আগামীকাল এসএসসি শুরু, পরীক্ষায় বসছে সোয়া ২০ লাখ শিক্ষার্থী

জাতীয়, 14 February 2024, 349 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি)। এবার সারাদেশে তিন হাজার ৭০০টি কেন্দ্রে ২৯ হাজার ৭৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে।

সূচি অনুযায়ী, প্রথম দিনে বৃহস্পতিবার বাংলা প্রথমপত্র দিয়ে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে আগামী ১২ মার্চ। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৩-২০ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি সূত্র জানায়, ১১টি বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৯ লাখ ৯২ হাজার ৮৭৮ এবং ছাত্রী ১০ লাখ ৩১ হাজার ৩১৪ জন। মোট কেন্দ্র ৩ হাজার ৭০০টি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৯ হাজার ৭৩৫টি।

বোর্ডভিত্তিক হিসাবে সবচেয়ে বেশি ৪ লাখ ৪ হাজার ৬৩৭ পরীক্ষার্থী ঢাকা বোর্ডে। এছাড়া রাজশাহীতে ২ লাখ ২৪৫ জন, কুমিল্লায় ১ লাখ ৮০ হাজার ৫২৭, যশোরে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৩৭১, চট্টগ্রামে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৯০, বরিশালে ৮৮ হাজার ৫৮৬, সিলেটে ১ লাখ ৯ হাজার ৪১২, দিনাজপুরে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৪৩৬ এবং ময়মনসিংহে ১ লাখ ১৯ হাজার ৭৫ জন।

এছাড়া মাদরাসা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ২ লাখ ৯০ হাজার ৯৪০ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৯৪ হাজর ৮৪১ জন এবং ছাত্রী ৩১ হাজার ৫৩২ জন। আর কারিগরি বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাাখ ২৬হাজার ৩৭৩ জন। এরমধ্যে ছাত্র ৯৪ হাজার ৮৪১ জন এবং ছাত্রী ৩১ হাজার ৫৩২ জন।

৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এসএসসি, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড দাখিল ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষা আয়োজনের দায়িত্ব পালন করছে।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, এসএসসি পরীক্ষার সব প্রস্তুতি শেষ। প্রশ্নফাঁস হওয়ার কোনো সুযোগই নেই। কেউ এ নিয়ে গুজব ছড়ালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।

পরিদর্শনে যাবেন না শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ বিবেচনায় নিয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন না শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। কয়েকদিন আগে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এ তথ্য জানিয়ে দেন তিনি। মন্ত্রী মনে করেন কেন্দ্র পরিদর্শনের কারণে শিক্ষার্থীদের ওপর এক ধরনের হয়রানিমূলক পরিস্থিতি, মানসিক যন্ত্রণা ও জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।

তিনি বলেছেন, পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীরা এমনিতেই একটা ট্রমার মধ্যে থাকে। কেন্দ্র পরিদর্শনের নামে ব্যাপক জনসমাগম এ মানসিক চাপ আরও বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশে বিঘ্ন ঘটে।

মহিবুল হাসান চৌধুরী আরও বলেন, আইন অনুযায়ী কেন্দ্র পরিদর্শক ছাড়া অন্য কারও কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি নেই। তাই পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ যেন পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ না করেন সে বিষয়ে সবার সচেতন থাকা উচিত।

বন্ধ কোচিং সেন্টার

এদিকে, প্রশ্নফাঁসের গুজব ও নকলমুক্ত পরিবেশে এসএসসি পরীক্ষা আয়োজনে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী ১২ মার্চ পর্যন্ত একমাস সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে নানা উদ্যোগ

