দেশ্য আছে, সেটি হলো একতা। গ্রামের সবাই বিশেষ করে সব প্রবাসীদের ঐক্যবদ্ধ করতে আমাদের এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করা। এখানে সবাই ব্যক্তিগত স্বার্থ বাদ দিয়ে সবার জন্য কাজ করবে। তাই সংগঠনে আমরা কাউকে কোনো পদ-পদবি দিচ্ছি না। এখানে সবাই সমান।
অনুষ্ঠানে সুহেল মেম্বারের সভাপতিত্বে ও হাফেজ মাওলানা সাইফুল ইসলাম মোল্লার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণকান্ত দেবনাথ, শিবপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. জাকির হোসেন, মো. আব্দুল হক সাহেব, মো. বাছির মিয়া, শহীদ মিয়া, কালন সর্দার, ডা. রুকুনুজ্জামানসহ আরও অনেকে। মিলাদ ও দোয়া পরিচালনা করেন মুফতি আবুল হাসেম কাসেমী সাহেব।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে এক আওয়ামী লীগের নেতাকে গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে গ্রামবাসী।
আজ ১১ সেপ্টেম্বর বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার উত্তর কাইতলা ইউনিয়নের ব্রাহ্মণহাতা গ্রামের হাজারো মানুষ ১নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি অলি মুন্সির বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তারা।
এ সময় ব্রাহ্মণহাতা গ্রামের সজিব নামের এক যুবক অভিযোগ করে বলেন, আমাদের এলাকার খুনী, হত্যাকারী, দাঙ্গা-ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারী, উচ্ছৃঙ্খল ও চিহ্নিত মাদক কারবারি অলি মুন্সি। আওয়ামী লীগের সভাপতি অলি মুন্সির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি হত্যা মামলা রয়েছে। অথচ তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। তাকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাই।
আবু হানিফ নামের একজন বলেন, সে আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার সুবাদে তার সহযোগীদের নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অন্যায়-অপকর্মসহ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তার বিরুদ্ধে কেউ কোনো কিছু বললে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে নাজেহাল করা হতো। এখন সময় এসেছে তার বিচারের।
তাজুল ইসলাম নামে আরেকজন অভিযোগ করে বলেন, অলি মুন্সি আশপাশের গ্রামে মাদকের স্বর্গরাজ্য কায়েম করেছে। এলাকায় প্রতিদিন নেশা জাতীয় দ্রব্যাদি বিক্রি করার কারণে যুব সমাজ দিন দিন ধ্বংসের পথে রয়েছে। এছাড়াও অলি মুন্সি ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কাইতলা উত্তর ইউনিয়নের বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও সামাজিক অশান্তি সৃষ্টি করার মূল হোতা। তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে হাজেরা নামের চার মাসের এক শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। আজ ২১ অক্টোবর শনিবার বেলা ১২টায় উপজেলার বিদ্যাকুট গ্রামের বাড়ির পাশের পুকুর থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত হাজেরা বিদ্যাকুট গ্রামের প্রবাসী অলিউল্লার মেয়ে।
শিশুর মা রোমা বেগম জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শিশুসন্তান হাজেরাকে নিয়ে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। পরে রাত আনুমানিক ২টায় ঘুম থেকে উঠে তিনি টয়লেটে যান। টয়লেট থেকে ফিরে আবারও ঘুমিয়ে পড়েন। তখনো হাজেরা বিছানায় ছিল। শুক্রবার ভোর ৫টায় ঘুম থেকে উঠে দেখেন ঘরের দরজা খোলা এবং পাশে তার সন্তান নেই। পরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর বেলা ১২টায় বাড়ির পাশের পুকুরে হাজেরার মরদেহ ভাসতে দেখেন।
নবীনগর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আক্কাস আলী বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তাছাড়া ময়নাতদন্তের জন্য শিশুর মরদেহ জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়েছে।
নবীনগর প্রতিনিধি :
