আখাউড়ায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ

আখাউড়া, 16 January 2024, 428 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
মধ্যরাতে ঘন কুয়াশা, কনকনে ঠান্ডা। আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশনে শীতে কাঁপছে অসহায় দুস্থ মানুষ। নিজ হাতে এসব শীতার্ত মানুষের গায়ে কম্বর জড়িয়ে দিলেন আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাবেয়া আক্তার। হঠাৎ কম্বল পেয়ে হতবাক হয়ে এসব অসহায় মানুষ। তাদের চোখে মুখে দেখা আনন্দ অশ্রু। সোমবার রাতে ইউএনও রাবেয়া আক্তার প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে কম্বল হাতে ছুটে যান আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশন, খড়মপুর মাজার এলাকা, আজমপুর রেলওয়ে ষ্টেশনে। এসব স্থানে ভাসমান অসহায় নারী-পুরুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন তিনি। শীতার্ত মানুষের গায়ে নিজ হাতে কম্বল জড়িয়ে দেন তিনি।

এছাড়াও রাস্তা-ঘাটে ভাসমান মানুষের হাতে কম্বল দেওয়া হয়। কম্বল পেয়ে একটু উষ্ণতার ছোঁয়া পায় শীতে কষ্ট করা অসহায় ছিন্নমূল মানুষ।

জানা যায়, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দুই শতাধিক দরিদ্র ছিন্নমূল মানুষের মাঝে কম্বল বিতরন করা হয়েছে। যারা শীতে কষ্ট পাচ্ছেন তাদেরকে একটু উষ্ণতা দেওয়ার জন্য সরকারি এসব কম্বল দেওয়া হয়।

কম্বল বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত চক্রবর্তী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার তাপস চক্রবর্তী প্রমুখ। আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাবেয়া আক্তার বলেন, যাদের একেবারে কিছু নেই শীতে কষ্ট পাচ্ছেন তাদেরকে আমরা কম্বল দিয়েছি।

Leave a Reply

সকল ধর্মের মূল বাণী হচ্ছে মানবকল্যাণ…

অনলাইন ডেস্ক : রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দেশকে এগিয়ে নিতে ধর্ম-বর্ণ Read more
ফাইল ছবি

২৩ অক্টোবরের মধ্যেই হজযাত্রীদের প্রাথমিক নিবন্ধন…

অনলাইন ডেস্ক : হজযাত্রীদের প্রাথমিক নিবন্ধন আগামী ২৩ অক্টোবরের মধ্যেই Read more

নবীনগর প্রেসক্লাবের সম্প্রসারিত কার্যালয়ের উদ্বোধন

চলারপথে রিপোর্ট : নবীনগর প্রেসক্লাবের সম্প্রসারিত কার্যালয়ের উদ্বোধন করা হয়েছে। Read more

আখাউড়ায় বিস্ফোরক মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা…

চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়ায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে মো. লুৎফুর রহমান Read more

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো…

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় Read more

সরাইলে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসে র‌্যালি

চলারপথে রিপোর্ট : আগামী প্রজন্মকে সক্ষম করি, দুর্যোগ সহনশীল ভবিষ্যৎ Read more

কসবা দিয়ে ভারতে পালাতে গিয়ে গ্রেফতার…

চলারপথে রিপোর্ট : কসবা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় Read more
ফাইল ছবি

শাহবাজপুরে পানিতে ডুবে দুই ভাইয়ের মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলার শাহবাজপুরে পানিতে ডুবে দুই ভাইয়ের Read more

বিজয়নগরে ৭৮টি ভুয়া এনআইডি কার্ড ও…

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগর উপজেলায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে মাদক ও Read more

আখাউড়ায় এক হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ…

চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়ায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে এক হাজার পিস Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শ্রমিক শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শ্রমিক দলের আয়োজনে শ্রমিক সমাবেশ Read more

