চলারপথে রিপোর্ট :
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, কৃষি জমিকে রক্ষার মাধ্যমে পরিকল্পিত নগরায়নের পাশাপাশি গ্রামকেও পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হবে।
তিনি আজ ১৯ জানুয়ারি শুক্রবার দুপুরে তাঁর নিজ গ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের চিনাইর গ্রামের পুরাতন মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায়ের পর বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
এসময় গণপূর্ত মন্ত্রী আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে নির্দেশনা দিয়েছেন কৃষি জমি কমে যাচ্ছে, নগরের পাশাপাশি গ্রামকে যেন পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হয়, পরিবেশ বান্ধব ঘর-বাড়ি যেন নির্মান করা হয়, আমি সেই প্রচেষ্টা গ্রহণ করবো।
এ সময় তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাকে নির্বাচিত করায় নির্বাচনী এলাকার সকল মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি আগামীদিনে তাঁর দায়িত্ব পালনে গণমাধ্যম কর্মীসহ দেশবাসীর সহযোগীতা চান। পরে তিনি গ্রামের বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে ঘুরে দেখেন ও গ্রামবাসীর সাথে কুশল বিনিময় করেন।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু,সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, পিপি অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন, জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ বাবুল মিয়া, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভনসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা মন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
মিথ্যা বিয়ের আশ্বাসে দিয়ে প্রতারণার ফাঁদে আটকে অবাধে মেলামেশা করে এখন বিয়ে করতে গড়িমসি করায় তৃপ্তি নামের এক তরুণী প্রেমিকের অফিসের গেটের সামনে অবস্থান নেন। ১৫ জানুয়ারি বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই তরুণী অফিসের সামনেই থাকেন। তার একটাই দাবি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রেমিক আব্দুল খালেক তাকে বিয়ে করতে হবে। অবস্থা বেগতিক দেখে নিজ কর্মস্থল থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান প্রেমিক আব্দুল মালেক। ঘটনাটি ঘটেছে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে। অভিযুক্ত প্রেমিক আব্দুল মালেক সমাজসেবা অধিদপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর পদে কর্মরত।
আরও পড়ুন
ওবায়দুল কাদেরের ‘ছেলে’ হিরু গ্রেফতার
তৃপ্তির অভিযোগে জানা যায়, পাঁচ বছর আগে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিয়ের আশ্বাসে তারা বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও রিসোর্টে থেকেছে। এমনকি তাদের শারীরিক সম্পর্কও হয়েছে। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে আব্দুল মালেকের পরিবারকে সব কথা জানিয়ে ওই তরুণী বিয়ের দাবি জানান। তার দাবির প্রেক্ষিতে ছেলের পরিবার ৬ মাস সময় নেয়। এই সময় অতিবাহিত হলে তিনি আবার ছেলের বাড়ি যান। তখন আব্দুল মালেক বিয়ে করে তাকে পালকিতে করে নিয়ে যাবে বলে আশ্বাস দেন।
ওই তরুণী আরো বলেন, সম্প্রতি মালেক তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন। তিনি আর কোনো উপায় না পেয়ে বিয়ের দাবিতে মালেকের কর্মস্থল ঈশ্বরদী উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান নেন। পরে সেখানে মালেক ও তার পরিবারের লোকজন ওই তরুণীকে লাঞ্ছিত করেন।
আরও পড়ুন
এইচএমপিভিতে আক্রান্ত সেই নারী মারা গেছেন
এ বিষয় আব্দুল মালেক অস্বীকার করেন। তিনি জানান, তৃপ্তির সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। তার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এমন অভিযোগ নিয়ে এসেছে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান বলেন, ওই তরুণী অফিসে এসে অবস্থান করছেন। এটা তো আমাদের অফিসিয়াল কোনো বিষয় না। এবিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই। তবে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে তিনি আমাদের অফিসেরই একজন। কোনো লিখিত অভিযোগ পেলে আমার ঊর্ধ্বতনদের জানাবো এবং বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেব।
আরও পড়ুন
মেঘনা নদী থেকে অবাধে লুট হচ্ছে বালু
এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
অনলাইন ডেস্ক :
২৪ জানুয়ারি বুধবার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে বাঙালির দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান একটি মাইলফলক ঘটনা।