জনপ্রতি ২ শতাংশ জমি ও প্রতিটি ঘর নির্মাণে সরকার বরাদ্দ দিয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। তবে সুবিধাভোগীরা সে ঘর বিক্রি করে দিচ্ছেন মাত্র ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায়। নবীনগরে ভূমিহীনদের জন্য দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর এভাবে বেচাকেনা চলছে। বরাদ্দের তালিকা প্রণয়নে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী। তবে প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের নূরজাহানপুর গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৯৫টি ঘরের মধ্যে ছয়টি বিক্রি হয়ে গেছে। অন্তত ৩০টিতে ঝুঁলছে তালা। কিনে নেওয়া ব্যক্তিরা ঘরে বসবাস করছেন। গত রোববার সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, প্রকল্পের ২ নম্বর গলির ৩ নম্বর ঘর বরাদ্দ পান মৃত আফছার উদ্দিনের স্ত্রী সাধনের নেছা। তাঁর ছেলে রুবেল মিয়া স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকায় শাহনাজ বেগমের কাছে বিক্রি করে দেন। রুবেল মিয়া বলেন, টাকার প্রয়োজনে ঘরটি বিক্রি করেছেন তাঁরা।
গলির ২ নম্বর ঘর বরাদ্দ পান গাজী মদনের স্ত্রী জুলেখা বেগম। ৩৫ হাজার টাকায় ইমন মিয়ার স্ত্রী রহিমা বেগম ঘরটি কিনেছেন। ৯ নম্বর ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন মৃত ফজলুল মিয়ার স্ত্রী হেনা বেগম। তাঁর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকায় কিনে ঘরে বসবাস করছেন মৃত হামিদ মিয়ার স্ত্রী নাজমা বেগম। ১৭ নম্বর ঘর বরাদ্দ পাওয়া ধরাভাঙা গ্রামের হাবিব মিয়া ২২ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন থোল্লাকান্দি গ্রামের নার্গিস বেগমের কাছে। বড়িকান্দি গ্রামের ইকবাল হোসেন ১ নম্বর গলির ৯ নম্বর ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন। তিনি ৩৫ হাজার টাকায় একই গ্রামের কালন মিয়ার ছেলে মো. মোক্তার হোসেনের কাছে বিক্রি করেছেন।
২ নম্বর গলির বাম পাশের ৯ নম্বর ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন জমেলা বেগম। এ ঘর ৩০ হাজার টাকায় কিনে বসবাস করছেন হক মিয়া ও তাঁর পরিবার। এদিন প্রকল্পের প্রায় ৩০টি ঘর তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। অন্য বাসিন্দারা জানান, বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিরা ঘরে থাকেন না, আসেনও না। আর বসবাসকারী ব্যক্তিরা টাকা দিয়ে ঘর কেনার কথা স্বীকার করে জানান, তাঁদের কোনো বাড়িঘর নেই। আবেদন করেও ঘর বরাদ্দ পাননি। এ জন্য স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ঘর কিনে বসবাস করছেন।
২ নম্বর গলির ১৭ নম্বর ঘর কিনে মালিক হওয়া অসহায় নারগিস বেগম বলেন, তাঁর ঘরবাড়ি নেই। কষ্ট করে ২২ হাজার টাকা জোগাড় করে তিনি হাবিব মিয়ার কাছ থেকে ঘর কেনেন। তাঁর নামে দলিল করে দেবে বলে জানিয়েছে। ২ নম্বর গলির ২ নম্বর ঘর কেনা মালিক রহিমা বেগম বলেন, বরাদ্দের জন্য আবেদন করেও ঘর না পেয়ে কিনেছেন।
এ ছাড়া মোক্তার হোসেন, নাজমা বেগম, হক মিয়া ও শাহনাজ বেগমও ঘর কেনার কথা স্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে ঘর বিক্রি করা সুবিধাভোগী কাউকে না পাওয়ায় তাঁদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। বড়িকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. লাল মিয়ার মোবাইল ফোন নম্বরে কল দিলেও তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। খুদেবার্তা পাঠালেও কোনো জবাব দেননি তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত নন। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে সুপারিশ করা হবে।
স্থানীয় সংবাদকর্মী আক্তার হোসেন বলেন, ঘরগুলো বিক্রি হয়েছে। অনেকে আবার থাকেন না। অনেকের বাড়িঘর আছে। অথচ ভূমি ও ঘরহীন অনেকে বরাদ্দ পাননি। ঘর বরাদ্দের ব্যাপারে অনিয়ম হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানালেও আমলে নেননি।