ভারতে পালাতে গিয়ে সাবেক যুগ্মসচিব কিবরিয়া…

চলারপথে রিপোর্ট : অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালানোর সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া Read more

দেশে ষড়যন্ত্র এখনো বন্ধ হয়নি : আইনমন্ত্রী

আখাউড়া, জাতীয়, রাজনীতি, 27 January 2024, 908 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ষড়যন্ত্র এখনো বন্ধ হয়নি মন্তব্য করে জনগণকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, যে কোন ছোটখাটো ব্যাপার নিয়ে বিএনপি-জামায়াত সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে দেশে এক অসন্তোষ সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। আপনারা এ ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন এবং এই চেষ্টা যদি কেউ করে সেই চেষ্টাকে আপনারা জানতে পারলে আইনের আওতায় আনার জন্য পদক্ষেপ নিবেন। আশা করি, আমরা যদি সজাগ থাকি, সচেতন থাকি বাংলাদেশ কাংক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে।

আজ ২৭ জানুয়ারি শনিবার বিকেলে আখাউড়া উপজেলা পরিষদ মাঠে উপজেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে প্রদত্ত গণসংবর্ধনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। টানা তিন বার কসবা-আখাউড়া আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হওয়ায় এবং তৃতীয় মেয়াদে আইনমন্ত্রীর দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ায় তাকে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

বিএনপি-জামাতের সমালোচনা করে আইনমন্ত্রী আরও বলেন, প্রত্যেকবার যখন আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচন দেই তখন বিএনপি-জামাত ষড়যন্ত্র শুরু করে। যাতে তারা পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে পারে। নির্বাচন যাতে বাংলাদেশে না হয়। গণতন্ত্র যেন বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা না পায়। জনগণের সমর্থনে প্রত্যেকবার শেখ হাসিনা তাদের ষড়যন্ত্র ধ্বংস করেছেন।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের জনগণ প্রমান করেছে তারা শেখ হাসিনার সরকার চায়। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশ হয়েছি। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটা উন্নত দেশ হিসেবে সারা বিশ্বে মর্যাদার আসনে বসবে। আপনারা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্ত করে রাখলেই আমরা কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে যাবো।

বিপুল ভোটে নির্বাচিত করায় আনিসুল হক কসবা-আখাউড়াবাসীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আপনার আমার জন্য দোয়া করবেন জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা যেন সঠিকভাবে পালন করতে পারি।

মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত তিনি জনগণের পাশে থাকবেন বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন আনিসুল হক।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন আশুগঞ্জ-সরাইল আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ড. অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু। এসময় আওয়ামলীগের পক্ষে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল।

এর আগে বিকালে সংবর্ধনাস্থলে এসে পৌঁছলে মন্ত্রীকে ফুল বরণ নেয় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

আখাউড়া ইমিগ্রেশনের কাজ চলে ছোট্ট কক্ষে, নেই বসার সুব্যবস্থা

আখাউড়া, 16 May 2023, 1104 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
লক্ষ্মী রানী দাস। তিনি ভারত থেকে স্বামী ও সন্তান নিয়ে আগরতলা স্থলবন্দর দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে আসেন।

যাত্রাকালে আগরতলা ইমিগ্রেশনে সুষ্ঠু ও স্বাচ্ছন্দ্যে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে এলেও আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশনে এসে রীতিমত অবাক হক তিনি। বসারও সুব্যবস্থা নেই এখানে।

ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করতে গাদাগাদি করে লাইনে দাঁড়ালেও ছোট কক্ষটিতে নেই কোনো ফ্যান। হঠাৎ ১২ বছর বয়সী ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়লে সেবা করার জন্য কোনো স্থান না পেয়ে ইমিগ্রেশন ভবনের এক কোনায় বসে তার সেবা যত্ন করেন। আশেপাশে ছিল না কোনো টিউবওয়েল। যাও বা ট্যাংকের পানি জুটেছে, তাও তীব্র তাপদাহে তপ্ত। তা দিয়েই ছেলেকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যান।