এই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আরও এক ধাপ এগিয়ে যায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত বাঙালির মুক্তির সনদ ৬-দফা ভিত্তিক গণ-আন্দোলনের আদর্শকে ধারণ করে অগ্রসরমান সংগ্রামের পথপরিক্রমায় ১৯৬৯ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়নসহ প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন এবং ১১-দফা দাবি ঘোষণা করেন। এই ১১-দফা দাবির মূল ভিত্তি ছিল বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ৬-দফা। ৬-দফা ভিত্তিক ১১-দফা দাবিতে ছাত্রসমাজের সমস্যাকেন্দ্রিক দাবি-দাওয়ার পাশাপাশি কৃষক ও শ্রমিকদের স্বার্থ সংক্রান্ত দাবিসমূহ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই আন্দোলনের অন্যতম প্রধান দাবি ছিল আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ রাজবন্দিদের মুক্তি।
৬-দফা এবং পরবর্তীতে ১১-দফা কর্মসূচির প্রেক্ষাপটে সংঘটিত হয় ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান। ’৬৯-এর ১৭ জানুয়ারি ছাত্রনেতারা দেশব্যাপী সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক দিলে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনেম খান ছাত্র আন্দোলন দমনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেন। সরকারি নিপীড়নের প্রতিবাদে ২০ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ছাত্রসভা ও প্রতিবাদ মিছিলের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এ মিছিলে পুলিশের গুলিতে ছাত্রনেতা আমানুল্লাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান (আসাদ) নিহত হলে আন্দোলন আরো তীব্র হয়। শহীদ আসাদের আত্মদানের পর ২১, ২২ ও ২৩ জানুয়ারি শোক পালনের মধ্য দিয়ে সর্বস্তরের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ২৪ জানুয়ারি অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়।
পাকিস্তানি সামরিক শাসন উৎখাতের লক্ষ্যে ১৯৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি সংগ্রামী জনতা শাসকগোষ্ঠীর দমন-পীড়ন ও সান্ধ্য আইন ভঙ্গ করে মিছিল বের করে। মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণে এদিন ঢাকায় সচিবালয়ের সামনের রাজপথে নবকুমার ইনস্টিটিউটের নবম শ্রেণির ছাত্র কিশোর মতিউর রহমান ও রুস্তম শহীদ হন। মানুষ আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। গণঅভ্যুত্থানের প্রবল চাপে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অভিযুক্ত এবং নিরাপত্তা আইনে আটক ৩৪ জনকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় স্বৈরশাসক আইয়ুব খান।
এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি লাখো জনতার উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সামরিক স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের পতন ঘটে। এর পর থেকে ২৪ জানুয়ারি গণঅভ্যুত্থান দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার অংশ হিসেবে আজ ৩ জানুয়ারি বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভাষন দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিকেল ৩টায় স্থানীয় নিয়াজ মুহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিতব্য জেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি ভাষন দেবেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষন উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে জেলা আওয়ামীলীগ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পৌর সভার সাবেক মেয়র মোঃ হেলাল উদ্দিন বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বিকেল ৩টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখবেন। প্রধানমন্ত্রী জনসভা করতে আমরা ইতিমধ্যেই অনুমতি নিয়েছি। জনসভা সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী বলেন, দুপুর ২টা থেকে নিয়াজ মুহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জনসভা শুরু হবে। বিকেল ৩টায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জনসভায় দলের প্রার্থীদের কথা বলবেন এবং বিশেষ করে উন্নয়নের কথা তিনি অবশ্যই বলবেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ যাতে শান্তিতে থাকতে পারেন আইন-শৃংখলার কথা বলবেন।
তিনি বলেন, জনসভাকে সফল করতে আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। জনসভায় দলীয় প্রার্থীদের উপস্থিত থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জনসভায় ১৫/২০ হাজার লোকের জনসমাগম হবে বলে তিনি জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
বর্বর ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার দাবিতে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আয়োজনে আজ ১১ এপ্রিল শুক্রবার বাদ আছর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু করে কুমারশীল মোড় হয়ে প্রেস ক্লাব চত্বরে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা মাহমূদুল হাসান হিফয্।