প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে কোচিং বন্ধ ছাড়াও নানা উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। পরীক্ষার কেন্দ্রে জেলা পর্যায়ের ট্রেজারি ও উপজেলা বা থানা পর্যায়ে থানা হেফাজতে সংরক্ষণ করা হবে। থানা বা ট্রেজারি থেকে পুলিশ প্রহরায় প্রশ্ন কেন্দ্রে কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রশ্নফাঁস বা এ সংক্রান্ত গুজব ঠেকাতে ফেসবুকসহ সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলবে নজরদারি। এ কাজে তৎপর চক্রগুলোর কার্যক্রমের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো নজরদারি চালাবে। প্রশ্নফাঁস বা পরীক্ষার্থীদের কাছে উত্তর সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শিক্ষা বোর্ডের যত নির্দেশনা

এসএসসি শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষা বোর্ড থেকেও কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা হবে। প্রথমে বহুনির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল বা রচনামূলক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং দুই পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না। এছাড়া পরীক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা শুরুর তিনদিন আগে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছিল।

এদিকে, পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে। কেন্দ্রসচিব ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বা পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন আনতে এবং ব্যবহার করতে পারবেন না।

থাকবে কুইক রেসপন্স টিম

এসএসসি পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের যে কোনো সমস্যা নিরসনে ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) প্রস্তুত থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান।

তিনি জানিয়েছেন, পরীক্ষার্থীদের যে কোনো অসুবিধা মোকাবিলা করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের প্রতিটি জোন কর্তৃক আলাদা আলাদা কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) গঠন করা হবে। এছাড়া যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯-এ ফোন করে সহায়তার আহ্বান জানানো যাবে। এক্ষেত্রে ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে।

Leave a Reply

চিকিৎসা সহায়তা প্রদান

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগর আঞ্চলিক কার্যালয়ের উদ্যোগে আশার সদস্যদের মাঝে Read more

সরাইলে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইলে দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা Read more

আশুগঞ্জে গাঁজাসহ গ্রেফতার ২

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ২৩ কেজি গাঁজাসহ মোঃ সুমন (৩০) Read more

ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আনন্দ মিছিল,…

চলারপথে রিপোর্ট : ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় Read more

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের খবরে ছাত্রদলের আনন্দ মিছিল

চলারপথে রিপোর্ট : অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার খবরে আখাউড়ায় Read more

ঘরের মাঠে বড় পরাজয় বাংলাদেশের

অনলাইন ডেস্ক : ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট সিরিজ দিয়ে Read more

সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন

অনলাইন ডেস্ক : সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে Read more

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিল…

চলারপথে রিপোর্ট : রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ করার দাবিতে Read more

চালক নয়নকে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার কেরানীগঞ্জে মো. নয়ন (২৫) নামের এক Read more

ভারতকে ৩-১ হারিয়ে সেমিফাইনালে বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক : সেমিফাইনাল নিশ্চিতের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল শক্তিশালীয় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কার্ডধারিদের মধ্যে টিসিবি’র পণ্য বিক্রয়…

চলারপথে রিপোর্ট : নিম্ন আয়ের কার্ডধারীদের মধ্যে ভুর্তুকিমূল্যে অক্টোবর মাসের Read more

আখাউড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষীদের মাঝে মাছের…

চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়ায় বন্যা, অতিবৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকদের সাথে সিভিল সার্জনের মতবিনিময়

জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 22 October 2024, 14 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী ও কিশোরীকে জরায়ু মুখ ক্যান্সারের টিকা দেয়া হবে। ২৪ অক্টোবর থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে প্রথম ডোজের এইচভিপি টিকাদান কর্মসূচি। কিশোরী ও মাতৃমৃত্যু ঝুঁকি কমানোর লক্ষ্যে এই কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। আজ ২২ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এ উপলক্ষে সাংবাদিকদের সাথে সিভিল সার্জনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মতবিনিময় সভায় সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নোমান মিয়া বলেন, জেলার নয়টি উপজেলা ও পৌরসভার ২৪৯৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ণরত এক লাখ ৯১ হাজার ২০৬ জন পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে একটি করে ডোজ দেয়া হবে। পরবর্তীতে ৩০৬টি স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমে বিদ্যালয় বহির্ভুত ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সি ১১ হাজার ২২৮ জন কিশোরীকে টিকা দেয়া হবে।