লক্ষ্মী রানী দাসের বলেন, আগরতলা ইমিগ্রেশনে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে ও সুন্দর পরিবেশে আরামে সব কাজ করে এসেছি। বন্দর থেকে গাড়িতে আমাদের ফ্রি চেকপোস্ট পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। অথচ আখাউড়া স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনে এসে নাজেহাল হতে হলো। এখানে কোনো কিছুরই সুব্যবস্থা নেই। একতলা পুরোনো ভবনের ছোট্ট কক্ষে শত শত লোক ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে। এখানকার ইমিগ্রেশনের অব্যবস্থাপনা দেখে খুবই খারাপ লেগেছে। এখানে যাত্রীদের জন্য পরিষেবা বাড়ানো উচিত। আশা করব, বাংলাদেশ সরকার দুই দেশের যাত্রীদের কথা বিবেচনায় এনে ইমিগ্রেশন উন্নত করবে।

আগরতলা থেকে আসা আরেক যাত্রী খোকন মিয়া বলেন, আমি গত ছয় বছর ধরে এ চেকপোস্ট দিয়ে যাতায়াত করছি। ইমিগ্রেশনটি যে হালতে দেখেছিলাম, সে হালতেই আছে। একজন রোগী এলে যে বসবে, সে উপায় নেই। এখানে যে পরিমাণ জায়গা দরকার, সে তুলনায় খুবই কম আছে।

বন্দরটি ঘুরে দেখা গেছে, মূলফটক পার হলেই একতলা বিশিষ্ট তিন রুমের একটি ভবন। এর মধ্যে দুটি ছোট রুম ও একটি মাঝারি রুম। একটিতে ইমিগ্রেশন ইনচার্জ বসেন, আরেকটি হচ্ছে ব্যারাক। মাঝারি কক্ষটিতে চলে অফিসের কার্যক্রম। পুরোনো ভবনটির বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরে গেছে। প্রতিদিন যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে, তাই গাদাগাদি করেই চলে কার্যক্রম। যাত্রীদের মালপত্র বারান্দায় রেখে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বসার জন্য ইমিগ্রেশন কক্ষে কোনো জায়গা নেই। আর বাইরে টিনের একটি ছাউনি আছে, যেখানে ১৫/২০টি চেয়ার থাকলেও কোনো টেবিল নেই। অথচ ফরম পূরণ করতে টেবিল প্রয়োজন। ফরম পূরনের জন্য দেখা গেছে কেউ বারান্দার মেঝেতে বসে, আবার কেউ কেউ বিদ্যুৎতের জেনারেটরের ওপরে ফরম রেখে পূরণ করছেন। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বিশ্রামের জন্যও জায়গা নেই। কক্ষটিতে এসির ব্যবস্থা থাকলেও ভিড় থাকায় যাত্রীদের লাইন কক্ষের বাইরে বারান্দায় চলে যায়। ফলে এসিগুলো চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তীব্র গরমে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পাশাপাশি বৈদ্যুতিক ফ্যানের ব্যবস্থা না থাকায় গরমে কষ্ট সহ্য করে ইমিগেশনের কাজ শেষ করতে হয়।

তবে বিড়ম্বনা এখানেই শেষ নয়। কাস্টমসের কাজ করতে পাড়ি দিতে হচ্ছে অন্তত দুইশ গজ দূরবর্তী অন্য আরেকটি ভবনে। মূলত এক ভবন ও এক ছাদের নিচে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের কাজ করতে না পারায় তাদের দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে চালু হয় আখাউড়া স্থলবন্দরের কার্যক্রম। সুবিধাজনক ভৌগলিক অবস্থান হওয়ায় এ বন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট থেকে অনেকেই আখাউড়া ইমিগ্রেশন ব্যবহার কররে ভারতে যাতায়াত করছেন।