ইসলামী যুব আন্দোলনের জেলা সভাপতি হাফেজ মাওলানা শাহ মোহাম্মদুল্লাহথর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আল আমিন হোসাইনীর সঞ্চালনায় এতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির জেলা কমিটির সদস্য ও সাবেক জিএস আরমান উদ্দীন পলাশ, জেলা নাগরিক জোটের সভাপতি এড. অধ্যাপক শেখ জাহাঙ্গীর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি আলী মাউন পিয়াস, আইএবির অর্থ সম্পাদক মাওলানা বেলাল হোসাইন, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক ইউনুছ আহমদ ছাতিয়ানী, যুব আন্দোলনের জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক এম আবু হানিফ নোমান, দাওয়াহ ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ, নবীনগর উপজেলা সভাপতি মুনির হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক রাজু, সদর উপজেলা সভাপতি হুমায়ুন কবির, সরাইল দক্ষিণ আহবায়ক রাসেল মিয়া, বিজয়নগর উপজেলার সভাপতি বিলাল হোসেন, কসবা উপজেলা সহ-সভাপতি ইয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দীন ইয়াকুবী, সরাইল উত্তর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল রশিদ প্রমুখ।
বিক্ষোভ মিছিলে ইসরাইল বিরোধী স্লোগানে স্লোগানে শহর প্রকম্পিত হয়। মিছিল শেষে সমাবেশে ইসরাইলি পতাকায় অগ্নিসংযোগ করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন আপিল বিভাগ।
ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত। বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে আর থাকছে না। বিচারপতিদের অপসারণ করা যাবে সুপ্রিম কোর্ট জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে। আজ রোববার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
ফলে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। এখন থেকে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে থাকবে। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
আজ ২০ অক্টোবর রোববার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। এ রায়ের ফলে দীর্ঘ আট বছর পর নিষ্পত্তি হলো গুরুত্বপূর্ণ এ রিভিউ আপিলের।
বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন শুনানির দিন গত ১৫ আগস্ট আজকের দিন ধার্য করা হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
আদালতে রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
এর আগে বেশ কয়েকবার সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন কার্যতালিকায় এলেও শুনানি হয়নি।
গত বছরের ২৩ নভেম্বর বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ ৬ জন বিচারপতি শুনতে পারবেন বলে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন আপিল বিভাগ।
২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন দাখিল করা হয়।
আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় রাষ্ট্রপক্ষ ৯০৮ পৃষ্ঠার এ রিভিউ আবেদনে ষোড়শ সংশোধনীর পক্ষে ৯৪টি যুক্তি দেখিয়ে আপিল বিভাগের রায় বাতিল চাওয়া হয়েছে।
২০১৭ সালের ৩ জুলাই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন। ৮ মে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শুরু হয়। ধারাবাহিকভাবে ১১ দিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
আপিল শুনানিতে আদালতে মতামত উপস্থাপনকারী ১০ অ্যামিকাস কিউরির (আদালতের বন্ধু) মধ্যে শুধু ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর পক্ষে মত দেন।
অপর ৯ অ্যামিকাস কিউরি ড. কামাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আই ফারুকী, আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ এম হাসান আরিফ ব্যারিস্টার এম. আমিরুল ইসলাম, বিচারপতি টিএইচ খান, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ফিদা এম কামাল, এ জে মোহাম্মদ আলী সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বিপক্ষে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
২০১৬ সালের ১১ আগস্ট সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
২০১৬ সালের ৫ মে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ বলে রায় ঘোষণা করেন।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধানটি তুলে দিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন এনে বিচারকের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। যেটি ১৯৭২ সালের সংবিধানেও ছিল।
দেশের প্রথম সংবিধানে সংসদের হাতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা রাখা হয়। তবে ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীতে রাষ্ট্রপতিকে এ ক্ষমতা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আবারও পঞ্চম সংশোধনীতে বিচারক অপসারণে নিষ্পত্তির ভার দিতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়। এরপর পঞ্চম থেকে পঞ্চদশ সংশোধনী পর্যন্ত বিচারপতি অপসারণ নিয়ে আর নতুন কোনো সংশোধনী আসেনি। তবে ২০১৪ সালে ষোড়শ সংশোধনীতে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয় জাতীয় সংসদ। তৎকালীন প্রধান বিচারপতির এস কে সিনহার তৎপরতায় হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করা হয়। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এর রিভিউতে যায়।