এ সময় আরো বলা হয়, টিকার জন্য অনলাইন জন্মনিবন্ধন দিয়ে নির্দিষ্ট ওয়েব সাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে নিজের বিদ্যালয়ের নাম খোঁজে পাওয়া না গেলে, নিকটস্থ বিদ্যালয়ের নামে অন্তর্ভুক্ত হওয়া যাবে। টিকাকার্ড প্রিন্ট করে কেন্দ্রে নিয়ে আসতে হবে।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার মাহমুদুল হাসানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডাঃ শোভন চন্দ্র সাহা।

মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেট্রোনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে কাজ করছে ছাত্রলীগ : গণপূর্তমন্ত্রী

জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 10 May 2024, 441 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, ছাত্রলীগ আগামীদিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন -স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে কাজ করবে। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন অস্প্রদায়িকতা, ধর্মনিরপেক্ষতা, শোষনমুক্ত সমাজ, বৈষম্যমুক্ত সমাজ বাস্তবায়ন করে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের পক্ষে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

আজ ১০ মে শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে জেলা ছাত্রলীগের বিশেষ কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের অবদান তুলে ধরে বলেন, ধর্মপ্রাণ হওয়ার জন্য কোন সাম্প্রদায়িক হওয়ার প্রয়োজন নেই। আমরা একটা শ্লোগান দেই, ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। তাই যার যার ধর্ম সে পালন করবে। সকল ধর্ম মনের মানুষ তাদের ধর্মীয় আচার আচরণ নিবিঘ্নে পালন করতে পারবে। এজন্যই বঙ্গবন্ধু বলেছেন, ধর্ম নিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রের অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে গ্রহণ করা হবে। সেটি আমরা করেছি, আমরা আশা করব ছাত্রলীগ সেই পথে হাঁটবে।

সমাবেশে প্রধান অতিথি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি আগামী ২৭ এবং ২৮ সেপ্টেম্বর দুদিনব্যাপী জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেন।

বিশেষ কর্মী সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা, সুরাফ মিয়া সোহাগ, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক সাকিব আল হাসান প্রমুখ।

বিশেষ কর্মী সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহদাৎ হোসেন শোভন। কর্মী সমাবেশের আগে প্রধান অতিথি বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান ।

নারী উদ্যোক্তাদের মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ

জাতীয়, 15 July 2023, 658 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
কক্সবাজারের চকরিয়া হস্তশিল্প ও দেশীয় পণ্য উৎপাদনমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড কর্তৃক মাসব্যাপী ‘ব্লক, হ্যান্ড পেইন্ট ও গহনা তৈরি’ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আজ ১৫ জুলাই শনিবার বিকেলে পৌরশহরে সমিতির কার্যালয়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।

নারী উদ্যোক্তা সংগঠন চকরিয়া হস্তশিল্প ও দেশীয় পণ্য উৎপাদনমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি শারমিন জন্নাত ফেন্সির সভাপতিত্বে ও সম্পাদক ইসরাত হোসাইন এলির সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম।

বিশেষ অতিথি সাংবাদিক আবুল মনসুর মো. মহসিন, পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক রাজিফুল মোস্তফা চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ২০ জন নারী প্রশিক্ষণার্থী ছাড়াও সংগঠনের উপদেষ্টা সেলিম রেজা, সহসভাপতি আসমাউল হোসনা লাভলী, কোষাধ্যক্ষ ফারজানা শিরিন জাহান, নির্বাহী সদস্য শামীমা ফেরদাউসী ও খাদিজা ইসলাম লোপাসহ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

জাতীয়, 7 September 2023, 551 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আজ ৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার গণভবনে হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের মাতৃভূমিকে এগিয়ে নিতে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব। আমরা আমাদের জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা ও ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব।’

এ সময় তিনি দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের যেকোনো পদক্ষেপ এবং জাতির অগ্রগতির বিরুদ্ধে অপপ্রচার সম্পর্কে সবাইকে সর্বদা সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। খবর বাসসের