কাস্টমস সূত্র জানায়, এ ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে প্রতিদিন অত্যন্ত এক হাজার যাত্রী দুই দেশে যাতায়াত করছেন। এর মধ্যে পাঁচ শতাধিক যাত্রী ভারতে যান। যা থেকে প্রতি মাসে ৭৫ লাখ টাকা আয় হয়ে থাকে সরকারের। বিগত ছয় মাসে চার কোটি ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।

এদিকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে আখাউড়া চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন আধুনিক ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হলেও ২০১৭ ও ২০১৯ সালে সীমান্ত আইনের অজুহাতে বিএসএফ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়।

মৌলভীবাজার জেলা থেকে ভারতগামী বাংলাদেশি যাত্রী সুমন আহমেদ বলেন, আমি ইমিগ্রেশনের পরিবেশ দেখে হতবাক হয়ে গেছি। এখানে লাইনের কোনো শৃঙ্খলা নেই। কোনো ধরনের আধুনিকায়ন নেই। অথচ আগরতলা ইমিগ্রেশনের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ফারহানা মিলি নামে এক নারী চিকিৎসক তার বাবার চিকিৎসা জন্য ভারতে যাওয়া সময় আক্ষেপ করে বলেন, আগরতলা ইমিগ্রেশন ও আখাউড়া ইমিগ্রেশনের মধ্যে অনেক পার্থক্য। আমাদের এখানে ভালো ব্যবস্থা নেই। মালপত্র রাখার জায়গা পাই না। আরেকজনের কাছে পাহারা দিয়ে রাখতে হয়। বছরের কয়েকবার যেতে হয়। তবে এর উন্নতি দেখছি না। এখানে দ্রুত উন্নয়নের ছোঁয়া লাগুক সেই কামনা করি।

মুক্তি খান নামে এক যাত্রী বলেন, বর্তমানে আখাউড়া ইমিগ্রেশন ভবন নামেমাত্র টিকে আছে। জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার করে কোনোমতে ঝুঁকি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা হচ্ছে। স্থায়ী ভবন তৈরির পর এক ছাদের নিচে সব পরিষেবা পাওয়া গেলে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি বিদেশিদের আসা যাওয়া আরও বেড়ে যাবে। যাত্রীদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগও লাঘব হবে।

জেলা পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ইমিগ্রেশন দিয়ে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে। প্রতিদিন এক হাজারেরও বেশি যাত্রী পারাপার হচ্ছেন। তবে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালানোর জন্য যে ধরনের সুযোগ সুবিধা আছে, তা খুবই অপ্রতুল। নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে সেবার মান বাড়বে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, এ ইমিগ্রেশন দিয়ে দুই দেশের বিপুল সংখ্যক যাত্রী যাতায়াত করলেও ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের পর্যাপ্ত সুবিধার কমতি রয়েছে। আমাদের নতুন একটি ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণ কাজ চলছিল, তা বিএসএফের বাধায় বন্ধ রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কথা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি পেলে আমরা ভবনটির কাজ আবার শুরু করতে পারব। এছাড়া বলে রাখি, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখানে একটি আধুনিক বন্দর নিমার্ণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ৩.৫৭ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ হাতে নিয়েছি। এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। তখন স্থলবন্দর, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসসহ বন্দর সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম আরও বেগবান হবে। যাত্রীসেবার মানও উন্নত হবে।

তিনি আরো বলেন, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত চারলেন সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ হলে এবং আধুনিক স্থলবন্দরটি তৈরি হলে আখাউড়াই হবে বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য স্থলবন্দর।

আখাউড়াকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা উপলক্ষে প্রশাসনের সংবাদ সম্মেলন

