চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার নিমবাড়ী গ্রামের রহিজ মিয়া (৩৮) হত্যাকান্ডের রায়ে আসামী জজ মিয়াকে মৃত্যুদন্ডাদেশ ও একলাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। রায়ে অপর চার ভাইসহ ৭ আসামীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। মামলার রায়ে বাকি ৯জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। আজ ৩০ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-প্রথম আদালতের বিচারক আয়েশা আক্তার সুমি এই রায় প্রদান করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের পুলিশ পরিদর্শক কাজী দিদারুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্র ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, মামলার প্রধান আসামী জমসিদ মিয়ার সাথে একই এলাকার রহিজ মিয়া এবং তার চাচা নাবালক মিয়ার জায়গা-সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। এই বিরোধের জের ধরে গত ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল সকাল ১১টার দিকে কসবা উপজেলার নিমবাড়ি গ্রামের রহিজ মিয়া এবং তার চাচা নাবালক মিয়া স্থানীয় বাদৈর বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিমবাড়ি গ্রামের জমসিদ মিয়ার বাড়ির কাছে পৌছলে, সেখানে আগে থেকে উৎপেতে থাকা জমসিদ মিয়া এবং তার ছেলে নাতিরা মিলে রহিজ মিয়া এবং নাবালক মিয়ার উপর অর্তকিত হামলা করে। এতে উভয়েই গুরুতর আহত হয়।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদেরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে ওইদিনই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রহিজ মিয়া মারা যান।
এ ঘটনায় রহিজ মিয়ার স্ত্রী নার্গিস বেগম বাদি হয়ে ওইদিন রাতেই জমসিদ মিয়াকে প্রধান আসামী করে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে কসবা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে মামলাটি প্রথমে কসবা থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক এস.আই মুজিবুর রহমান ও পরে রতন দেবনাথ মামলাটি তদন্ত করে ওই বছরের ২৬ অক্টোবর আদালতে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। পরে মামলাটি অধিকতর তদন্ত ও পর্যালোচনা, বিচার বিশ্লেষন করে সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ- প্রথম আদালতের বিচারক আয়েশা আক্তার সুমি মামলার ২নং আসামী জজ মিয়াকে পেনাল কোডের ৩০২ ধারা অনুযায়ী মৃত্যুদন্ড ও একলাখ টাকা জরিমানা করেন। দন্ডিত আসামী পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে ও গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করার নির্দেশ দেন আদালত।
এই মামলায় অপর ১৬ আসামীর মধ্যে ৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করা হয়। মামলার রায়ে জমসিদ মিয়ার অপর ছেলে খোকন মিয়াকে এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন। পাশাপাশি জমসিদ মিয়ার ছেলে ইয়াছিন মিয়া, পারভেজ মিয়া, মনির মিয়া এবং স্থানীয় আওয়াল মিয়া, তার ছেলে আশরাফুলকে ৬ মাস করে সশ্রম কারাদন্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন। রায় ঘোষনার সময় দন্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে মোঃ ইয়াছিন মিয়া, মোঃ খোকন মিয়া ও মোঃ আশরাফুল উপস্থিত ছিলেন। বাকীরা পলাতক রয়েছেন।
এদিকে এই মামলায় অপরাধ প্রমানিত না হওয়ায় ৯ জনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এরা হলেন, জমসিদ মিয়া, আকবর মিয়া, ছোট মিয়া, রুবেল মিয়া, সাদের মিয়া, আবদুল আজিজ, ফরকান মিয়া, নিজাম মিয়া ও ফরিদ মিয়া।
চলারপথে রিপোর্ট :
কসবায় ২৫ কেজি গাঁজাসহ ৩ মহিলা মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার বিকেলে উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের চাপিয়া গ্রামের পশ্চিমপাড়া থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের চাপিয়া গ্রামের নোয়াব মিয়ার স্ত্রী পারভীন আসমা (৩৭), একই ইউনিয়নের ধ্বজনগর গ্রামের পূর্বপাড়ার লতিফ মিয়ার মেয়ে শিরিনা আক্তার বিউটি (২৩) ও ঠাকুরগাঁও জেলার শাসলা পিয়ালা গ্রামের মোতালিব মিয়ার মেয়ে রুমা খাতুন (২০)।
এ ব্যাপারে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মহিউদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার চাপিয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের শরীরে বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় ২৫ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কসবায় ফসলি জমির মাটি কাটার অপরাধে দুই ব্যক্তিকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ ১৯ জানুয়ারি রবিবার দুপুরে উপজেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়নের আলমপুর ও রাজনগর এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ গোলাম সরওয়ার। ভ্রাম্যমান আদালত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়নের আলমপুর ও রাজনগর এলাকায় ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে করা হচ্ছে। খবর পেয়ে দুুপুরে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তৌহিদ আলম (৩৪) ও রিশাদ আলম চৌধুরী (২১)কে আটক করেন। এ সময় ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন এর অধীনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়। আদালত তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড প্রদান করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম সরওয়ার বলেন, ফসলি জমি সংরক্ষণ ও পরিবেশ রক্ষার জন্য প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কোনো ভাবেই জমির উর্বর মাটি কাটার অনুমতি দেওয়া হবেনা। ফসলি জমির মাটি কাটায় ফলে জমির উর্বরতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে জমির মালিক ও কৃষকেরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন।
চলারপথে রিপোর্ট :