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং স্মার্ট সরকার, স্মার্ট দক্ষ জনশক্তি, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সোসাইটি নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে আরো এগিয়ে যাবে। কারণ তাঁর সরকার ২০০৮ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইতোমধ্যে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসার পর সংবিধান সংশোধন করে সব জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ জনগণের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও অধিকার পুনরুদ্ধার করেছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান সংবিধান সংশোধন করে সব ধর্মের অধিকার রক্ষা ও ধর্মীয় উৎসব পালনের স্বাধীনতা সংক্রান্ত সব অনুচ্ছেদ বাতিল করেছিলেন।

তিনি বলেন, জিয়া সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বাতিল করে দেন, যা আমাদেন ধর্মীয় নিরপেক্ষতাকে নিশ্চিত করেছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে প্রতিটি ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসব স্বাধীনভাবে পালন করবে।

প্রধানমন্ত্রী হিন্দু সম্প্রদায়কে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, দেশটি সবার, কারণ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে নয় মাস যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়েছিল।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানও বক্তব্য দেন।

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ২৭ বস্তা টাকা, চলছে গণনা

জাতীয়, 20 April 2024, 271 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
১৩০ দিন পর আজ খোলা হয়ে‌ছে কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্স। এবার মসজিদের ৯টি দানবাক্স বা সিন্দুকে পাওয়া গেছে ২৭ বস্তা টাকা।

আজ ২০ এপ্রিল শনিবার সকাল ৮টার দি‌কে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে মস‌জি‌দের ৯টি সিন্দুক খোলা হয়। এরপর টাকাগুলো বস্তাবন্দি করে নেওয়া হয় মসজিদের দোতলায়।

টাকাগুলো ভরতে ২৭টি বস্তার প্রয়োজন হয়। পুরো কাজে তত্ত্বাবধান করছেন জেলা প্রশাসক ও মস‌জিদ ক‌মি‌টির সভাপ‌তি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজা‌দ ও পু‌লিশ সুপা‌র মোহাম্মদ রা‌সেল শে‌খসহ বেশ কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্টেট।
এর আ‌গে গত বছরের ৯ ডি‌সেম্বর খোলা হ‌য়ে‌ছিল মস‌জি‌দের সিন্দুকগু‌লো। তখন পাওয়া গি‌য়ে‌ছিল ছয় কো‌টি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা।

এবার দা‌নের প‌রিমাণ সেই টাকা‌কেও ছা‌ড়ি‌য়ে যে‌তে পা‌রে ব‌লে ধারণা করা হ‌চ্ছে।
এর আগে গত বছরের ১৯ আগস্ট মস‌জি‌দের সিন্দুকে পাঁচ কো‌টি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। তারও আ‌গে ৬ মে মসজিদের সিন্দুকে মিলেছিল পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ সাত হাজার ৬৮৯ টাকা। জানুয়ারি মাসেও পাওয়া যায় চার কোটিরও বেশি টাকা।

স্থানীয়রা জানান, এ মসজিদের দানবাক্স খুললেই পাওয়া যায় কয়েক কোটি টাকা। এ কারণে মসজিদের দানবাক্সে কী পরিমাণ টাকা পাওয়া গেল, তা নিয়ে লোকজনের থাকে অনেক কৌতূহল। তাই গণনা শেষে জানিয়ে দেওয়া হয় টাকার অঙ্ক।

তবে স্থানীয়রা অনেকে বলেছেন, স্বচ্ছতার স্বার্থে আয়ের পাশাপাশি মসজিদের টাকা-পয়সা ব্যয়ের হিসাবটাও জনসম্মুখে নিয়মিত প্রকাশ করা উচিত। ইদানীং মসজিদে দানের প্রবাহ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।