আখাউড়া, 19 March 2023, 1124 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া উপজেলাকে ‘ক’ শ্রেণীর ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলা প্রশাসন। গতকাল শনিবার সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জনপ্রতিনিধি ও উপজেলার প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় আখাউড়া উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন করার লক্ষ্যে ৬৬৩টি পাকা ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। চরচনারায়নপুর, চাঁনপুর, দেবগ্রাম, রুটি, সাতপাড়া, ঘাগুটিয়াসহ ২৬টি স্থানে ২ শতক ভূমিতে এসব ঘর নির্মাণ করা হয়। উপকারভোগীকে দলিলসহ এসব ঘর দেওয়া হয়েছে। আগামী ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আখাউড়া উপজেলাসহ সারাদেশের ২২টি উপজেলাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভূমিহীন ও গৃহহীন ঘোষণা করবেন।

এসময় সাংবাাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আখাউড়া উপজেলায় এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী যেসকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পাওয়া গেছে। তাদের ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরপরও যদি কেউ নতুন করে গৃহহীন হয় তাহলে পর্যায়ক্রতে তাদেরকেও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব পরিবারের সুপেয় পানি, বিদ্যুৎ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সকল সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের কর্মসংস্থানের জন্য সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ সাইফুল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাপস চক্রবর্তী, মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুল আলম চৌধুরী, মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম.এ. মতিন, দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জালাল হোসেন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হান্নান খাদেম, সাংবাদিক নাসির উদ্দিন, জুটন বনিক, এম.এ. জলিল, জালাল হোসেন মামুন, রুবেল আহমেদ, ফজলে রাব্বি প্রমুখ।

কুমিল্লার যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা মামলার আসামী আখাউড়ায় আটক

আখাউড়া, জাতীয়, 13 September 2023, 1108 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
দুবাই থেকে ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় হত্যা মামলার এক আসামীকে আটক করেছে আখাউড়া ইমিগ্রেশন পুলিশ। আটক ব্যক্তি হলো মোহাম্মদ বাদল রিয়াজ (৪৮)।

তিনি কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলার আলোচিত যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন হত্যার মামলার ৫নং আসামী। বাদল রিয়াজ তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের মোঃ রিয়াজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে।

আজ ১৩ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকাল ৫টার দিকে ত্রিপুরার আগরতলা ইমিগ্রেশন হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন তিনি। এসময় তার পাসপোর্ট নম্বরটি কালো তালিকাভূক্ত থাকায় ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে। পরে তাকে আখাউড়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে ইমিগ্রেশন পুলিশ।

আখাউড়া ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ মোঃ হাসান আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, আটক ব্যক্তি একটি হত্যা মামলার আসামী মর্মে ইমিগ্রেশন পুলিশকে অবহিত করেছিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। তার পাসপোর্টটি কালো তালিকাভূক্ত করা হয়। বিকালে আগরতলা হয়ে আখাউড়া ইমিগ্রেশনে এলে তাকে আটক করা হয়।

উল্লেখ্য, পূর্বশত্রুতা ও রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের জেরে চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাজারে য্বুলীগ নেতা জামাল হোসেন (৪০) কে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। বোরকা পরে একদল অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত কাছ থেকে তাঁকে গুলি করে।

জামাল হোসেন তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন। তিনি তিতাসের জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের জিয়ারকান্দি নোয়াগাঁও গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। তবে গৌরীপুর পশ্চিম বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি।

আখাউড়ায় স্ত্রীর অভিযোগে স্বামীর কারাদণ্ড

আখাউড়া, 17 April 2024, 293 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় স্ত্রীর দেয়া অভিযোগে মোঃ রিপন মিয়া (২৬) নামে এক যুবককে কারাদন্ড প্রদান ও জরিমানার আদেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) এস.এম রাহাতুল ইসলাম এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালত ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পৌর এলাকার দেবগ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে রিপন মিয়া নামের ওই যুবক আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা। তার স্ত্রীর অভিযোগ সে মাদকাসক্ত। মাদক সেবন করে প্রায়ই সে স্ত্রীকে মারধর করে। বিকেলে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়। এ অবস্থায় ভ্রাম্যমাণ আদালত রিপনকে মিয়াকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও এক হাজার টাকা অর্থদন্ডের আদেশ দেন।