কসবায় পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ ২ জুলাই রবিবার দুপুরে উপজেলার কুটি ইউনিয়নের মাইজখার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুরা হলো- মাইজখার গ্রামের রাজু ভুঁইয়ার মেয়ে মাইশা আক্তার (৮) ও তার ভাগনে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের দইখলা গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে জুবায়ের হোসেন (১১)।
নিহতদের পরিবার জানায়, আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে রাজু ভুঁইয়ার ভাগনে জোবায়ের মায়ের সঙ্গে মাইজখার গ্রামে নানাবাড়ি বেড়াতে এসেছিল। দুপুরে রাজু ভুঁইয়ার বাড়ির পেছনে সাঁতার কাটতে গভীর পুকুরে নামে মাইশা ও জুবায়ের। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই পানিতে তলিয়ে যায় দুই শিশু। বাড়ির লোকজন তাদের দেখতে না পেয়ে পুকুরে নেমে খোঁজাখুজি করতে থাকে। একপর্যায়ে পানির নীচ থেকে তাদের নিথর দেহ উদ্ধার করে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আশিক শর্মা দুই শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন।
কসবা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, উপজেলার মাইজখার গ্রামে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মারা যাওয়ার খবর শুনেছি। তবে এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।
চলারপথে রিপোর্ট :
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এমপিদের পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের প্রার্থী না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলীয় সভানেত্রীর বরাত দিয়ে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পত্রিকায় বিবৃতি দিচ্ছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার আমলে না নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সায়েদুর রহমান স্বপন।
তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য আইনমন্ত্রী অ্যাড. আনিসুল হকের আপন ফুফাতো ভাই। গতকাল রবিবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। স্বপন ছাড়াও কসবা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আরও দুইজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
তারা হলেন, কসবা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান চেয়ারম্যান ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাবেক এপিএস এড. রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া জীবন ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন ভূইয়া। নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী ২১ এপ্রিল রবিবার অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। ভোটগ্রহণ হবে ২১ মে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সায়েদুর রহমান স্বপন কসবা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে অনেকদিন ধরেই প্রচার-প্রচারণা করে আসছেন। তিনি কুটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সভাপতি ছিলেন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া জীবন। তিনি মন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব।
এড. রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবন সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, সায়েদুর রহমান স্বপন আইনমন্ত্রীর আপন ফুফাতো ভাই। তিনি মন্ত্রীর ভাই পরিচয় দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করছেন। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী এমপিদের আত্মীয়দের প্রার্থী না হতে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তিনি তা মানছেন না।
এ বিষয়ে সায়েদুর রহমান স্বপন সাংবাদিকদের বলেন, আমি মন্ত্রীর ফুফাতো ভাই। মন্ত্রীর পরিবারের আত্মীয় নই। আমি দলীয় প্রতীক নিয়েও নির্বাচন করছি না। আমি ৩০ বছর ধরে কুটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। কুটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম। আমি আমার অবস্থান থেকেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। তাছাড়া নির্বাচন না করার ব্যপারে দলীয় কোন লিখিত নির্দেশনা পাইনি। তাই নির্বাচন করতে আমার কোন বাঁধা নেই।
এ ব্যাপারে কসবা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অমিত কুমার দাস বলেন, চেয়ারম্যান পদে তিন জন, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ২ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ব্যালট পেপারে ভুল প্রতীক থাকায় দুপুরে স্থগিত হলো চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন।
আজ ২৮ এপ্রিল রবিবার দুপুরে কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন স্থগিতের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, কুটি ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৯ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৩ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৩৫ জন প্রার্থী লড়াই করছেন। রবিবার সকাল ৮টা থেকে ১১টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। দুপুরের দিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউসুফ আহমেদ দেখতে পারেন ব্যালট পেপারে তার প্রতীক সিএনজিচালিত অটোরিকশার বদলে প্যাডেল চালিত ৩ চাকার রিকশা প্রতীক দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে তার ভোটারা বিব্রত হচ্ছিলেন। দুপুর ১টার দিকে তিনি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর এই বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। তার এই অভিযোগের বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করেন। পরে সেখান থেকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার সাংবাদিকদের জানান, ব্যালট পেপারে প্রতীক সমস্যা হওয়ায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। এই বিষয়ে পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কসবা উপজেলার ইউনিয়নে মোট ভোটার ৩৩ হাজার ৪৩৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৭ হাজার ৭৭৬ জন এবং নারী ভোটার ১৫ হাজার ৬৫৯ জন।