স্থানীয়রা জানান, মুসলমানসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন এ মসজিদে দান করে। এখানে দান করলে মনোবাসনা পূরণ হয় এমন বিশ্বাস থেকে তারা ছুটে আসে পাগলা মসজিদে। দান করে মোটা অঙ্কের টাকা। তবে এ মসজিদের দানবাক্সে যে বিপুল পরিমাণ টাকা পাওয়া যায়, তা জেলার আর কোনো মসজিদে মেলে না। টাকার সঙ্গে সোনা-রুপার অলঙ্কারসহ থাকে বিদেশি মুদ্রাও। প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি, ফলফলাদি, মোমবাতি ও ধর্মীয় বই দান করে লোকজন।

তা ছাড়া আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায় দানবাক্সে পাওয়া চিঠিপত্র। এসব চিঠিতে লোকজন তাদের জীবনে পাওয়ার আনন্দ, না-পাওয়ার বেদনা, আয়-উন্নতির ফরিয়াদ, চাকরির প্রত্যাশা, পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের আশা ও রোগব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে আকুতি প্রকাশ করে। এমনকি শত্রুকে ঘায়েলের দাবিও থাকে কোনো কোনো চিঠিতে।

দানবাক্স বা সিন্দুক খোলার সময় মসজিদে নেওয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা। জেলা প্রশাসনের বেশ কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বড় দল টাকা-পয়সা গণনার তত্ত্বাবধান করে থাকেন।

সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিন্দুকের টাকা-পয়সা বস্তাবন্দি করছে দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকজন। পরে বস্তাগুলো ধরাধরি করে মসজিদের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অপেক্ষমাণ গণনাকারীদের সামনে ঢেলে দেওয়া হয় টাকাগুলো। এভাবেই শুরু হয় গণনার কাজ।

পাগলা মসজিদের টাকা জমা হয় রূপালী ব্যাংকে। তাই এই ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী, মসজিদের কর্মচারী ও কমিটির লোকজন, মাদরাসার ছাত্রসহ সব মিলিয়ে দুই শতাধিক লোক সারা দিন টাকাগুলো গুনবে।

মসজিদ পরিচালনা, এর অর্থ-সম্পদ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় ২৯ সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন যথাক্রমে জেলা প্রশাসক ও কিশোরগঞ্জ পৌর মেয়র।

জানা গে‌ছে, মসজিদের দানের টাকা ব্যাংকে গচ্ছিত থাকে। আর ওই টাকার লভ্যাংশ থেকে গরিব অসহায় লোকদের আর্থিক সহায়তা, ক্যান্সারসহ জটিল রোগে আক্রান্তদের আর্থিকভাবে অনুদান দিয়ে মসজিদটি আর্তমানবতার সেবায় ভূমিকা রাখছে। দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের অনুদান দেওয়া হয় মসজিদের তহবিল থেকে। এইসব সেবামূলক কর্মকাণ্ড সারা বছরই করে থাকে পাগলা মসজিদ।

মসজিদ পরিচালনা ক‌মি‌টি জানায়, শুধু মুসলমান নয়, অন্য ধর্মের লোকজনও পাগলা মসজিদে বিপুল অঙ্কের টাকা-পয়সা দান করে। সব সম্প্রদায়ের মানুষ পাগলা মসজিদ পরিদর্শনে আসে। যা প্রকৃতপক্ষে অসাম্প্রদায়িকতার বিরল এক দৃষ্টান্ত।

মসজিদের সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, দানের টাকায় মসজিদের বড়সড় উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। মসজিদ ঘিরে এখানে আন্তর্জাতিক মানের একটি দৃষ্টিনন্দন বহুতল ইসলামী কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। সমৃদ্ধ লাইব্রেরিসহ থাকবে আরো বিভিন্ন আয়োজন। এ প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে ১১৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ শেষের পথে। এখন সব কিছু গুছিয়ে আনা হচ্ছে। খুব শিগগিরই হয়তো কাজে হাত দিতে পারব আমরা।

কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ ভূমির ওপর এই মসজিদ গড়ে উঠেছিল। সময়ের সঙ্গে আজ পাগলা মসজিদের পরিধির সঙ্গে বেড়েছে খ্যাতিও।