এ বিষয়ে বড়িকান্দি ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা রোকসানা বেগম পরে কথা বলবেন বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, এটি ইউএনও ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাজ। এ বিষয়ে তাঁরাই ভালো জানেন। তিনি তালিকা অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা জাহান বলেন, তদন্তে এর সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একরামুল ছিদ্দিক বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি বিষয়টি অবগত হয়েছেন। বড়িকান্দি ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে সত্যতা যাচাই করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে বাকবিতণ্ডার জেরে সুহিনূর ওরফে সফিক (৩০) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে। ১৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের বাঘাউড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত সফিক ওই গ্রামের হাফেজ মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই ভাই আব্দুর রহমান ও ফয়জুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ। তারা একই গ্রামের আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, সম্প্রতি স্থানীয় অলেক শাহ মাজারে ওরশ অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে একই গ্রামের রুবেল নামক এক যুবকের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন আব্দুর রহমান। এর জেরে মঙ্গলবার রাতে আব্দুর রহমানের বাড়িতে লোকজন নিয়ে যান রুবেলের ভাই সফিক।
একপর্যায়ে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় সফিককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করেন আব্দুর রহমান ও তার ভাই ফয়জুর রহমান। পাশাপাশি তারাও আহত হন। পরে আহত সবাইকে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা সফিককে মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিরাজুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত দুই ভাইকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকলে, তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৮ অক্টোবর ভারত উপমহাদেশের রাগ সঙ্গীতের কিংবদন্তি সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ১৬১তম জন্মদিন।
১৮৬২ সালের আজকের এই দিনেই তিনি তৎকালীন ত্রিপুরা প্রদেশের শিবপুর গ্রামে, যা বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন।
তার বাবা সবদর হোসেন খাঁ এবং মা সুন্দরী বেগম। শিশুকাল থেকেই সুরের প্রতি তার এক অন্যরকম আকর্ষণ ছিল। বাল্যকালে বড় ভাই ফকির আফতাব উদ্দিন খাঁর নিকট সঙ্গীতে তার হাতেখড়ি হয়। সুরের প্রতি তার এতটাই মোহ ছিল এই সুরের জ্ঞান অর্জনে তিনি মাত্র ১০ বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলেন।
কিশোর বয়সে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ কলকাতার প্রখ্যাত সংগীত সাধক গোপালকৃষ্ণ ভট্টাচার্যের শিষ্যত্বে সাত বছর সরগম সাধন করে যন্ত্রসংগীত সাধনায় নিযুক্ত হন। এরপর থেকেই তিনি ভারতে বসবাস শুরু করে বাদ্যযন্ত্রের তালিম নিতে থাকেন। তিনি তার সুরের মূর্ছনায় তৎকালীন ব্রিটিশ রানী থেকে সুর সম্রাট উপাধিসহ ভারত উপমহাদেশে দুর্লভ উপাধি ও সম্মানে ভূষিত হন।
এদিকে, সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ স্মৃতি সংসদের দিনটি পালনে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর নিজ জন্মভূমি শিবপুর গ্রামে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাগসঙ্গীতকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া এই সঙ্গীতজ্ঞ ১৯৭২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের মাইহারে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর সেখানেই তাকে সমাহিত করা হয়।